রিয়ালকে ফুটবল শিখিয়ে ফাইনালে উঠলো ম্যানসিটি
- প্রকাশের সময় : ১১:৪১:০৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৭ মে ২০২৩
- / ৫৩ বার পঠিত
ক্রীড়া ডেস্ক : প্রথম লেগ ড্র ১-১ গোল ব্যবধানে, দ্বিতীয় লেগ ম্যানচেস্টার সিটির মাঠে। তবু টুর্নামেন্টটির নাম চ্যাম্পিয়নস লীগ আর দলের নাম রিয়াল মাদ্রিদ বলেই সমানে সমান টক্কর হবে, এমন আশা ছিল সবার। কিন্তু ঘরের মাঠে রিয়ালকে যেন পাড়ার দল বানিয়ে ছাড়লো সিটিজেনরা। বলা ভালো, পুরো ৯০ মিনিট জুড়ে রিয়ালকে যেন ফুটবল খেলাটাই শেখালো পেপ গার্দিওয়ালার শিষ্যরা। আর তাতে তারা পেলো বড় জয়।
আজ ইত্তিহাদে চ্যাম্পিয়নস লীগের সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগে রিয়ালকে ০-৪ গোলের ব্যবধানে হারিয়েছে সিটি। দুই লেগ মিলিয়ে ৫-১ অগ্রগামিতায় ফাইনালে উঠল তারা। একই সাথে গত আসরের সেমিতে রিয়ালের বিপক্ষে হারের মধুর প্রতিশোধ নিলো সিটিজেনরা। প্রথমার্ধে বার্নাডো সিলভা জোড়া গোল করার পর দ্বিতীয়ার্ধে একটি আত্মঘাতী ও অন্য গোল করেণ সিটির বিশ্বকাপজয়ী আর্জেন্টাইন ফুটবলার জুলিয়ান আলভারেজ।
ঘরের মাঠে এদিন শুরু থেকেই রিয়ালকে চেপে ধরে সিটি। স্বাগতিকদের দাপটে শুরতেই কোণঠাসা হয়ে পড়ে করিম বেনজেমার দল। অবস্থা এমন ছিল যে, প্রথম ১৫ মিনিটে ৭৯ শতাংশ সময় বল ছিল সিটিজেন খেলোয়াড়দের পায়ে। সিটির রক্ষণে প্রথম ৩০ মিনিটে বল একবারের জন্যও যায়নি। এমনকি প্রথম ২৫ মিনিটে মনে হচ্ছিল রিয়ালকে ফুটবল শেখাচ্ছে পেপ গার্দিওয়ালার শিষ্যরা। একের পর এক আক্রমণে ১৩তম মিনিটেই এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পায় সিটি। কিন্তু মানুয়েল আকাঞ্জির ক্রসে ছয় গজ বক্সের মধ্যে থেকে আর্লিং ব্রট হালান্দের হেড অবিশ্বাস্য দক্ষতায় ফিরিয়ে দেন রিয়াল গোলরক্ষক থিবো কোর্তোয়া। ২১তম মিনিটে ডি ব্রুইনার দুর্দান্ত শট ফিরিয়ে আরও একবার রিয়াল দূর্গ অক্ষত রাখেন গোলরক্ষক।
তবে বেশিক্ষণ আর পেরে ওঠেননি, মাত্র দুই মিনিটের ব্যবধানে কোর্তোয়ার প্রাচীর ভেদ করেন বার্নাডো সিলভা। ২৩তম মিনিটে ব্রুইনার নিখুঁত পাসে বাঁ পায়ের গোলার মতো শটে লক্ষ্যভেদ করেন সিটির এই পর্তুগিজ মিডফিল্ডার। ম্যাচে ৩২তম মিনিটে প্রথমবারের মতো আক্রমণে যেতে সক্ষম হয় রিয়াল। তবে ভিনিশিয়াস বল নিয়ে সিটির ডি বক্সে ঢুকে পড়েল কাইল ওয়াকার সেটি কেড়ে নিয়ে বিপদ মুক্ত করেন। পাঁচ মিনিটের ব্যবধানে আবারও গোল হজম করে রিয়াল। এবারও গোলদাতা সেই সিলভা। ইলকাই গিনদোয়ানের শট প্রতিপক্ষের পায়ে লেগে বল চলে যায় সিলভার কাছে, নিখুঁত হেডে জালে পাঠান এই পর্তুগিজ। চ্যাম্পিয়নস লীগের সেমিফাইনালে লিওনেল মেসি ও রবার্ট লেভানডোভস্কির পর তৃতীয় খেলোয়াড় হিসেবে জোড়া গোল করলেন সিলভা।
প্রথমার্ধে ৭০ শতাংশের বেশি সময় বল দখলে রেখে গোলমুখে ১৩ শট নিয়ে পাঁচটি লক্ষ্যে রাখতে পারে সিটি। বিপরীতে রিয়ালের শট মাত্র একটি। বিরতি থেকে ফিরে আস্তে আস্তে নিজেদের গোছানো শুরু করে রিয়াল। তাতে বেশ কয়েকটি আক্রমণের সুযোগও তৈরি হয়। ৫১তম মিনিটে পাওয়া ফ্রি কিকে গোলও পেতে পারতো তারা। কিন্তু আলাবার নেওয়া দুর্দান্ত ফ্রি কিক কর্ণারের বিনিময়ে প্রতিহত করেন সিটি গোলরক্ষক এডারসন।
৭২তম মিনিটে আরও একবার গোলের সুযোগ হাতছাড়া করেন হালান্দ। রিয়াল গোলরক্ষক কোর্তোয়াকে একা পেয়েও গোল করতে পারেননি তিনি। তার শট পা বাড়িয়ে রুখে দেন গোলরক্ষক। ম্যাচের ৭৬তম মিনিটে নিজেদের জালেই বল পাঠিয়ে দেন রিয়ালের ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার মিলিতাও! বাঁ দিক থেকে ডে ব্রুইনের ফ্রি কিকে বক্সে কেউই ছোঁয়া দিতে পারেনি, তবে ক্লিয়ার করতে গিয়ে নিজেই নিজেদের জালে বল পাঠান তিনি। ৮৩তম মিনিটে প্রথম বড় পরীক্ষার মুখে পড়েন সিটি গোলরক্ষক এডারসন। প্রথমে বেনজেমার শট ঠেকানোর পর দারুণ ক্ষীপ্রতায় দানি কারভাহালের প্রচেষ্টাও প্রতিহত করেন তিনি। ৮৯তম মিনিটে হালান্দের বদলি হিসেবে মাঠে নেমে প্রথম ছোঁয়াতেই লক্ষ্যভেদ করেন আলভারেস। ফিল ফোডেনের নো লুক পাস বক্সে পেয়ে নিখুঁত দক্ষতায় রিয়ালের জালে পাঠান এই আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড। সূত্র : মানবজমিন
সুমি/হককথা