তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, অর্থনীতির স্বার্থে ইন্টারনেটের দাম কমানো জরুরি। সরকার বারবার দাম কমানোর নির্দেশ দিলেও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অনেক প্রতিষ্ঠান তা গ্রাহ্য করেনি। শিগগির এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের কার্নিভাল হলে রোববার ‘কেমন ইন্টারনেট চাই’ নামের এক সংলাপে এসব কথা বলেন তিনি।
বাংলাদেশ আইসিটি জার্নালিস্ট ফোরাম (বিআইজেএফ) ও এক্সপো মেকার এ সংলাপের আয়োজন করেছে।
বাংলাদেশ আইসিটি র্জানালিস্ট ফোরামের (বিআইজেএফ) সভাপতি মুহম্মদ খানের সভাপতিত্বে এ সংলাপে উপস্থিত ছিলেন গ্রামীণফোনের হেড অফ স্ট্র্যাটেজি এরল্যান্ড প্রেস্টগার্ড, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরেমশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবির, ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (আইএসপিএবি) সাধারণ সম্পাদক মো. ইমদাদুল হক, বাংলাদেশ উইমেন ইন আইটি’র সভাপতি লুনা শামসুদ্দোহা।
সংলাপে সঞ্চালক ছিলেন বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্কের (বিডিওএসএন) সাধারণ সম্পাদক মুনির হাসান।
জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, সরকার গত পাঁচ বছরে আট হাজার কলেজ ও ২৫ হাজার স্কুলে কম্পিউটার ল্যাব তৈরি করেছে। এছাড়া ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত ফাইবার অপটিক্যাল সংযোগের লাইন্সেস দেয়ার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে।
ইন্টারনেট নিয়ে সংলাপে অংশগ্রহণকারী সাধারণ নাগরিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন নীতিনির্ধারক ও সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
এরল্যান্ড প্রেস্টগার্ড বলেন, গ্রামীণফোন সবার জন্য ইন্টারনেট নিয়ে কাজ করছে। সরকারের বেধে দেওয়া লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী দেশে থ্রিজি ছড়িয়ে দিতে আমরা বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি।
সৈয়দ আলমাস কবির বলেন, শুধু ইন্টারনেটের দাম কামলেই হবে না। এজন্য সরকারের উচিত ভ্যাটসহ আনুষঙ্গিক বিষয়গুলোর দাম কমানো।
মোঃ ইমদাদুল হক বলেন, ইন্টারনেটের দাম কামানো হয়নি এই কথা ঠিক না। ইন্টারনেটের দাম আইএসপিএবিও কমিয়েছে।
লুনা শামসুদ্দোহা বলেন, ইন্টারনেটের সঙ্গে দেশের অর্থনীতি জড়িত। সেজন্য আইএসপিদের সেবার মানও বাড়ানো উচিত।
সংলাপে এরল্যান্ড প্রেস্টগার্ডকে প্রশ্ন করা হয়, টেলিটক ১০০ টাকায় ১ জিবি ইন্টারনেট দিতে পারলে গ্রামীণফোন কেন তা দিচ্ছে না।
উত্তরে তিনি জানান, ভালো মানের নেটওয়ার্ক পেতে হলে দাম বেশি দিয়েই ব্যবহার করতে হবে।
সংলাপ উপলক্ষে বিআইজেএফ বিভিন্ন পেশার ৯০০ জন মানুষের ওপর ‘কেমন ইন্টারনেট চাই’ বিষয়ের ওপর একটি জরিপ পরিচালনা করে। জরিপে চারটি প্রশ্ন নিয়ে বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষের কাছে জানতে চাওয়া হয়।
এগুলো হচ্ছে সেবা প্রতিষ্ঠানের কাছে ব্যবহারকারীর প্রত্যাশা, ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সচেতনতা, ইন্টারনেটে বাংলা ব্যবহার ও শিশুদের জন্য ইন্টারনেট। জরিপটি পরিচালনা করেন বাংলাদেশ আইসিটি জার্নালিস্ট ফোরাম ও রুটস বাংলা।
জরিপে ইন্টারনেট সার্ভিস সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তরে ৫৭ শতাংশ বলেছেন, ইন্টারনেট সার্ভিসের মান মোটামুটি। তবে ব্যবহারকারীদের সবাই আরও বেশি গতি চান। এর মধ্যে ৪৬.২ শতাংশ বলছেন, ইন্টারনেটের সংযোগ প্রায়ই সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
৮১ শতাংশ ব্যবহারকারী আরও কম দামে ইন্টারনেট চেয়েছেন। ৫৮ শতাংশ বলেছেন, কীভাবে ইন্টারনেটের মান আরো উন্নত করা যায় সে নির্দেশনা প্রয়োজন। ১৭ শতাংশ নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সেবা চেয়েছেন।