ইতিহাস বদলের চ্যালেঞ্জ কিউইদের
- প্রকাশের সময় : ০৯:৩৭:৩৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১০ নভেম্বর ২০২১
- / ১০২ বার পঠিত
আইসিসি’র আসরে ইংল্যান্ডের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠেছে নিউজিল্যান্ড। আজকের সেমিফাইনাল এবং আগের দু’টি বিশ্ব আসরেও কিউইদের মুখোমুখি হয়েছে ইংল্যান্ড। যেখানে কেবল দুঃখগাথা লেখা নিউজিল্যান্ডের। বছর দুয়েক আগে লর্ডসে ওয়ানডে বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ডের হৃদয় ভাঙার গল্প তো সবার জানা। ম্যাচটি ‘টাই’ হলেও বাউন্ডারির হিসেবে বিশ্বসেরার আসনে বসে ইংল্যান্ড। ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তো নিউজিল্যান্ডের প্রথমবার ফাইনাল খেলার স্বপ্ন গুঁড়িয়ে দেয় ইংলিশরা। দিল্লির পর লর্ডসেও হৃদয় ভাঙার যন্ত্রণা সঙ্গী হয়েছে কেন উইলিয়ামসন-ট্রেন্ট বোল্টদের। আগের দুই হারের তেতো স্বাদ পাওয়া একাধিক ক্রিকেটার রয়েছেন নিউজিল্যান্ড দলে।
এর আগে কখনই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলা হয়নি নিউজিল্যান্ডের। এবার ইতিহাস বদলানোর চ্যালেঞ্জ জিতে শিরোপার মঞ্চে ওঠার সুযোগ কিউইদের।
আবুধাবির শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামে ফাইনালে ওঠার প্রথম লড়াই শুরু বাংলাদেশ সময় রাত ৮টায়। সম্ভাব্য চ্যাম্পিয়নের তকমা নিয়ে বিশ্বকাপে এসেছে ইংল্যান্ড। গত আসরের ফাইনালিস্টও এউইন মরগানের দল। শেষ চারে ইংলিশরা নাম লিখিয়েছে প্রথম চার ম্যাচ জিতে। সুপার টুয়েলভের পঞ্চম ও শেষ ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হার ১০ রানে। কাগিসো রাবাদার অতিমানবীয় পারফরমেন্সে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে প্রোটিয়ারা। নিউজিল্যান্ডও ছিল অন্যতম ফেভারিটের তালিকায়। তবে গ্রুপে ভারত, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থাকায় কঠিন চ্যালেঞ্জ উতরাতে হয়েছে কিউইদের। প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানের কাছে হারলেও ভারতকে হারিয়ে দেয় পরের ম্যাচেই। ভারতীয়দের বিপক্ষে নিউজিল্যান্ডের জয়টা ছিল একপেশে। কোনো সুযোগই দেয়নি কোহলি-রোহিতদের।
ক্রিকেটের বিশ্ব আসরের টানা তৃতীয় ফাইনালে খেলার দ্বারপ্রান্তে ইংল্যান্ড। তবে ইংলিশরা কিছুটা শক্তি হারিয়েছে। চোটের কারণে ছিটকে গেছেন ওপেনার জেসন রয়। তার আগে ইনজুরিতে বিশ্বকাপ শেষ হয়ে যায় পেসার টাইমাল মিলসের। তবে ইংলিশদের স্কোয়াডের গভীরতা এতো বেশি যে বিকল্প ক্রিকেটাররাও সমান দক্ষ। জেসন রয়ের পরিবর্তে স্কোয়াডে ঢুকেছেন জেমস ভিন্স। যদিও এই মারকুটে ব্যাটারের সুযোগ হচ্ছে না আজ। চলমান আসরে প্রথমবার একাদশে ঢুকবেন স্যাম বিলিংস। তবে মিলসের অভাব পূরণ সহজ নয়। ‘ডেথ ওভারে’ দারুণ বোলিংয়ে রানের চাকা আটকে রাখেন মিলস। শেষের দিকে বোলিং করার দায়িত্ব থাকে মার্ক উডের উপর। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে খরুচে ছিলেন তিনি। দুই স্পিনার মঈন আলী ও আদিল রশিদ শুরুতে এবং মাঝের ওভারে দুর্দান্ত বোলিং করছেন। এনে দিচ্ছেন নিয়মিত ব্রেক থ্রু।
এখনো আইসিসির বিশ্ব আসরে শিরোপা জেতা হয়নি নিউজিল্যান্ডের। অবশ্য বড় মঞ্চের চাপ জয়ের চ্যালেঞ্জ উতরে গেছে গত জুনে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে। ভারতকে হারিয়ে টেস্ট শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট পরেছে কেন উইলিয়ামসনের দল। চলমান আসরে নিউজিল্যান্ডের বোলিং আক্রমণকে ভাবা হচ্ছে সবচেয়ে শক্তিশালী হিসেবে। ট্রেন্ট বোল্ট-টিম সাউদির পেস জুটি ধারাবাহিক পারফর্ম করছে। স্পিনে ইশ সোধি ও মিচেল স্যান্টানারও কম যান না। বোলিংয়ে দুর্দান্ত পারফরমেন্সই সেমির পথ খুলে দিয়েছে নিউজিল্যান্ডের। ভারতকে মাত্র ১১০ ও আফগানিস্তানকে ১২৪ রানে আটকে দিয়ে ব্যাটারদের কাজটা সহজ করে দেন কিউই বোলাররা। নিউজিল্যান্ডের দুই ওপেনার অভিজ্ঞ মার্টিন গাপটিল ও ড্যারেল মিচেল রয়েছেন দারুণ ছন্দে। অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন ভরসা যোগাচ্ছেন টপ-মিডলঅর্ডারে। ডেভন কনওয়ে, জিমি নিশাম, গ্লেন ফিলিপসরা যেকোনো সময় ব্যাট ঝড় তুলতে পারেন সেটা দেখিয়েছেন আগের ম্যাচগুলোয়।
আবুধাবির উইকেট সাধারণত হয় ব্যাটিং সহায়ক। টি-টোয়েন্টিতে মুখোমুখি দেখায় এগিয়ে ইংল্যান্ড। আগের ২১ লড়াইয়ে ১৩ জয় ইংলিশদের। নিউজিল্যান্ড জিতেছে ৭ ম্যাচে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও ৩-২ ব্যবধানে এগিয়ে ইংল্যান্ড।
নিউজিল্যান্ডের স্মৃতিতে ফিরে আসবে ২০১৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনাল ও ২০১৬ টি-টোয়েন্টির সেমিফাইনাল। ওয়ানডের ফাইনালে ওঠেও ইংল্যান্ডের কাছে না হারলেও ভাগ্য জিততে দেয়নি। বছর পাঁচেক আগে টি-টোয়েন্টিতে প্রথমবার ফাইনাল খেলার স্বপ্ন ভেঙেছে এই ইংল্যান্ডের কাছেই। আরেকটি হৃদয়ভাঙার গল্পের সাক্ষী হতে চাইবে না কিউইরা। অন্যদিকে ইংলিশরা লড়বে টানা তৃতীয় বিশ্বমঞ্চের ফাইনালে খেলার স্বপ্ন নিয়ে।