নিউইয়র্ক ০৩:৫৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ জুন ২০২৫, ১১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

সর্বনাশা অ্যাপে বিপথগামী তারুণ্য

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৩:৫৫:৫১ অপরাহ্ন, সোমবার, ৫ অক্টোবর ২০২০
  • / ৯৩ বার পঠিত

ব্যবহারকারী অনেকে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য, নষ্ট হচ্ছে তরুণ প্রজন্মের নৈতিকতা ও মূল্যবোধ, ফাঁদে ফেলে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে প্রতারকরা
হককথা ডেস্ক: ‘বিগো লাইভ’, ‘টিকটক’, ‘লাইকি’ নামক সর্বনাশা সব মোবাইল ফোন অ্যাপ ব্যবহার তরুণ প্রজন্মকে করছে বিপথগামী। এসব অ্যাপ ব্যবহারে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে নৈতিকতা, সামাজিক মূল্যবোধ ও পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ। তরুণরা কিশোর গ্যাংয়ে জড়িয়ে অপরাধমূলক কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছে, হয়ে উঠছে সহিংস। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বলছে, এসব অ্যাপ ব্যবহারকারীদের নজরদারি করা হলেও সরাসরি ফৌজদারি অপরাধ না হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না।
জানা যায়, ইন্টারনেটে ছড়িয়ে থাকা ক্ষতিকর অ্যাপগুলোর একটি হচ্ছে ‘বিগো লাইভ’। এর মাধ্যমে তরুণ ও যুবকদের টার্গেট করে লাইভে এসে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি ও কুরুচিপূর্ণ প্রস্তাব দিয়ে বিকাশে টাকা পাঠানোর আহŸান জানান কিছু নারী। যৌনতার ফাঁদে ফেলে কৌশলে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা হাতিয়ে নেন তারা। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিদেশে অবস্থানরত প্রবাসী বাংলাদেশি যুবকরাই এই ফাঁদে পড়ছেন সবচেয়ে বেশি। মূলত পরিবার-পরিজন থেকে দূরে থাকায় এবং একাকিত্ব দূর করতেই বেশির ভাগ প্রবাসী যুবক এই অ্যাপটির টেক্সট ও ভিডিও চ্যাটে তরুণীদের সঙ্গে আলাপে উৎসাহী হয়ে ওঠেন। খোঁজ নিয়ে আরও জানা যায়, অ্যাপটি ব্যবহার করতে গিয়ে প্রতারক চক্রের ফাঁদে পড়ে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন অনেক তরুণ। এই অ্যাপটি মূলত একটি লাইভ স্ট্রিমিং প্ল্যাটফরম, যেখানে একজন ব্যবহারকারী তার ফলোয়ারের সঙ্গে লাইভে মুহূর্ত শেয়ার করেন। জানা যায়, ব্যবহারের দিক দিয়ে চলতি বছরের মার্চে এটি ছিল যুক্তরাষ্ট্রের ষষ্ঠ এবং বিশ্বের পঞ্চম জনপ্রিয় লাইভ স্ট্রিমিং অ্যাপ। বাংলাদেশেও এরই মধ্যে তরুণ-তরুণীদের কাছে অ্যাপটি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। কিন্তু অ্যাপটির অপব্যবহার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা। এরই মধ্যে ভারত ও পাকিস্তানে অ্যাপটি নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
‘টিকটক’ নামক চীনা ভিডিও শেয়ারিং সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সার্ভিসটি বর্তমানে বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের কাছে খুব জনপ্রিয় একটি মোবাইল অ্যাপ। এই অ্যাপের মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়ে ‘অপু ভাই’ নামের এক কিশোরের ভিডিও। অপু সবুজ রঙা চুল, নারী বিদ্বেষী আপত্তিকর কথা এবং অদ্ভুত ভাবভঙ্গি দিয়ে তৈরি করা ভিডিও পোস্ট করে অল্প সময়ে খ্যাতি পান। নতুন প্রজন্মের কাছে অপু দ্রæত হয়ে ওঠেন সেলিব্রেটি। কিন্তু স্বল্প সময়ে জনপ্রিয় হয়ে ওঠা অপু ও তার সহযোগীরা ঢাকার উত্তরায় আগস্ট মাসে রাস্তা আটকে আড্ডা দেওয়ার সময় এক গাড়িচালকের সঙ্গে বিতন্ডায় জড়ান। পথ ছাড়তে বলায় সেই চালকের ওপর চড়াও হন অপুর সহযোগীরা। এ ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সড়কে মারামারি ও ছিনতাইয়ের ঘটনায় করা মামলায় অপুকে গ্রেফতার করে। টিকটকে এখন অপুর দেখাদেখি আরও অনেক কিশোর-তরুণ উদ্ভট রঙে চুল রাঙিয়ে এবং ভিনদেশি অপসংস্কৃতি অনুসরণ করে ভিডিও তৈরি করছেন, যাতে সহিংস ও কুরুচিপূর্ণ কনটেন্ট থাকে।
এসব ভিডিও তৈরির ক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই কিশোরী ও তরুণীরা। স্বল্পবসনা তরুণীরা টিকটকের অশ্লীল ভিডিওতে নাচ-গান ও অভিনয়ের পাশাপাশি নিজেদের ধূমপান ও সিসা গ্রহণ করার ভিডিও আপলোড করছেন। উদ্বেগজনক যে, এই টিকটক ভিডিওগুলোতে নেই কোনো শিক্ষণীয় বার্তা। উল্টো এসব ভিডিওর মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মের কাছে ভুল বার্তা চলে যাচ্ছে।
বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় এই অ্যাপটির অপব্যবহারের কারণে এরই মধ্যে বিভিন্ন দেশে এর ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আবার বিব্রতকর, অনৈতিক ও অশ্লীল ভিডিও, যা পর্নোগ্রাফিকে উৎসাহিত করে, তা প্রচার করায় বিভিন্ন দেশে এর ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ভারত, ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তানে এরই মধ্যে নিষিদ্ধ হয়েছে টিকটক। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সাধারণত এই অ্যাপগুলোর মধ্যে এক ধরনের ‘শো অফ’-এর বিষয় থাকে। দেখা যায় টিকটকের কিছু ভিডিওতে বাইক-স্টান্ট থাকছে। আবার কিছু ভিডিওতে চলচ্চিত্রের নায়ক-নায়িকাদের অনুকরণ করা হচ্ছে। ঢাকার কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরাও টিকটক অ্যাপ ব্যবহার করে। তারা সেখানে গ্রæপ করে যুক্ত করে অন্য সদস্যদের। মোহাম্মদপুরে একটি কিশোর গ্রæপ আছে, যারা টিকটক গ্রæপ নামেই বেশি পরিচিত। গ্রæপটির নাম ‘ল্যারা দে’। গ্রæপটি ক্রমেই সন্ত্রাসী গ্রæপে পরিণত হচ্ছে। এই গ্রæপটি প্রধানত টিকটকভিত্তিক গ্রæপ। তারা টিকটকে বিভিন্ন ধরনের কনটেন্ট পোস্ট করে অন্য কিশোরদেরও এই গ্রæপে সংযুক্ত হওয়ার আমন্ত্রণ জানায়। টিকটকের মতো ক্ষতিকর আরেক অ্যাপ হচ্ছে ‘লাইকি’। সিঙ্গাপুরভিত্তিক এই শর্ট ভিডিও ক্রিয়েশন এবং শেয়ারিং প্লাটফর্মে গিয়ে তরুণ প্রজন্ম অশ্লীল ভিডিও ছাড়ছে। আবার ইমোর মতো অ্যাপ, যার মাধ্যমে ব্যবহারকারী অডিও ও ভিডিও কলের সুবিধা নিয়ে থাকে, সেখানেও আপত্তিকর ভিডিওর ছড়াছড়ি। ইমো নম্বর বিভিন্ন সোশ্যাল সাইটে পোস্ট দিয়ে কিছু তরুণী অনৈতিক কার্যক্রমও করছেন। এর ফলে সচেতন ব্যবহারকারীকে প্রায়ই বিব্রতকর পরিস্থিতির শিকার হতে হচ্ছে। র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার মুখপাত্র লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘টিকটক, লাইকি, বিগো লাইভের মতো অ্যাপগুলো সম্পর্কে আমরা অবগত আছি। র্যাবের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে সাইবার মনিটরিং করা। আমাদের একটি বিশেষ টিম সার্বক্ষণিক সাইবার জগতে মনিটরিং করে। লক্ষ করেছি, বেশ কিছু অ্যাপ উঠতি বয়সের কিশোরদের একরকম বিপদের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এই অ্যাপগুলো বন্ধ করার জন্য প্রকৃত সংস্থা হচ্ছে বাংলাদেশে টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন (বিটিআরসি)। এ ছাড়া সংশ্লিষ্ট যারা বিষয়টি মনিটরিং করছেন, তারা চাইলে এসব অ্যাপ বন্ধ করা যেতে পারে। পাশের দেশ ভারতসহ বেশ কয়েকটি দেশে এরই মধ্যে এ ধরনের অ্যাপ বন্ধ হতে দেখেছি। এসব অ্যাপ কিশোরদের নৈতিকতা ধ্বংস করছে। কিশোর-কিশোরীদের বিপদের দিকে পরিচালিত করছে। এ ছাড়া এসব অ্যাপের মাধ্যমে তরুণরা ক্রমান্বয়ে সহিংস হয়ে উঠছে।’ তিনি বলেন, ‘যেহেতু এসব ভিডিও পোস্ট করার জন্য কেউ সরাসরি ফৌজদারি অপরাধে জড়ায় না, এ জন্য আমরা প্রাথমিকভাবে এসব কিশোর-তরুণের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছি না।’

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

সর্বনাশা অ্যাপে বিপথগামী তারুণ্য

প্রকাশের সময় : ০৩:৫৫:৫১ অপরাহ্ন, সোমবার, ৫ অক্টোবর ২০২০

ব্যবহারকারী অনেকে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য, নষ্ট হচ্ছে তরুণ প্রজন্মের নৈতিকতা ও মূল্যবোধ, ফাঁদে ফেলে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে প্রতারকরা
হককথা ডেস্ক: ‘বিগো লাইভ’, ‘টিকটক’, ‘লাইকি’ নামক সর্বনাশা সব মোবাইল ফোন অ্যাপ ব্যবহার তরুণ প্রজন্মকে করছে বিপথগামী। এসব অ্যাপ ব্যবহারে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে নৈতিকতা, সামাজিক মূল্যবোধ ও পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ। তরুণরা কিশোর গ্যাংয়ে জড়িয়ে অপরাধমূলক কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছে, হয়ে উঠছে সহিংস। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বলছে, এসব অ্যাপ ব্যবহারকারীদের নজরদারি করা হলেও সরাসরি ফৌজদারি অপরাধ না হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না।
জানা যায়, ইন্টারনেটে ছড়িয়ে থাকা ক্ষতিকর অ্যাপগুলোর একটি হচ্ছে ‘বিগো লাইভ’। এর মাধ্যমে তরুণ ও যুবকদের টার্গেট করে লাইভে এসে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি ও কুরুচিপূর্ণ প্রস্তাব দিয়ে বিকাশে টাকা পাঠানোর আহŸান জানান কিছু নারী। যৌনতার ফাঁদে ফেলে কৌশলে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা হাতিয়ে নেন তারা। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিদেশে অবস্থানরত প্রবাসী বাংলাদেশি যুবকরাই এই ফাঁদে পড়ছেন সবচেয়ে বেশি। মূলত পরিবার-পরিজন থেকে দূরে থাকায় এবং একাকিত্ব দূর করতেই বেশির ভাগ প্রবাসী যুবক এই অ্যাপটির টেক্সট ও ভিডিও চ্যাটে তরুণীদের সঙ্গে আলাপে উৎসাহী হয়ে ওঠেন। খোঁজ নিয়ে আরও জানা যায়, অ্যাপটি ব্যবহার করতে গিয়ে প্রতারক চক্রের ফাঁদে পড়ে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন অনেক তরুণ। এই অ্যাপটি মূলত একটি লাইভ স্ট্রিমিং প্ল্যাটফরম, যেখানে একজন ব্যবহারকারী তার ফলোয়ারের সঙ্গে লাইভে মুহূর্ত শেয়ার করেন। জানা যায়, ব্যবহারের দিক দিয়ে চলতি বছরের মার্চে এটি ছিল যুক্তরাষ্ট্রের ষষ্ঠ এবং বিশ্বের পঞ্চম জনপ্রিয় লাইভ স্ট্রিমিং অ্যাপ। বাংলাদেশেও এরই মধ্যে তরুণ-তরুণীদের কাছে অ্যাপটি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। কিন্তু অ্যাপটির অপব্যবহার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা। এরই মধ্যে ভারত ও পাকিস্তানে অ্যাপটি নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
‘টিকটক’ নামক চীনা ভিডিও শেয়ারিং সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সার্ভিসটি বর্তমানে বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের কাছে খুব জনপ্রিয় একটি মোবাইল অ্যাপ। এই অ্যাপের মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়ে ‘অপু ভাই’ নামের এক কিশোরের ভিডিও। অপু সবুজ রঙা চুল, নারী বিদ্বেষী আপত্তিকর কথা এবং অদ্ভুত ভাবভঙ্গি দিয়ে তৈরি করা ভিডিও পোস্ট করে অল্প সময়ে খ্যাতি পান। নতুন প্রজন্মের কাছে অপু দ্রæত হয়ে ওঠেন সেলিব্রেটি। কিন্তু স্বল্প সময়ে জনপ্রিয় হয়ে ওঠা অপু ও তার সহযোগীরা ঢাকার উত্তরায় আগস্ট মাসে রাস্তা আটকে আড্ডা দেওয়ার সময় এক গাড়িচালকের সঙ্গে বিতন্ডায় জড়ান। পথ ছাড়তে বলায় সেই চালকের ওপর চড়াও হন অপুর সহযোগীরা। এ ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সড়কে মারামারি ও ছিনতাইয়ের ঘটনায় করা মামলায় অপুকে গ্রেফতার করে। টিকটকে এখন অপুর দেখাদেখি আরও অনেক কিশোর-তরুণ উদ্ভট রঙে চুল রাঙিয়ে এবং ভিনদেশি অপসংস্কৃতি অনুসরণ করে ভিডিও তৈরি করছেন, যাতে সহিংস ও কুরুচিপূর্ণ কনটেন্ট থাকে।
এসব ভিডিও তৈরির ক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই কিশোরী ও তরুণীরা। স্বল্পবসনা তরুণীরা টিকটকের অশ্লীল ভিডিওতে নাচ-গান ও অভিনয়ের পাশাপাশি নিজেদের ধূমপান ও সিসা গ্রহণ করার ভিডিও আপলোড করছেন। উদ্বেগজনক যে, এই টিকটক ভিডিওগুলোতে নেই কোনো শিক্ষণীয় বার্তা। উল্টো এসব ভিডিওর মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মের কাছে ভুল বার্তা চলে যাচ্ছে।
বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় এই অ্যাপটির অপব্যবহারের কারণে এরই মধ্যে বিভিন্ন দেশে এর ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আবার বিব্রতকর, অনৈতিক ও অশ্লীল ভিডিও, যা পর্নোগ্রাফিকে উৎসাহিত করে, তা প্রচার করায় বিভিন্ন দেশে এর ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ভারত, ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তানে এরই মধ্যে নিষিদ্ধ হয়েছে টিকটক। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সাধারণত এই অ্যাপগুলোর মধ্যে এক ধরনের ‘শো অফ’-এর বিষয় থাকে। দেখা যায় টিকটকের কিছু ভিডিওতে বাইক-স্টান্ট থাকছে। আবার কিছু ভিডিওতে চলচ্চিত্রের নায়ক-নায়িকাদের অনুকরণ করা হচ্ছে। ঢাকার কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরাও টিকটক অ্যাপ ব্যবহার করে। তারা সেখানে গ্রæপ করে যুক্ত করে অন্য সদস্যদের। মোহাম্মদপুরে একটি কিশোর গ্রæপ আছে, যারা টিকটক গ্রæপ নামেই বেশি পরিচিত। গ্রæপটির নাম ‘ল্যারা দে’। গ্রæপটি ক্রমেই সন্ত্রাসী গ্রæপে পরিণত হচ্ছে। এই গ্রæপটি প্রধানত টিকটকভিত্তিক গ্রæপ। তারা টিকটকে বিভিন্ন ধরনের কনটেন্ট পোস্ট করে অন্য কিশোরদেরও এই গ্রæপে সংযুক্ত হওয়ার আমন্ত্রণ জানায়। টিকটকের মতো ক্ষতিকর আরেক অ্যাপ হচ্ছে ‘লাইকি’। সিঙ্গাপুরভিত্তিক এই শর্ট ভিডিও ক্রিয়েশন এবং শেয়ারিং প্লাটফর্মে গিয়ে তরুণ প্রজন্ম অশ্লীল ভিডিও ছাড়ছে। আবার ইমোর মতো অ্যাপ, যার মাধ্যমে ব্যবহারকারী অডিও ও ভিডিও কলের সুবিধা নিয়ে থাকে, সেখানেও আপত্তিকর ভিডিওর ছড়াছড়ি। ইমো নম্বর বিভিন্ন সোশ্যাল সাইটে পোস্ট দিয়ে কিছু তরুণী অনৈতিক কার্যক্রমও করছেন। এর ফলে সচেতন ব্যবহারকারীকে প্রায়ই বিব্রতকর পরিস্থিতির শিকার হতে হচ্ছে। র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার মুখপাত্র লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘টিকটক, লাইকি, বিগো লাইভের মতো অ্যাপগুলো সম্পর্কে আমরা অবগত আছি। র্যাবের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে সাইবার মনিটরিং করা। আমাদের একটি বিশেষ টিম সার্বক্ষণিক সাইবার জগতে মনিটরিং করে। লক্ষ করেছি, বেশ কিছু অ্যাপ উঠতি বয়সের কিশোরদের একরকম বিপদের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এই অ্যাপগুলো বন্ধ করার জন্য প্রকৃত সংস্থা হচ্ছে বাংলাদেশে টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন (বিটিআরসি)। এ ছাড়া সংশ্লিষ্ট যারা বিষয়টি মনিটরিং করছেন, তারা চাইলে এসব অ্যাপ বন্ধ করা যেতে পারে। পাশের দেশ ভারতসহ বেশ কয়েকটি দেশে এরই মধ্যে এ ধরনের অ্যাপ বন্ধ হতে দেখেছি। এসব অ্যাপ কিশোরদের নৈতিকতা ধ্বংস করছে। কিশোর-কিশোরীদের বিপদের দিকে পরিচালিত করছে। এ ছাড়া এসব অ্যাপের মাধ্যমে তরুণরা ক্রমান্বয়ে সহিংস হয়ে উঠছে।’ তিনি বলেন, ‘যেহেতু এসব ভিডিও পোস্ট করার জন্য কেউ সরাসরি ফৌজদারি অপরাধে জড়ায় না, এ জন্য আমরা প্রাথমিকভাবে এসব কিশোর-তরুণের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছি না।’