নিউইয়র্ক ১২:৪৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১০ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

জর্জিয়া ষ্টেট সিনেট : প্রাইমারীতে পুনরায় জয়ী শেখ রহমান : হেরে গেলেন নাবিলা-রশিদ-জাহাঙ্গীর

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৩:২১:২২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ জুন ২০২০
  • / ৬১ বার পঠিত

হককথা ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া ষ্টেট সিনেটর পদে পুনরায় দ্বিতীয়বারের মতো জয়ের পথে বাংলাদেশী-আমেরিকান শেখ রহমান চন্দন (৬০)। তিনি আবারো ডেমক্র্যাটিক পার্টির মনোনয়ন পেলেন বিনা প্রতিদ্ব›দ্বীতায়। গত ৯ জুন দলীয় প্রার্থী বাছাইয়ের এ নির্বাচনে সিনেট ডিষ্ট্রিক্ট-৫ এ তার বিরুদ্ধে ছিলো না কোন প্রতিদ্ব›দ্বী। এমনকি রিপাবলিকান পার্টি থেকেও কেউ প্রার্থী হননি তার আসনে। ফলে আগামী ৩ নভেম্বরের মূল নির্বাচনে তাকে ভোট প্রার্থনার মুখোমুখী হতে হবে না। শুধুমাত্র ঐদিনটি অতিবাহিত হলেই তিনি দ্বিতীয় টার্মের সিনেটর হিসেবে শপথ নেবেন। ষ্টেট সিনেটর শেখ রহমান কিশোরগঞ্জ জেলার বাজিপুরের শরারচর গ্রামের সন্তান শেখ রহমান চন্দন।
এদিকে গত ৯ জুনের ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রাইমারিতে জর্জিয়াস্থ কংগ্রেসনাল ডিস্ট্রিক্ট-৭ থেকে নাবিলা ইসলাম এবং রশিদ মালিকও লড়ে হেওে গেছেন। নির্বাচনে নাবিলা ১৩% এবং মালিক-১০% ভোট পান। এছাড়া স্টেট সিনেটে ডিষ্ট্রিক্ট-৪১ থেকে জাহাঙ্গীর হোসেন পান ১৯% ভোট। ডিষ্ট্রিক্ট-৪৮ এ জসিমউদ্দিন পেয়েছেন ২২% ভোট। এরা কেউই জয়ী হতে না পারলেও মূলধারার রাজনীতিতে বাংলাদেশীদের এগিয়ে যাওয়ার পপথ তৈরী করেছেন বলে সচেতন প্রবাসীরা অভিমত ব্যক্ত করেছেন।
জানা গেছে, ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিপুল ভোটের ব্যবধানে শেখ রহমান চন্দন প্রথবারের মতো ষ্টেট সিনেটর নির্বাচিত হন। তার সিনেট ডিষ্ট্রিক্টে লোক সংখ্যা প্রায় দু’লাখ। এরমধ্যে ৩৭% হিসপ্যানিক, ৩৩% কৃষ্ণাঙ্গ, ২২% শ্বেতাঙ্গ, ১২% হলেন এশিয়ান। এই এশিয়ানের মধ্যে মাত্র দেড় হাজার হলেন বাংলাদেশীসহ বিভিন্ন দেশের মুসলমান। বিগত ৩৪ বছরেরও অধিক সময় ধরে তিনি আটলান্টা সিটির গুনেট কাউন্টিতে বাস করছেন। সব সময়ই ধর্ম-বর্ণ-গোত্র-ভাষার উর্দ্বে সকল মানুষের আপদে-বিপদে পাশে দাঁড়িয়েছেন। কমিউনিটিভিত্তিক সমস্যা নিয়ে আন্দোলন করেছেন। উল্লেখ্য, জর্জিয়া ষ্টেট সিনেটর হিসেবে জয়ী তিনিই প্রথম মুসলমান। ষ্টেট সিনেটের কৃষি এবং কঞ্জ্যুমার এফেয়ার্স কমিটি, গভর্ণমেন্ট ওভারসাইট কমিটি, আরবাণ এফেয়ার্স কমিটি এবং স্টেট ইন্সটিটউিশন এ্যান্ড প্রপার্টি কমিটিতে তিনি দায়িত্ব পালন করছেন।
এছাড়াও শেখ রহমান চন্দন জর্জিয়া ষ্টেট ডেমক্র্যাটিক পার্টির নির্বাচিত কর্মকর্তা হিসেবে দু’বছর যাবত তিনি ডেমক্র্যাটিক পার্টি ন্যাশনাল কমিটি (ডিএনসি)-তে দায়িত্ব পালন করছেন। সেই কমিটির পুননির্বাচনে আবার লড়ছেন তিনি। এটি অনুষ্ঠিত হবে ২৭ জুন শনিবার। উল্লেখ্য, ডিএনসিতে তিনিই প্রথম বাংলাদেশী এবং মুসলমান হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন।
শেখ রহমান চন্দন-এর সংক্ষিপ্ত জীবনী: একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়ে বয়স তার ছিল ১০ বছর, তাই সরাসরি অংশ নিতে পারেননি। তার বাবা নজিবুর রহমান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়ায় তাকে পাক হানাদাররা ধরে নিয়েছিল। বিজয় অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত তাকে (শেখ রহমান) যুদ্ধবন্দি হিসেবে নির্যাতন সইতে হয়েছে। স্বাধীনতা লাভের পর কলেজ জীবন শেষ করে ১৯৮১ সালে উচ্চ শিক্ষার জন্যে যুক্তরাষ্ট্রে এসেছেন। নর্থ ক্যারলিনায় পিডমন্ট কম্যুনিটি কলেজে ভর্তি হন। শিক্ষা ব্যয় সংগ্রহের জন্যে ডিশওয়াসারের চাকরি করেছেন ঘন্টায় ৩.৩৫ ডলার মজুরিতে। এরপর অর্থনীতি এবং গেøাবাল স্টাডিজে ব্যাচেলর করেছেন ১৯৯৫ সালে ইউনিভার্সিটি অব জর্জিয়া থেকে। জীবিকার জন্যে চাকরির পাশাপাশি নাগরিক অধিকারের জন্যে সম্পৃক্ত হন এনএএসিপি, ন্যাশনাল এ্যাকশন নেটওয়ার্ক, আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়য়ন এবং সবশেষে ‘এলায়েন্স ফরস সাউথ এশিয়ান আমেরিকান লেবার’ তথা আসাল-এর সাথে যুক্ত হয়েছেন।
জীবিকার তাগিদে রেস্টুরেন্টের ডিশওয়াসার থেকে ম্যানেজার এবং পরবর্তীতে পিজা হাটের কর্পোরেট এক্সিকিউটিভ হিসেবেও কাজ করেছেন এই সিনেটর শেখ রহমান। বাংলাদেশে তার ছোটভাই শেখ মুজিবর রহমান ইকবাল কিশোরগঞ্জ থেকে একাদশ জাতীয় সংসদের সদস্য হয়েছেন।

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

জর্জিয়া ষ্টেট সিনেট : প্রাইমারীতে পুনরায় জয়ী শেখ রহমান : হেরে গেলেন নাবিলা-রশিদ-জাহাঙ্গীর

প্রকাশের সময় : ০৩:২১:২২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ জুন ২০২০

হককথা ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া ষ্টেট সিনেটর পদে পুনরায় দ্বিতীয়বারের মতো জয়ের পথে বাংলাদেশী-আমেরিকান শেখ রহমান চন্দন (৬০)। তিনি আবারো ডেমক্র্যাটিক পার্টির মনোনয়ন পেলেন বিনা প্রতিদ্ব›দ্বীতায়। গত ৯ জুন দলীয় প্রার্থী বাছাইয়ের এ নির্বাচনে সিনেট ডিষ্ট্রিক্ট-৫ এ তার বিরুদ্ধে ছিলো না কোন প্রতিদ্ব›দ্বী। এমনকি রিপাবলিকান পার্টি থেকেও কেউ প্রার্থী হননি তার আসনে। ফলে আগামী ৩ নভেম্বরের মূল নির্বাচনে তাকে ভোট প্রার্থনার মুখোমুখী হতে হবে না। শুধুমাত্র ঐদিনটি অতিবাহিত হলেই তিনি দ্বিতীয় টার্মের সিনেটর হিসেবে শপথ নেবেন। ষ্টেট সিনেটর শেখ রহমান কিশোরগঞ্জ জেলার বাজিপুরের শরারচর গ্রামের সন্তান শেখ রহমান চন্দন।
এদিকে গত ৯ জুনের ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রাইমারিতে জর্জিয়াস্থ কংগ্রেসনাল ডিস্ট্রিক্ট-৭ থেকে নাবিলা ইসলাম এবং রশিদ মালিকও লড়ে হেওে গেছেন। নির্বাচনে নাবিলা ১৩% এবং মালিক-১০% ভোট পান। এছাড়া স্টেট সিনেটে ডিষ্ট্রিক্ট-৪১ থেকে জাহাঙ্গীর হোসেন পান ১৯% ভোট। ডিষ্ট্রিক্ট-৪৮ এ জসিমউদ্দিন পেয়েছেন ২২% ভোট। এরা কেউই জয়ী হতে না পারলেও মূলধারার রাজনীতিতে বাংলাদেশীদের এগিয়ে যাওয়ার পপথ তৈরী করেছেন বলে সচেতন প্রবাসীরা অভিমত ব্যক্ত করেছেন।
জানা গেছে, ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিপুল ভোটের ব্যবধানে শেখ রহমান চন্দন প্রথবারের মতো ষ্টেট সিনেটর নির্বাচিত হন। তার সিনেট ডিষ্ট্রিক্টে লোক সংখ্যা প্রায় দু’লাখ। এরমধ্যে ৩৭% হিসপ্যানিক, ৩৩% কৃষ্ণাঙ্গ, ২২% শ্বেতাঙ্গ, ১২% হলেন এশিয়ান। এই এশিয়ানের মধ্যে মাত্র দেড় হাজার হলেন বাংলাদেশীসহ বিভিন্ন দেশের মুসলমান। বিগত ৩৪ বছরেরও অধিক সময় ধরে তিনি আটলান্টা সিটির গুনেট কাউন্টিতে বাস করছেন। সব সময়ই ধর্ম-বর্ণ-গোত্র-ভাষার উর্দ্বে সকল মানুষের আপদে-বিপদে পাশে দাঁড়িয়েছেন। কমিউনিটিভিত্তিক সমস্যা নিয়ে আন্দোলন করেছেন। উল্লেখ্য, জর্জিয়া ষ্টেট সিনেটর হিসেবে জয়ী তিনিই প্রথম মুসলমান। ষ্টেট সিনেটের কৃষি এবং কঞ্জ্যুমার এফেয়ার্স কমিটি, গভর্ণমেন্ট ওভারসাইট কমিটি, আরবাণ এফেয়ার্স কমিটি এবং স্টেট ইন্সটিটউিশন এ্যান্ড প্রপার্টি কমিটিতে তিনি দায়িত্ব পালন করছেন।
এছাড়াও শেখ রহমান চন্দন জর্জিয়া ষ্টেট ডেমক্র্যাটিক পার্টির নির্বাচিত কর্মকর্তা হিসেবে দু’বছর যাবত তিনি ডেমক্র্যাটিক পার্টি ন্যাশনাল কমিটি (ডিএনসি)-তে দায়িত্ব পালন করছেন। সেই কমিটির পুননির্বাচনে আবার লড়ছেন তিনি। এটি অনুষ্ঠিত হবে ২৭ জুন শনিবার। উল্লেখ্য, ডিএনসিতে তিনিই প্রথম বাংলাদেশী এবং মুসলমান হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন।
শেখ রহমান চন্দন-এর সংক্ষিপ্ত জীবনী: একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়ে বয়স তার ছিল ১০ বছর, তাই সরাসরি অংশ নিতে পারেননি। তার বাবা নজিবুর রহমান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়ায় তাকে পাক হানাদাররা ধরে নিয়েছিল। বিজয় অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত তাকে (শেখ রহমান) যুদ্ধবন্দি হিসেবে নির্যাতন সইতে হয়েছে। স্বাধীনতা লাভের পর কলেজ জীবন শেষ করে ১৯৮১ সালে উচ্চ শিক্ষার জন্যে যুক্তরাষ্ট্রে এসেছেন। নর্থ ক্যারলিনায় পিডমন্ট কম্যুনিটি কলেজে ভর্তি হন। শিক্ষা ব্যয় সংগ্রহের জন্যে ডিশওয়াসারের চাকরি করেছেন ঘন্টায় ৩.৩৫ ডলার মজুরিতে। এরপর অর্থনীতি এবং গেøাবাল স্টাডিজে ব্যাচেলর করেছেন ১৯৯৫ সালে ইউনিভার্সিটি অব জর্জিয়া থেকে। জীবিকার জন্যে চাকরির পাশাপাশি নাগরিক অধিকারের জন্যে সম্পৃক্ত হন এনএএসিপি, ন্যাশনাল এ্যাকশন নেটওয়ার্ক, আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়য়ন এবং সবশেষে ‘এলায়েন্স ফরস সাউথ এশিয়ান আমেরিকান লেবার’ তথা আসাল-এর সাথে যুক্ত হয়েছেন।
জীবিকার তাগিদে রেস্টুরেন্টের ডিশওয়াসার থেকে ম্যানেজার এবং পরবর্তীতে পিজা হাটের কর্পোরেট এক্সিকিউটিভ হিসেবেও কাজ করেছেন এই সিনেটর শেখ রহমান। বাংলাদেশে তার ছোটভাই শেখ মুজিবর রহমান ইকবাল কিশোরগঞ্জ থেকে একাদশ জাতীয় সংসদের সদস্য হয়েছেন।