নিউইয়র্ক ১২:২৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

আইনস্টাইন কি মিথ্যেবাদী ছিলেন?

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৫:১৯:৫৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১১ অক্টোবর ২০২৩
  • / ৬০ বার পঠিত

হককথা ডেস্কসর্বকালের অন্যতম সেরা বিজ্ঞানী আইজ্যাক নিউটনের মধ্যে এ প্রবণতা ছিল। তিনি সহকর্মী জন ফ্ল্যামস্টিডের কাছ থেকে পাওয়া অনেক তথ্যের জন্য তাঁর বিখ্যাত বই ‘প্রিন্সিপিয়া ম্যাথমেটিকা’য় ঋণ স্বীকার করেছিলেন। পরে তাঁর সঙ্গে মনোমালিন্য হয়, রেগেমেগে নিউটন বইটির পরবর্তী সংস্করণ থেকে বাদ দেন ফ্লামস্টিডের নাম। কিন্তু মানুষ হিসেবে আলবার্ট আইনস্টাইন মোটেও নিউটনের মতো প্রতিশোধপরায়ণ বা বদমেজাজি ছিলেন না।

তবু কেন অন্য বিজ্ঞানীর ঋণস্বীকার করতে তাঁর এত কার্পন্য ছিল?
ঘটনাটা ১৯০৫ সালের। যেটাকে আইনস্টাইনের এমনকী পদার্থবিজ্ঞানের ইতিহাসে ‘মিরাকল ইয়ার’ বলা হয়। সেই বছরই আপেক্ষিকতার বিশেষ তত্ত্বসহ মোট পাঁচটি প্রবন্ধ প্রকাশ করে সারাবিশ্বে হইচই ফেলে দিয়েছিলেন আইনস্টাইন। বিজ্ঞানের ইতিহাসের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিল সেই তত্ত্বগুলো।

এরমধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো স্পেশাল থিওরি অব রিলেটিভিটি বা বিশেষ আপেক্ষিকতার তত্ত্ব।
এই তত্ত্ব কি আইনস্টাইনের একার আবিষ্কার, হুট করেই বিজ্ঞানে উড়ে এসে জুড়ে বসেছিল?

না। এই তত্ত্বের অন্যতম ভিত্তি ছিল পোলিশ-যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানী আলবার্ট মাইকেলসনের বিখ্যাত পরীক্ষা, যার সাহায্যে ইথারের অসিস্ত্ব বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। এই পরীক্ষা না হলে আইনস্টাইনের পক্ষে স্পেশাল বিশেষ আপেক্ষিকতা প্রণয়ন করা সম্ভব হতো না।

অথচ আইনস্টাইন তার গবেষণাপত্রে এই পরীক্ষার কথা যেমন উল্লেখ করেননি, তেমনি মাইকেলসনকেও ক্রেডিট দেননি। অনেক পরে, মৃত্যুর পাঁচ বছর আগে এর কারণ হিসেবে আইনস্টাইন বলেছিলেন, এ পরীক্ষার কথা তাঁর জানাই ছিল না। তিনি এর কথা জানতে পারেন ১৯০৫ সালে, তাঁর নিজের গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশের পর।

এ কথা কিন্তু সত্যি নয়, তাঁর প্রমাণ ১৮৯৯ সালে স্ত্রী মিলেভা ম্যারিককে লেখা আইনস্টাইনের একটা চিঠি। এই চিঠিতে তিনি লিখেছেন, অধ্যাপক উইলহেম ওয়েনের একটা বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ তাঁকে সাহায্য করেছে ইথার সংক্রান্ত ভাবনা-চিন্তায়।

ওয়েনের ওই প্রবন্ধে কিন্তু মাইকলসনের পরীক্ষার কথাও উল্লেখ ছিল ভালোভাবে। আইনস্টাইন চিঠিতে লিখেছিলেনও সে কথা। তাহলে কি আইনস্টাইন পরে মিথ্যে বলেছিলেন?

হতে পারে। আবার ভুলেও যেতে পারেন, অবশ্য সে সম্ভাবনা কম।

সূত্র : আইনস্টাই ও হাইজেনবার্গ : বিতর্কে কোয়ান্টাম পদার্থবিজ্ঞান/মূল : কনরাড ক্লাইনকেস্ট/অনুবাদ : অমিতাভ চক্রবর্ত্তী, প্রকাশক : পার্চমেন্ট, কলকাতা

সূত্র : কালেরকণ্ঠ

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

আইনস্টাইন কি মিথ্যেবাদী ছিলেন?

প্রকাশের সময় : ০৫:১৯:৫৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১১ অক্টোবর ২০২৩

হককথা ডেস্কসর্বকালের অন্যতম সেরা বিজ্ঞানী আইজ্যাক নিউটনের মধ্যে এ প্রবণতা ছিল। তিনি সহকর্মী জন ফ্ল্যামস্টিডের কাছ থেকে পাওয়া অনেক তথ্যের জন্য তাঁর বিখ্যাত বই ‘প্রিন্সিপিয়া ম্যাথমেটিকা’য় ঋণ স্বীকার করেছিলেন। পরে তাঁর সঙ্গে মনোমালিন্য হয়, রেগেমেগে নিউটন বইটির পরবর্তী সংস্করণ থেকে বাদ দেন ফ্লামস্টিডের নাম। কিন্তু মানুষ হিসেবে আলবার্ট আইনস্টাইন মোটেও নিউটনের মতো প্রতিশোধপরায়ণ বা বদমেজাজি ছিলেন না।

তবু কেন অন্য বিজ্ঞানীর ঋণস্বীকার করতে তাঁর এত কার্পন্য ছিল?
ঘটনাটা ১৯০৫ সালের। যেটাকে আইনস্টাইনের এমনকী পদার্থবিজ্ঞানের ইতিহাসে ‘মিরাকল ইয়ার’ বলা হয়। সেই বছরই আপেক্ষিকতার বিশেষ তত্ত্বসহ মোট পাঁচটি প্রবন্ধ প্রকাশ করে সারাবিশ্বে হইচই ফেলে দিয়েছিলেন আইনস্টাইন। বিজ্ঞানের ইতিহাসের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিল সেই তত্ত্বগুলো।

এরমধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো স্পেশাল থিওরি অব রিলেটিভিটি বা বিশেষ আপেক্ষিকতার তত্ত্ব।
এই তত্ত্ব কি আইনস্টাইনের একার আবিষ্কার, হুট করেই বিজ্ঞানে উড়ে এসে জুড়ে বসেছিল?

না। এই তত্ত্বের অন্যতম ভিত্তি ছিল পোলিশ-যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানী আলবার্ট মাইকেলসনের বিখ্যাত পরীক্ষা, যার সাহায্যে ইথারের অসিস্ত্ব বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। এই পরীক্ষা না হলে আইনস্টাইনের পক্ষে স্পেশাল বিশেষ আপেক্ষিকতা প্রণয়ন করা সম্ভব হতো না।

অথচ আইনস্টাইন তার গবেষণাপত্রে এই পরীক্ষার কথা যেমন উল্লেখ করেননি, তেমনি মাইকেলসনকেও ক্রেডিট দেননি। অনেক পরে, মৃত্যুর পাঁচ বছর আগে এর কারণ হিসেবে আইনস্টাইন বলেছিলেন, এ পরীক্ষার কথা তাঁর জানাই ছিল না। তিনি এর কথা জানতে পারেন ১৯০৫ সালে, তাঁর নিজের গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশের পর।

এ কথা কিন্তু সত্যি নয়, তাঁর প্রমাণ ১৮৯৯ সালে স্ত্রী মিলেভা ম্যারিককে লেখা আইনস্টাইনের একটা চিঠি। এই চিঠিতে তিনি লিখেছেন, অধ্যাপক উইলহেম ওয়েনের একটা বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ তাঁকে সাহায্য করেছে ইথার সংক্রান্ত ভাবনা-চিন্তায়।

ওয়েনের ওই প্রবন্ধে কিন্তু মাইকলসনের পরীক্ষার কথাও উল্লেখ ছিল ভালোভাবে। আইনস্টাইন চিঠিতে লিখেছিলেনও সে কথা। তাহলে কি আইনস্টাইন পরে মিথ্যে বলেছিলেন?

হতে পারে। আবার ভুলেও যেতে পারেন, অবশ্য সে সম্ভাবনা কম।

সূত্র : আইনস্টাই ও হাইজেনবার্গ : বিতর্কে কোয়ান্টাম পদার্থবিজ্ঞান/মূল : কনরাড ক্লাইনকেস্ট/অনুবাদ : অমিতাভ চক্রবর্ত্তী, প্রকাশক : পার্চমেন্ট, কলকাতা

সূত্র : কালেরকণ্ঠ