সিরিজের শেষ ম্যাচ হেরে ১০ পয়েন্ট খোয়ালো বাংলাদেশ

- প্রকাশের সময় : ০৯:০৫:৪৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০২২
- / ৪৩ বার পঠিত
ক্রীড়া ডেস্ক : ব্যাটার ও বোলারদের কল্যাণে প্রথম দুই ম্যাচ জিতে সিরিজে নিজেদের করে নিয়েছিল বাংলাদেশ। শেষ ম্যাচে আফগানিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করার সঙ্গে ওয়ানডে সুপার লিগে শীর্ষস্থান পোক্ত করার সুযোগও ছিল তামিম ইকবালের দলের। হাতছানি দিচ্ছিলো আইসিসির ওয়ানডে র্যাঙ্কিংয়ে উন্নতিরও। তবে তৃতীয় ম্যাচে ব্যাটিং ব্যর্থতায় ডুবে গেছে এমন সম্ভাবনা। লিটন দাসের ৮৬ রানের ইনিংসের পরও মাত্র ১৯২ গুটিয়ে যাওয়া বাংলাদেশকে ৭ উইকেটে হারিয়েছে আফগানিস্তান। সফরকারী বোলারদের আধিপত্যের দিনে রহমানুল্লাহ গুরবাজের সেঞ্চুরিতে সহজ পেয়েছে হাসমতউল্লাহ শাহিদির দল। তাতে ঘরের মাঠে সিরিজে জিতেও ১০ পয়েন্ট খোয়ালো বাংলাদেশ।
ব্যাটিং ব্যর্থতায় এক ম্যাচ বাকি থাকতেই সিরিজ খুইয়েছে আফগানিস্তান। তাই শেষ ম্যাচটা ছিল হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর। এমন ম্যাচে জ্বলে উঠলো আফগান ব্যাটাররা। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে জয়ের জন্য ১৯৩ রানের সহজ লক্ষ্য তাড়ায় দারুণ শুরু করেন দুই ওপেনার গুরবাজ এবং রিয়াজ হাসান। দুজনে মিলে গড়েন ৭৯ রানের উদ্বোধনী জুটি।
যদিও ইনিংসের সপ্তম ওভারেই ভাঙতে পারতো গুরবাজ ও রিয়াজের জুটি। শরিফুল ইসলামের লেংথ বল গুরবাজের ব্যাটের কানায় লেগে উইকেটের পেছনে গেলেও সেটা লুফে নিতে পারেননি বাংলাদেশের ফিল্ডাররা। উইকেটকিপার এবং স্লিপের মাঝ দিয়ে গিয়ে বাউন্ডারি ছুঁলে চার রান পান গুরবাজ। এরপর পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে পঞ্চাশ রানের জুটি পূরণ করেন তারা দুজন।
গুরবাজ এবং রিয়াজের জুটি যখন একশর পথে এগোচ্ছিলো তখনই বাংলাদেশকে উইকেট এনে দেন সাকিব আল হাসান। বাঁহাতি এই স্পিনারের বলে উইকেট ছেড়ে খেলতে এসে বলের লাইন মিস করে স্টাম্পিং হয়েছেন রিয়াজ। ডানহাতি এই ব্যাটারআউট হয়েছেন ৪৯ বলে ৩৫ রানের ইনিংস খেলে। রিয়াজের বিদায়ের পর ৫৩ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন গুরবাজ।
হাফ সেঞ্চুরির পরই ফিরতে পারতেন ডানহাতি এই ওপেনার। ৬১ রানে শরিফুলের বলে ক্যাচ ছাড়েন উইকেটকিপার মুশফিক। গুরবাজের সহজ ক্যাচ ছেড়েছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তিনবার জীবন পেয়ে বাংলাদেশের বোলারদের ওপর চড়াও হতে থাকেন গুরবাজ। দ্বিতীয় উইকেটে রহমত শাহকে নিয়ে গড়েছেন ১০০ রানের জুটিও।
আফগানিস্তান যখন জয়ের দ্বারপ্রান্তে তখন মেহেদি হাসান মিরাজের বলে স্টাম্পিং হয়ে সাজঘরে ফিরেছেন ৪৭ রান করা রহমত। অধিনায়ক হাসমতউল্লাহও ফিরেছেন মাত্র ২ রানে। তবে দারুণ ব্যাটিংয়ে ১০৩ বলে ক্যারিয়ারের তৃতীয় সেঞ্চুরি তুলে নেন গুরবাজ। তাতে নিশ্চিত হয় আফগানদের ৭ উইকেটের জয়।
এর আগে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে আফগান পেসারদের শুরু থেকেই দেখেশুনে খেলেন দুই ওপেনার তামিম ও লিটন। উদ্বোধনী জুটিতে দশ ওভারে ৪৩ রান তোলে এই জুটি। ১১তম ওভারের প্রথম বলে ফিরে যান তামিম। আফগান পেসার ফজল হক ফারুকির বলে বোল্ড হয়ে মাঠ ছাড়েন বাংলাদেশের অধিনায়ক।
এই সিরিজে তিনবারই ফারুকির বলে আউট হয়েছেন তামিম। তামিম ফিরলেও সাকিবকে সঙ্গে নিয়ে রান বাড়ানোর মিশনে নেমে পড়েন লিটন। শুরুতে দেখেশুনে খেললেও পরবর্তীতে আগ্রাসী ভঙ্গিমায় হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন গত ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান লিটন।
দলের রান ১০০ পেরিয়ে সাকিব ফিরলে ভাঙে লিটনের সঙ্গে তার ৬১ রানের জুটি। আসমতউল্লাহ ওমরজাইয়ের লেংথ বল থার্ড ম্যান দিয়ে খেলার চেষ্টা করলে বলের লাইন মিস করে বোল্ড হয়েছেন সাকিব। চারে নেমে থিতু হতে পারেননি মুশফিকও। রশিদ খানের বলে রহমানুল্লাহ গুরবাজকে ক্যাচ দিয়ে ৭ রানে আউট হয়েছেন এই উইকেটকিপার ব্যাটার।
আফগানিস্তান সিরিজে অভিষেক হওয়া ইয়াসির আলী রাব্বি আরও একবার ব্যাট হাতে ব্যর্থ হয়েছেন। রশিদের বলে গুলবাদিন নায়েবের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন ১ রান করা ইয়াসির। দ্বিতীয় ম্যাচে সেঞ্চুরি তুলে নিলেও এদিন সেঞ্চুরির খুব কাছে গিয়ে ফিরেছেন লিটন। মোহাম্মদ নবির লেংথ বলে স্লগ করতে গিয়ে ৮৬ রানে আউট হয়েছেন ডানহাতি এই ওপেনার।
প্রথম ম্যাচে জয়ের নায়ক হলেও এদিন ব্যাট ব্যর্থ আফিফ হোসেন এবং মিরাজ। শেষ দিকে মাহমুদউল্লাহ ছাড়া বাকিরা কেউই বলার মতো রান করতে পারেননি। ৫৩ বলে ২৯ রান করে অপরাজিত ছিলেন ডানহাতি এই ব্যাটার। আফগানিস্তানের হয়ে রশিদ তিনটি এবং মোহাম্মদ নবি দুটি উইকেট নিয়েছেন।
হককথা/এমউএ