নিউইয়র্ক ০৩:১২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১০ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

অবশেষে বাঙালী কর্মকর্তা নিয়োগ দিল ফেসবুক

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ১২:৩০:৪৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২০
  • / ৩১ বার পঠিত

সমীর কুমার দে: দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে অবশেষে বাংলাদেশের বিষয় দেখতে একজন বাঙালী কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়েছে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনা করা বাঙালী সাবনাজ রশিদ দিয়া এখন থেকে সিঙ্গাপুর অফিস থেকে বাংলাদেশ বিষয় দেখবেন। পাশাপাশি বাংলাদেশে ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে দেশের কর ও ভ্যাট নীতি অনুসরণ করতেও সম্মত হয়েছে ফেসবুক। বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট ডেস্ক থেকে অভিযোগ গেলে দ্রæত সমাধানেরও আশ্বাস দিয়েছে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ।
সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও পর্নোগ্রাফির ব্যাপারেও সচেতন থাকবে তারা। দীর্ঘ তিন ঘণ্টা ফেসবুক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করার পর ইত্তেফাকের সঙ্গে আলাপকালে টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারে নিরাপত্তা নিশ্চিত করাসহ বাংলাদেশের আইন অসুসরণ করার বিষয়টি বৈঠকে গুরুত্ব পেয়েছে। গত ৭ সেপ্টেম্বর সোমবার ফেসবুকের সংশ্লিষ্ট কয়েক জন কর্মকর্তার সঙ্গে ভার্চুয়াল এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ফেসবুকের পক্ষে বৈঠকে অংশ নেন ফেসবুকের হেড অব সেফটি বিক্রম সেন, পাবলিক পলিসিবিষয়ক পরিচালক অশ্বিনী রানা, ফেসবুকের নবনিযুক্ত বাংলাদেশ-বিষয়ক কর্মকর্তা সাবনাজ রশিদ দিয়া এবং ফেসবুক মোবাইল পার্টনার বিভাগের ইরাম ইকবাল। এছাড়া বাংলাদেশের পক্ষে মন্ত্রী ছাড়াও বিটিআরসির মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোস্তাফা কামাল, এনবিআর সদস্য (ট্যাক্স পলিসি) আলমগীর হোসেনসহ কয়েক জন কর্মকর্তা।
মোস্তাফা জব্বার বলেন, আলোচনায় ফেসবুকের ব্যবহার নিয়ে বাংলাদেশের রাষ্ট্রের, জনগণের এবং সামাজিক নিরাপত্তাসংক্রান্ত উদ্বেগের বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। জবাবে অত্যন্ত ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে ফেসবুক কর্মকর্তারা আলোচনা করেছেন। আলোচনায় তিনি ফেসবুক কর্মকর্তাদের জানান, বাংলাদেশে ফেসবুক ব্যবহার নিয়ে অপপ্রচার ও নিরাপত্তাসংক্রান্ত বিষয়ের ধরন অন্যান্য দেশের চেয়ে আলাদা। কারণ, বাংলাদেশে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তি আছে এবং তারা এখনো রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে নানা ধরনের অপপ্রচারে লিপ্ত। এখন তারা অপপ্রচারের জন্য ফেসবুক ব্যবহার করছে। ফেসবুককে বাংলাদেশের আইন ও বিধিবিধান মেনে চলা ছাড়াও ব্যক্তিগত নিরাপত্তা, গুজব বা অপপ্রচার, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, সাম্প্রদায়িকতা, রাষ্ট্রদ্রোহিতা, পর্নোগ্রাফি ও বাংলাদেশের সামাজিক, সাংস্কৃতিক মূল্যবোধবিরোধী তথ্য প্রচারে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। এছাড়া বাংলাদেশের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ বাংলাদেশের সব প্রচলিত আইন ও বিধিবিধান মেনে চলা ফেসবুকের দায়িত্ব।
বৈঠকে ফেসবুকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বৈশ্বিক ‘কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড’ অনুযায়ী পরিচালিত হয়। এখন ফেসবুক বিভিন্ন দেশের স্থানীয় সংস্কৃতি, রীতি ও মূল্যবোধের বিষয়টিতে আরো বেশি গুরুত্ব দেওয়ার কথা ভাবছে। বাংলাদেশের উদ্বেগের বিষয়গুলো তারা যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করে যথাযথ পদক্ষেপ নেবে। এই কারণে বাংলাদেশের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে একজন বাঙালী কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
প্রায় তিন ঘণ্টার এই বৈঠকে নানা বিষয়ে আলোচনার মধ্যে নাগরিক সুরক্ষায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ় প্রত্যয়ের বিষয়টি প্রধান্য পায়। কনটেন্ট বিষয়ে বিদ্যমান যে কোনো সমস্যা দ্রæত সমাধানের আশ্বাসও মিলেছে। ফেসবুক-সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে প্রতি মাসে অন্তত একটি করে বৈঠক করার ব্যাপারে সম্মত হয়েছে।
এর আগে ২০১৯ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর ঢাকায় এবং ২০১৮ সালে ফেব্রæয়ারীকে স্পেনের বার্সেলোনায় ওয়ার্ল্ড মোবাইল কংগ্রেসের সাইড লাইনে ফেসবুকের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এরপর মন্ত্রী ঢাকা ও দেশের বাইরে একাধিকবার ফেসবুকের সঙ্গে বৈঠক করেন। তিনি ২০১৮ সাল থেকে নিয়মিত ফেসবুক কর্মকর্তাদের সঙ্গে অব্যাহত যোগাযোগও রক্ষা করেন। (দৈনিক ইত্তেফাক)

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

অবশেষে বাঙালী কর্মকর্তা নিয়োগ দিল ফেসবুক

প্রকাশের সময় : ১২:৩০:৪৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২০

সমীর কুমার দে: দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে অবশেষে বাংলাদেশের বিষয় দেখতে একজন বাঙালী কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়েছে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনা করা বাঙালী সাবনাজ রশিদ দিয়া এখন থেকে সিঙ্গাপুর অফিস থেকে বাংলাদেশ বিষয় দেখবেন। পাশাপাশি বাংলাদেশে ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে দেশের কর ও ভ্যাট নীতি অনুসরণ করতেও সম্মত হয়েছে ফেসবুক। বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট ডেস্ক থেকে অভিযোগ গেলে দ্রæত সমাধানেরও আশ্বাস দিয়েছে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ।
সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও পর্নোগ্রাফির ব্যাপারেও সচেতন থাকবে তারা। দীর্ঘ তিন ঘণ্টা ফেসবুক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করার পর ইত্তেফাকের সঙ্গে আলাপকালে টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারে নিরাপত্তা নিশ্চিত করাসহ বাংলাদেশের আইন অসুসরণ করার বিষয়টি বৈঠকে গুরুত্ব পেয়েছে। গত ৭ সেপ্টেম্বর সোমবার ফেসবুকের সংশ্লিষ্ট কয়েক জন কর্মকর্তার সঙ্গে ভার্চুয়াল এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ফেসবুকের পক্ষে বৈঠকে অংশ নেন ফেসবুকের হেড অব সেফটি বিক্রম সেন, পাবলিক পলিসিবিষয়ক পরিচালক অশ্বিনী রানা, ফেসবুকের নবনিযুক্ত বাংলাদেশ-বিষয়ক কর্মকর্তা সাবনাজ রশিদ দিয়া এবং ফেসবুক মোবাইল পার্টনার বিভাগের ইরাম ইকবাল। এছাড়া বাংলাদেশের পক্ষে মন্ত্রী ছাড়াও বিটিআরসির মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোস্তাফা কামাল, এনবিআর সদস্য (ট্যাক্স পলিসি) আলমগীর হোসেনসহ কয়েক জন কর্মকর্তা।
মোস্তাফা জব্বার বলেন, আলোচনায় ফেসবুকের ব্যবহার নিয়ে বাংলাদেশের রাষ্ট্রের, জনগণের এবং সামাজিক নিরাপত্তাসংক্রান্ত উদ্বেগের বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। জবাবে অত্যন্ত ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে ফেসবুক কর্মকর্তারা আলোচনা করেছেন। আলোচনায় তিনি ফেসবুক কর্মকর্তাদের জানান, বাংলাদেশে ফেসবুক ব্যবহার নিয়ে অপপ্রচার ও নিরাপত্তাসংক্রান্ত বিষয়ের ধরন অন্যান্য দেশের চেয়ে আলাদা। কারণ, বাংলাদেশে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তি আছে এবং তারা এখনো রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে নানা ধরনের অপপ্রচারে লিপ্ত। এখন তারা অপপ্রচারের জন্য ফেসবুক ব্যবহার করছে। ফেসবুককে বাংলাদেশের আইন ও বিধিবিধান মেনে চলা ছাড়াও ব্যক্তিগত নিরাপত্তা, গুজব বা অপপ্রচার, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, সাম্প্রদায়িকতা, রাষ্ট্রদ্রোহিতা, পর্নোগ্রাফি ও বাংলাদেশের সামাজিক, সাংস্কৃতিক মূল্যবোধবিরোধী তথ্য প্রচারে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। এছাড়া বাংলাদেশের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ বাংলাদেশের সব প্রচলিত আইন ও বিধিবিধান মেনে চলা ফেসবুকের দায়িত্ব।
বৈঠকে ফেসবুকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বৈশ্বিক ‘কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড’ অনুযায়ী পরিচালিত হয়। এখন ফেসবুক বিভিন্ন দেশের স্থানীয় সংস্কৃতি, রীতি ও মূল্যবোধের বিষয়টিতে আরো বেশি গুরুত্ব দেওয়ার কথা ভাবছে। বাংলাদেশের উদ্বেগের বিষয়গুলো তারা যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করে যথাযথ পদক্ষেপ নেবে। এই কারণে বাংলাদেশের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে একজন বাঙালী কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
প্রায় তিন ঘণ্টার এই বৈঠকে নানা বিষয়ে আলোচনার মধ্যে নাগরিক সুরক্ষায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ় প্রত্যয়ের বিষয়টি প্রধান্য পায়। কনটেন্ট বিষয়ে বিদ্যমান যে কোনো সমস্যা দ্রæত সমাধানের আশ্বাসও মিলেছে। ফেসবুক-সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে প্রতি মাসে অন্তত একটি করে বৈঠক করার ব্যাপারে সম্মত হয়েছে।
এর আগে ২০১৯ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর ঢাকায় এবং ২০১৮ সালে ফেব্রæয়ারীকে স্পেনের বার্সেলোনায় ওয়ার্ল্ড মোবাইল কংগ্রেসের সাইড লাইনে ফেসবুকের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এরপর মন্ত্রী ঢাকা ও দেশের বাইরে একাধিকবার ফেসবুকের সঙ্গে বৈঠক করেন। তিনি ২০১৮ সাল থেকে নিয়মিত ফেসবুক কর্মকর্তাদের সঙ্গে অব্যাহত যোগাযোগও রক্ষা করেন। (দৈনিক ইত্তেফাক)