নিউইয়র্ক ০৭:৩১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

হিউজের মৃত্যুর কারণ হেলমেট নয়

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ১০:৪৫:১৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ মে ২০১৬
  • / ৭৭৩ বার পঠিত

ঢাকা: শন অ্যাবটের বাউন্সারটা হেলমেট ফাঁকি দিয়ে লেগেছিল তাঁর ঘাড়ের বাঁ পাশে ওপরের দিকটাতে। এরপর সব অন্ধকার। সঙ্গে সঙ্গেই লুটিয়ে পড়েন মাটিতে, সিডনির হাসপাতালেও নিয়ে যাওয়া হয়েছিল ফিল হিউজকে। কিন্তু মস্তিষ্কের রক্তক্ষরণের সঙ্গে দুই দিন লড়াইয়ের পরও আর ফেরা হলো না তাঁর, ২৫ বছর বয়সেই চলে গেলেন না-ফেরার দেশে।
২০১৪ সালের ২৫ নভেম্বর এই মর্মান্তিক মৃত্যু ক্রিকেটারদের নিরাপত্তাকেই করেছিল প্রশ্নবিদ্ধ। হেলমেটের গঠনটা আরেকটু অন্য রকম হলে কি ঠেকানো যেত মৃত্যুটা? মাঠ থেকে হিউজকে হাসপাতালে নিতেও কি একটু বেশি দেরি হয়ে গিয়েছিল?
এ নিয়ে একটি নিরপেক্ষ তদন্ত চালায় ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া (সিএ)। মেলবোর্নের ব্যারিস্টার ডেভিড কার্টেনের নেতৃত্বাধীন কমিটির তদন্তের ফল কিন্তু জানিয়েছে, নতুন হেলমেটেও দুর্ঘটনা হয়তো ঠেকানো যেত না। ৬২ পাতার প্রতিবেদনে কার্টেন লিখেছেন, ‘ফিলিপের মাথার যে অংশে বল লেগেছে, তাতে আমার মনে হয় না নতুন হেলমেটও বাড়তি নিরাপত্তা দিতে পারত। কারণ এই হেলমেটে ঘাড়ের পেছনের দিকের অংশের নিরাপত্তাব্যবস্থাও একই।’ চিকিৎসায় বিলম্বও হিউজের মৃত্যুর কারণ মনে হয়নি, ‘আঘাত পাওয়ার পর ফিলিপ যে চিকিৎসা পেয়েছে, তার মৃত্যুতে সেটি কোনো প্রভাব ফেলেনি। চোটের ধরন আর ভয়াবহতা অনেক বেশি ছিল।’
কিছু সুপারিশসহ কার্টেন এই প্রতিবেদন জমা দেন গত নভেম্বরে। তখনই সেটি হিউজের পরিবারকে দেখানো হয়েছিল। তবে এত দিন ধরে তদন্তের ফল ও সুপারিশগুলোর কার্যকারিতা পরীক্ষা করার পর গতকাল সেটি প্রকাশ করেছে সিএ। তাতে ভবিষ্যতে হিউজের মতো এমন করুণ মৃত্যু ঠেকাতে কিছু নিয়ম বেঁধে দেওয়া হয়েছে। প্রথমটি অনুমিতভাবেই হেলমেট পরার বাধ্যবাধকতা। ম্যাচে তো বটেই, অনুশীলনেও পেস বল খেলার সময় ব্যাটসম্যানদের হেলমেট পরতে হবে। হেলমেট পরতে হবে উইকেটকিপার ও ব্যাটসম্যানের ৭ মিটারের মধ্যে থাকা ফিল্ডারদেরও।
শেফিল্ড শিল্ডের ম্যাচে সেদিন অস্ট্রেলিয়ান মান অনুযায়ী বানানো হেলমেটই পরেছিলেন হিউজ। তবে তাঁর মৃত্যুর পর থেকে হেলমেটের ধরন বদলে এখন ব্যবহার করা হচ্ছে ব্রিটিশ মানের হেলমেট। মাথার পেছনের দিকেও বাড়তি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আধুনিক এই হেলমেট হয়তো হিউজের মৃত্যু ঠেকাতে পারত না। তবে আরও ভালো কিছু না আসা পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ার সব ধরনের ম্যাচে ব্রিটিশ মানের হেলমেটই ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছে সিএ।
পাশাপাশি খেলোয়াড়দের হৃদ্যন্ত্র-সম্পর্কিত সমস্যা সামলাতে মাঠে ‘ডেফিব্রিলেটর’ রাখার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে। এই মাসে আইসিসির সভায় আরেকটি প্রস্তাব করবে সিএ, কোনো খেলোয়াড় মাথায় আঘাত পেলে যাতে তাঁর বদলি নেওয়া যায়।
এত এত নিয়ম হয়তো হিউজকে ফিরিয়ে আনবে না। তবে হিউজের ভাগ্য যাতে আর কারও না হয়, সেই চেষ্টাটা তো অন্তত করা যাবে। এএফপি, রয়টার্স।

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

About Author Information

হিউজের মৃত্যুর কারণ হেলমেট নয়

প্রকাশের সময় : ১০:৪৫:১৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ মে ২০১৬

ঢাকা: শন অ্যাবটের বাউন্সারটা হেলমেট ফাঁকি দিয়ে লেগেছিল তাঁর ঘাড়ের বাঁ পাশে ওপরের দিকটাতে। এরপর সব অন্ধকার। সঙ্গে সঙ্গেই লুটিয়ে পড়েন মাটিতে, সিডনির হাসপাতালেও নিয়ে যাওয়া হয়েছিল ফিল হিউজকে। কিন্তু মস্তিষ্কের রক্তক্ষরণের সঙ্গে দুই দিন লড়াইয়ের পরও আর ফেরা হলো না তাঁর, ২৫ বছর বয়সেই চলে গেলেন না-ফেরার দেশে।
২০১৪ সালের ২৫ নভেম্বর এই মর্মান্তিক মৃত্যু ক্রিকেটারদের নিরাপত্তাকেই করেছিল প্রশ্নবিদ্ধ। হেলমেটের গঠনটা আরেকটু অন্য রকম হলে কি ঠেকানো যেত মৃত্যুটা? মাঠ থেকে হিউজকে হাসপাতালে নিতেও কি একটু বেশি দেরি হয়ে গিয়েছিল?
এ নিয়ে একটি নিরপেক্ষ তদন্ত চালায় ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া (সিএ)। মেলবোর্নের ব্যারিস্টার ডেভিড কার্টেনের নেতৃত্বাধীন কমিটির তদন্তের ফল কিন্তু জানিয়েছে, নতুন হেলমেটেও দুর্ঘটনা হয়তো ঠেকানো যেত না। ৬২ পাতার প্রতিবেদনে কার্টেন লিখেছেন, ‘ফিলিপের মাথার যে অংশে বল লেগেছে, তাতে আমার মনে হয় না নতুন হেলমেটও বাড়তি নিরাপত্তা দিতে পারত। কারণ এই হেলমেটে ঘাড়ের পেছনের দিকের অংশের নিরাপত্তাব্যবস্থাও একই।’ চিকিৎসায় বিলম্বও হিউজের মৃত্যুর কারণ মনে হয়নি, ‘আঘাত পাওয়ার পর ফিলিপ যে চিকিৎসা পেয়েছে, তার মৃত্যুতে সেটি কোনো প্রভাব ফেলেনি। চোটের ধরন আর ভয়াবহতা অনেক বেশি ছিল।’
কিছু সুপারিশসহ কার্টেন এই প্রতিবেদন জমা দেন গত নভেম্বরে। তখনই সেটি হিউজের পরিবারকে দেখানো হয়েছিল। তবে এত দিন ধরে তদন্তের ফল ও সুপারিশগুলোর কার্যকারিতা পরীক্ষা করার পর গতকাল সেটি প্রকাশ করেছে সিএ। তাতে ভবিষ্যতে হিউজের মতো এমন করুণ মৃত্যু ঠেকাতে কিছু নিয়ম বেঁধে দেওয়া হয়েছে। প্রথমটি অনুমিতভাবেই হেলমেট পরার বাধ্যবাধকতা। ম্যাচে তো বটেই, অনুশীলনেও পেস বল খেলার সময় ব্যাটসম্যানদের হেলমেট পরতে হবে। হেলমেট পরতে হবে উইকেটকিপার ও ব্যাটসম্যানের ৭ মিটারের মধ্যে থাকা ফিল্ডারদেরও।
শেফিল্ড শিল্ডের ম্যাচে সেদিন অস্ট্রেলিয়ান মান অনুযায়ী বানানো হেলমেটই পরেছিলেন হিউজ। তবে তাঁর মৃত্যুর পর থেকে হেলমেটের ধরন বদলে এখন ব্যবহার করা হচ্ছে ব্রিটিশ মানের হেলমেট। মাথার পেছনের দিকেও বাড়তি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আধুনিক এই হেলমেট হয়তো হিউজের মৃত্যু ঠেকাতে পারত না। তবে আরও ভালো কিছু না আসা পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ার সব ধরনের ম্যাচে ব্রিটিশ মানের হেলমেটই ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছে সিএ।
পাশাপাশি খেলোয়াড়দের হৃদ্যন্ত্র-সম্পর্কিত সমস্যা সামলাতে মাঠে ‘ডেফিব্রিলেটর’ রাখার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে। এই মাসে আইসিসির সভায় আরেকটি প্রস্তাব করবে সিএ, কোনো খেলোয়াড় মাথায় আঘাত পেলে যাতে তাঁর বদলি নেওয়া যায়।
এত এত নিয়ম হয়তো হিউজকে ফিরিয়ে আনবে না। তবে হিউজের ভাগ্য যাতে আর কারও না হয়, সেই চেষ্টাটা তো অন্তত করা যাবে। এএফপি, রয়টার্স।