নিউইয়র্ক ০৫:৪১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

আমাদের ক্রিকেটে আসল সমস্যাগুলো

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৫:৫৭:১৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২১
  • / ৫৩ বার পঠিত

ক্রীড়া ডেস্ক : আইসিসি ট্রফি লাভের পর বাংলাদেশ বিশ্ব ক্রিকেটে দারুণ একটা জায়গা করে নিতে সক্ষম হয়। অথচ, সেই ক্রিকেট এখন নানা বাঁধার মুখে পড়েছে। নানা সমস্যা তৈরি হয়েছে ক্রিকেটে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ক্রিকেটে বাংলাদেশের পারফরম্যান্সে সেটাই স্পষ্টভাবে চোখে পড়ল।

বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা অস্বাভাবিক মনস্তাত্ত্বিক সমস্যায় ভোগে। আর এটা দেখা গেছে দলের সিনিয়র খেলোয়াড়দের বেলায় বেশি। একজন খেলোয়াড় যখন মাঠে নামে, তখন সে প্রথমেই মাথায় নেবে কোন ফরম্যাটের খেলা। টেস্ট হলে এক চিন্তা, ওয়ানডে হলে আরেক পরিকল্পনা আর টি-টোয়েন্টি হলে ভিন্ন ভাবনা। বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা মাথায় রাখে না, যে সে কি খেলতে নেমেছে। ফলে মুশফিকের মতো খেলোয়াড়কে দেখা যায়, টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট খেলতে নেমে সে ৩০ বলে ১৬/১৭ রান করছে। ওয়ানডে খেলতে নেমে বলে বলে রান তোলার পরিবর্তে সে টেস্ট স্টাইলে করছে ৬০ বলে ৪০ রান। আবার টেস্ট খেলতে নেমে ১৯ বলে ২৮ রান করে আউট হয়ে প্যাভিলিয়নের পথ ধরছে। আমাদের খেলোয়াড়দের সবার আগে তাই মনস্তাত্বিক দুর্বলতাগুলো কাটানোর ব্যবস্থা করতে হবে। আর এগুলো এমনিতে কেটে যায় না বরং বিশেষ নজর দেওয়া দরকার। খবর সাম্প্রতিক দেশকাল

বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের শারীরিক ফিটনেসে সমস্যা রয়েছে। বোলার বা ব্যাটসম্যানদের শারীরিক ফিটনেস গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমাদের বোলাররা অনেকেই কয়েক ওভার বল করলে খেই হারিয়ে ফেলে। বোলারদের বেলায় দেখা যায়, কয়েক ওভার দারুণ বল করার পর লাইন লেন্থ ঠিক থাকে না। আর এটা বেশি লক্ষ্য করা যায় পেসারদের ক্ষেত্রে। আর ব্যাটসম্যানরা দৌড়ে এক দুই রান কয়েকবার করলেই শক্তি হারিয়ে ফেলে। এটার প্রমাণ মেলে যখন ছক্কা বা বাউন্ডারি হাঁকাতে যায়। এবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ক্রিকেটে বহুবার লক্ষ্য করা গেছে বিষয়টি। সর্বশক্তি দিয়ে ছক্কা মেরেও বল সীমানার থেকে অন্তত ৩০ গজ ভেতরে ফেলে আমাদের ব্যাটসম্যানরা। শারীরিক শক্তি অর্জনে যা কিছু করা দরকার সেটা করতে হবে।

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে একজন বোলারের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো ইয়র্কার। অথচ, আমাদের বোলাররা এই ক্ষেত্রে একেবারেই দুর্বল। ইয়র্কার হয় না, তা নয়। তবে সেটা খুবই কম। যেখানে একজন পাকিস্তানি বা ইংলিশ বোলার এক ওভারে চার/পাঁচটি ইয়র্কার করছে, সেখানে বাংলাদেশের বোলাররা হয়তো একটি ইয়র্কার করতে সক্ষম হয় ওভারে। ফলে বাকি পাঁচটি বলে সে মার খায়। আমাদের বোলিং কোচকে বোলারদের ইয়র্কার শেখাতে হবে সবার আগে।

বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের তিন ফরম্যাট ক্রিকেট সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা নেই। চলমান টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ক্রিকেটে বাংলাদেশ খুবই খারাপ করেছে। এর আগে বাংলাদেশ আফগানিস্তানের বিপক্ষে নিজেদের প্রথম টেস্টে ম্যাচে লজ্জাজনকভাবে হেরে যায়। ওয়ানডেতেও আশানুরূপ কোনো ফলাফল অর্জন করতে পারছে না বাংলাদেশ। এর প্রধান কারণ, তিন ফরম্যাটের ভিন্ন ভিন্ন স্টাইল সম্পর্কে ন্যূনতম ধারণা নেই খেলোয়াড়দের। ফলে তালগোল পাকিয়ে ফেলে খেলোয়াড়রা। আর ক্রিকেটারদের তিন ফরম্যাটের চরিত্র সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা দেবে ক্রিকেট বোর্ড। তারাই পার্থক্য করে দেবে। আমাদের ক্রিকেট বোর্ড তো জানেই না তাদের করণীয় কী।

বাংলাদেশের ক্রিকেট বোর্ড যাদেরকে নিয়ে কোচিং স্টাফ সাজিয়েছে, তারা সকলেই বিদেশি। এটা কোনোক্রমেই যুক্তিসঙ্গত নয়। এখানে বাংলাদেশি কেউ নেই। হতে পারে বাংলাদেশের কেউ জাতীয় দলের কোচ হওয়ার মতো যোগ্যতা রাখেন না। তাই বলে কোচিং স্টাফের মধ্যে প্রধান কোচের সহযোগী হিসেবেও কী বাংলাদেশের কাউকে রাখা যায় না? নিশ্চয়ই যায়। এখানে কী রহস্য রয়েছে সেটা স্পষ্ট নয়। বরং বাংলাদেশি কেউ কোচিং স্টাফের মধ্যে থাকলে নিজেদের খেলোয়াড়দের বিশেষ কিছু সমস্যার সমাধান হয় সহজেই।

Tag :

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

আমাদের ক্রিকেটে আসল সমস্যাগুলো

প্রকাশের সময় : ০৫:৫৭:১৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২১

ক্রীড়া ডেস্ক : আইসিসি ট্রফি লাভের পর বাংলাদেশ বিশ্ব ক্রিকেটে দারুণ একটা জায়গা করে নিতে সক্ষম হয়। অথচ, সেই ক্রিকেট এখন নানা বাঁধার মুখে পড়েছে। নানা সমস্যা তৈরি হয়েছে ক্রিকেটে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ক্রিকেটে বাংলাদেশের পারফরম্যান্সে সেটাই স্পষ্টভাবে চোখে পড়ল।

বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা অস্বাভাবিক মনস্তাত্ত্বিক সমস্যায় ভোগে। আর এটা দেখা গেছে দলের সিনিয়র খেলোয়াড়দের বেলায় বেশি। একজন খেলোয়াড় যখন মাঠে নামে, তখন সে প্রথমেই মাথায় নেবে কোন ফরম্যাটের খেলা। টেস্ট হলে এক চিন্তা, ওয়ানডে হলে আরেক পরিকল্পনা আর টি-টোয়েন্টি হলে ভিন্ন ভাবনা। বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা মাথায় রাখে না, যে সে কি খেলতে নেমেছে। ফলে মুশফিকের মতো খেলোয়াড়কে দেখা যায়, টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট খেলতে নেমে সে ৩০ বলে ১৬/১৭ রান করছে। ওয়ানডে খেলতে নেমে বলে বলে রান তোলার পরিবর্তে সে টেস্ট স্টাইলে করছে ৬০ বলে ৪০ রান। আবার টেস্ট খেলতে নেমে ১৯ বলে ২৮ রান করে আউট হয়ে প্যাভিলিয়নের পথ ধরছে। আমাদের খেলোয়াড়দের সবার আগে তাই মনস্তাত্বিক দুর্বলতাগুলো কাটানোর ব্যবস্থা করতে হবে। আর এগুলো এমনিতে কেটে যায় না বরং বিশেষ নজর দেওয়া দরকার। খবর সাম্প্রতিক দেশকাল

বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের শারীরিক ফিটনেসে সমস্যা রয়েছে। বোলার বা ব্যাটসম্যানদের শারীরিক ফিটনেস গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমাদের বোলাররা অনেকেই কয়েক ওভার বল করলে খেই হারিয়ে ফেলে। বোলারদের বেলায় দেখা যায়, কয়েক ওভার দারুণ বল করার পর লাইন লেন্থ ঠিক থাকে না। আর এটা বেশি লক্ষ্য করা যায় পেসারদের ক্ষেত্রে। আর ব্যাটসম্যানরা দৌড়ে এক দুই রান কয়েকবার করলেই শক্তি হারিয়ে ফেলে। এটার প্রমাণ মেলে যখন ছক্কা বা বাউন্ডারি হাঁকাতে যায়। এবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ক্রিকেটে বহুবার লক্ষ্য করা গেছে বিষয়টি। সর্বশক্তি দিয়ে ছক্কা মেরেও বল সীমানার থেকে অন্তত ৩০ গজ ভেতরে ফেলে আমাদের ব্যাটসম্যানরা। শারীরিক শক্তি অর্জনে যা কিছু করা দরকার সেটা করতে হবে।

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে একজন বোলারের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো ইয়র্কার। অথচ, আমাদের বোলাররা এই ক্ষেত্রে একেবারেই দুর্বল। ইয়র্কার হয় না, তা নয়। তবে সেটা খুবই কম। যেখানে একজন পাকিস্তানি বা ইংলিশ বোলার এক ওভারে চার/পাঁচটি ইয়র্কার করছে, সেখানে বাংলাদেশের বোলাররা হয়তো একটি ইয়র্কার করতে সক্ষম হয় ওভারে। ফলে বাকি পাঁচটি বলে সে মার খায়। আমাদের বোলিং কোচকে বোলারদের ইয়র্কার শেখাতে হবে সবার আগে।

বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের তিন ফরম্যাট ক্রিকেট সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা নেই। চলমান টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ক্রিকেটে বাংলাদেশ খুবই খারাপ করেছে। এর আগে বাংলাদেশ আফগানিস্তানের বিপক্ষে নিজেদের প্রথম টেস্টে ম্যাচে লজ্জাজনকভাবে হেরে যায়। ওয়ানডেতেও আশানুরূপ কোনো ফলাফল অর্জন করতে পারছে না বাংলাদেশ। এর প্রধান কারণ, তিন ফরম্যাটের ভিন্ন ভিন্ন স্টাইল সম্পর্কে ন্যূনতম ধারণা নেই খেলোয়াড়দের। ফলে তালগোল পাকিয়ে ফেলে খেলোয়াড়রা। আর ক্রিকেটারদের তিন ফরম্যাটের চরিত্র সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা দেবে ক্রিকেট বোর্ড। তারাই পার্থক্য করে দেবে। আমাদের ক্রিকেট বোর্ড তো জানেই না তাদের করণীয় কী।

বাংলাদেশের ক্রিকেট বোর্ড যাদেরকে নিয়ে কোচিং স্টাফ সাজিয়েছে, তারা সকলেই বিদেশি। এটা কোনোক্রমেই যুক্তিসঙ্গত নয়। এখানে বাংলাদেশি কেউ নেই। হতে পারে বাংলাদেশের কেউ জাতীয় দলের কোচ হওয়ার মতো যোগ্যতা রাখেন না। তাই বলে কোচিং স্টাফের মধ্যে প্রধান কোচের সহযোগী হিসেবেও কী বাংলাদেশের কাউকে রাখা যায় না? নিশ্চয়ই যায়। এখানে কী রহস্য রয়েছে সেটা স্পষ্ট নয়। বরং বাংলাদেশি কেউ কোচিং স্টাফের মধ্যে থাকলে নিজেদের খেলোয়াড়দের বিশেষ কিছু সমস্যার সমাধান হয় সহজেই।