‘এখন তামিম ভাই বিশ্বাস করবেন আমি বল করতে পারি’
- প্রকাশের সময় : ১২:২১:৫৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ মে ২০২৩
- / ৫৫ বার পঠিত
স্পোর্টস ডেস্ক : নাজমুল হোসেন শান্ত টাইগার ব্যাটার হিসেবেই পরিচিত। তাকে দলের প্রয়োজনে বিভিন্ন পজিশনে ব্যাট করতে দেখা যায়। মাঝে মধ্যে দলের হয়ে করেন ওপেন আবার মাঝে মধ্যে দেখা যায় তিন কিংবা চার নাম্বার পজিশনে ব্যাটিং করতে। এছাড়া সম্প্রতি সময়ে বাংলাদেশ দলের সেরা ফিল্ডারদের নাম তালিকাভুক্ত করলেও এগিয়ে থাকবে শান্ত। তবে এবার তাকে এক অন্য ভূমিকায় দেখা গেল। টাইগারদের হয়ে হারতে থাকা ম্যাচে করলেন বল আর তাতেই করে নিলেন বাজিমাত। জিতল বাংলাদেশ, প্রথম বারের মতো এ ফরম্যাটে সিরিজ সেরা হলেন শান্ত।
গত রবিবার আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের শেষ ম্যাচটি তখন পর্যন্ত হাতের নাগালের বাইরে ছিল দ্বিতীয় ওয়ানডেতে আইরিশ হয়ে সেঞ্চুরি হাঁকানো হ্যারি টেক্টর ও আরেক ব্যাটার লরকান টাকার তখন উইকেটে সেট। ৯ ওভারে প্রয়োজন স্রেফ ৫২ রান, উইকেট বাকি তখনো ৭টি। ম্যাচ তখন আইরিশরাই জিতবে তা সকলেরই জানা ছিল তবে মুহূর্তেই সব কিছু বদলে গেল। টাইগার অধিনায়ক তামিম ইকবাল নিয়মিত পাঁচ বোলারকে বল না দিয়ে ৪২তম ওভারে বোলিং এ আনে পার্টটাইম বোলার শান্তকে। আর প্রথম ওভারে এসেই টেক্টরকে বিদায় করে তিনি দলকে ম্যাচে ফেরান বাংলাদেশকে। এটাই ছিল শান্তর প্রথম আন্তর্জাতিক কোনো ম্যাচে বল করে উইকেট পাওয়ার মুহূর্ত। এছাড়া পরে আরো দুই ওভার আইরিশদের বিপক্ষে হাত ঘুড়িয়েও নিয়ন্ত্রিত বোলিং করে মোস্তাফিজ আর হাসান মাহমুদের সঙ্গে শেষ দিকে চাপ সৃষ্টি করেছিলেন শান্ত। আর বাকিটা তো সবারই জানা। শেষ ওভারে ৫ রানের নাটকীয় জয় তুলে নেয় টাইগাররা।
শান্তর প্রথম উইকেট এতটাই গুরুত্বপূর্ণ ছিল যে ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে ম্যাচ সেরার পুরস্কার নিতে গিয়ে পুরো সময়টাই কথা হলো তার বোলিং নিয়ে। এ সময় তিনি জানান, তার বোলিংয়ে মেহেদী হাসান মিরাজের সহযোগিতার কথা এছাড়া কৃতজ্ঞতা জানান বাংলাদেশ স্পিন বোলিং কোচ রঙ্গনা হেরাথের প্রতিও। শান্ত বলেন, ‘আমি স্রেফ নিজের প্রক্রিয়া অনুসরণ করেছি। গত কয়েক দিনে রঙ্গনা হেরাথের সঙ্গে অনেক অনুশীলন করেছি। আমার স্পিন বোলিং কোচকে তাই ধন্যবাদ। আমি খুবই খুশি। বোলিংয়ের সময় মিরাজ অনেক সাহায্য করেছে। আমি তার নির্দেশনা মেনে বল করেছি। আমি মিরাজের অ্যাকশন অনুসরণ করার চেষ্টা করেছি, যদিও পুরোপুরি পারিনি।’
আরোও পড়ুন । তিন বছর পর বার্সার ২৭তম, জাভির প্রথম শিরোপা
এ সময় ধারাভাষ্যকার শান্তকে প্রশ্ন করলেন, এখন তাহলে অলরাউন্ডার শান্তকে দেখা যাবে কি না? এর জবাবে তিনি বললেন, ‘আমি এখনো অলরাউন্ডার হয়ে উঠিনি। প্রতিদিনই আমি অধিনায়ককে বলি যে, আমাকে বোলিং দেওয়া উচিত আপনার। তবে আজকের পর হয়তো তিনি (তামিম ইকবাল) বিশ্বাস করবেন যে আমি বল করতে পারি।’ একসময় বয়সভিত্তিক ক্রিকেটে নিয়মিতই বোলিং করতেন শান্ত। তখন তার সঙ্গেই খেলতেন মিরাজও। আর তাই তার বোলিংয়ের অ্যাকশন ও ধরন অনেকটা মিরাজের মতোই। শান্ত জানালেন, সচেতনভাবেই তিনি মিরাজকে অনুসরণের চেষ্টা করেন।
এরপরই শান্তকে জিজ্ঞাস করা হয় প্রথম উইকেট নাকি এই সিরিজে পাওয়া প্রথম সেঞ্চুরি কোনটা বেছে নেবেন, এই প্রশ্নে জবাবে তাৎক্ষণিক শান্ত বললেন, ‘অবশ্যই প্রথম সেঞ্চুরি। কারণ ব্যাটসম্যান হিসেবে সবসময়ই স্বপ্ন থাকে সেঞ্চুরি করার। আমার জন্য তাই এটা দারুণ। আশা করি, এই ফরম ধরে রাখতে পারব।’
এদিকে এক প্রতিক্রিয়ায় শান্তকে বোলিংয়ে আনার প্রসঙ্গে অধিনায়ক তামিম বলেন, ‘৪০ ওভার পর্যন্ত তাকে বোলিং দেওয়ার কোনো পরিকল্পনা ছিল না। মিরাজ যেভাবে বল করেছে, সেটা শান্তকে বোলিং দিতে বাধ্য হয়েছি। সে বলছিল সে পারবে। কিন্তু আমি তাকে বিশ্বাস করিনি (হাসি)। কিন্তু আমার অধিনায়কত্বেই সে তার প্রথম ওয়ানডে উইকেট পেয়েছে। অফ স্পিনারকে মারা সহজ মনে হচ্ছিল না। সে জন্যই তাকে বল দিয়েছি।’ সূত্র : দৈনিক ইত্তেফাক
বেলী/হককথা