নিউইয়র্ক ০৬:০৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

সম্পাদকীয় : বিদায় ম্যারাডোনা

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ১২:৪৩:০০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ ডিসেম্বর ২০২০
  • / ১০৫ বার পঠিত

তাঁর সময়ে তিনি ছিলেন মাঠের রাজা। তাঁর সৃষ্টিশীলতায় মাতোয়ারা হয়েছে ফুটবল অঙ্গন। শৈশবে যে ফুটবল আঁকড়ে ধরে তিনি স্বপ্ন দেখেছিলেন, সেই ফুটবল তাঁকে এনে দেয় জগেজাড়া খ্যাতি। স্বপ্নের ফুটবল, সৃষ্টিশীল মাঠ সব কিছু ছেড়ে আজ না-ফেরার দেশে ডিয়েগো ম্যারাডোনা।
ডিয়েগো ম্যারাডোনা নশ্বর পৃথিবী ছেড়ে গেলেও তাঁর শিল্পিত ফুটবলশৈলী মানুষের মনে অমর হয়ে থেকে যাবে। ১৯৮২ সালে আর্জেন্টিনার হয়ে বিশ্বকাপ ফুটবলে অভিষেক। প্রথম ম্যাচেই দৃষ্টি কাড়েন দর্শকদের। ফুটবলবোদ্ধারা চিনেছিলেন আগামী দিনের ফুটবল তারকাকে। ১৯৮৬ সালের বিশ্বকাপে তো ইতিহাস গড়লেন তিনি। তাঁর অধিনায়কত্বে বিশ্বকাপ ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন হয় আর্জেন্টিনা। নন্দিত শিল্পীর মতো জাদুকরী নান্দনিকতায় মাঠ কাঁপিয়েছেন তিনি। তাঁর আবেগ ও আত্মবিশ্বাস দলের সব সদস্যের জন্য অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে। কখনো কখনো খেলাকে ছাড়িয়ে গেছেন তিনি। আর এভাবেই ভিয়া ফিওরিতোর বস্তিতে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করে বেড়ে ওঠা কিশোর ‘ফুটবল ঈশ্বর’ হিসেবেই নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। জয় করেছেন দর্শকের হৃদয়।
আর্জেন্টিনোস জুনিয়র্সের হয়ে ১৬ বছর বয়সে ক্যারিয়ার শুরু ম্যারাডোনার। ১৯৭৬ থেকে পাঁচ বছর খেলে ১৬৭ ম্যাচে করেছিলেন ১১৬ গোল। এরপর বোকা জুনিয়র্স, বার্সেলোনা, নাপোলি, সেভিয়া, নিউ ওয়েলস ওল্ড বয়েজের পর বোকা জুনিয়র্সে দেখিয়েছেন বাঁ পায়ের জাদু। কোচ হিসেবেও সফল এই কিংবদন্তি। ২০০৮ সালে আর্জেন্টিনার দায়িত্ব নিয়েছিলেন দুঃসময়ে। লিওনেল মেসিরা তখন বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব থেকে বাদ পড়ার কিনারে। সেখান থেকে ম্যারাডোনার জাদুর ছোঁয়ায় আর্জেন্টিনা পৌঁছে ২০১০ বিশ্বকাপে।
ফুটবলকীর্তির বাইরেও যিনি ছিলেন বর্ণময় চরিত্রের অধিকারী। পেশাদার ফুটবলকে বিদায় জানানোর পরও নানা বিতর্কের জন্ম দিয়ে প্রায় সব সময়ই ছিলেন খবরের শিরোনাম হয়ে। ফুটবল মাঠে যেমন ধরা দিয়েছে অনেক অর্জন, তেমনি বহুমাত্রিক জীবন কাটিয়েছেন ডিয়েগো ম্যারাডোনা। দেশের হয়ে খেলেছেন চারটি বিশ্বকাপ। জাতীয় দল আর্জেন্টিনার হয়ে ৯১ ম্যাচ খেলে করেছেন ৩৪ গোল। বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার হয়ে মোট ২১টি ম্যাচ খেলেছেন। মাত্র ১৫ বছর বয়সে পেশাদার ফুটবলে তাঁর অভিষেক। ১৯৭৯ সালে বিশ্ব যুব চ্যাম্পিয়নশিপে অসাধারণ নৈপুণ্যে তিনি শিরোপা এনে দেন আর্জেন্টিনাকে। নিজে গোল করেন ছয় ম্যাচে ছয়টি। শুধু পরিসংখ্যান দিয়ে বোঝানো যাবে না ম্যারাডোনাকে। ঐন্দ্রজালিক ফুটবলে গোটা বিশ্বকে মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখার ক্ষমতা ছিল তাঁর। যুব বিশ্বকাপ ও মূল বিশ্বকাপ- দুটিতেই গোল্ডেন বলজয়ী ফুটবলার তিনি। ২০০০ সালে ফিফার অনলাইন জরিপে শতাব্দীসেরা ফুটবলার নির্বাচিত হয়েছিলেন বিপুল ভোট পেয়ে।
তাঁর মৃত্যু মানে চিরবিদায় নয়, ফুটবলবিশ্ব মনে রাখবে তাঁকে। (দৈনিক কালের কন্ঠ)

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

সম্পাদকীয় : বিদায় ম্যারাডোনা

প্রকাশের সময় : ১২:৪৩:০০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ ডিসেম্বর ২০২০

তাঁর সময়ে তিনি ছিলেন মাঠের রাজা। তাঁর সৃষ্টিশীলতায় মাতোয়ারা হয়েছে ফুটবল অঙ্গন। শৈশবে যে ফুটবল আঁকড়ে ধরে তিনি স্বপ্ন দেখেছিলেন, সেই ফুটবল তাঁকে এনে দেয় জগেজাড়া খ্যাতি। স্বপ্নের ফুটবল, সৃষ্টিশীল মাঠ সব কিছু ছেড়ে আজ না-ফেরার দেশে ডিয়েগো ম্যারাডোনা।
ডিয়েগো ম্যারাডোনা নশ্বর পৃথিবী ছেড়ে গেলেও তাঁর শিল্পিত ফুটবলশৈলী মানুষের মনে অমর হয়ে থেকে যাবে। ১৯৮২ সালে আর্জেন্টিনার হয়ে বিশ্বকাপ ফুটবলে অভিষেক। প্রথম ম্যাচেই দৃষ্টি কাড়েন দর্শকদের। ফুটবলবোদ্ধারা চিনেছিলেন আগামী দিনের ফুটবল তারকাকে। ১৯৮৬ সালের বিশ্বকাপে তো ইতিহাস গড়লেন তিনি। তাঁর অধিনায়কত্বে বিশ্বকাপ ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন হয় আর্জেন্টিনা। নন্দিত শিল্পীর মতো জাদুকরী নান্দনিকতায় মাঠ কাঁপিয়েছেন তিনি। তাঁর আবেগ ও আত্মবিশ্বাস দলের সব সদস্যের জন্য অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে। কখনো কখনো খেলাকে ছাড়িয়ে গেছেন তিনি। আর এভাবেই ভিয়া ফিওরিতোর বস্তিতে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করে বেড়ে ওঠা কিশোর ‘ফুটবল ঈশ্বর’ হিসেবেই নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। জয় করেছেন দর্শকের হৃদয়।
আর্জেন্টিনোস জুনিয়র্সের হয়ে ১৬ বছর বয়সে ক্যারিয়ার শুরু ম্যারাডোনার। ১৯৭৬ থেকে পাঁচ বছর খেলে ১৬৭ ম্যাচে করেছিলেন ১১৬ গোল। এরপর বোকা জুনিয়র্স, বার্সেলোনা, নাপোলি, সেভিয়া, নিউ ওয়েলস ওল্ড বয়েজের পর বোকা জুনিয়র্সে দেখিয়েছেন বাঁ পায়ের জাদু। কোচ হিসেবেও সফল এই কিংবদন্তি। ২০০৮ সালে আর্জেন্টিনার দায়িত্ব নিয়েছিলেন দুঃসময়ে। লিওনেল মেসিরা তখন বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব থেকে বাদ পড়ার কিনারে। সেখান থেকে ম্যারাডোনার জাদুর ছোঁয়ায় আর্জেন্টিনা পৌঁছে ২০১০ বিশ্বকাপে।
ফুটবলকীর্তির বাইরেও যিনি ছিলেন বর্ণময় চরিত্রের অধিকারী। পেশাদার ফুটবলকে বিদায় জানানোর পরও নানা বিতর্কের জন্ম দিয়ে প্রায় সব সময়ই ছিলেন খবরের শিরোনাম হয়ে। ফুটবল মাঠে যেমন ধরা দিয়েছে অনেক অর্জন, তেমনি বহুমাত্রিক জীবন কাটিয়েছেন ডিয়েগো ম্যারাডোনা। দেশের হয়ে খেলেছেন চারটি বিশ্বকাপ। জাতীয় দল আর্জেন্টিনার হয়ে ৯১ ম্যাচ খেলে করেছেন ৩৪ গোল। বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার হয়ে মোট ২১টি ম্যাচ খেলেছেন। মাত্র ১৫ বছর বয়সে পেশাদার ফুটবলে তাঁর অভিষেক। ১৯৭৯ সালে বিশ্ব যুব চ্যাম্পিয়নশিপে অসাধারণ নৈপুণ্যে তিনি শিরোপা এনে দেন আর্জেন্টিনাকে। নিজে গোল করেন ছয় ম্যাচে ছয়টি। শুধু পরিসংখ্যান দিয়ে বোঝানো যাবে না ম্যারাডোনাকে। ঐন্দ্রজালিক ফুটবলে গোটা বিশ্বকে মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখার ক্ষমতা ছিল তাঁর। যুব বিশ্বকাপ ও মূল বিশ্বকাপ- দুটিতেই গোল্ডেন বলজয়ী ফুটবলার তিনি। ২০০০ সালে ফিফার অনলাইন জরিপে শতাব্দীসেরা ফুটবলার নির্বাচিত হয়েছিলেন বিপুল ভোট পেয়ে।
তাঁর মৃত্যু মানে চিরবিদায় নয়, ফুটবলবিশ্ব মনে রাখবে তাঁকে। (দৈনিক কালের কন্ঠ)