বাংলাদেশ স্পোর্টস কাউন্সিল ফুটবল টুর্নামেন্ট-২০১৫ : ব্রঙ্কস ইউনাইটেড চ্যাম্পিয়ন, যুব সংঘ রানার্স আপ
- প্রকাশের সময় : ০৪:০৪:৫১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫
- / ১০১৪ বার পঠিত
নিউইয়র্ক: বাংলাদেশ স্পোর্টস কাউন্সিল অব আমেরিকা আয়োজিত ফুটবল টুর্নামেন্টে ব্রঙ্কস ইউনাইটেড চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে। এনিয়ে ছয়বার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করলো ব্রঙ্কস ইউনাইটেড। টুর্নামেন্টে রানার্স আপ হয়েছে ওজনপার্ক যুব সংঘ। কুইন্সের নিউটাউন অ্যাথলেটিক মাঠে ১৩ সেপ্টেম্বর রোববার টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত হয়। খবর ইউএনএ’র।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান: রোববার অপরাহ্নে ফাইনাল খেলার উদ্বোধন করেন মাঠের বিশেষ অতিথি নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেটে নিযুক্ত কনসাল জেনারেল শামীম আহসান। বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে শুরু উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন স্পোর্টস কাউন্সিলের সভাপতি মহিউদ্দিন দেওয়ান। এরপর স্পোর্টস কাউন্সিলের কার্যকরী পরিষদের সদস্য জসিম উদ্দিন খান মিঠু’র অকাল মৃত্যুতে তার বিদেহী আতœার শান্তি কামনা করে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন স্পোর্টস কাউন্সিলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও উপদেষ্টা মঞ্জুর আহমেদ চৌধুরী, ফুটবল লীগ ও টুর্নামেন্টের পৃষ্ঠপোষক বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সামসুল আবদীন, ফাতেমা ব্রাদার্স ইন্ক’র প্রতিনিধি মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম দেলোয়ার প্রমুখ। পরে বলে শট মেরে ফাইনাল খেলার উদ্বোধন করেন কনসাল জেনারেল।
উদ্বোধনী বক্তব্যে কনসাল জেনারেল শামীম আহসান প্রবাসে প্রতিবছর ফুটবল লীগের আয়োজন করার জন্য আয়োজকদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, আমরা কুটনীতির মাধ্যমে আর খেলোয়াররা পরিচ্ছন্ন খেলাধুলার মাধ্যমে বাংলাদেশকে বহি:বিশ্বে তুলে ধরতে পারি। যা দেশকেই গৌরবান্বিত করবে। তিনি পৃষ্ঠপোষকতার মাধ্যমে ফুটবল লীগের আয়োজন অব্যাহত রাখার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহ্বান জানান। উল্লেখ্য, টাইম টেলিভিশন ফাইনাল খেলার উদ্বোধনী পর্ব সরাসরি সম্প্রচার করে।
ফাইনাল খেলায় নিউইয়র্ক বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের সভাপতি আবু তাহের ও সাধারণ সম্পাদক এবিএম সালাহ উদ্দিন আহমেদ, আমেরিকা-বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের সভাপতি নাজমুল আহসানসহ স্পোর্টস কাউন্সিলের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ও উপদেষ্টা আব্দুর রহিম বাদশা, উপদেষ্টা আতাউর রহমান সেলিম, জুলফিকার আলী, জুনায়েদ আহমেদ চৌধুরী, আজম চৌধুরী, ছদরুন নূর ও হাজী এনাম সহ কর্মকর্তাদের মধ্যে আনোয়ার হোসাইন, কবির চৌধুরী জসি, ওয়াহিদ কাজী এলিন, জহির উদ্দিন জুয়েল, জাকির হোসেন, মিসবা আবদীন, সাইকুল ইসলাম, মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম দেলোয়ার, সাদি মিন্টু, শাহাদৎ হোসেন, আবু তাহির আসাদ, মোহাম্মদ রশিদ রানা এবং কমিউনিটির উল্লেখযোগ্য নেতৃবৃন্দের মধ্যে আব্দুল বাছির খান, মুজাহিদুল ইসলাম, একে এম সফিকুল ইসলাম, সাবুল উদ্দিন, বিলাল চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
খেলার খবর: বৃষ্টিভেজা মাঠে অনুষ্ঠিত প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ফাইনাল খেলায় ব্রঙ্কস ইউনাইটেড ৩-০ গোলে ওজনপার্ক যুব সংঘকে পরাজিত করে চ্যাম্পিয়ন হয়। খেলার প্রথমার্ধে একটি এবং দ্বিতীয়ার্ধে দুটি গোল হয়। প্রথমার্ধের ৩৪ মিনিটের সময় চ্যাম্পিয়ন দলের কৃতি খেলোয়ার কফিল সংঘবদ্ধ আক্রমণ থেকে পাওয়া বলে ডি বক্সের কাছ থেকে দর্শনীয় শর্টে গোল করে দলকে এগিয়ে নিয়ে যান (১-০)। জমে উঠে খেলা। এই অর্ধে উভয় দল আক্রমণ পাল্টা আক্রমন চালালেও আর কোন গোল হয়নি। খেলার দ্বিতীয়ার্ধের ৪৪ মিনিটের সময় বিজয়ী দলের অপর কৃতি খেলোয়ার সিদ্দিক চমৎকার শটে দলের পক্ষে দ্বিতীয় গোল করেন (২-০)। এরপর খেলার ৭৮ মিনিটের সময় চ্যাম্পিয়ন দলের মারুফ আরো একটি করে গোল করে দলের জয় নিশ্চিত করেন (২-০)। খেলায় উভয় দল একাধিক গোলের সুযোগ নষ্ট করে। বিশেষ করে যুব সংঘের ফ্রি কিক থেকে গোল করার সুযোগ দর্শকদের ব্যথিত করে।
টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলায় চ্যাম্পিয়ন ব্রঙ্কস ইউনাইটেডের পক্ষে চারজন আর রানার্স আপ যুব সংঘের পক্ষে তিনজন বিদেশী খেলোয়ার অংশ নেন। ব্রঙ্কস ইউনাইটেডের পক্ষে খেলেন ফয়েজ, সাদিক, সামি ও রাজ। অপর দিকে যুব সংঘের পক্ষে খেলেন সাকিল, আবু ও নবি।
উল্লেখ্য, ফাইনাল খেলা শুরুর আগে ব্রঙ্কস ইউনাইটেডের একজন খেলোয়ার সম্পর্কে যুব সংঘ আপত্তি জানানোর ঘটনায় স্পোর্টস কাউন্সিলের কর্মকর্তাদের সাথে যুব সংঘের খেলোয়ার ও কর্মকর্তাদের সাথে মৃদু বাক-বিতন্ডা হয়। এজন্য খেলা শুরু হতে বিলম্বও ঘটে। পরবর্তীতে আলোচনার ভিত্তিতে আপত্তিটির সমাধান হলে ফাইনাল খেলা শুরু হয়।
ব্রঙ্কস ইউনাইটেড: মিনহাজ, মারুফ, রাসেল, সিদ্দিক, রাজু, পিপলু, হাসান, ফয়েজ, সাদিক, সামি ও ফয়সাল। অতিরিক্ত: কফিল, সামি, সুমন, মাহিদ, রুমেল, কামাল ও নবিন।
যুব সংঘ: সাইফ, নবি, রামির, আবু, সাবলু, সুহেল, আশরাফ, বাবলু, সাকিল, ফারহান, শরিফ। অতিরিক্ত: জাহিদ, রুমেল, মুরাদ, অ্যাশ, অপু, জুবের, সাব্বির ও ইকবাল।
স্যুভেনির প্রকাশনা: বাংলাদেশ স্পোর্টস কাউন্সিল অব আমেরিকা আয়োজিত ফুটবল লীগ ও টুর্নামেন্ট উপলক্ষ্যে প্রতিবছরের মতো এবছরও ‘ফুটবল লীগ’ শীর্ষক আকর্ষণীয় স্যুভেনির প্রকাশ করা হয়। ফাইনাল খেলা চলাকালীন সময়ে মাঠে ফিতা কেটে এই স্যুভেনির-এর প্রকাশনার সূচনা করেন মাঠের বিশেষ অতিথি বাংলাদেশ সোসাইটির সাবেক সভাপতি কামাল আহমেদ ও জালালাবাদ এসাসিয়েশন অব আমেরিকার সভাপতি বদরুল হোসেন খান। স্যুভেনিরটি সম্পাদনা করেন জহির উদ্দিন জুয়েল। এসময় কমিউনিটি নেতৃবৃন্দ সহ স্পোর্টস কাউন্সিলের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
পুরষ্কার বিতরণ: খেলা শেষে স্পোর্টস কাউন্সিলের সভাপতি মহিউদ্দিন দেওয়ানের সভাপতিত্বে পুরষ্কার বিতরনী অনুষ্ঠিত হয়। কমিউনিটি নেতৃবৃন্দ ফুটবল টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন ও রানার্স আপ দল সহ এবারের ফুটবল লীগের চ্যাম্পিয়ন ও রানার্স দলসহ ফেয়ার প্লে টিম, এমভিপি, সেরা খেলোয়ার, সর্বোচ্চ গোলাদাতা, সেরা গোলকিপার সেরা ডিফেন্ডার ও ইয়ং রাইজিং স্টার খেলোয়ারের মাঝে ট্রফি বিতরণ করেন। এর আগে মাঠের অতিথি হিসেবে বিশিষ্ট রাজনীতিক সাজ্জাদুর রহমান সাজ্জাদ, এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের চেয়ারম্যান নিজাম চৌধুরী, বাংলাদেশ সোসাইটির সাবেক সভাপতি কামাল আহমেদ, জালালাবাদ এসোসিয়েশন অব আমেরিকার সভাপতি বদরুল হোসেন খান, বিয়ানীবাজার সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সমিতির সভাপতি আজিমুর রহমান বুরহান, রিয়েল এস্টেট ইনভেস্টর মো: আনোয়ার হোসেন, স্পোর্টস কাউন্সিলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মঞ্জুর আহমেদ চৌধুরী, সভাপতি মহিউদ্দিন দেওয়ান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। পুরষ্কারদাতারা সংশ্লিষ্টদের মাঝে পুরষ্কারের ট্রফি তুলে ধরেন। ফাইনাল খেলার উদ্বোধনী ও পুরষ্কার বিতরণী পর্ব পরিচালনা করেন স্পোর্টস কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বাসিত খান বুলবুল।
পৃষ্টপোষক: এবারের ফুটবল লীগ ও টুর্নামেন্ট আয়োজনে পৃষ্ঠপোষক ছিলেন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী শামসুল আবদীন, ফাতেমা ব্রাদার্স-এর চেয়ারম্যান আলহাজ সামসুল ইসলাম, এটর্নী মঈন চৌধুরী, রিয়েল এস্টেট ইনভেস্টর ও সমাজসেবী মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আব্দুল হাই জিয়া, রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী মইনুল ইসলাম ও কমিউনিটি অ্যাক্টিভিস্ট বাহার খন্দকার সবুজ।
যাদের সৌজন্যে পুরষ্কার: টুর্নামেন্ট চ্যাম্পিয়ন ট্রফি (শাহাদৎ হোসেন), টুর্নামেন্ট রানার আপ ট্রফি (মফিজুল ইসলাম রুমি), লীগ চ্যাম্পিয়ন ট্রফি (সাপ্তাহিক পরিচয়), লীগ রানার আপ ট্রফি (জয়া হল), ফেয়ার প্লে টিম-সন্দ্বীপ স্পোটিং ক্লাব (এ কে এম রফিকুল ইসলাম ডালিম), এমভিপি ওজনপার্ক যুব সংঘের শরিফ (সাবুল উদ্দিন), সেরা খেলোয়ার ফাইনাল- ব্রঙ্কস ইউনাইটেড-এর মারুফ (একেএম সফিকুল ইসলাম), সর্বোচ্চ (১০ গোল) গোলাদাতা যৌথভাবে যুব সংঘের বাবলু ও ব্রঙ্কস ইউনাইটেডের কফিল (সাইফুল্লাহ ভূঁইয়া), সেরা গোলকিপার ওজনপার্ক এফসি’র রাহুল (আজিমুর রহমান বুরহান), সেরা ডিফেন্ডার ব্রঙ্কস ইউনাইটেডের মিনজাহ (হারুন ভূঁইয়া) ও ইয়ং রাইজিং স্টার খেলোয়ার জ্যাকসন হাইটস বিসি’র রাহাত (নাসির উদ্দিন আহমেদ)।