নিউইয়র্ক ১২:১৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

ক্যানসাসে বাংলাদেশী এক মেধাবী ছাত্রকে গুলি করে হত্যা

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০১:২১:৪২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ নভেম্বর ২০১৭
  • / ৯৬১ বার পঠিত

ক্যানসাস: যুক্তরাষ্ট্রের ক্যানসাস রাজ্যের উচিটা শহরে শনিবার রাতে বাংলাদেশী তরুণ মেধাবী ছাত্র এম হাসান রহমান বাঁধনকে কেবা বা কারা গুলি করে হত্যা করেছে। উচিটা পুলিশ সোমবার (২৭ নভেম্বর) সকালে সাংবাদিক সম্মেলন করে এ খবর নিশ্চিত করেছেন। সাংবাদিক সম্মেলনে বলা হয়েছে, উচিটা শহরের সেন্ট্রাল রক রোডের পাশে ৭৮০০ পেজন্ট লাইভ ওক স্ট্রিট অ্যাপার্টমেন্টের সামনে একটি গাড়িতে ২৬ বছরের এক যুবকের  লাশ পাওয়া গেছে। পুলিশ জানায়, সে পিৎজা হাট ডেলিভারির কাজ করতেন। এদিন রাতে পিৎজা ডেলিভারি দিয়ে সঠিক সময়ে পিৎজা সেন্টারে না পৌঁছাতে পিৎজা কর্তৃপক্ষ পুলিশকে অবহিত করেন। রোববার বেলা এগারোটায় পুলিশ লাশ ৭৮০০ পেজন্ট লাইভ ওক স্ট্রিট অ্যাপার্টমেন্টের সামনে তার গাড়ির ট্যাংক থেকে উদ্ধার করেন। ধারণা করা হচ্ছে, দুর্বৃত্তরা তাঁকে গুলি করার পর গাড়ির ট্যাংকে ঢুকিয়ে নিয়ে এ এলাকায় ফেলে আসে। পুলিশ নিশ্চিত করেছেন, গাড়িটি তাঁর (বাঁধন)। এ ব্যাপারে পুলিশ জনগণের সহযোগিতা কামনা করেছেন।
সোমবার ময়নাতদন্ত শেষে আইনি প্রক্রিয়ার পর বাঁধনের লাশ বাংলাদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে জানিয়েছেন তাঁর সহপাঠীরা। জানা যায়, তাঁর গ্রামের বাড়ি গাজীপুর চৌরাস্তা টেরি পাড়ায়। তিনি পরিবারের একমাত্র ছেলে।
এদিকে বাঁধনের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে উচিটা শহরে বাঙালী কমিউনিটির মাঝে শোকের ছায়া নেমে আসে। অনেকে এ খবর জানতে ভিড় জমায় ডাউন-টাউন কোট প্রাঙ্গণে।  উচ্চশিক্ষার আশায় দীর্ঘ সাত বছর আগে তিনি (বাঁধন) বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আসেন। বাটলার কমিউনিটি কলেজ থেকে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে অ্যাসোসিয়েট শেষ করে আগামী সেশনে ক্যানসাস ইউনিভার্সিটিতে ভর্তির চূড়ান্ত প্রক্রিয়া শেষ করেছিলেন। আগামী ডিসেম্বরে তাঁর কেইউতে ভর্তি হওয়ার কথা ছিল।
মা-বাবার একমাত্র সন্তন বাঁধন।  স্বপ্নের দেশ আমেরিকায় পড়ালেখা করতে এসে এভাবে লাশ হয়ে ফিরে যাওয়াকে কোনোভাবে মেনে নিতে পারছেন না তার সতীর্থরা। বাঁধনের ছোট বেলার বন্ধু নাঈম জানান, বাঁধন গত ২মাস ধরে পিৎজা হাট ডেলিভারির কাজ করেছিলেন। প্রতিদিন সাড়ে বারটার মধ্যে ঘরে ফিরে আসতেন। কিন্তু শনিবার গভীর রাত পর্যন্ত বাঁধন ঘরে না ফেরাতে আমি (নঈম) তাঁকে খুঁজতে রাত তিনটা বিভিন্ন হসপিটালের ইমার্জেন্সিতে খোঁজ নেয়। পরে পুলিশ নিশ্চিত করেন, ‘তুমি যাকে খুঁজছ তার ডেড বডি আমরা উদ্ধার করেছি’। বন্ধুদের কথা দিয়েছিল- থ্যাংকস গিভিংডে-তে নিজে রান্না করে খাওয়াবে। বড় সাইজের মুরগিও কিনে এনে সব আয়োজন ঠিক করে রেখেছিল। কিন্তু নিয়তি সবার কাছ থেকে বাঁধনকে ছিনিয়ে নিয়ে গেল। উচিটা শহরে এখন যেন বোবা কান্না! বাঙালী কমিউনিটিতে বাঁধন ছিল অনন্য এক প্রতিভা। যে কোন অনুষ্ঠান বাঁধন জমিয়ে তুলত। যেন সবাইকে চোখের জলে ভাসিয়ে দিয়ে চলে গেল না ফেরার দেশে। (প্রথম আলো)

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

About Author Information

ক্যানসাসে বাংলাদেশী এক মেধাবী ছাত্রকে গুলি করে হত্যা

প্রকাশের সময় : ০১:২১:৪২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ নভেম্বর ২০১৭

ক্যানসাস: যুক্তরাষ্ট্রের ক্যানসাস রাজ্যের উচিটা শহরে শনিবার রাতে বাংলাদেশী তরুণ মেধাবী ছাত্র এম হাসান রহমান বাঁধনকে কেবা বা কারা গুলি করে হত্যা করেছে। উচিটা পুলিশ সোমবার (২৭ নভেম্বর) সকালে সাংবাদিক সম্মেলন করে এ খবর নিশ্চিত করেছেন। সাংবাদিক সম্মেলনে বলা হয়েছে, উচিটা শহরের সেন্ট্রাল রক রোডের পাশে ৭৮০০ পেজন্ট লাইভ ওক স্ট্রিট অ্যাপার্টমেন্টের সামনে একটি গাড়িতে ২৬ বছরের এক যুবকের  লাশ পাওয়া গেছে। পুলিশ জানায়, সে পিৎজা হাট ডেলিভারির কাজ করতেন। এদিন রাতে পিৎজা ডেলিভারি দিয়ে সঠিক সময়ে পিৎজা সেন্টারে না পৌঁছাতে পিৎজা কর্তৃপক্ষ পুলিশকে অবহিত করেন। রোববার বেলা এগারোটায় পুলিশ লাশ ৭৮০০ পেজন্ট লাইভ ওক স্ট্রিট অ্যাপার্টমেন্টের সামনে তার গাড়ির ট্যাংক থেকে উদ্ধার করেন। ধারণা করা হচ্ছে, দুর্বৃত্তরা তাঁকে গুলি করার পর গাড়ির ট্যাংকে ঢুকিয়ে নিয়ে এ এলাকায় ফেলে আসে। পুলিশ নিশ্চিত করেছেন, গাড়িটি তাঁর (বাঁধন)। এ ব্যাপারে পুলিশ জনগণের সহযোগিতা কামনা করেছেন।
সোমবার ময়নাতদন্ত শেষে আইনি প্রক্রিয়ার পর বাঁধনের লাশ বাংলাদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে জানিয়েছেন তাঁর সহপাঠীরা। জানা যায়, তাঁর গ্রামের বাড়ি গাজীপুর চৌরাস্তা টেরি পাড়ায়। তিনি পরিবারের একমাত্র ছেলে।
এদিকে বাঁধনের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে উচিটা শহরে বাঙালী কমিউনিটির মাঝে শোকের ছায়া নেমে আসে। অনেকে এ খবর জানতে ভিড় জমায় ডাউন-টাউন কোট প্রাঙ্গণে।  উচ্চশিক্ষার আশায় দীর্ঘ সাত বছর আগে তিনি (বাঁধন) বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আসেন। বাটলার কমিউনিটি কলেজ থেকে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে অ্যাসোসিয়েট শেষ করে আগামী সেশনে ক্যানসাস ইউনিভার্সিটিতে ভর্তির চূড়ান্ত প্রক্রিয়া শেষ করেছিলেন। আগামী ডিসেম্বরে তাঁর কেইউতে ভর্তি হওয়ার কথা ছিল।
মা-বাবার একমাত্র সন্তন বাঁধন।  স্বপ্নের দেশ আমেরিকায় পড়ালেখা করতে এসে এভাবে লাশ হয়ে ফিরে যাওয়াকে কোনোভাবে মেনে নিতে পারছেন না তার সতীর্থরা। বাঁধনের ছোট বেলার বন্ধু নাঈম জানান, বাঁধন গত ২মাস ধরে পিৎজা হাট ডেলিভারির কাজ করেছিলেন। প্রতিদিন সাড়ে বারটার মধ্যে ঘরে ফিরে আসতেন। কিন্তু শনিবার গভীর রাত পর্যন্ত বাঁধন ঘরে না ফেরাতে আমি (নঈম) তাঁকে খুঁজতে রাত তিনটা বিভিন্ন হসপিটালের ইমার্জেন্সিতে খোঁজ নেয়। পরে পুলিশ নিশ্চিত করেন, ‘তুমি যাকে খুঁজছ তার ডেড বডি আমরা উদ্ধার করেছি’। বন্ধুদের কথা দিয়েছিল- থ্যাংকস গিভিংডে-তে নিজে রান্না করে খাওয়াবে। বড় সাইজের মুরগিও কিনে এনে সব আয়োজন ঠিক করে রেখেছিল। কিন্তু নিয়তি সবার কাছ থেকে বাঁধনকে ছিনিয়ে নিয়ে গেল। উচিটা শহরে এখন যেন বোবা কান্না! বাঙালী কমিউনিটিতে বাঁধন ছিল অনন্য এক প্রতিভা। যে কোন অনুষ্ঠান বাঁধন জমিয়ে তুলত। যেন সবাইকে চোখের জলে ভাসিয়ে দিয়ে চলে গেল না ফেরার দেশে। (প্রথম আলো)