আফগানদের গুঁড়িয়ে দিলো বাংলাদেশ
- প্রকাশের সময় : ০৯:৫৩:৩৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৭ অক্টোবর ২০২৩
- / ৮৫ বার পঠিত
ক্রীড়া ডেস্ক : ইংল্যান্ডে গত বিশ্বকাপে সাকিব আল হাসান দেখান তার ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা পারফরম্যান্স। চার বছর পর আরেকটি বিশ্বকাপে নেমে সেই সাকিবকেই পাওয়া গেলো। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে আফগানিস্তানের তিন উইকেট তুলে নেওয়ার পর ব্যাট হাতেও ছোটখাটো অবদান রাখলেন বাঁহাতি এই অলরাউন্ডার। তাতেই চলতি বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে নাস্তানাবুদ হলো আফগানরা। বাংলাদেশকে ১৫৭ রানের লক্ষ্য দিয়েছিল আফগানিস্তান। সেই লক্ষ্য ৯২ বল আগে মাত্র ৪ উইকেট হারিয়ে ছুঁয়ে ফেলে লাল-সবুজ জার্সিধারীরা।
ধর্মশালায় আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে শুরু হয়েছে ২০২৩ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের অভিযান। প্রথম ম্যাচেই দাপট দেখালো বাংলাদেশ। সাকিবদের ব্যাটিং-বোলিং-ফিল্ডিংয়ের কাছে দাঁড়াতেই পারেনি আফগানরা। সাকিবের ক্ষুরধার নেতৃত্ব, বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিং, ফিল্ডারদের ক্ষিপ্রতা সব কিছু মিলিয়ে আফগানিস্তানকে ১৫৬ রানে আটকে দেওয়া গেছে। তারপর নাজমুল হোসেন শান্ত ও মেহেদী হাসান মিরাজের দৃঢ়চেতা ব্যাটিংয়ে সহজেই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় সাকিব আল হাসানের দল।
যদিও ধর্মশালায় মামুলি লক্ষ্যে খেলতে নেমে শুরুতে ফজল হক ফারুকীর রোষানলে পড়েছিল বাংলাদেশ। আফগান পেসারকে সামলানো নিয়ে মাঠের বাইরে সাকিব-তামিম-হাথুরুসিংহে-বোর্ড প্রধানকে নিয়ে মাঠের বাইরে নানা আলোচনার জন্ম হয়েছিল। সেই আলোচনা থামিয়ে দিতে পারতো দুই ওপেনার তানজিদ তামিম ও লিটন দাস সফল হলেই। কিন্তু এই দুইজনই ফারুকীর বলে সুবিধা করতে পারেননি। জুনিয়র তামিম রান আউট হলেও লিটন হয়েছেন বোল্ড। ফারুকীর বলে বেরিয়ে এসে চড়াও হতে চেয়েছিলেন ডানহাতি ব্যাটার। কিন্তু ঠিক মতো খেলতে পারেননি। ব্যাটের কানায় এলে লেগে বল আঘাত হানে লেগ স্টাম্পে। সাজঘরে ফেরার আগে ১৮ বলে ১৩ রানের ইনিংস খেলেন লিটন। ফারুকীর বলে দুই ওপেনারের খেই হারানোয় তামিমের ব্যাটিং পজিশন সরানো নিয়ে যে চর্চা হচ্ছিল, সেটি নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই পারে!
তবে পাওয়ার প্লের মধ্যেই দুই ওপেনারকে হারিয়ে কিছুটা চাপে পড়লেও সেটা অনায়াসে সামাল দেন বয়সভিত্তিক ক্রিকেট থেকে একসাথে খেলে আসা শান্ত ও মিরাজ। ১৬ ও ২৩ রানে দুইবার জীবন পাওয়া মিরাজ দারুণ ব্যাটিং করে তুলে নেন বিশ্বকাপের প্রথম হাফ সেঞ্চুরি। ৫০ রানে রিভিউ নিয়ে আরেকদফা জীবন পেয়ে থামেন ৫৭ রানে। ৭৩ বলে ৫ চারে মিরাজ নিজের ইনিংসটি সাজিয়েছেন। বোলিংয়ের পর ব্যাটিংয়েও দারুণ পারফরম্যান্স করে ম্যাচ সেরার পুরস্কার উঠেছে মিরাজের হাতেই।
মিরাজ আউট হওয়ার পর সাকিব ব্যাটিংয়ে নেমে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। চারের পর ছক্কা মেরে দলকে জয়ের আরও কাছে নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু জয় থেকে ১১ রান দূরে থাকতে আজমতউল্লাহ ওমারজাইয়ের বলে সীমানায় ধরা পড়েন বাঁহাতি এই ব্যাটার। ১৯ বলে ২টি চারে ১৪ রান করেন অধিনায়ক। এরপর মুশফিক নামলেও তেমন কিছু করতে হয়নি। পেসার নাভিন উল হককে শান্ত পর পর দুই বলে চার মেরে বিশ্বকাপের প্রথম জয় তুলে নেয় বাংলাদেশ। ৮৩ বলে ৩ চার ও ১ ছক্কায় ৫৯ রানে অপরাজিত থাকেন বাঁহাতি ব্যাটার। মুশফিক খেলেন অপরাজিত ২ রানের ইনিংস।
টস জিতে আফগানদের ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন বাংলাদেশের অধিনায়ক সাকিব। মাঠ আকারে ছোট। উইকেটও ব্যাটিংয়ের জন্য দারুণ। ঝুঁকি নেওয়া ছাড়াই দুই ডানহাতি পেসার তাসকিন আহমেদ ও শরিফুল ইসলামের বিপরীতে ভালো শুরু করেন রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও ইবরাহিম জাদরান। বাংলাদেশের জন্য হুমকি হয়ে উঠার আগেই ইনিংসের নবম ওভারে সাকিব ৫০ বলে করা ৪৭ রানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন। দ্বিতীয় উইকেটেও দেয়াল হয়ে দাঁড়াচ্ছিলেন গুরবাজ ও রহমত শাহ। এবারও আক্রমণে সাকিব। পানি বিরতির পর প্রথম বলে বাঁহাতি স্পিনারকে সুইপ করে ছক্কায় ওড়াতে চেয়েছিলেন রহমত। টাইমিংয়ে গড়বড় হওয়াতে সিলি মিড অফে লিটনকে সহজ ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন। ভাঙে ৪১ বল ৩৬ রানের জুটি।
এরপরই মূলত ছন্দপতন ঘটে আফগানদের। মোস্তাফিজ-মিরাজ-তাসকিন-শরিফুলদের সামনে ভেঙে পড়ে আফগান ব্যাটিং লাইনআপ। বিশেষ করে মোস্তাফিজের বলে গুরবাজ আউট হতেই ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ হারায় আফগানিস্তান। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৪৭ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। সাকিবের দারুণ অধিনায়কত্বে আফগান ব্যাটাররা থিতু হতে পারেননি। ধারাভাষ্যকক্ষেও সাকিবের অধিনায়কত্ব নিয়ে হয় দারুণ প্রশংসা।
খেলা চালিয়ে যাওয়া ক্রিকেটারদের মধ্যে বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ উইকেটের মালিক সাকিব। শনিবার ৩০ রানে ৩ উইকেট নিয়ে নিজেকে নিজেই ছাড়িয়ে গেলেন বাঁহাতি এই স্পিনার। সাকিবের মতো অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে ভূমিকা রেখেছেন মিরাজও। ২৫ রান খরচায় তার শিকার তিনটি উইকেট। শরিফুল ৩৪ রানে দুটি এবং তাসকিন ও মোস্তাফিজ নিয়েছেন একটি করে উইকেট। মাত্র তিন পেসার ও দুই স্পিনার নিয়ে বোলিং আক্রমণ সাজানো হলেও
সূত্র : বাংলা ট্রিবিউন