ভবিষ্যৎ নির্মাণে নারীর কর্মক্ষেত্র প্রসারিত করতে হবে : প্রধানমন্ত্রী
- প্রকাশের সময় : ০৮:৪২:৫৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬
- / ১০১৯ বার পঠিত
নিউইয়র্ক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নারীদের জন্য টেকসই ভবিষ্যৎ নির্মাণের লক্ষ্যে সুযোগ সম্প্রসারণ এবং কর্মক্ষেত্রকে প্রসারিত রাখতে বিশ্ব নেতৃবৃন্দের প্রতি আহবান জানিয়েছেন। তিনি দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, যে সমাজ নারীর অংশগ্রহণ এবং ক্ষমতায়নের জন্য সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়, সে সমাজে উগ্র চরমপন্থার কোনো স্থান নেই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘ সদর দফতরের কনফারেন্স রুমে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭১তম অধিবেশনে ‘ওমেনস লিডারশিপ অ্যান্ড জেন্ডার পার্সপেক্টিভ অন প্রিভেন্টিং অ্যান্ড কাউন্টারিং ভায়োলেন্স এক্সট্রিমিজম’ বিষয়ক সাইড ইভেন্টে ভাষণকালে এ কথা বলেন। নরওয়ের প্রধানমন্ত্রী এরনা সোলবার্গের আমন্ত্রণে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার বিশ্বাস যে সমাজ নারীর অংশগ্রহণ ও ক্ষমতায়নের ক্ষেত্র সৃষ্টি করে সেখানে সহিংস চরমপন্থার কোনো জায়গা নেই। আমরা অবশ্যই টেকসই ভবিষ্যৎ নির্মাণের জন্য ক্ষেত্র আরও প্রসারিত করা অব্যাহত রাখব। সন্ত্রাসবাদ ও সহিংস চরমপন্থা সভ্য সমাজকে লাঞ্ছিত করছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, তারা শান্তি ও নিরাপত্তা, টেকসই উন্নয়ন এবং মানুষের প্রতি মর্যাদাকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। আমরা অবশ্যই আমাদের অবস্থান থেকে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করব। আমরা যে সমাধানই চাই, নারীরা তাতে অবশ্যই অংশ নেবে। তিনি বলেন, এই সমস্যা সমাধানে আমাদের একযোগে কাজ করতে হবে। আমরা যে সমাধানের পথেই যাই না কেন, নারীদের সেখানে অংশীদারিত্ব থাকতে হবে।
তিনি বলেন, আমি আমাদের মায়েদের এক একজনকে তাদের সন্তানদের জন্য রোল মডেল হিসেবে নিজেকে উপস্থাপনের জন্য উৎসাহিত করে থাকি। দেশের প্রাইমারি স্কুলগুলোর শিক্ষকদের শতকরা ৬০ শতাংশ নারী শিক্ষক এবং যারা এই সমাজে বিশেষ করে শিশুতোষ সমাজে মূল্যবোধ এবং সংযমের আলো ছড়াচ্ছে। এক্ষেত্রে নারীদের অধিকার আদায়ে জাতীয় সংসদের নারী সদস্যদের ভূমিকার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি এটা দেখে খুশি যে, সহিংস চরমপন্থা রোধে জাতিসংঘ মহাসচিব নারীর ভূমিকা ও নেতৃত্ব উপলব্ধি করে নতুন কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি বিশ্বাস করি গোঁড়ামি প্রবণতা ও সহিংস চরমপন্থা রোধে সবার জন্য শিক্ষা বিশেষ করে মেয়েদের জন্য শিক্ষা একটি শক্তিশালী হাতিয়ার। আমি আমাদের মেয়েদের তাদের সন্তানদের সামনে আদর্শ মডেল ও পরম বন্ধু হিসেবে ভূমিকা পালনে অনুপ্রাণিত করছি। প্রধানমন্ত্রী এ সময় জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতির প্রসঙ্গসহ তার সরকারের গৃহীত বিভিন্ন নারীর উন্নয়নমূলক পদক্ষেপের তথ্য তুলে ধরে বলেন, ধর্মীয় সন্ত্রাসবাদ ইস্যু থেকে সব সময়ই নারীদের একটু সরিয়ে রাখার প্রবণতা লক্ষ করা যায়। তিনি বলেন, আমাদের কাছে সন্ত্রাসীর একটাই পরিচয়, সে সন্ত্রাসী। সন্ত্রাসীর কোনো দেশ, জাতি, ধর্ম, বর্ণ, গোত্র নেই।
শেখ হাসিনা বলেন, সংঘাত নিরসনে এবং শান্তি প্রতিষ্ঠায় সোচ্চার হতে সরকার তৃণমূল পর্যায়ে নারীদের দক্ষতা উন্নয়নে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার গ্লোবাল কমিউনিটি এনগেজমেন্ট অ্যান্ড রেজিলেন্স ফান্ডের (জিসিআরআইএফ) সঙ্গে প্রকল্প গ্রহণ করেছে। সেখানে নারী সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়নে অংশ নিতে পারবেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী এ সময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়, এলজিআরডি ও সমবায়মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন, প্রবাসী কল্যাণ এবং বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি, জ্বালানি উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী, শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু, পররাষ্ট্র্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ডা. দীপু মনি।