নিউইয়র্ক ০১:৫৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

জয়ের হ্রাস নিয়ন্ত্রণ চাবিকাঠি দুই দলেরই হাতে

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৮:৫৫:১৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ নভেম্বর ২০২৩
  • / ৯৮ বার পঠিত

স্পোর্টস ডেস্ক : সব সময় টুর্নামেন্টের শেষ দিকে ক্ষিপ্র গতির লড়াই জমে ওঠে। চলতি বিশ্বকাপও শেষ দিকে চলে এসেছে। এখন পর্যন্ত সেমিফাইনালের দৌড়ে যে কয়টি দল টিকে আছে, তারা নিজেদের সবকিছু নিংড়ে দিয়ে সেমিফাইনালে জায়গা করে নেয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করবে। এই দলগুলোর মধ্যে একটি হলো আফগানিস্তান। টুর্নামেন্টের শুরুর আগে এই দলটিকে অতটা হিসাবে ধরা হয়নি। না ধরার পেছনে কিছু যুক্তিও ছিল। মাত্র তৃতীয় বিশ্বকাপ খেলছে তারা। চলতি আসরে দুটি কিংবা তিনটি জয় পেলেই তো দলটির জন্য বিশাল অর্জন হওয়ার কথা! তবে ক্রিকেট বিশ্লেষকদের গতানুগতিক চিন্তা-ভাবনার বাইরে গিয়ে একের পর এক রূপকথার জন্ম দিয়ে যাচ্ছে আফগানিস্তান। দাপুটে ক্রিকেট খেলছে উঠতি শক্তির এই দলটিও। বেশ ভালোভাবেই বিশ্বকাপ মঞ্চ মাতাচ্ছে তারা। তিন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন দল- ইংল্যান্ড, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কাকে হারানোর বীরত্ব দেখিয়েছে আফগান-যোদ্ধারা। এরপর নেদারল্যান্ডসকে হারিয়ে সেমিফাইনালে খেলার জোরালো সম্ভাবনা তৈরি করেছে তারা। তাদের বিস্ময়কর এই পারফরম্যান্সের কিন্তু উচ্চ প্রশংসা করতেই হবে। আজ যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটির প্রতিপক্ষ পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া। তাদের সেমিফাইনালে ওঠার জন্য এই ম্যাচটি মহাগুরুত্বপূর্ণ। সেমিফাইনালের দৌড়ে টিকে থাকতে হলে জয়ের বিকল্প নেই। আমি মনে করি, নিঃসন্দেহে সর্বশক্তি দিয়ে উড়তে থাকা অস্ট্রেলিয়াকেও মাটিতে নামিয়ে দেয়ার দৃঢ় প্রতিজ্ঞা নিয়েই মাঠে নামবে রশিদ, মুজিবরা।

অন্যদিকে, বিশ্বকাপ শুরুর আগে থেকেই অস্ট্রেলিয়ার নামটি ফেভারিটের তালিকায় ছিল জোরালোভাবে। যদিও টুর্নামেন্টের শুরুর দিকে তাদের প্রতাপশালী ক্রিকেট দেখা যায়নি। ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে যেভাবে হেরেছিল অজিরা- এ দলটি বেশিদূর যাবে না বলে গুঞ্জন শুরু হয়ে গিয়েছিল। তবে সেই হতাশা কাটিয়ে বেশ ভালোভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে এখন সেমিফাইনালের দ্বারপ্রান্তে দলটি। টানা পাঁচ ম্যাচ জিতে তারা যে ছন্দে আছে- এই অস্ট্রেলিয়াকে আটকানো মুশকিল হবে। তারাও সেমিফাইনালে খেলা নিশ্চিত করতেই মাঠে নামবে। আমার মতে, দুই দলের জন্যই আজকের ম্যাচটির মর্যাদা ও গুরুত্ব অনেক। কেউ কাউকে ছেড়ে কথা বলবে না। যেকোনো মূল্যে জয় তুলে নেয়ার চেষ্টায় থাকবে। ম্যাচটিকে নকআউট ম্যাচ মনে করেই খেলবে দুই দল। উত্তাপ-উত্তেজনা ও তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ম্যাচে যেসব উপাদান থাকা দরকার- এই ম্যাচে কোনো কিছুরই কমতি থাকবে না বলে আশা করি।

যদি দুই দলের শক্তি-সামর্থ্যের কথা বলি- স্বাভাবিক হিসাবে আফগানদের চেয়ে যোজন-যোজন এগিয়ে অস্ট্রেলিয়া দল। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ফেভারিট হিসেবে খেলবে তারা। তাদের যেমন শক্তিশালী ব্যাটিং লাইনআপ রয়েছে, তেমনি বোলিং লাইনআপও বিধ্বংসী এবং খুবই বৈচিত্র্যময়। পাওয়ার ব্যাটিং কাকে বলে, আগের ম্যাচগুলোয় দেখিয়েছে অস্ট্রেলিয়ানরা। টানা জয় পাওয়া পাঁচ ম্যাচের মধ্যে বেশির ভাগ ম্যাচেই সাড়ে তিনশ, চারশর কাছাকাছি রান করেছে দলটি। ডেভিড ওয়ার্নার, ট্রাভিস হেডরা দারুণ ফর্মে আছেন। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার পাওয়ার ব্যাটিংয়ের মূল অস্ত্র গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে তারা পাচ্ছে না। জানা গেছে, গলফ খেলতে গিয়ে কার্ট থেকে পড়ে নাকি আহত হয়েছেন এই বিস্ফোরক অলরাউন্ডার। পরিবার-সংকটে বিশ্বকাপ ছেড়ে দেশে ফিরে গেছেন মিচেল মার্শও। ফলে এই দুই গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়কে যদি না পায় অস্ট্রেলিয়া, তাহলে তাদের ব্যাটিং শক্তি অনেকটাই কমে যাবে। তবে যারা দলে আছেন, তারাও কিন্তু ভালো পারফর্মার। ম্যাচ ঘুরিয়ে দেয়ার ক্ষমতা রাখেন। সুযোগ পেলে জ্বলে উঠছেন সাইড বেঞ্চে থাকা খেলোয়াড়রাও। আমি মনে করি, এই ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার পাওয়ার ব্যাটিংয়ের বিরুদ্ধে আফগানিস্তানের ধারালো বোলিংয়ের বড় লড়াই জমে উঠবে। কেননা ঐতিহ্যগতভাবেই স্পিনে খেলায় দুর্বল অজিরা। তাদের এই দুর্বলতার সুযোগ কাজে লাগাতে পারেন আফগানরা। বিশ্বখ্যাত লেগ স্পিনার রশিদ খান, মুজিব উর রহমান ও মোহাম্মদ নবির সমন্বয়ে যে স্পিন শক্তি গড়ে উঠেছে তাদের- এই শক্তি দিয়েই শক্তিশালী প্রতিপক্ষকে মাটিতে নামিয়ে দিচ্ছে তারা। গত ম্যাচগুলোতে আমরা দেখেছি, তাদের স্পিনের বিরুদ্ধে অসহায় আত্মসমর্পণ করেছে প্রতিপক্ষ ব্যাটাররা। শুধু স্পিনই নয়, ফজল হক ফারুকিদের দ্রুতগতির বল খেলতে গিয়েও খাবি খেয়েছে অনেক নামি ব্যাটার। পেস শক্তিও তাদের অনেক ধারালো। ফলে আফগানিস্তান এখনো বড় দলের তালিকায় নাম ওঠাতে না পারলেও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অনেক বড় প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়াতে পারে তারা। মাঠের লড়াইয়ে অনেক বিপজ্জনক হতে পারে আফগানরা। আমার মতে, বড় দলগুলোকে হারিয়ে যে আত্মবিশ্বাস জমা করেছে হাশমতউল্লাহ শহিদীরা- সেটি জ্বালানি হিসেবে কাজে লাগিয়ে তারা আরেকটি নতুন রূপকথার জন্ম দিতে পারে আজ।

অন্যদিকে, টুর্নামেন্টের শুরুর দিকে বেশ কিছু ভুল চোখে পড়েছিল অস্ট্রেলিয়া দলের। তবে সময়ের পরিক্রমায় সেগুলো শুধরে পূর্ণ রূপে ফিরে আগ্রাসী ক্রিকেট খেলছে দলটি। তাদের ক্রিকেটাররা ভারতের কন্ডিশনের সঙ্গে বেশ মানিয়ে নিয়েছে। কীভাবে ভারতের উইকেটে রান তুলতে হবে- সেই রিদম পেয়ে গেছে তারা। আফগানিস্তানের বিপক্ষেও ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামের ব্যাটিং-স্বর্গ উইকেটে বড় স্কোর গড়তে পারেন অস্ট্রেলিয়ানরা। অবশ্য মাঠে জবাব দেবে আফগানরাও। তাদের জয়ের ক্ষুধা অনেক। মাঠে তাদের শরীরী ভাষাই বলে দেয় যে, তাদের মধ্যে ভালো করার কতটা তাড়না। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ আফগানিস্তানের ক্রিকেটই একমাত্র সম্বল। এই ক্রিকেটের মাধ্যমে দেশের মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য জান-প্রাণ দিয়ে সব কিছু উজাড় করে মাঠে লড়াই করেন রশিদ, নবিরা। এটি তাদের দলের জন্য খুবই ইতিবাচক একটি দিক।

এদিকে অস্ট্রেলিয়া ও আফগানিস্তানের ক্রিকেট-যুদ্ধ মাঠের বাইরেও রং ছড়িয়েছে। কেননা চলতি বছরের শুরুর দিকে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে আফগানিস্তানের দ্বিপক্ষীয় ক্রিকেট সিরিজ খেলার কথা ছিল। কিন্তু অস্ট্রেলিয়া খেলতে চায়নি। এ নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে। এবার বিশ্বকাপের মঞ্চে দুই দল মুখোমুখি হচ্ছে। তাই স্বাভাবিকভাবেই দুই দলের লড়াইটা যুদ্ধংদেহী একটা রূপ নিয়েছে। প্রত্যাশা করি, এই ম্যাচটি বিশ্বকাপের অন্য সব আকর্ষণীয় ম্যাচের মতো খুবই উপভোগ্য এবং বাড়তি আমেজ ছড়াবে সবার মাঝে। সূত্র : দৈনিক বাংলা

হককথা/নাছরিন

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

জয়ের হ্রাস নিয়ন্ত্রণ চাবিকাঠি দুই দলেরই হাতে

প্রকাশের সময় : ০৮:৫৫:১৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ নভেম্বর ২০২৩

স্পোর্টস ডেস্ক : সব সময় টুর্নামেন্টের শেষ দিকে ক্ষিপ্র গতির লড়াই জমে ওঠে। চলতি বিশ্বকাপও শেষ দিকে চলে এসেছে। এখন পর্যন্ত সেমিফাইনালের দৌড়ে যে কয়টি দল টিকে আছে, তারা নিজেদের সবকিছু নিংড়ে দিয়ে সেমিফাইনালে জায়গা করে নেয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করবে। এই দলগুলোর মধ্যে একটি হলো আফগানিস্তান। টুর্নামেন্টের শুরুর আগে এই দলটিকে অতটা হিসাবে ধরা হয়নি। না ধরার পেছনে কিছু যুক্তিও ছিল। মাত্র তৃতীয় বিশ্বকাপ খেলছে তারা। চলতি আসরে দুটি কিংবা তিনটি জয় পেলেই তো দলটির জন্য বিশাল অর্জন হওয়ার কথা! তবে ক্রিকেট বিশ্লেষকদের গতানুগতিক চিন্তা-ভাবনার বাইরে গিয়ে একের পর এক রূপকথার জন্ম দিয়ে যাচ্ছে আফগানিস্তান। দাপুটে ক্রিকেট খেলছে উঠতি শক্তির এই দলটিও। বেশ ভালোভাবেই বিশ্বকাপ মঞ্চ মাতাচ্ছে তারা। তিন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন দল- ইংল্যান্ড, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কাকে হারানোর বীরত্ব দেখিয়েছে আফগান-যোদ্ধারা। এরপর নেদারল্যান্ডসকে হারিয়ে সেমিফাইনালে খেলার জোরালো সম্ভাবনা তৈরি করেছে তারা। তাদের বিস্ময়কর এই পারফরম্যান্সের কিন্তু উচ্চ প্রশংসা করতেই হবে। আজ যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটির প্রতিপক্ষ পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া। তাদের সেমিফাইনালে ওঠার জন্য এই ম্যাচটি মহাগুরুত্বপূর্ণ। সেমিফাইনালের দৌড়ে টিকে থাকতে হলে জয়ের বিকল্প নেই। আমি মনে করি, নিঃসন্দেহে সর্বশক্তি দিয়ে উড়তে থাকা অস্ট্রেলিয়াকেও মাটিতে নামিয়ে দেয়ার দৃঢ় প্রতিজ্ঞা নিয়েই মাঠে নামবে রশিদ, মুজিবরা।

অন্যদিকে, বিশ্বকাপ শুরুর আগে থেকেই অস্ট্রেলিয়ার নামটি ফেভারিটের তালিকায় ছিল জোরালোভাবে। যদিও টুর্নামেন্টের শুরুর দিকে তাদের প্রতাপশালী ক্রিকেট দেখা যায়নি। ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে যেভাবে হেরেছিল অজিরা- এ দলটি বেশিদূর যাবে না বলে গুঞ্জন শুরু হয়ে গিয়েছিল। তবে সেই হতাশা কাটিয়ে বেশ ভালোভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে এখন সেমিফাইনালের দ্বারপ্রান্তে দলটি। টানা পাঁচ ম্যাচ জিতে তারা যে ছন্দে আছে- এই অস্ট্রেলিয়াকে আটকানো মুশকিল হবে। তারাও সেমিফাইনালে খেলা নিশ্চিত করতেই মাঠে নামবে। আমার মতে, দুই দলের জন্যই আজকের ম্যাচটির মর্যাদা ও গুরুত্ব অনেক। কেউ কাউকে ছেড়ে কথা বলবে না। যেকোনো মূল্যে জয় তুলে নেয়ার চেষ্টায় থাকবে। ম্যাচটিকে নকআউট ম্যাচ মনে করেই খেলবে দুই দল। উত্তাপ-উত্তেজনা ও তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ম্যাচে যেসব উপাদান থাকা দরকার- এই ম্যাচে কোনো কিছুরই কমতি থাকবে না বলে আশা করি।

যদি দুই দলের শক্তি-সামর্থ্যের কথা বলি- স্বাভাবিক হিসাবে আফগানদের চেয়ে যোজন-যোজন এগিয়ে অস্ট্রেলিয়া দল। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ফেভারিট হিসেবে খেলবে তারা। তাদের যেমন শক্তিশালী ব্যাটিং লাইনআপ রয়েছে, তেমনি বোলিং লাইনআপও বিধ্বংসী এবং খুবই বৈচিত্র্যময়। পাওয়ার ব্যাটিং কাকে বলে, আগের ম্যাচগুলোয় দেখিয়েছে অস্ট্রেলিয়ানরা। টানা জয় পাওয়া পাঁচ ম্যাচের মধ্যে বেশির ভাগ ম্যাচেই সাড়ে তিনশ, চারশর কাছাকাছি রান করেছে দলটি। ডেভিড ওয়ার্নার, ট্রাভিস হেডরা দারুণ ফর্মে আছেন। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার পাওয়ার ব্যাটিংয়ের মূল অস্ত্র গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে তারা পাচ্ছে না। জানা গেছে, গলফ খেলতে গিয়ে কার্ট থেকে পড়ে নাকি আহত হয়েছেন এই বিস্ফোরক অলরাউন্ডার। পরিবার-সংকটে বিশ্বকাপ ছেড়ে দেশে ফিরে গেছেন মিচেল মার্শও। ফলে এই দুই গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়কে যদি না পায় অস্ট্রেলিয়া, তাহলে তাদের ব্যাটিং শক্তি অনেকটাই কমে যাবে। তবে যারা দলে আছেন, তারাও কিন্তু ভালো পারফর্মার। ম্যাচ ঘুরিয়ে দেয়ার ক্ষমতা রাখেন। সুযোগ পেলে জ্বলে উঠছেন সাইড বেঞ্চে থাকা খেলোয়াড়রাও। আমি মনে করি, এই ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার পাওয়ার ব্যাটিংয়ের বিরুদ্ধে আফগানিস্তানের ধারালো বোলিংয়ের বড় লড়াই জমে উঠবে। কেননা ঐতিহ্যগতভাবেই স্পিনে খেলায় দুর্বল অজিরা। তাদের এই দুর্বলতার সুযোগ কাজে লাগাতে পারেন আফগানরা। বিশ্বখ্যাত লেগ স্পিনার রশিদ খান, মুজিব উর রহমান ও মোহাম্মদ নবির সমন্বয়ে যে স্পিন শক্তি গড়ে উঠেছে তাদের- এই শক্তি দিয়েই শক্তিশালী প্রতিপক্ষকে মাটিতে নামিয়ে দিচ্ছে তারা। গত ম্যাচগুলোতে আমরা দেখেছি, তাদের স্পিনের বিরুদ্ধে অসহায় আত্মসমর্পণ করেছে প্রতিপক্ষ ব্যাটাররা। শুধু স্পিনই নয়, ফজল হক ফারুকিদের দ্রুতগতির বল খেলতে গিয়েও খাবি খেয়েছে অনেক নামি ব্যাটার। পেস শক্তিও তাদের অনেক ধারালো। ফলে আফগানিস্তান এখনো বড় দলের তালিকায় নাম ওঠাতে না পারলেও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অনেক বড় প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়াতে পারে তারা। মাঠের লড়াইয়ে অনেক বিপজ্জনক হতে পারে আফগানরা। আমার মতে, বড় দলগুলোকে হারিয়ে যে আত্মবিশ্বাস জমা করেছে হাশমতউল্লাহ শহিদীরা- সেটি জ্বালানি হিসেবে কাজে লাগিয়ে তারা আরেকটি নতুন রূপকথার জন্ম দিতে পারে আজ।

অন্যদিকে, টুর্নামেন্টের শুরুর দিকে বেশ কিছু ভুল চোখে পড়েছিল অস্ট্রেলিয়া দলের। তবে সময়ের পরিক্রমায় সেগুলো শুধরে পূর্ণ রূপে ফিরে আগ্রাসী ক্রিকেট খেলছে দলটি। তাদের ক্রিকেটাররা ভারতের কন্ডিশনের সঙ্গে বেশ মানিয়ে নিয়েছে। কীভাবে ভারতের উইকেটে রান তুলতে হবে- সেই রিদম পেয়ে গেছে তারা। আফগানিস্তানের বিপক্ষেও ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামের ব্যাটিং-স্বর্গ উইকেটে বড় স্কোর গড়তে পারেন অস্ট্রেলিয়ানরা। অবশ্য মাঠে জবাব দেবে আফগানরাও। তাদের জয়ের ক্ষুধা অনেক। মাঠে তাদের শরীরী ভাষাই বলে দেয় যে, তাদের মধ্যে ভালো করার কতটা তাড়না। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ আফগানিস্তানের ক্রিকেটই একমাত্র সম্বল। এই ক্রিকেটের মাধ্যমে দেশের মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য জান-প্রাণ দিয়ে সব কিছু উজাড় করে মাঠে লড়াই করেন রশিদ, নবিরা। এটি তাদের দলের জন্য খুবই ইতিবাচক একটি দিক।

এদিকে অস্ট্রেলিয়া ও আফগানিস্তানের ক্রিকেট-যুদ্ধ মাঠের বাইরেও রং ছড়িয়েছে। কেননা চলতি বছরের শুরুর দিকে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে আফগানিস্তানের দ্বিপক্ষীয় ক্রিকেট সিরিজ খেলার কথা ছিল। কিন্তু অস্ট্রেলিয়া খেলতে চায়নি। এ নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে। এবার বিশ্বকাপের মঞ্চে দুই দল মুখোমুখি হচ্ছে। তাই স্বাভাবিকভাবেই দুই দলের লড়াইটা যুদ্ধংদেহী একটা রূপ নিয়েছে। প্রত্যাশা করি, এই ম্যাচটি বিশ্বকাপের অন্য সব আকর্ষণীয় ম্যাচের মতো খুবই উপভোগ্য এবং বাড়তি আমেজ ছড়াবে সবার মাঝে। সূত্র : দৈনিক বাংলা

হককথা/নাছরিন