ইন্টারনেট স্বাভাবিক হতে আরও লাগবে ২৪ ঘণ্টা
- প্রকাশের সময় : ০৯:৪৮:৫০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৩
- / ৫৪ বার পঠিত
হককথা ডেস্ক : মহাখালীর খাজা টাওয়ারে বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) বিকালে আগুন লাগার ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্রডব্যান্ড (উচ্চগতি) ইন্টারনেট সেবা স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। দেশের মোট ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর (১ কোটি ২১ লাখ ৫০ হাজার) মধ্যে ৮৫ শতাংশ গ্রাহক পূর্ণগতির ইন্টারনেট সেবা পাচ্ছেন। বাকি ১৫ শতাংশ ব্যবহারকারী ধীরগতির ইন্টারনেট পাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন আইএসপিএবির সভাপতি এমদাদুল হক। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এটাও ঠিক হয়ে যাবে বলে তিনি জানান।
অন্যদিকে আইসিএক্স (ইন্টার কানেকশন এক্সচেঞ্জ) নেটওয়ার্ক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় মোবাইলের ভয়েস কল ও মোবাইল ইন্টারনেট সেবার ৯০ শতাংশ শনিবারের (২৮ অক্টোবর) মধ্যে স্বাভাবিক হবে বলে মোবাইল ফোনগুলোর সংগঠন এমটব সূত্রে জানা গেছে। তবে ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এবং মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপসহ অ্যাপ-নির্ভর যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারে এখনও সমস্যা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
প্রসঙ্গত, মহাখালীর খাজা টাওয়ারে দুটি ডাটা সেন্টার, আইসিএক্স (ইন্টার কানেকশন এক্সচেঞ্জ) এক্সচেঞ্জ, ১০টির বেশি আইআইজি প্রতিষ্ঠান, একাধিক ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের (আইএসপি) অফিস, কলসেন্টার ইত্যাদি ছিল। আগুনে ভবনটির বিশাল ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, বিস্তর ক্ষতি হয়েছে প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর। ঢাকা শহরে এ ধরনের আরও ডাটা সেন্টার থাকলে ক্ষতির পরিমাণ কম হতো বলে মনে করছেন তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবসায়ীরা। তাই ব্যবসায়ীরা সরকারি উদ্যোগে ঢাকায় ডাটা সেন্টার গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন।
ইন্টারনেট পরিস্থিতির হালনাগাদ খবর জানতে চাইলে দেশের ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন আইএসপিএবির সভাপতি এমদাদুল হক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পর সবকিছু (সচল ও কর্মক্ষম ডিভাইস) বের করে এনে অন্য ডাটা সেন্টারে সংযুক্ত করা হয়েছে। ফলে ইন্টারনেটের অচল অংশ সচল হয়েছে। গতি পরিপূর্ণরূপে ফিরে পেতে ২৪ ঘণ্টা সময় লাগতে পারে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের সামনে এখন দুটি বাধা। প্রথমত, এনটিটিএন (ভূগর্ভস্থ ক্যাবল সেবা) ট্রান্সমিশনে ধীরগতি। দ্বিতীয়ত, আমরা লাইভ করে দিয়েছি কিন্তু ক্যাশ সার্ভার আপডেট হতে সময় লাগছে। ক্যাশ সার্ভার আপডেট হতে সাধারণত ২৪ ঘণ্টা সময় লাগে। অনেক সময় ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টাও লেগে যায়। তবে আশা করছি ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই আপডেট হয়ে যাবে।
ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয় করা হয়েছে কি না, জানতে চাইলে এমদাদুল হক বলেন, এখনও ক্ষয়ক্ষতি পুরোপুরি নির্ণয় করা সম্ভব হয়নি। আরও সময় লাগবে। তবে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবসায়ীদের ক্ষতির পরিমাণ শতকোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে ধারণা করেন তিনি।
জানা গেছে, খাজা টাওয়ারে একাধিক আইআইজি (ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে) প্রতিষ্ঠান ছিল। লেভেল থ্রি, ম্যাক্স হাব, আমরা নেটওয়ার্কস, আর্থনেট, ভার্গো, ও উইনস্ট্রিম-সহ ৯ থেকে ১০টি আইআইজি পুরোপুরি শাটডাউন হয়ে গেছে। বড় দু-একটি আইআইজির ব্যাকআপ থাকায় প্রতিষ্ঠানগুলো দ্রুত নিজেদের সামলে নিয়ে গ্রাহকসেবা দিতে শুরু করে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আইআইজি ফোরামের মহাসচিব আহমেদ জুনায়েদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আমরা সরকারের কাছে ঢাকা শহরে চার-পাঁচটি ডাটা সেন্টার চাই। ঢাকার বাইরে প্রতিটি বিভাগে অন্তত একটি করে ডাটা সেন্টার করে দিলে এ ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা কমে যাবে।
তিনি বলেন, ঢাকা শহরে সরকার ডাটা সেন্টার করে দিলে আমরা ব্যবহার করতে পারবো। আমাদের মূল সমস্যা হলো, জায়গা নেই। সরকার যদি আমাদের জায়গা দিয়ে ডাটা সেন্টার তৈরি করে নিতে বলে, তাহলেও বেসরকারিভাবে ডাটা সেন্টার তৈরি করা সম্ভব। যেসব আইআইজি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাদের যদি সেকেন্ডারি বা টারশিয়ারি ডাটা সেন্টারে ব্যাকআপ থাকতো, তাহলে ক্ষয়ক্ষতি যেমন কম হতো, তেমনি তারা দ্রুত সেবায় ফিরতে পারতো। সূত্র : বাংলা ট্রিবিউনের