নিউইয়র্ক ০৮:৩৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

জলবায়ু সম্মেলনে শেখ হাসিনা : জোরালো প্রচেষ্টায় সংকট মোকাবেলা

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ১২:০৯:০৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২১
  • / ৫০ বার পঠিত

হককথা ডেস্ক: যুুক্তরাষ্ট্র আয়োজিত বৈশ্বিক জলবায়ু সম্মেলনে বৈশ্বিক সংকট মোকাবেলায় জোরালো সম্মিলিত প্রচেষ্টার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি তাঁর বক্তব্যে চার দফা দাবি তুলে ধরেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের আমন্ত্রণে বিশ্বনেতাদের দুই দিনব্যাপী ওই সম্মেলনের প্রথম দিন ছিল বৃহস্পতিবার (২২ এপ্রিল)। ওই সম্মেলনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ভার্চুয়ালি যোগ দেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্মেলন আয়োজন এবং তাঁকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রহ এবং প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে ফেরার ভূয়সী প্রশংসা করে বাংলাদেশ।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সীমিত সম্পদ এবং জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশ হওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশ অভিযোজন ও প্রশমনের বৈশ্বিক নেতা হয়ে উঠেছে। প্রতিবছর আমরা জলবায়ু অভিযোজন ও খাপ খাইয়ে নেওয়ার উদ্যোগ হিসেবে প্রায় ৫০০ কোটি ডলার ব্যয় করি। এটি আমাদের জিডিপির প্রায় আড়াই শতাংশ। মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে আমরা আশ্রয় দিয়েছি। এটি আমাদের ঝুঁকি আরো বাড়িয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ স্বল্প কার্বন উৎপাদনের পথ অনুসরণ করছে। আমাদের জাতীয়ভাবে নির্ধারিত লক্ষ্য (এনডিসি) ও অভিযোজন লক্ষ্য বাড়াতে আমরা প্রশমন প্রক্রিয়ায় বিদ্যমান জ্বালানি, শিল্প ও পরিবহন খাতের পাশাপাশি নতুন নতুন খাত অন্তর্ভুক্ত করেছি।’
প্রধানমন্ত্রী এ বছরের জুন মাসের মধ্যে পরিমিত উচ্চাভিলাষী এনডিসি পরিকল্পনা দেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ‘মুজিববর্ষ’ পালনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আমরা কম কার্বনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য ‘মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা’ প্রণয়ন করেছি। আমরা দেশজুড়ে তিন কোটি বৃক্ষ রোপণ করছি।”
শেখ হাসিনা বলেন, “ক্লাইমেট ভালনারেল ফোরাম (সিভিএফ)’ ও ‘ভালনারেল টুয়েন্টি গ্রæপ (ভি২০)’ এর সভাপতি হিসেবে বাংলাদেশের প্রধান লক্ষ্য জলবায়ুর ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর স্বার্থ রক্ষা করা।” বাংলাদেশে ‘গেøাবাল সেন্টার অব অ্যাডাপটেশনের’ দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক অফিসের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ওই অফিস স্থানীয়ভাবে অভিযোজন সমাধানগুলোকে উৎসাহিত করছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কভিড-১৯ মহামারি আমাদের স্মরণ করিয়ে দিয়েছে যে কেবল জোরালো সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমেই বৈশ্বিক সংকট মোকাবেলা করা সম্ভব। ‘কনফারেন্স অব দ্য পার্টিসের (কপ)’ দায়িত্বশীল সদস্য ও সিভিএফের সভাপতি হিসেবে প্রধানমন্ত্রী চারটি দাবি তুলে ধরেন। এর প্রথমটি হলো বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি দেড় ডিগ্রিতে সীমিত রাখতে উন্নত দেশগুলোর কার্বন নিঃসরণের বিষয়ে শিগগিরই উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনা প্রণয়ন। তিনি বলেন, প্রশমনব্যবস্থায়ও উন্নত রাষ্ট্রগুলোর দৃষ্টি দেওয়া উচিত।
প্রধানমন্ত্রীর দ্বিতীয় দাবিটি হলো জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে বছরে ১০০ বিলিয়ন ডলার সংগ্রহ নিশ্চিত করা। ওই অর্থের অর্ধেক অভিযোজন ও বাকিটা প্রশমনে ব্যয় করা।
প্রধানমন্ত্রীর তৃতীয় দাবি হলো জলবায়ু অর্থায়ন ও উদ্ভাবনে বড় অর্থনীতি, আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বেসরকারি খাতগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে। চতুর্থ দাবি হিসেবে প্রধানমন্ত্রী ‘গ্রিন ইকোনমি’ (সবুজ অর্থনীতি) ও কার্বনমুক্ত প্রযুক্তির ওপর গুরুত্ব দেওয়া এবং রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে প্রযুক্তি স্থানান্তরের ব্যবস্থা করতে হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টেনি ব্লিনকেন ও প্রেডিসেন্টের জলবায়ুবিষয়ক বিশেষ দূত জন কেরি হোয়াইট হাউসে বসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওই বক্তব্য শোনেন।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস ও প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সম্মেলন উদ্বোধন করেন। জো বাইডেন তাঁর বক্তব্যে ২০৩০ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন ৫০ শতাংশ থেকে ৫২ শতাংশ কমানোর অঙ্গীকার করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা একটি রাষ্ট্র হিসেবে নেতৃত্ব দিচ্ছি। পুরো পৃথিবীর জন্য শুধু সমৃদ্ধই নয়, স্বাস্থ্যকর, পরিচ্ছন্ন ও ন্যায্য অর্থনীতি গড়ার উদ্যোগ নিতে পারলেই আমরা এটি করতে পারব।’
চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিনপিং ‘সবুজ উন্নয়নের’ অঙ্গীকার করেন। তিনি বলেন, ২০৬০ সালের মধ্যে চীন ‘কার্বন নিউট্রাল’ দেশ হওয়ার লক্ষ্য অর্জন করবে। শি চিনপিং বলেন, ‘সবুজ পর্বত হলো স্বর্ণের পর্বত। পরিবেশ সুরক্ষা উৎপাদনশীলতাকে সুরক্ষা দিতে হবে। পরিবেশের উন্নতি করতে হলে উৎপাদনশীলতারও উন্নতি করতে হবে।’
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ২০৩৫ সালের মধ্যে তাঁর দেশের কার্বন নির্গমন ৭৮ শতাংশ কমানোর লক্ষ্য নির্ধারণ করেন। জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইয়োশিহিদে সুগা ২০৩০ সালের মধ্যে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন ৪৬ শতাংশ কমানোর লক্ষ্যের কথা জানান।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, মানবতার জন্য জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় দ্রæত ও বড় পরিসরে সুনির্দিষ্ট উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন। তিনি বলেন, ভারত তার দায়িত্ব পালন করছে। উন্নয়ন চ্যালেঞ্জ সত্তে¡ও ভারত পরিচ্ছন্নতা জ্বালানি, দক্ষ জ্বালানি, বনায়ন ও জীববৈচিত্র্যের ক্ষেত্রে অনেক সাহসী পদক্ষেপ নিয়েছে। মোদি বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে ৪৫০ গিগাওয়াট নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদনের লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে ভারত।
সম্মেলনে জাতিসংঘ মহাসচিব আšেন্তনিও গুতেরেস, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো, ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং ছাড়াও আর্জেন্টিনা, অ্যান্টিগুয়া ও বারমুডা, অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল, চিলি, কলম্বিয়া, ইউরোপীয় কমিশন, ফ্রান্স, গ্যাবন, জার্মানি, ইন্দোনেশিয়া, ইতালি, মার্শাল দ্বীপপুঞ্জ, মেক্সিকো, দক্ষিণ কোরিয়া, রাশিয়া, সৌদি আরব, দক্ষিণ আফ্রিকা ও তুরস্কের শীর্ষ নেতারা বক্তব্য দেন। শুক্রবার সন্ধ্যায় সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনের আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে। (দৈনিক কালের কন্ঠ)

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

জলবায়ু সম্মেলনে শেখ হাসিনা : জোরালো প্রচেষ্টায় সংকট মোকাবেলা

প্রকাশের সময় : ১২:০৯:০৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২১

হককথা ডেস্ক: যুুক্তরাষ্ট্র আয়োজিত বৈশ্বিক জলবায়ু সম্মেলনে বৈশ্বিক সংকট মোকাবেলায় জোরালো সম্মিলিত প্রচেষ্টার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি তাঁর বক্তব্যে চার দফা দাবি তুলে ধরেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের আমন্ত্রণে বিশ্বনেতাদের দুই দিনব্যাপী ওই সম্মেলনের প্রথম দিন ছিল বৃহস্পতিবার (২২ এপ্রিল)। ওই সম্মেলনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ভার্চুয়ালি যোগ দেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্মেলন আয়োজন এবং তাঁকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রহ এবং প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে ফেরার ভূয়সী প্রশংসা করে বাংলাদেশ।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সীমিত সম্পদ এবং জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশ হওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশ অভিযোজন ও প্রশমনের বৈশ্বিক নেতা হয়ে উঠেছে। প্রতিবছর আমরা জলবায়ু অভিযোজন ও খাপ খাইয়ে নেওয়ার উদ্যোগ হিসেবে প্রায় ৫০০ কোটি ডলার ব্যয় করি। এটি আমাদের জিডিপির প্রায় আড়াই শতাংশ। মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে আমরা আশ্রয় দিয়েছি। এটি আমাদের ঝুঁকি আরো বাড়িয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ স্বল্প কার্বন উৎপাদনের পথ অনুসরণ করছে। আমাদের জাতীয়ভাবে নির্ধারিত লক্ষ্য (এনডিসি) ও অভিযোজন লক্ষ্য বাড়াতে আমরা প্রশমন প্রক্রিয়ায় বিদ্যমান জ্বালানি, শিল্প ও পরিবহন খাতের পাশাপাশি নতুন নতুন খাত অন্তর্ভুক্ত করেছি।’
প্রধানমন্ত্রী এ বছরের জুন মাসের মধ্যে পরিমিত উচ্চাভিলাষী এনডিসি পরিকল্পনা দেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ‘মুজিববর্ষ’ পালনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আমরা কম কার্বনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য ‘মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা’ প্রণয়ন করেছি। আমরা দেশজুড়ে তিন কোটি বৃক্ষ রোপণ করছি।”
শেখ হাসিনা বলেন, “ক্লাইমেট ভালনারেল ফোরাম (সিভিএফ)’ ও ‘ভালনারেল টুয়েন্টি গ্রæপ (ভি২০)’ এর সভাপতি হিসেবে বাংলাদেশের প্রধান লক্ষ্য জলবায়ুর ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর স্বার্থ রক্ষা করা।” বাংলাদেশে ‘গেøাবাল সেন্টার অব অ্যাডাপটেশনের’ দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক অফিসের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ওই অফিস স্থানীয়ভাবে অভিযোজন সমাধানগুলোকে উৎসাহিত করছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কভিড-১৯ মহামারি আমাদের স্মরণ করিয়ে দিয়েছে যে কেবল জোরালো সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমেই বৈশ্বিক সংকট মোকাবেলা করা সম্ভব। ‘কনফারেন্স অব দ্য পার্টিসের (কপ)’ দায়িত্বশীল সদস্য ও সিভিএফের সভাপতি হিসেবে প্রধানমন্ত্রী চারটি দাবি তুলে ধরেন। এর প্রথমটি হলো বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি দেড় ডিগ্রিতে সীমিত রাখতে উন্নত দেশগুলোর কার্বন নিঃসরণের বিষয়ে শিগগিরই উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনা প্রণয়ন। তিনি বলেন, প্রশমনব্যবস্থায়ও উন্নত রাষ্ট্রগুলোর দৃষ্টি দেওয়া উচিত।
প্রধানমন্ত্রীর দ্বিতীয় দাবিটি হলো জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে বছরে ১০০ বিলিয়ন ডলার সংগ্রহ নিশ্চিত করা। ওই অর্থের অর্ধেক অভিযোজন ও বাকিটা প্রশমনে ব্যয় করা।
প্রধানমন্ত্রীর তৃতীয় দাবি হলো জলবায়ু অর্থায়ন ও উদ্ভাবনে বড় অর্থনীতি, আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বেসরকারি খাতগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে। চতুর্থ দাবি হিসেবে প্রধানমন্ত্রী ‘গ্রিন ইকোনমি’ (সবুজ অর্থনীতি) ও কার্বনমুক্ত প্রযুক্তির ওপর গুরুত্ব দেওয়া এবং রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে প্রযুক্তি স্থানান্তরের ব্যবস্থা করতে হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টেনি ব্লিনকেন ও প্রেডিসেন্টের জলবায়ুবিষয়ক বিশেষ দূত জন কেরি হোয়াইট হাউসে বসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওই বক্তব্য শোনেন।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস ও প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সম্মেলন উদ্বোধন করেন। জো বাইডেন তাঁর বক্তব্যে ২০৩০ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন ৫০ শতাংশ থেকে ৫২ শতাংশ কমানোর অঙ্গীকার করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা একটি রাষ্ট্র হিসেবে নেতৃত্ব দিচ্ছি। পুরো পৃথিবীর জন্য শুধু সমৃদ্ধই নয়, স্বাস্থ্যকর, পরিচ্ছন্ন ও ন্যায্য অর্থনীতি গড়ার উদ্যোগ নিতে পারলেই আমরা এটি করতে পারব।’
চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিনপিং ‘সবুজ উন্নয়নের’ অঙ্গীকার করেন। তিনি বলেন, ২০৬০ সালের মধ্যে চীন ‘কার্বন নিউট্রাল’ দেশ হওয়ার লক্ষ্য অর্জন করবে। শি চিনপিং বলেন, ‘সবুজ পর্বত হলো স্বর্ণের পর্বত। পরিবেশ সুরক্ষা উৎপাদনশীলতাকে সুরক্ষা দিতে হবে। পরিবেশের উন্নতি করতে হলে উৎপাদনশীলতারও উন্নতি করতে হবে।’
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ২০৩৫ সালের মধ্যে তাঁর দেশের কার্বন নির্গমন ৭৮ শতাংশ কমানোর লক্ষ্য নির্ধারণ করেন। জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইয়োশিহিদে সুগা ২০৩০ সালের মধ্যে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন ৪৬ শতাংশ কমানোর লক্ষ্যের কথা জানান।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, মানবতার জন্য জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় দ্রæত ও বড় পরিসরে সুনির্দিষ্ট উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন। তিনি বলেন, ভারত তার দায়িত্ব পালন করছে। উন্নয়ন চ্যালেঞ্জ সত্তে¡ও ভারত পরিচ্ছন্নতা জ্বালানি, দক্ষ জ্বালানি, বনায়ন ও জীববৈচিত্র্যের ক্ষেত্রে অনেক সাহসী পদক্ষেপ নিয়েছে। মোদি বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে ৪৫০ গিগাওয়াট নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদনের লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে ভারত।
সম্মেলনে জাতিসংঘ মহাসচিব আšেন্তনিও গুতেরেস, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো, ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং ছাড়াও আর্জেন্টিনা, অ্যান্টিগুয়া ও বারমুডা, অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল, চিলি, কলম্বিয়া, ইউরোপীয় কমিশন, ফ্রান্স, গ্যাবন, জার্মানি, ইন্দোনেশিয়া, ইতালি, মার্শাল দ্বীপপুঞ্জ, মেক্সিকো, দক্ষিণ কোরিয়া, রাশিয়া, সৌদি আরব, দক্ষিণ আফ্রিকা ও তুরস্কের শীর্ষ নেতারা বক্তব্য দেন। শুক্রবার সন্ধ্যায় সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনের আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে। (দৈনিক কালের কন্ঠ)