দলের ব্যাটিং ব্যর্থতা নিয়ে ভাবছেন সাকিবও
- প্রকাশের সময় : ১২:০৭:১৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৩
- / ১২০ বার পঠিত
স্পোর্টস ডেস্ক : বছরের শুরু থেকেই টাইগারদের বড় স্বপ্ন ছিল এশিয়া কাপ ও ভারতে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া বিশ্বকাপ নিয়ে। কারণ, ওয়ানডে ফরম্যাটেই আয়োজিত হবে এ দুই আসর। আর এই ফরম্যাটে বাংলাদেশ তুলনামূলক বেশ শক্তিশালী দলও। দেশে কিংবা দেশের বাইরে যে কোনো প্রতিপক্ষের চোখে চোখ রেখেই এই ফরম্যাটে লড়াই চালাতে জানেন সাকিব-তামিম-মুশফিকরা। তবে যত বড় স্বপ্ন নিয়ে বুক বেঁধেছিল, ধীরে ধীরে যেন তা মুছে যেতে শুরু করেছে। কেননা, এই ফরম্যাটেও বেশ কয়েক সিরিজ ধরে ভুগছে বাংলাদেশ। তার কারণ হলো ব্যাটিং ব্যর্থতা।
রীতিমতো এখন সব ম্যাচেই দেখা যাচ্ছে এমন কাণ্ড। একেক ম্যাচে এক কিংবা দুই জন ব্যাটারকে দেখা যায় কার্যত ভূমিকায়, বাকি সবাই থাকেন নিষ্প্রণ। চলতি বছরে এখন এশিয়া কাপের আগে তিন দলের বিপক্ষে তিন ম্যাচের চারটি ওয়ানডে সিরিজ খেলেছে। তার মধ্যে ইংল্যান্ড এবং সব শেষ আফগানিস্তানের বিপক্ষে হেরেছে, তা-ও ঘরের মাটিতে খেলে। তবে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে হোম ও এওয়ে সিরিজে জয় পেয়েছে। এছাড়া চলমান এশিয়া কাপেও গ্রুপ পর্ব আর সুপার ফোর মিলিয়ে এখন অবধি চার ম্যাচ খেলেছে টাইগাররা, যার মধ্যে জয় পেয়েছে কেবল একটি ম্যাচে। আর সব কটি হারা ম্যাচেই দেখা গেছে টাইগারদের ব্যাটিং ব্যর্থতার শো, যা কিনা বিশ্বকাপের আগে ভাবাচ্ছে দলকে। সবশেষ এশিয়া কাপের সুপার ফোরের ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হারের পর এমনটি জানিয়েছে টাইগারদের তিন ফরম্যাটের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান।
গত শনিবার ম্যাচ শেষে সাকিব এ প্রসঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘ব্যাটিং নিয়ে অবশ্যই আমরা চিন্তিত। বেশ কিছুদিন ধরেই আমরা ভালো ব্যাটিং করছি না। সেই জায়গাগুলো দেখার এবং চিন্তা করার আছে। বিশ্বকাপের আগে এই টুর্নামেন্ট খুবই কাজে দিয়েছে। রিয়েলিটি চেকটা দরকার ছিল আমাদের। দ্বিপাক্ষিক সিরিজে আমরা সব সময়ই ভালো খেলি। বলতে পারবেন না এসব সিরিজে আমরা কখনো খারাপ দল ছিলাম। আমাদের বড় পরীক্ষাগুলো হয় এ রকম বড় টুর্নামেন্টগুলোতে, যেখানে আমরা কখনোই আহামরি কিছু করি না। খেয়াল করলে দেখবেন, ২০০৭ বিশ্বকাপে তিনটি ম্যাচ জিতেছি, ২০১১-এর বিশ্বকাপে তিনটি জিতেছি, ২০১৫ বিশ্বকাপে তিনটি জিতেছি, ২০১৯ বিশ্বকাপেও তিনটি ম্যাচই জিতেছি। আমাদের ইতিহাস নেই বড় টুর্নামেন্টে ভালো করার। যদিও এশিয়া কাপে দু-তিন বার ফাইনাল খেলেছি, তবে জিতলে আরও ভালো হতো। গত ছয় মাস ধরে আমাদের ব্যাটিং খারাপ হচ্ছে। ধারাবাহিকভাবেই নিচের দিকে যাচ্ছে। এটা নিয়ে কাজ করতে হবে। আসলে অনেকে অনেক কথা বলতে পারে, কিন্তু যখনই রিয়েলিটি চেকটা হয়, তখন কিন্তু আমরা ব্যর্থই হয়েছি। এটা ভালো যে বিশ্বকাপের আগে এই টুর্নামেন্টটা হয়েছে। সবাই অবশ্যই চিন্তা করবে এই সমস্যাগুলো কীভাবে সমাধান করা যায়।’
এদিকে অধিনায়কের কাছে ব্যাটিং ব্যর্থতা রিয়েলিটি চেক হলেও বিষয়টিকে পজিটিভভাবে নিচ্ছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। তার মতে, দলে অভিজ্ঞ কয়েক জন ব্যাটার (তামিম-শান্ত) না থাকায় এমনটি হয়েছে। দলের তরুণদের দিকে এখনই আঙুল তুলতে চাইছেন না তিনি। তবে সাকিব-লিটন-মুশফিকের থেকে আরও ভালো কিছু আশা করছেন তিনি। দলের ব্যাটিং ব্যর্থতা নিয়ে বলেন, ‘দলের মূল ক্রিকেটারদের অনেকে না থাকায় এই সমস্যাটা হয়েছে। (শান্ত না থাকায়) আমাদের আরো একটি পরিবর্তন আনতে বাধ্য হতে হলো। এগুলো তো আগে থেকে জানা ছিল না। কিন্তু আজকের (শনিবারে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষের ম্যাচ) ম্যাচটায় আমি নতুনদের দোষ দিই না। লিটন, সাকিব, মুশফিক—এই তিন জনের কাছ থেকে তো ১০০ রান আশা করাই যায়। আপনারা তো পজিটিভগুলা বলছেন না।’ তবে এশিয়া কাপের পর নিজেদের প্রস্তুত করতে আরেকটি সুযোগ পাবে টাইগাররা। আগামী ১৭ সেপ্টেম্বর তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজ খেলতে ঢাকায় আসবে নিউজিল্যান্ড দল। তাদের বিপক্ষে এই তিন ম্যাচে যদি ব্যাটিং ব্যর্থতা কাটিয়ে উঠতে না পারে সাকিব বাহিনী, তাহলে ভারতে ওয়ানডে বিশ্বকাপে খেলতে গিয়ে বেশ পরীক্ষার সম্মুখীনই হতে হবে তাদের। আর তাই যদি হয়, তাহলে বলাই যায়, আবারও বিশ্বকাপে হতাশ হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। সূত্র : দৈনিক ইত্তেফাক
বেলী/হককথা