মুস্তাফিজকে নিয়ে শঙ্কা
- প্রকাশের সময় : ১০:৩৯:২৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ জুলাই ২০১৬
- / ৯১৮ বার পঠিত
ঢাকা: গত নভেম্বরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে প্রথম বাঁ কাঁধে চোট পেয়েছিলেন মুস্তাফিজুর রহমান। এমআরআই রিপোর্টে তখনই শঙ্কা জেগেছিল, চোটটা বড় কিছু। সমস্যা থাকতে পারে কাঁধের অস্থিসন্ধির একটি অংেশ, সংক্ষেপে যেটিকে বলে স্ল্যাপ (সুপিরিয়র ল্যাব্রাম অ্যান্টেরিয়র অ্যান্ড পোস্টেরিয়র)।
ঢাকায় করানো ওই পরীক্ষায় সমস্যাটা পরিষ্কারভাবে ধরা না পড়ায় ইংল্যান্ডে করানো গত পরশুর এমআরআই রিপোর্টের দিকে তাকিয়ে ছিলেন বিসিবির ফিজিও–চিকিৎসকরা। কাল রিপোর্ট দেখার পর সত্যি হয়েছে তাঁদের শঙ্কাই। তবে আগের চোটে যে দুটি তন্তু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল, সেগুলোর অবস্থা নাকি নতুন এমআরআইতে ভালোই দেখা যাচ্ছে। এবারের চোট আরেকটি তন্তুতে। রিপোর্ট নিয়ে কাল বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাতটায় ইউনিভার্সিটি অব গ্রিনউইচের অর্থোপেডিক সার্জন টনি কোচারের সঙ্গে দেখা করেছেন মুস্তাফিজ।
কোচার তাঁকে কী বলেছেন, সেটা বিস্তারিত জানা না গেলেও বিসিবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন চৌধুরী জানিয়েছেন, ‘আগামীকাল (আজ) ওর আরও কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে। সেগুলোর রিপোর্ট এবং চিকিৎসকের পরামর্শের ওপর ভিত্তি করে আমাদের কোচ-ফিজিওরা মিলে পরবর্তী করণীয় ঠিক করবেন।’ জাতীয় দলের ফিল্ডিং কোচ রিচার্ড হ্যালসল বর্তমানে ইংল্যান্ডেই আছেন। আরও ভালোভাবে মুস্তাফিজের সমস্যাটা বুঝতে তাঁকে লন্ডনে যেতে বলেছে বিসিবি।
জাতীয় দলের ফিজিও বায়েজিদুল ইসলাম কাল রাতে মুঠোফোনে মুস্তাফিজের সম্ভাব্য চিকিৎসা সম্পর্কে একটা ধারণা দিয়েছেন, ‘আমরা এখন কোচারের পরামর্শ শোনার অপেক্ষায় আছি। তবে এ ধরনের চোটের চূড়ান্ত সমাধান দুভাবে হতে পারে। একটা হলো ইনজেকশনের মাধ্যমে ওষুধ দিয়ে, অন্যটি অস্ত্রোপচার করে। কোচার হয়তো এর কোনো একটি পথই বেছে নেবেন।’
ব্যথানাশক ইনজেকশনের কল্যাণে কখনো কখনো এই চোট নিয়েও খেলা যায়। কিন্তু ঝুঁকি এড়াতে জাতীয় দলের প্রয়োজনেও এভাবে মুস্তাফিজকে খেলানো হয়নি। বিসিবি সাসেক্সকেও দিয়ে রেখেছে একই নির্দেশনা। বোর্ডের আশা, ইংলিশ কাউন্টি দলটি তাদের নির্দেশনার প্রতি যথাযথ সম্মান দেখাবে। সে ক্ষেত্রে আজ হোভে রয়্যাল লন্ডন ওয়ানডে কাপে হ্যাম্পশায়ারের বিপক্ষে মুস্তাফিজের খেলার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। তবে বিশ্রামে ব্যথা কমলে ফিরতে পারেন পরের ম্যাচগুলোতে।
২২ জুলাই ন্যাটওয়েস্ট টি-টোয়েন্টি ব্লাস্টে সারের বিপক্ষে ম্যাচে বা কাঁধে ব্যথা অনুভব করেন মুস্তাফিজ। দুই দিন পর রয়্যাল লন্ডন ওয়ানডে কাপে গ্লস্টারশায়ারের বিপক্ষে ম্যাচেও খেলতে পারেননি। ডাক্তার যদি অস্ত্রোপচারের পরামর্শ দেন এবং বিসিবিও যদি সে পথেই যাওয়ার চিন্তা করে, তাহলে মাঠে ফেরার অপেক্ষা বেশ দীর্ঘই হবে মুস্তাফিজের। অস্ত্রোপচারের পর মাঠের বাইরে থাকতে হতে পারে অন্তত ছয় মাস। একই অস্ত্রোপচারে এর আগে রুবেল হোসেন নয় মাস খেলার বাইরে ছিলেন।
একই সমস্যা আছে বাংলাদেশের আরও কয়েকজন ক্রিকেটারের। যাঁদের মধ্যে আছেন তামিম ইকবাল ও নাসির হোসেনও। কিন্তু ব্যাটসম্যান বলে তাঁদের কারও জন্যই অস্ত্রোপচার অপরিহার্য নয়। এসব চোটের ক্ষেত্রে ব্যাটসম্যানরা পুনর্বাসন, প্রয়োজনে ওষুধ খেয়েও খেলা চালিয়ে যেতে পারেন। মুস্তাফিজ বোলার বলেই সমস্যা। কাঁধে সমস্যা থাকলে যে হাত ঘোরানোর সময়ই ব্যথাটা বেশি অনুভূত হয়! তারপরও অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আরও একবার পুনর্বাসন-প্রক্রিয়ায়ও ফেরানোর চেষ্টা হতে পারে মুস্তাফিজকে। সে ক্ষেত্রেও মাঠে ফেরার সময়টা অনির্দিষ্ট।