মাশরাফি সমাচার: মেলর্বোনে যা ঘটছেলি : প্রবাসীদের ক্ষমা প্রার্থনা

- প্রকাশের সময় : ০৭:৫৯:৪৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০১৫
- / ১২৬৯ বার পঠিত
মেলর্বোন (অষ্ট্রেলিয়া): মেলর্বোনে ২৭ ফেব্রুয়ারী শুক্রবার প্রবাসী বাংলাদেশীদের একটি মসজিদে জুমার নামাজ পড়তে গিয়েছেলি মাশরাফি বিন র্মতুজা। সঙ্গে ছিলেন দ্য অষ্ট্রেলেয়িন পত্রিকার ভাষার বৃহস্পতিবার শ্রীলংকার বিরুদ্ধে খেলার মূল খলনায়ক (দ্য চীফ ভিলেন!) এনামুল আর মমনিুল হক শুভ। বৃহস্পতিবারের ম্যাচ বাংলাদেশের হাত ফসকানোর অন্যতম ভিত্তিস্থাপনকারী দুই সদস্যকে হয়তো কোন বিশেষ উদ্দশ্যে ছাড়াই নামাজসঙ্গী করেছিলেন মাশরাফি। কিন্তু সেখানে তাদের জন্য বিব্রত হবার মতো একটি ঘটনা ঘটছে! বৃহস্পতিবারের ম্যাচে দলের বাজে পারফরন্স নিয়ে কতিপয় ক্ষুব্ধ প্রবাসী বাংলাদেশীর জেরার মুখে পড়নে বাংলাদেশের কাপ্তান। এ ঘটনায় বিব্রত হতভম্ব হন ঘটনাস্থলে উপস্থিত আর কয়েক প্রবাসী। দল খারাপ বা হতাশাজনক কিছু করুক বা নাই করুক, এ মূর্হুতে বিশ্বকাপের বাকি ম্যাচগুলোকে সামনে রেখে দলকে তারা কোন অবস্থায় হতদ্যম, বিব্রত করতে রাজি না। দল নিয়ে তাদের এখনও অনকে আশা-স্বপ্ন।
সূত্রগুলোর মতে শুক্রবার মাশরাফি সহ দলরে কয়কে সদস্য মেলর্বোন শহরতলীর হান্টিংডেল মসজিদে জুমার নামাজে গেলে নজরুল ইসলাম নামের এক প্রবাসী বাংলাদশেী তাদের জেরা শুরু করনে। নজরুল ইসলাম অভেিযাগ করে বলেন, শ্রীলংকার সঙ্গে খেলার আগেরদিন বাংলাদেশ দলের সদস্যরা অনুশীলনে অংশ না নিয়ে ঘুরে বেড়েয়িছে! এরজন্যে যাচ্ছেতাই পারফরমেন্স দেখিয়ছে টিম বাংলাদেশ! তিনি তার এ প্রতিবাদে আরও কয়েক প্রবাসীকে ডেকে আননে। মাশরাফি এ সময় বলেন, বাংলাদেশ টিমের সবাই অনুশীলন করেনি, এটা ঠিক নয়। আর অনুশীলন বাধ্যতামূলকও নয়। এ নিয়ে কথার্বাতা, জেরা-বাদানুবাদরে পর্যায়ে গড়ালে মাশরাফি সহ খলোয়াড়দের সেখান থেকে নিয়ে যাওয়া হয়।
নজরুল ইসলাম এ ব্যাপারে বলেন, বাংলাদেশ দলের ক্যাপ্টেনের মর্যাদা বহাল রেখে তিনি তার সঙ্গে কথা বলেছিলেন। তিনি অভিযোগ করেন ক্যাপ্টেন তার সঙ্গে রুঢ় আচরণ করেছেন। রুঢ় আচরণ বলতে কী বোঝানো হচ্ছে তা অবশ্য খোলাসা করে বলেননি তিনি। বলেছেন ‘মাশরাফি আমার ছেলের বয়সী। সে অভিযোগ করে বলেছেন, আমি তার নাম ধরে ডেকেছি, কথা বলেছি’।
এদিকে হান্টিংডেল মসজিদের ঘটনা জানাজানি হলে প্রবাসী কমিউনিটিতে তা তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। কুদরত হোসেন নামের এক প্রবাসী তরুণ ফেসবুকে লিখছেন, মাশরাফির সঙ্গে যারা দূর্ব্যবহার করেছে তাদের পরিচয় জানা দরকার। সেই মসজিদে নামাজে ছিলেন এমন একজন প্রবাসী ডা. শাহেদ বলেন, নামাজ থেকে আগে আগে বেরুনোয় তিনি ঘটনা দেখেননি। তবে ঘটনা শুনে তিনি বিস্মিত হয়েছেন। কারণ এই মূহুর্তে টিম বিব্রত-আপসেট হতে পারে এমন কিছু করা কারো উচিত নয়। ডা. শাহেদ বলেন, নজরুল ইসলামকে তিনি ব্যক্তিগতভাবে চেনেন। তিনি একজন ক্রিকেট অনুরাগী। তামিম চিকিৎসার জন্যে মেলবোর্ন আসার পর তার বাসাতেই তাকে সর্ম্বধনা দেয়া হয়েছিল। তাই তার উদ্যোগেই ঘটনাটি ঘটায় তা তিনি মেলাতে পারছেন না। মেলবোর্ন প্রবাসী বিশিষ্ট কবি ও েেখক আহমেদ শরীফ শুভ, বাংলাদেশ দল বিব্রত ক্ষতগ্রিস্ত হতে পারে এমন আচরণ আর কেউ না করতে পারে তার জন্য প্রবাসী কমিউনিটকে আবেদন জানিয়ছেনে।
এদিকে অস্ট্রেলিয়ার প্রধান দৈনিক দ্য অস্ট্রেলিয়ানের শুক্রবারের সংখ্যায় বৃহস্পতিবারের ম্যাচে বাংলাদেশের ক্যাপ্টেনের লড়াকু ভূমিকার ভূয়শী প্রশংসা করা হয়েছে। মাশরাফিকে ‘নড়াইল এক্সপ্রেস’ উল্লেখ করে রিপোর্টে, তার শুরুর দিকে ০৬-০-২০-০ ইনিংসের ভূয়শী প্রশংসা করা হয়। রিপোর্টে এনামুলকে খেলার ‘চীফ ভিলেন’ উল্লেখ করে বলা হয়, এনামুল যখন থ্রিমানের ক্যাচ ফেলেন তখনো রানের খাতা খোলনেনি শ্রীলংকান এই অপেনার। সাঙ্গাতকারার ৪০০তম ওয়ানডেতে সেঞ্চুরী উপহার দিতে বাংলাদেশী ফিল্ডাররা তাকে দু’দফা জীবন দেয়। এরপর দিলশান-সাঙ্গাতকারার এমসিজির বিশ্বকাপ ইতিহাসের তৃতীয় দীর্ঘ র্পাটনারশীপে ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়ে শ্রীলংকা ম্যাচের আন্ডারডগ বাংলাদশে!
অষ্ট্রেলিয়া প্রবাসীদের দু:খ প্রকাশ ও ক্ষমা প্রার্থনা
মেলবোর্নে শুক্রবার সংঘটিত ঘটনার জন্যে লজ্জা, গভীর দু:খ প্রকাশ ও ক্ষমা প্রার্র্থনা করেছেন অষ্ট্রেলিয়া প্রবাসী বাংলাদেশীরা। শনিবার দেশটির বিভিন্ন অংশে বসবাসরত শতাধিক প্রবাসী এক বিবিৃতিতে ঘটনার জন্যে বাংালাদেশ দল, ক্যাপ্টেন মাশরাফি বিন মর্তুজা, বিসিবি, বাংলাদেশ দলের সকল সমর্থক, অনুরাগী এবং দেশবাসীর কাছে নি:র্শত ক্ষমা প্রার্থনা করেন। উল্লখ্য, শুক্রবার মেলবোর্ন শহরতলীর হান্টিংডেল মসজিদে জুম্মার নামাজে গেলে একজন প্রবাসী বাংলাদেশ দলের ক্যাপ্টেন মাশরাফির সঙ্গে বাক্যবানে চড়াও হন। বিবৃতিতে বলা হয় দেশের কিছু গণমাধ্যমে ঘটনাটি বিকৃতভাবে এসেছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, শুক্রবার মেলবোর্নে যা ঘটেছে তা নিঃসন্দেহে দুঃখজনক ও অনভিপ্রত। যে ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে তা ভালোবাসা থেকে আর ভালোবাসার দলের ‘পারসিভড’ র্ব্যথতা জনিত হতাশা থেকেই ঘটেছে বলে আমাদের বিশ্বাস। কিন্তু এই বহিঃপ্রকাশ আরো অন্যভাবে ঘটানো যেতো, অন্য সময় ঘটানো যেতো। সবচেয়ে ভালো হতো এই ক্ষোভকে পরামর্শের বা শুভ কামনার আঙ্গীকে বহিঃপ্রাকাশ ঘটালে। মাশারাফির ওই বিব্রতকর পরিস্থিতির জন্য মেলবোর্ন ও অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী অন্য সবার মতো আমরাও দুঃখিত ও ভারাক্রান্ত। ক্রিকেটপ্রেমী অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী বাঙালী হিসেবে দলের কাছে আমাদের নি:শর্ত অ্যাপোলজি। আমাদের বিশ্বাস, যিনি এই ঘটনার সাথে জড়িত এমন অসাবধানী আচরণের জন্য তিনি নিজেও বিষন্ন।
বিবৃতিতে বলা হয়, দেশের কিছু কিছু সংবাদ মাধ্যম এই ঘটনার অতিরঞ্জিত বিবরণ ছেপে মেলবোর্নের বাঙালী কমিউনিটিতে অনিচ্ছাকৃতভাবে হলেও বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে এবং ক্ষোভের ইন্ধন দিচ্ছে। কোন কোন সংবাদ মাধ্যমে বলা হয়েছে ঘটনাটি হাতাহাতি পর্যন্ত গড়িয়েছে যা একেবারেই অসত্য। এ ধরনের অসত্য, অনুমান নির্ভর ও বিভ্রান্তিকর সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য সাংবাদিক বন্ধুদের প্রতি সনির্বন্ধ অনুরোধ জানাচ্ছি।। দলের এখন প্রয়োজন আমাদের শুভ কামনা এবং উৎসাহ। এই সব বিভ্রান্তিমূলক সংবাদে দল ও কমিউনিটির মনোবল ক্ষুন্ন হয়।
বিবৃতিতে বলা হয় ঘটনাটি ছিল একেবারেই অনিচ্ছাকৃত, অপরিকল্পিত ও তাৎক্ষনিক ভাবাবেগের বহি:প্রকাশ। এটি কোন সংঘবদ্ধ ঘটনা ছিল না। আবারো বলছি, এই ঘটনা অনভিপ্রত ও অনাকাংখিত। আমরা এই ঘটনায় মর্মাহত। দলের কাছে এর জন্য আমরা নিঃশর্ত দুঃখ ও ক্ষমা প্রকাশ করছি। আমরা আমাদের দলকে ভালোবাসি। এই বিবৃতিতে বলা হয় আসুন, আমরা এই ঘটনার নিভু নিভু আগুনে জল ঢালি। দয়া করে কেউ এই আগুনে পট্রোাল ঢালবেন না। আনন্দ ও বেদেনায় আসুন আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকি। কারণ ক্রিকেট ছাড়াতো আমাদের ঐক্যের জায়গা তেমন কিছু নেই।
বিবিৃততে স্বাক্ষরদাতাদের মধ্যে রয়েছেন: মেলবোর্ন প্রবাসী ডা. আহমেদ শরীফ শুভ, আশরাফুল আলম, তাজউদ্দিন, ইফতি রশীদ, মোর্শেদ কামাল, এ কে এম ইমরান, আজমুল হুদা, তানিম মাহমুদ, নকীব রহমান, মফিজ ঢালি, ক্যানবরো প্রবাসী মামুনুর রহমান, তাসমিন রহমান, এনামুল ভূঁইয়া মুকুল, তারিক জামান, শাহাদাত মানিক, রওশন আরা, এজাজ মামুন, স্বপ্না শাহওেয়াজ, সুমন মাহবুব, নাদিমুল হক মন্ডল, সিডনি প্রবাসী গামা আব্দুল কাদির, সিরাজুল হক, অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম, আনোয়ার চৌধুরী, রবিন বনিক, ড. নূরুর রহমান খোকন, ড. লাভলি রহমান, ড. আব্দুর রাজ্জাক, ড. রোনাল্ড পাত্র, অজয় দাশগুপ্ত, ফজলুল বারী, আল নোমান শামীম, শাহরয়িার পাভেল, ফারাহ কান্তা, শাহাদাত চৌধুরী, আনিসুর রহমান, অজিত বড়ুয়া, বদিউর রহমান, আবু রেজা আরেফিন, চৌধুরী সুলতানা রাজিয়া, মোহাম্মদ মিজানুর রহমান নিশান, হুমায়ুন কবীর, রিজু ইমাম, এস এম আমিনুল রুবেল, ফাহাদ আসমার, নাজিম খান, রাব্বিল হাসান, রফিকুল ইসলাম জুয়েল, ফারজানা জে রিমি, ফারহানা হাসান, হাসিবুল কবির, শামস রাশেদ জয়, ওয়ারাশেদ রহমান, ওয়াহিদ বাপ্পী, শারমনি নাহার দিনা, দিশা তাসনিম, মোহাইমিন খান মিশু, সায়মা খানম, এলিজা আজাদ, নবেন্দু নির্মল সাহা জয়, মুকিতুল হক, সাদেক দিপু, মেলেবোর্ন প্রবাসী ডা. আহমদে শরীফ শুভ, মোর্শেদ কামাল, এ কে এম ইমরান, আশরাফুল আলম, ব্রিজবেন প্রবাসী শাহেদ সদরুদ্দিন, ড. মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম, ফারুক রেজা, এডেলেড প্রবাসী ড. আবু সিদ্দিক মিয়া, ড. মাহমুদুর রহমান পল্লব, ওয়াসিম সাদেক, ড. আনিস আহমেদ, অজিত দাশ, হাসান ইমাম, ড. সাইফুল ইসলাম, আশরাফ ভূইয়া, নাদিরা সুলতানা, এম ডি ফয়সাল, ড. আহমদ উল্লাহ, ড. মোহাম্মদ ওয়াজিদ, ড. মাহমুদুল হাসান, মাসুদুর রহমান, এস এ রহমান অরুপ প্রমুখ।