তিন মাসের মধ্যে অ্যাথলেটিক্সে আমুল পরিবর্তন আনতে চাই : মন্টু
- প্রকাশের সময় : ০৫:৩৭:০২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১ মে ২০১৭
- / ৮৯৯ বার পঠিত
নিউইয়র্ক: গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সহকারী এটর্নী জেনারেল, বাংলাদেশ অ্যাথলেটিক্স ফেডারেশন-এর নব মনোনীত সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাদেশ অলিম্পিক এসোসিয়েশনের কার্যকরী পরিষদের নবনির্বাচিত সদস্য অ্যাডকেট আব্দুর রকীব মন্টু বলেছেন আগামী তিন মাসের মধ্যে দেশে ক্রীড়াঙ্গনে বিশেষ করে অ্যাথলেটিক্সে আমুল পরিবর্তন আনতে চাই। এজন্য ‘ইয়ারলী ক্যালেন্ডার’ সহ বাস্তমুখী নতুন নতুন পরিকল্পনা গ্রহণ করা হচ্ছে। নতুন দায়িত্ব পালন চ্যালেঞ্জ হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমি প্রিয় দেশে অপসংস্কৃতি নয়, উন্নয়নের রাজনীতিতে বিশ্বাসী। আমি দেশের ক্রীড়াঙ্গনকে রাজনীতিমুক্ত রাখতে চাই। তিনি বলেন, একজন প্রবাসী খেলোয়ার হিসেবে সরকার আমাকে মূল্যায়ন করেছে। আমিও আমার দায়িত্ব পালনে দেশের সেরা খেলোয়ারদের সাথে প্রবাসী খেলোয়ারদের মূল্যায়িত করতে চাই। সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে না পারলে প্রয়োজনে দায়িত্ব ছেড়ে দেবো। যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী সাবেক খেলোয়ারদের সাথে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।
সিটির জ্যাকসন হাইটসস্থ খাবার বাড়ী রেষ্টেুরেন্টের চাইনিজে গত ৩০ এপ্রিল রোববার অপরাহ্নে আয়োজিত সভায় সভাপতিত্ব করেন সাবেক ক্রীড়াবীদ ও সাপ্তাহিক ঠিকানা’র সিইও সাঈদ-উর রব। যুক্তরাষ্ট্র সফররত সাবেক আইন ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আব্দুল মতিন খসরু এমপি সভার শেষ পর্যায়ে যোগ দেন। উল্লেখ্য, বাংলাদেশ অ্যাথলেটিক্স ফেডারেশন-এর নব মনোনীত সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাদেশ অলিম্পিক এসোসিয়েশনের কার্যকরী পরিষদের নির্বাচিত সদস্য হিসেবে অ্যাডকেট আব্দুর রকীব মন্ট এই প্রথম যুক্তরাষ্ট্র সফর করেন। অনুষ্ঠানে তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়। খবর ইউএনএ’র।
বাংলাদেশ স্পোর্টস কাউন্সিল অব আমেরিকার সভাপতি মহিউদ্দিন দেওয়ানের উপস্থাপনায় সভায় আলোচনায় অংশ নেন সাপ্তাহিক ঠিকানা’র প্রধান সম্পাদক মুহাম্মদ ফজলুল রহমান, বাংলাদেশের সাবেক দূত মানব শাহজালাল মবিন ও বিমল তরফদার, স্পোর্টস কাউন্সিলের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ও উপদেষ্টা আব্দুর রহীম বাদশা, বিশিষ্ট ক্রীড়া সংগঠক শমসের আলী, সাবেক শুটার এসএম ফেরদৌস, সাবেক বক্সার সৈয়দ এনায়েত আলী, স্পোর্টস কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বাসেত খান বুলবুল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জুয়েল আহমেদ, কমিউনিটি অ্যাক্টিভিস্ট দুদু, ডা. শাহানারা আলী, ফেরদৌসী বেগম প্রমুখ। সভায় স্পোর্টস কাউন্সিলের কোষাধ্যক্ষ ওয়াহিদ কাজী এলিন ও বক্সার সেলিম সহ প্রবাসে বসবাসকারী দেশের সাবেক ক্রীড়াবীদ ও সংগঠকগণ উপস্থিত ছিলেন।
সভায় আব্দুল মতিন খসরু বলেন, মন ভালো রাখতে, মনকে প্রফুল্ল রাখতে খেলোধুলার বিকল্প নেই। আমাদের ক্রিকেট দেশকে বিশ্ব দরবারে কল্পাতীত মর্যাদা এনে দিয়েছে। তিনি বলেন, অ্যাডভোকেট মন্টু ক্রীড়া পরিবারের সদস্য। এজন্যই তাকে ক্রীড়াঙ্গনের গুরু দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তিনি মন্টুর সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।
আব্দুর রকীব মন্টু তার বক্তব্যে আরো বলেন, আমি নামেমাত্র চেয়ারে আছি। আমার ঐ চেয়ারের মালিক প্রবাসী খেলোয়ারগণসহ দেশের সকল খেলোয়ার। আমি রাজনৈতিক পরিচয়ে নয়, প্রবাসী খেলোয়ার হিসেবে নতুন দায়িত্ব পেয়েছি। আমি সবার প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে চাই।
তিনি দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে খেলোয়ারী কোঠা বন্ধ সহ ক্রীড়াঙ্গনের নানা সমস্যার কথা তুলে ধরে বলেন, আমরা খেলোয়াররাই আমাদের সম্মান নষ্ট করছি। আমি ক্রীড়াঙ্গনে মাসলম্যান দেখতে চাই না। আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। তিনি বলেন, ভারত সহ বিভিন্ন দেশের সাবেক খেলোয়ারদের জন্য চাকুরী সহ ইন্সুরেন্সের ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু আমাদের দেশের তেমন ব্যবস্থা নেই। তিনি বলেন, দেশে অ্যাথলেটস না থাকলে অ্যাথলেটিক্স ফেডারেশনও থাকবে না। তাই আমাদেরকে খেলোয়ার তৈরী করতে হবে।
সভায় সাবেক ক্রীড়াবীদরা তাদের বক্তব্যে নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত আব্দুর রকীব মন্টুকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, তার সম্মান মানেই প্রবাসী খেলোয়ারদের সম্মান। কেননা তিনি একজন প্রবাসী খেলোয়ার। বক্তারা তাদের বক্তব্যে দেশের ক্রীড়াঙ্গনের বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরে বলেন, দূর্ভাগ্য হলেও সত্য যে, দেশ-বিদেশে সুনাম অর্জনকারী অনেক খেলোয়ার আজ প্রবাসী। দেশ তাদের ধরে রাখতে পারছে না, মূল্যায়নও করছে না। তাদের অভিজ্ঞতাকেও কাজে লাগাচ্ছে না। এতে দেশের ক্রীড়াঙ্গন যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তেমনী প্রবাসে দেশের অনেক সাবেক খেলোয়ার নানা সমস্যার মধ্যদিয়ে জীবন-যাপন করছেন। বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, অবসরের পর জাতীয় খেলোয়ারগণকে মূল্যায়িত করা হচ্ছে না। বক্তারা সাবেক খেলোয়ারদের আর্থিক সমস্যার সমাধানে বিভিন্ন ষ্টেডিয়াম মার্কেটে একটি করে দোকান বরাদ্দ দিয়ে সরকারকে সহযোগিতর হাত প্রসারিত করা এবং প্রবাস থেকে একটি দলকে দেশের ক্রীড়াঙ্গনের প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়ার সুযোগ দেয়ারও দাবী জানান।
সভায় কোন কোন বক্তা দেশের ক্রীড়াঙ্গনকে রাজনীতিমুক্ত রাখা এবং স্পোর্টস মেডিসিন বিশেষজ্ঞ নিয়োগদানেরও দাবী জানান। কেউ কেউ আব্দুর রকীব মন্টুকে আগামী নির্বাচনে সংসদ সদস্য হিসেবে জাতীয় সংসদে দেখতে চান।