নিউইয়র্ক ০২:৩৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

কানাডায় দাফন সম্পন্ন হলো কবি আসাদ চৌধুরীর

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৮:৩০:৩৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৭ অক্টোবর ২০২৩
  • / ৪৪ বার পঠিত

হককথা ডেস্কএকুশে পদকপ্রাপ্ত কবি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আসাদ চৌধুরীর দাফন কানাডায় সম্পন্ন হয়েছে। শুক্রবার (৬ অক্টোবর) টরন্টোর পিকারিং ডাফিন মেডোজে তাকে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়।

এর আগে টরন্টোর নাগেট মসজিদে আসাদ চৌধুরীর জানাজার পর মরদেহ মসজিদের ভেতরে সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা ও সম্মান জানানোর জন্য রাখা হয়।

কবির জামাতা নাদিম ইকবাল জানান, তার পরিবারের সদস্যরা কেউ দেশে থাকেন না। এজন্য পরিবারের সবার সম্মতিতে কানাডাতেই দাফন সম্পন্ন হয় খ্যাতিমান এই কবির।

এর আগে গত বুধবার স্থানীয় সময় রাত পৌনে তিনটায় টরন্টোর অদূরে অশোয়া শহরের লেক রিজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন কবি আসাদ চৌধুরী। তার বয়স হয়েছিল ৮০ বছর।

কবি আসাদ চৌধুরী দীর্ঘদিন কানাডার টরেন্টোতে তাঁর মেয়ে নুসরাত জাহান চৌধুরীর সঙ্গে থাকতেন। তার দুই ছেলে ও এক মেয়ে কানাডায় বসবাস করেন।

কবি আসাদ চৌধুরী ১৯৪৩ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার উলানিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম মোহাম্মদ আরিফ চৌধুরী এবং মাতার নাম সৈয়দা মাহমুদা বেগম। আসাদ চৌধুরীর স্ত্রীর নাম সাহানা বেগম।

আসাদ চৌধুরী উলানিয়া হাইস্কুল থেকে ১৯৫৭ সালে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ১৯৬০ সালে বরিশালের ব্রজমোহন কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে অধ্যয়ন করেন। বাংলা বিভাগ থেকে ১৯৬৩ সালে স্নাতক (সম্মান) ও ১৯৬৪ খ্রিস্টাব্দে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ চুকে যাওয়ার পর কলেজে অধ্যাপনার মধ্য দিয়ে আসাদ চৌধুরীর চাকরি জীবন শুরু। ব্রাহ্মণবাড়িয়া কলেজে ১৯৬৪ থেকে ১৯৭২ পর্যন্ত শিক্ষকতা করেন। পরবর্তীকালে ঢাকায় আসার পর তিনি বিভিন্ন খবরের কাগজে সাংবাদিকতা করেন। তিনি জাতীয় প্রেসক্লাবের সদস্য।

১৯৮৫ থেকে ১৯৮৮ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত তিনি ভয়েজ অব জার্মানির বাংলাদেশ সংবাদদাতার দায়িত্ব পালন করেন। ঢাকায় বাংলা একাডেমিতে দীর্ঘকাল চাকরির পর তিনি এর পরিচালক হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন।

সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় তার পদচারণা। তার প্রথম কবিতার বই ‘তবক দেওয়া পান’। কবি নামে পরিচিত থাকলেও শিশুসাহিত্যিক, প্রাবন্ধিক, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক গবেষক, ছড়াকারও ছিলেন তিনি। কিছু অনুবাদকর্মও সম্পাদন করেছেন। ১৯৮৩ খ্রিস্টাব্দে তার রচিত বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ শীর্ষক বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য গ্রন্থটি প্রকাশিত হয়। তিনি একশর মতো বই লিখেছেন।

টেলিভিশনের পর্দা কিংবা সশরীরে যেকোনো অনুষ্ঠানে উপস্থাপক আসাদ চৌধুরীর কণ্ঠস্বর সবাইকে মুগ্ধ করতো। আশির দশকে রেডিও-টেলিভিশনে আজানের দোয়ার যে বাংলা অর্থ পাঠ করা হতো তা ছিল কবি আসাদ চৌধুরীর কণ্ঠ।

আসাদ চৌধুরী তার বর্ণাঢ্য জীবনে অনেক পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন। এর মধ্যে ২০১৩ সালে রাষ্ট্রের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সম্মাননা একুশে পদক এবং ১৯৮৭ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার উল্লেখযোগ্য। সূত্র : ইনকিলাব

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

কানাডায় দাফন সম্পন্ন হলো কবি আসাদ চৌধুরীর

প্রকাশের সময় : ০৮:৩০:৩৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৭ অক্টোবর ২০২৩

হককথা ডেস্কএকুশে পদকপ্রাপ্ত কবি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আসাদ চৌধুরীর দাফন কানাডায় সম্পন্ন হয়েছে। শুক্রবার (৬ অক্টোবর) টরন্টোর পিকারিং ডাফিন মেডোজে তাকে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়।

এর আগে টরন্টোর নাগেট মসজিদে আসাদ চৌধুরীর জানাজার পর মরদেহ মসজিদের ভেতরে সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা ও সম্মান জানানোর জন্য রাখা হয়।

কবির জামাতা নাদিম ইকবাল জানান, তার পরিবারের সদস্যরা কেউ দেশে থাকেন না। এজন্য পরিবারের সবার সম্মতিতে কানাডাতেই দাফন সম্পন্ন হয় খ্যাতিমান এই কবির।

এর আগে গত বুধবার স্থানীয় সময় রাত পৌনে তিনটায় টরন্টোর অদূরে অশোয়া শহরের লেক রিজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন কবি আসাদ চৌধুরী। তার বয়স হয়েছিল ৮০ বছর।

কবি আসাদ চৌধুরী দীর্ঘদিন কানাডার টরেন্টোতে তাঁর মেয়ে নুসরাত জাহান চৌধুরীর সঙ্গে থাকতেন। তার দুই ছেলে ও এক মেয়ে কানাডায় বসবাস করেন।

কবি আসাদ চৌধুরী ১৯৪৩ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার উলানিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম মোহাম্মদ আরিফ চৌধুরী এবং মাতার নাম সৈয়দা মাহমুদা বেগম। আসাদ চৌধুরীর স্ত্রীর নাম সাহানা বেগম।

আসাদ চৌধুরী উলানিয়া হাইস্কুল থেকে ১৯৫৭ সালে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ১৯৬০ সালে বরিশালের ব্রজমোহন কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে অধ্যয়ন করেন। বাংলা বিভাগ থেকে ১৯৬৩ সালে স্নাতক (সম্মান) ও ১৯৬৪ খ্রিস্টাব্দে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ চুকে যাওয়ার পর কলেজে অধ্যাপনার মধ্য দিয়ে আসাদ চৌধুরীর চাকরি জীবন শুরু। ব্রাহ্মণবাড়িয়া কলেজে ১৯৬৪ থেকে ১৯৭২ পর্যন্ত শিক্ষকতা করেন। পরবর্তীকালে ঢাকায় আসার পর তিনি বিভিন্ন খবরের কাগজে সাংবাদিকতা করেন। তিনি জাতীয় প্রেসক্লাবের সদস্য।

১৯৮৫ থেকে ১৯৮৮ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত তিনি ভয়েজ অব জার্মানির বাংলাদেশ সংবাদদাতার দায়িত্ব পালন করেন। ঢাকায় বাংলা একাডেমিতে দীর্ঘকাল চাকরির পর তিনি এর পরিচালক হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন।

সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় তার পদচারণা। তার প্রথম কবিতার বই ‘তবক দেওয়া পান’। কবি নামে পরিচিত থাকলেও শিশুসাহিত্যিক, প্রাবন্ধিক, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক গবেষক, ছড়াকারও ছিলেন তিনি। কিছু অনুবাদকর্মও সম্পাদন করেছেন। ১৯৮৩ খ্রিস্টাব্দে তার রচিত বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ শীর্ষক বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য গ্রন্থটি প্রকাশিত হয়। তিনি একশর মতো বই লিখেছেন।

টেলিভিশনের পর্দা কিংবা সশরীরে যেকোনো অনুষ্ঠানে উপস্থাপক আসাদ চৌধুরীর কণ্ঠস্বর সবাইকে মুগ্ধ করতো। আশির দশকে রেডিও-টেলিভিশনে আজানের দোয়ার যে বাংলা অর্থ পাঠ করা হতো তা ছিল কবি আসাদ চৌধুরীর কণ্ঠ।

আসাদ চৌধুরী তার বর্ণাঢ্য জীবনে অনেক পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন। এর মধ্যে ২০১৩ সালে রাষ্ট্রের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সম্মাননা একুশে পদক এবং ১৯৮৭ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার উল্লেখযোগ্য। সূত্র : ইনকিলাব