ভারতকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ

- প্রকাশের সময় : ০১:৩৯:২৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১১ মার্চ ২০২৪
- / ৭২ বার পঠিত
৮ই ফেব্রুয়ারি সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ নারী সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ১-১ সমতায় ছিল নির্ধারিত সময়ের ম্যাচ। সেদিন অবশ্য অনেক নাটকীয়তায় ভরা ফাইনালে টাইব্রেকারে বাংলাদেশ ভারতের কেউ জেতেনি। যুগ্ম চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করা হয়েছিল দু’দলকে। নেপালের আনফা কমপ্লেক্সে সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে আবারও মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ-ভারত। সেখানে ফিরে এসেছিল কমলাপুরের দৃশ্যপট। তবে এবারের দৃশ্যপটে বাংলাদেশের গোলরক্ষক ইয়ারজান বেগম। তার দৃঢ়তায় সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ নারী চ্যাম্পিয়নশিপে শিরোপা জিতলো বাংলাদেশ। ইয়ারজান ভারতের তিনটি পেনাল্টি ঠেকিয়ে দেশকে এনে দিয়েছেন এই শিরোপা। এর আগে অনূর্ধ্ব-১৫ শিরোপা জিতলেও এই প্রথমবারের মতো সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ টুর্নামেন্টের শিরোপা জিতেছে বাংলাদেশ। নির্ধারিত ৯০ মিনিটের খেলা ছিল ১-১ গোলে ড্র।
ম্যাচের পঞ্চম মিনিটে ভারত অনুশকা দেবীর গোলে ১-০ গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর বাংলাদেশ মরিয়াম বিনতে আন্নার গোলে সমতায় ফেরে। এদিন ম্যাচের প্রথমার্ধে ভালো খেলতে পারেনি বাংলাদেশের মেয়েরা। বারবার বল হারাতে হয়েছে। ভারতও যে খুব গতিময়, আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলেছে, এটা বলা যাবে না। তবে বাংলাদেশ দল স্নায়ুর চাপে ভুগছিল বেশ ভালো ভাবেই। বাংলাদেশের নড়বড়ে অবস্থার সুযোগ ভারত নিতেই পারত। কিন্তু সেটি হয়নি। সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি তারা। প্রথমার্ধে সমতায় ফেরার সুযোগ এসেছিল বাংলাদেশের সামনেও। কিন্তু ফাতেমা আক্তারের ফ্রি কিকে দ্বিতীয় প্রচেষ্টায় ফেরান ভারতের গোলরক্ষরক মুন্নি। দ্বিতীয়ার্ধে বাংলাদেশ কিছুটা ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে। কোচ সাইফুল বারী টিটু একাদশে দুটি বদল আনলে খেলার ধার বারে বাংলাদেশের।
ফাতেমার জায়গায় মমিতা আর ক্রানুচিং মারমার জায়গায় মাঠে নামেন অনন্যা মুরমু বীথি। ভারতকে এরপর চেপে ধরে বাংলাদেশ। ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে নিয়ে নেয়। পুরস্কার আসে ৭১ মিনিটে। অনন্যা মুরমু বীথির কর্নার থেকে মরিয়ম বক্সের মধ্যকার জটলায় বল ঠেলে দেন ভারতের গোলে। ১-১ সমতার পর ভারত কোনো সুযোগই পায়নি। বাকি ১৯ মিনিট খেলায় একচ্ছত্র আধিপত্য ছিল বাংলাদেশের। এই সময় কয়েকটি সুযোগও তৈরি হয়। কিন্তু গোল হয়নি। ১-১ সমতায় খেলা শেষ হলে সাফের বাইলজ অনুযায়ী খেলা সরাসরি গড়ায় টাইব্রেকারে। নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার কয়েক মিনিট আগে ভারতের কোচ গোলরক্ষক মুন্নিকে বদলিয়ে নামান অন্য গোলরক্ষক সুরুজ কুমারীকে। টাইব্রেকারে বাংলাদেশের পক্ষে প্রথম শটটি নিতে আসেন সেরা খেলোয়াড় সুরভী আকন্দ। কিন্তু তার শটটি ঠেকিয়ে দেন ভারতীয় গোলরক্ষক সুরুজ কুমারী। এরপর ভারতের শভেতা রানী টাইব্রেকারে ১-০ তে এগিয়ে দেন ভারতকে। বাংলাদেশের পক্ষে দ্বিতীয় শটে গোল করেন মরিয়ম। ভারতের দ্বিতীয় শটটি মিস করেন আলিনা। গোলরক্ষক ইয়ারজান ডান দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে শটটি ঠেকান। বাংলাদেশের তৃতীয় শটটিতে গোল করেন থুইনুই মারমা। এরপর, টাইব্রেকারের ওই রোমাঞ্চকর অধ্যায়, যেখানে ইয়ারজান দিবানি লিন্ডার শট ঠেকিয়ে দিলে উৎসবে মাতে লাল সবুজের বাংলাদেশ। আসরের রাউন্ড রবিন লীগে সেরা হওয়ার পথে ভারতকে ৩-১ গোলে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। এর আগে গতমাসে ঢাকায় সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ ফুটবলের ফাইনালে ৯৩ মিনিটে মোসাম্মাৎ সাগরিকার সমতাসূচক গোলে একই ভাবে সেই ফাইনাল টাইব্রেকারে নিয়েছিল বাংলাদেশ। এরপর পেনাল্টি শুট আউট ও সাডেন ডেথ মিলে স্কোরলাইন ছিল ১১-১১ সমতায়। এরপর ম্যাচ কমিশনারের টসে শিরোপা নির্ধারণের সেই বিতর্কিত সিদ্ধান্ত কমলাপুর স্টেডিয়ামে নাটকের জন্ম দিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ ও ভারত দুই দলকেই যুগ্ম চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করা হয়। সূত্র : মানবজমিন।