নিউইয়র্ক ০৮:০০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

শেষবারের মতো জাতিসংঘে ভাষণ দিলেন জো বাইডেন

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০১:৫৪:২৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • / ১৫৮ বার পঠিত

বিশেষ প্রতিনিধি: জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশনে শেষবারের মতো ভাষণ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ভাষণে নিজের ক্যারিয়ারসহ বিভিন্ন বৈশ্বিক সমস্যা ও বৈশ্বিক রাজনীতি নিয়ে কথা বলেছেন তিনি। কয়েক দশকের দীর্ঘ রাজনৈতিক ক্যারিয়ার, স্নায়ুযুদ্ধ, মধ্যপ্রাচ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা এবং ভিয়েতনামের সাথে আমেরিকার যুদ্ধের কথা তুলে ধরে নিজের বক্তব্যের সূচনা করেন বাইডেন। তিনি বলেন, দীর্ঘ ক্যারিয়ারে আমি যা দেখেছি এবং কয়েক দশক ধরে আমরা একসাথে যা করেছি- তার প্রেক্ষিতে বলতে পারি ‘আমি আশাবাদী’। ভিয়েতনামের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, আগের চেয়ে পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে।
ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ নিয়ে বাইডেন বলেন, পুতিনের যুদ্ধ ব্যর্থ হয়েছে। এবার বিশ্বকে বেছে নিতে হবে যে, বিশ্ববাসী ইউক্রেনকে সমর্থন করবে না কি এই আগ্রাসন চালানোর পক্ষে থাকবে। ইসরায়েল-হামাস ইস্যুতে মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ও স্থিতিশীলতা আনতে কাজ যুক্তরাষ্ট্র কাজ করছে উল্লেখ করে বাইডেন বলেন, তবে আমাদের ৭ অক্টোবরের বর্বরতার কথা ভুলে গেলেও চলবে না। তিনি আরও বলেন, এখন সময় এসেছে যুদ্ধবিরতির শর্তাবলী চূড়ান্ত করার, জিম্মিদের ফিরিয়ে আনার এবং হামাসের কবল থেকে মুক্ত হয়ে ইসরায়েল ও গাজার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার। লেবানন-ইসরায়েল ইস্যুতে বাইডেন বলেন, এই দ্বন্দ্ব যুদ্ধ ডেকে আনলে ফলাফলে কোনো পক্ষেরই বিশেষ স্বার্থ নেই।
নিজের প্রেসিডেন্ট পদে প্রার্থীতা বাতিল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ভুলে গেলে চলবে না, ক্ষমতায় থাকার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ কিছু আছে। আর তা হচ্ছে, আমার জনগণ। এসব ছাড়াও জলবায়ু, জাতিসংঘ পুনর্গঠন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স) নিয়েও কথা বলেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
নেলসন ম্যান্ডেলার একটি উদ্ধৃতি দিয়ে ভাষণ শেষ করেছেন বাইডেন। উদ্ধৃতিটি হলো- ‘কোনো কাজ সম্পন্ন হওয়ার আগ পর্যন্ত সেই কাজ অসম্ভব মনে হয়।’ এরপর তিনি বলেন, ‘একসঙ্গে কাজ করলে আমাদের সামর্থ্যের বাইরে কিছুই নেই। চলুন একসঙ্গে কাজ করি।’
যুদ্ধ জিইয়ে রাখলেন বাইডেন!
এদিকে জাতিসংঘের মঞ্চে প্রেসিডেন্ট হিসেবে শেষ ভাষণে জো বাইডেন বিশ্বকে আরও বিভাজিত করে মধ্যপ্রাচ্যকে অস্থিতিশীল করে যুদ্ধ জিইয়ে রাখলেন। তার শাসনামলেই দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছে ইউরোপ। মধ্যপ্রাচ্যও বড় সংঘাতের মুখে দাঁড়িয়ে। তবে জাতিসংঘের মঞ্চে দাঁড়িয়ে আবারও ফাঁকা বুলি ছুড়লেন বাইডেন। ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধ ব্যর্থ হয়েছে আর ইসরায়েল-লেবাননের মধ্যে সমস্যা এখনো কূটনীতির মাধ্যমে সমাধান সম্ভব বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
ক্ষমতার চেয়ার ছাড়তে হবে আর মাত্র চার মাস পর। তবে মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশনের মঞ্চে দাঁড়িয়ে বিশ্বকে নতুন কিছু উপহার দিতে পারলেন না বাইডেন। এ দিন তিনি ইউক্রেন, গাজা ও সুদানের মতো বৈশ্বিক সংকট নিয়ে কথা বলেছেন। কিন্তু তার প্রেসিডেন্সিতেই বিশ্বে নতুন করে শুরু হওয়া এসব সংকটের সমাধানের কোনো পথ বাতলে দিতে পারেননি তিনি।
দুই বছর ধরে ইউরোপের প্রাণকেন্দ্রে যুদ্ধ চলছে। গাজায়ও ইসরায়েলী আগ্রাসনের এক বছর হতে চলল। নতুন করে লেবাননের প্রতিরোধ যোদ্ধাদের সঙ্গে বড় সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছে ইসরায়েল। অথচ, এসব সংঘাতের সমাধান না করে, প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে ইসরায়েলকে মদদ দিয়ে গেছেন বাইডেন। তার আসকারা পেয়েই ইসরায়েল আজ বুক ফুলিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে একের পর এক যুদ্ধ বাধাচ্ছে।
তবে সেদিকে যেন মোটেও দৃষ্টি নেই ৮১ বছর বয়সী বাইডেনের। ১৯৩ সদস্যের জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে সদস্য রাষ্ট্রগুলোর উদ্দেশে লেবানন ইস্যুতে বাইডেন বলেন, সর্বাত্মক যুদ্ধ কারও কাম্য নয়। তারপরও যদি এ ধরনের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়, এখনো কূটনীতিক সমাধান সম্ভব। জোর করতালির মধ্যেই বাইডেন ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামীদের গাজার যুদ্ধবিরতি নিয়ে চুক্তিতে পৌঁছানোর আহবান জানান।

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

শেষবারের মতো জাতিসংঘে ভাষণ দিলেন জো বাইডেন

প্রকাশের সময় : ০১:৫৪:২৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪

বিশেষ প্রতিনিধি: জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশনে শেষবারের মতো ভাষণ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ভাষণে নিজের ক্যারিয়ারসহ বিভিন্ন বৈশ্বিক সমস্যা ও বৈশ্বিক রাজনীতি নিয়ে কথা বলেছেন তিনি। কয়েক দশকের দীর্ঘ রাজনৈতিক ক্যারিয়ার, স্নায়ুযুদ্ধ, মধ্যপ্রাচ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা এবং ভিয়েতনামের সাথে আমেরিকার যুদ্ধের কথা তুলে ধরে নিজের বক্তব্যের সূচনা করেন বাইডেন। তিনি বলেন, দীর্ঘ ক্যারিয়ারে আমি যা দেখেছি এবং কয়েক দশক ধরে আমরা একসাথে যা করেছি- তার প্রেক্ষিতে বলতে পারি ‘আমি আশাবাদী’। ভিয়েতনামের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, আগের চেয়ে পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে।
ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ নিয়ে বাইডেন বলেন, পুতিনের যুদ্ধ ব্যর্থ হয়েছে। এবার বিশ্বকে বেছে নিতে হবে যে, বিশ্ববাসী ইউক্রেনকে সমর্থন করবে না কি এই আগ্রাসন চালানোর পক্ষে থাকবে। ইসরায়েল-হামাস ইস্যুতে মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ও স্থিতিশীলতা আনতে কাজ যুক্তরাষ্ট্র কাজ করছে উল্লেখ করে বাইডেন বলেন, তবে আমাদের ৭ অক্টোবরের বর্বরতার কথা ভুলে গেলেও চলবে না। তিনি আরও বলেন, এখন সময় এসেছে যুদ্ধবিরতির শর্তাবলী চূড়ান্ত করার, জিম্মিদের ফিরিয়ে আনার এবং হামাসের কবল থেকে মুক্ত হয়ে ইসরায়েল ও গাজার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার। লেবানন-ইসরায়েল ইস্যুতে বাইডেন বলেন, এই দ্বন্দ্ব যুদ্ধ ডেকে আনলে ফলাফলে কোনো পক্ষেরই বিশেষ স্বার্থ নেই।
নিজের প্রেসিডেন্ট পদে প্রার্থীতা বাতিল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ভুলে গেলে চলবে না, ক্ষমতায় থাকার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ কিছু আছে। আর তা হচ্ছে, আমার জনগণ। এসব ছাড়াও জলবায়ু, জাতিসংঘ পুনর্গঠন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স) নিয়েও কথা বলেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
নেলসন ম্যান্ডেলার একটি উদ্ধৃতি দিয়ে ভাষণ শেষ করেছেন বাইডেন। উদ্ধৃতিটি হলো- ‘কোনো কাজ সম্পন্ন হওয়ার আগ পর্যন্ত সেই কাজ অসম্ভব মনে হয়।’ এরপর তিনি বলেন, ‘একসঙ্গে কাজ করলে আমাদের সামর্থ্যের বাইরে কিছুই নেই। চলুন একসঙ্গে কাজ করি।’
যুদ্ধ জিইয়ে রাখলেন বাইডেন!
এদিকে জাতিসংঘের মঞ্চে প্রেসিডেন্ট হিসেবে শেষ ভাষণে জো বাইডেন বিশ্বকে আরও বিভাজিত করে মধ্যপ্রাচ্যকে অস্থিতিশীল করে যুদ্ধ জিইয়ে রাখলেন। তার শাসনামলেই দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছে ইউরোপ। মধ্যপ্রাচ্যও বড় সংঘাতের মুখে দাঁড়িয়ে। তবে জাতিসংঘের মঞ্চে দাঁড়িয়ে আবারও ফাঁকা বুলি ছুড়লেন বাইডেন। ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধ ব্যর্থ হয়েছে আর ইসরায়েল-লেবাননের মধ্যে সমস্যা এখনো কূটনীতির মাধ্যমে সমাধান সম্ভব বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
ক্ষমতার চেয়ার ছাড়তে হবে আর মাত্র চার মাস পর। তবে মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশনের মঞ্চে দাঁড়িয়ে বিশ্বকে নতুন কিছু উপহার দিতে পারলেন না বাইডেন। এ দিন তিনি ইউক্রেন, গাজা ও সুদানের মতো বৈশ্বিক সংকট নিয়ে কথা বলেছেন। কিন্তু তার প্রেসিডেন্সিতেই বিশ্বে নতুন করে শুরু হওয়া এসব সংকটের সমাধানের কোনো পথ বাতলে দিতে পারেননি তিনি।
দুই বছর ধরে ইউরোপের প্রাণকেন্দ্রে যুদ্ধ চলছে। গাজায়ও ইসরায়েলী আগ্রাসনের এক বছর হতে চলল। নতুন করে লেবাননের প্রতিরোধ যোদ্ধাদের সঙ্গে বড় সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছে ইসরায়েল। অথচ, এসব সংঘাতের সমাধান না করে, প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে ইসরায়েলকে মদদ দিয়ে গেছেন বাইডেন। তার আসকারা পেয়েই ইসরায়েল আজ বুক ফুলিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে একের পর এক যুদ্ধ বাধাচ্ছে।
তবে সেদিকে যেন মোটেও দৃষ্টি নেই ৮১ বছর বয়সী বাইডেনের। ১৯৩ সদস্যের জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে সদস্য রাষ্ট্রগুলোর উদ্দেশে লেবানন ইস্যুতে বাইডেন বলেন, সর্বাত্মক যুদ্ধ কারও কাম্য নয়। তারপরও যদি এ ধরনের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়, এখনো কূটনীতিক সমাধান সম্ভব। জোর করতালির মধ্যেই বাইডেন ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামীদের গাজার যুদ্ধবিরতি নিয়ে চুক্তিতে পৌঁছানোর আহবান জানান।