নিউইয়র্ক ০২:১৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

সাফল্য ধরে রাখার চ্যালেঞ্জে বাংলাদেশের ফুটবল

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ১০:৫৮:৫০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৮ জানুয়ারী ২০২৪
  • / ৮৮ বার পঠিত

দীর্ঘ সময় পর বাংলাদেশের ফুটবল ২০২৩ সালে দেখেছে সফলতার মুখ। পুরুষ আর নারী উভয় ক্ষেত্রেই ফুটবলে ঘটেছে পারফরম্যান্সের উন্নতি। উত্তরণ ঘটেছে ফিফা র‍্যাংকিংয়েও। জামাল ভূঁইয়াদের সাফ ফুটবলের সেমিফাইনালে খেলা কিংবা ফিফা বিশ্বকাপের প্রিলিমিনারি রাউন্ড পেরিয়ে বাছাইয়ের গ্রুপ পর্বে জায়গা করে নেওয়া ছিল বড় সাফল্য। স্মরণকালে এক ক্যালেন্ডার বছরে সবচেয়ে বেশি ছয়টি ম্যাচ জেতা বাংলাদেশ উঠে এসেছে ফিফা র‍্যাংকিংয়ের ১৮৩তম স্থানে। মেয়েরাও ডিসেম্বরে সিঙ্গাপুরকে দুটি প্রীতি ম্যাচে হারিয়ে দুই ধাপ এগিয়ে অবস্থান নিয়েছে ১৪০ নম্বরে।

২০২৩ সালের সাফল্যে বাংলাদেশের ফুটবল নিয়ে মানুষের আগ্রহ বেড়েছে। সবার নজর ২০২৪ সালে কেমন করে বাংলাদেশের পুরুষ আর নারী ফুটবল দল। কোচ হ্যাভিয়ের কাবরেরার অধীনে জামালরা চারটি বিশ্বকাপ বাছাই ম্যাচ খেলবে। ২৪ মার্চ ঢাকায় ফিলিস্তিনের বিপক্ষে মোকাবিলায় জয়ের আশা করছে ভক্তরা। ফিলিস্তিনের বিপক্ষে ২০০৬ সালে প্রথম দেখাতেই ড্র করেছিল বাংলাদেশ। তবে হেরেছে পরবর্তী তিন দেখায়। কিন্তু ঢাকার মাঠে লেবাননকে রুখে দেওয়া বাংলাদেশ ফিলিস্তিনের কঠিন পরীক্ষা নেবে, প্রত্যাশা সবার। ২৬ মার্চ একই দলের বিপক্ষে নিরপেক্ষ ভেন্যুতে বাংলাদেশের লড়াই। জুনে ঢাকায় অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অ্যাওয়ে ম্যাচ। ইতোমধ্যে সকারুজদের বিপক্ষে ৭-০ গোলে হেরেছে কাবরেরার শিষ্যরা। ঢাকায় জিতবে এমন নিশ্চয়তা নেই। তবে গোল ব্যবধান কমিয়ে আনা কিংবা ড্র করতে পারলেও বাংলাদেশের জন্য হবে বড় অর্জন। এ ছাড়া বিশ্বকাপ বাছাইয়ে বাংলাদেশের শেষ ম্যাচ ১১ জুন বৈরুতে লেবাননের বিপক্ষে। প্রতিপক্ষের মাঠে বাংলাদেশ জেতার জন্য খেলবে। যদিও কাজটা হবে কঠিন।

জুনে গ্রুপ পর্ব পেরিয়ে পরবর্তী ধাপে উঠতে না পারলে শেষ হবে বাংলাদেশের বিশ্বকাপ মিশন। সে ক্ষেত্রে পরে আন্তর্জাতিক ম্যাচ নির্ভর করবে ফুটবল ফেডারেশনের তৎপরতার ওপর। ফিফা উইন্ডোতে বাংলাদেশ খেলতে পারে প্রীতি ম্যাচ; যা র‍্যাংকিং উন্নয়নে সহায়ক হবে। অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া ২০২৪ সালে নিজেদের লক্ষ্য নিয়ে বলেছেন, ‘২০২৩ সালে আমরা ভালো খেলেছি। শক্তিশালী দলের সঙ্গে লড়াই করেছি। কিছুটা হতাশা থাকলেও অনেক ইতিবাচক দিক আছে। এ বছর আমরা আরেক ধাপ ওপরে যেতে চাই। উন্নতি করতে চাই নিজেদের অবস্থানের।’

এদিকে নারীরা কাটাবে ফুটবলে ব্যস্ত সময়। আগামী ২ ফেব্রুয়ারি সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ নারী টুর্নামেন্ট দিয়ে শুরু হবে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের নতুন বছর। ঢাকার কমলাপুর স্টেডিয়ামে শুরু হবে এই টুর্নামেন্ট। আসরে বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, নেপাল আর ভুটান খেলছে। রাউন্ড রবিন লিগ পদ্ধতির টুর্নামেন্টে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ দুই দল খেলবে ফাইনাল।

তবে নারী জাতীয় দলের মূল পরীক্ষা সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ। আগামী অক্টোবরে সাবিনা খাতুনদের নামতে হবে সাফ শিরোপা ধরে রাখার লড়াইয়ে। ২০২২ সালে সাফ শিরোপা জয়ের পর বাংলাদেশের নারী ফুটবলে ঘটেছে অনেক ঘটনা। দীর্ঘদিনের কোচ গোলাম রাব্বানি ছোটন দায়িত্ব ছেড়েছেন। বাফুফে টেকনিক্যাল ডিরেক্টর পল স্মলিও নেই। অনেক সমালোচনার জন্ম দিলেও স্মলির সময়ে বাংলাদেশের নারী ফুটবল পেয়েছে অভাবিত সাফল্য, সন্দেহ নেই। এ ছাড়া আঁখি খাতুন, সিরাত জাহান স্বপ্নার মতো খেলোয়াড় চলে গেছেন স্বেচ্ছা নির্বাসনে। সব মিলিয়ে আসন্ন সাফ ফুটবলে বাংলাদেশের জন্য শক্তিশালী স্কোয়াড গঠন করা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে কোচ সাইফুল বারী টিটুর জন্য।

টিটু সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে শিষ্যদের প্রস্তুত করতে খেলতে চান আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচ। ফেব্রুয়ারি মাসেই মেয়েরা নামতে পারে প্রীতি ম্যাচে। প্রতিপক্ষ হিসেবে শোনা যাচ্ছে আর্জেন্টিনা নারী দলের নাম। আবার সৌদি আরবের সঙ্গে প্রায় ঠিক হয়ে যাওয়া শিডিউল বাতিল হয়েছে। তবে ফেব্রুয়ারিতে সাবিনাদের প্রতিপক্ষ কারা হচ্ছে, তা রয়েছে ধোঁয়াশার মধ্যে। কিন্তু লক্ষ্য সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা রয়েছে নারী দলের অধিনায়ক সাবিনার, ‘নতুন বছরের অক্টোবরে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ, সাফ মাথায় রেখেই এগোতে হবে। সাফের শিরোপা ধরে রাখতে চাইব নতুন বছরে। আর চাইব, এ বছর যেন আরও আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে পারি। সাফের ভালো প্রস্তুতির জন্য প্রীতি ম্যাচের বিকল্প নেই। আরেকটা চাওয়াও আছে- মেয়েদের ঘরোয়া টুর্নামেন্ট যেন বাড়ে।’

নতুন নারী ফুটবলার তুলে আনায় বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) নিতে চলেছে নতুন উদ্যোগ। ‘এএফসি-সিএসআর’ প্রোগ্রামের আওতায় পার্বত্য চট্টগ্রামের তিনটি জেলা থেকে ‘ট্যালেন্ট হান্ট’ কর্মসূচির মাধ্যমে খেলোয়াড় বাছাই পর্বে বাফুফে। তিনটি জেলা থেকে কয়েকটি ধাপ পেরিয়ে আসা সেরা ১২ জনকে দেওয়া হবে এক বছরের প্রশিক্ষণের সঙ্গে শিক্ষাসহ যাবতীয় খরচ। সবশেষে তিনজনকে নেওয়া হবে বাফুফের ক্যাম্পে। এই উদ্যোগের ফলে দেশের নারী ফুটবলের পাইপলাইন সমৃদ্ধ হবে সন্দেহ নেই, যদি আগামীতেও একই ধারা অব্যাহত থাকে। সূত্র : সাম্প্রতিক দেশকাল।

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

সাফল্য ধরে রাখার চ্যালেঞ্জে বাংলাদেশের ফুটবল

প্রকাশের সময় : ১০:৫৮:৫০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৮ জানুয়ারী ২০২৪

দীর্ঘ সময় পর বাংলাদেশের ফুটবল ২০২৩ সালে দেখেছে সফলতার মুখ। পুরুষ আর নারী উভয় ক্ষেত্রেই ফুটবলে ঘটেছে পারফরম্যান্সের উন্নতি। উত্তরণ ঘটেছে ফিফা র‍্যাংকিংয়েও। জামাল ভূঁইয়াদের সাফ ফুটবলের সেমিফাইনালে খেলা কিংবা ফিফা বিশ্বকাপের প্রিলিমিনারি রাউন্ড পেরিয়ে বাছাইয়ের গ্রুপ পর্বে জায়গা করে নেওয়া ছিল বড় সাফল্য। স্মরণকালে এক ক্যালেন্ডার বছরে সবচেয়ে বেশি ছয়টি ম্যাচ জেতা বাংলাদেশ উঠে এসেছে ফিফা র‍্যাংকিংয়ের ১৮৩তম স্থানে। মেয়েরাও ডিসেম্বরে সিঙ্গাপুরকে দুটি প্রীতি ম্যাচে হারিয়ে দুই ধাপ এগিয়ে অবস্থান নিয়েছে ১৪০ নম্বরে।

২০২৩ সালের সাফল্যে বাংলাদেশের ফুটবল নিয়ে মানুষের আগ্রহ বেড়েছে। সবার নজর ২০২৪ সালে কেমন করে বাংলাদেশের পুরুষ আর নারী ফুটবল দল। কোচ হ্যাভিয়ের কাবরেরার অধীনে জামালরা চারটি বিশ্বকাপ বাছাই ম্যাচ খেলবে। ২৪ মার্চ ঢাকায় ফিলিস্তিনের বিপক্ষে মোকাবিলায় জয়ের আশা করছে ভক্তরা। ফিলিস্তিনের বিপক্ষে ২০০৬ সালে প্রথম দেখাতেই ড্র করেছিল বাংলাদেশ। তবে হেরেছে পরবর্তী তিন দেখায়। কিন্তু ঢাকার মাঠে লেবাননকে রুখে দেওয়া বাংলাদেশ ফিলিস্তিনের কঠিন পরীক্ষা নেবে, প্রত্যাশা সবার। ২৬ মার্চ একই দলের বিপক্ষে নিরপেক্ষ ভেন্যুতে বাংলাদেশের লড়াই। জুনে ঢাকায় অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অ্যাওয়ে ম্যাচ। ইতোমধ্যে সকারুজদের বিপক্ষে ৭-০ গোলে হেরেছে কাবরেরার শিষ্যরা। ঢাকায় জিতবে এমন নিশ্চয়তা নেই। তবে গোল ব্যবধান কমিয়ে আনা কিংবা ড্র করতে পারলেও বাংলাদেশের জন্য হবে বড় অর্জন। এ ছাড়া বিশ্বকাপ বাছাইয়ে বাংলাদেশের শেষ ম্যাচ ১১ জুন বৈরুতে লেবাননের বিপক্ষে। প্রতিপক্ষের মাঠে বাংলাদেশ জেতার জন্য খেলবে। যদিও কাজটা হবে কঠিন।

জুনে গ্রুপ পর্ব পেরিয়ে পরবর্তী ধাপে উঠতে না পারলে শেষ হবে বাংলাদেশের বিশ্বকাপ মিশন। সে ক্ষেত্রে পরে আন্তর্জাতিক ম্যাচ নির্ভর করবে ফুটবল ফেডারেশনের তৎপরতার ওপর। ফিফা উইন্ডোতে বাংলাদেশ খেলতে পারে প্রীতি ম্যাচ; যা র‍্যাংকিং উন্নয়নে সহায়ক হবে। অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া ২০২৪ সালে নিজেদের লক্ষ্য নিয়ে বলেছেন, ‘২০২৩ সালে আমরা ভালো খেলেছি। শক্তিশালী দলের সঙ্গে লড়াই করেছি। কিছুটা হতাশা থাকলেও অনেক ইতিবাচক দিক আছে। এ বছর আমরা আরেক ধাপ ওপরে যেতে চাই। উন্নতি করতে চাই নিজেদের অবস্থানের।’

এদিকে নারীরা কাটাবে ফুটবলে ব্যস্ত সময়। আগামী ২ ফেব্রুয়ারি সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ নারী টুর্নামেন্ট দিয়ে শুরু হবে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের নতুন বছর। ঢাকার কমলাপুর স্টেডিয়ামে শুরু হবে এই টুর্নামেন্ট। আসরে বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, নেপাল আর ভুটান খেলছে। রাউন্ড রবিন লিগ পদ্ধতির টুর্নামেন্টে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ দুই দল খেলবে ফাইনাল।

তবে নারী জাতীয় দলের মূল পরীক্ষা সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ। আগামী অক্টোবরে সাবিনা খাতুনদের নামতে হবে সাফ শিরোপা ধরে রাখার লড়াইয়ে। ২০২২ সালে সাফ শিরোপা জয়ের পর বাংলাদেশের নারী ফুটবলে ঘটেছে অনেক ঘটনা। দীর্ঘদিনের কোচ গোলাম রাব্বানি ছোটন দায়িত্ব ছেড়েছেন। বাফুফে টেকনিক্যাল ডিরেক্টর পল স্মলিও নেই। অনেক সমালোচনার জন্ম দিলেও স্মলির সময়ে বাংলাদেশের নারী ফুটবল পেয়েছে অভাবিত সাফল্য, সন্দেহ নেই। এ ছাড়া আঁখি খাতুন, সিরাত জাহান স্বপ্নার মতো খেলোয়াড় চলে গেছেন স্বেচ্ছা নির্বাসনে। সব মিলিয়ে আসন্ন সাফ ফুটবলে বাংলাদেশের জন্য শক্তিশালী স্কোয়াড গঠন করা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে কোচ সাইফুল বারী টিটুর জন্য।

টিটু সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে শিষ্যদের প্রস্তুত করতে খেলতে চান আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচ। ফেব্রুয়ারি মাসেই মেয়েরা নামতে পারে প্রীতি ম্যাচে। প্রতিপক্ষ হিসেবে শোনা যাচ্ছে আর্জেন্টিনা নারী দলের নাম। আবার সৌদি আরবের সঙ্গে প্রায় ঠিক হয়ে যাওয়া শিডিউল বাতিল হয়েছে। তবে ফেব্রুয়ারিতে সাবিনাদের প্রতিপক্ষ কারা হচ্ছে, তা রয়েছে ধোঁয়াশার মধ্যে। কিন্তু লক্ষ্য সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা রয়েছে নারী দলের অধিনায়ক সাবিনার, ‘নতুন বছরের অক্টোবরে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ, সাফ মাথায় রেখেই এগোতে হবে। সাফের শিরোপা ধরে রাখতে চাইব নতুন বছরে। আর চাইব, এ বছর যেন আরও আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে পারি। সাফের ভালো প্রস্তুতির জন্য প্রীতি ম্যাচের বিকল্প নেই। আরেকটা চাওয়াও আছে- মেয়েদের ঘরোয়া টুর্নামেন্ট যেন বাড়ে।’

নতুন নারী ফুটবলার তুলে আনায় বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) নিতে চলেছে নতুন উদ্যোগ। ‘এএফসি-সিএসআর’ প্রোগ্রামের আওতায় পার্বত্য চট্টগ্রামের তিনটি জেলা থেকে ‘ট্যালেন্ট হান্ট’ কর্মসূচির মাধ্যমে খেলোয়াড় বাছাই পর্বে বাফুফে। তিনটি জেলা থেকে কয়েকটি ধাপ পেরিয়ে আসা সেরা ১২ জনকে দেওয়া হবে এক বছরের প্রশিক্ষণের সঙ্গে শিক্ষাসহ যাবতীয় খরচ। সবশেষে তিনজনকে নেওয়া হবে বাফুফের ক্যাম্পে। এই উদ্যোগের ফলে দেশের নারী ফুটবলের পাইপলাইন সমৃদ্ধ হবে সন্দেহ নেই, যদি আগামীতেও একই ধারা অব্যাহত থাকে। সূত্র : সাম্প্রতিক দেশকাল।