অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড, কে হাসবে শেষ হাসি
- প্রকাশের সময় : ১২:৩৮:০৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২১
- / ১১১ বার পঠিত
স্পোর্টস ডেস্ক : টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম শিরোপা ঘরে তুলতে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে মুখোমুখি হবে দুই প্রতিবেশি অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড। দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় আজ রবিবার (১৪ নভেম্বর) রাত ৮টায় ম্যাচটি শুরু হবে।
ক্রিকেটের ছোট ফরম্যাটে এর আগে ছয়টি ছয়টি বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এবারের দুই ফাইনালিস্ট অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড শিরোপা জয়ের স্বাদ পায়নি।
২০১০ বিশ্বকাপের ফাইনালে ইংল্যান্ডের কাছে হেরে শিরোপা হাতছাড়া হয়েছিল অস্ট্রেলিয়ার। তবে এবার তারা শিরোপা ঘরে তুলতে বদ্ধপরিকর। অন্যদিকে সেমিফাইনালে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে নিউজিল্যান্ডও সুযোগ হাতছাড়া করতে চায় না।
অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ গতকাল শনিবার (১৩ নভেম্বর) বলেছেন, ‘ছেলেরা সবাই ভালো খেলার জন্য প্রস্তুত। আমি মনে করি নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে একটি দুর্দান্ত ম্যাচ হবে। তারা চমৎকার একটি দল।’
এর আগে ২০১৫ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনাল দুইদল একে অপরের মুখোমুখি হয়েছিল। মেলবোর্নে সেই ম্যাচে সাত উইকেটে হেরেছিল নিউজিল্যান্ড। এরপর ২০১৯ সালের বিশ্বকাপের ফাইনালেও ব্ল্যাকক্যাপরা ইংল্যান্ডের কাছে হেরে যায়। আইসিসি বিশ্বকাপ ইভেন্টে চলতি বছরের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ফাইনাল নিউজিল্যান্ডের টানা চতুর্থ ফাইনাল। চলতি বছরের শুরুতে তারা টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে খেলে জয়লাভ করেছিল।
সেমিফাইনালে পাকিস্তানকে পরাজিত করার আগে অস্ট্রেলিয়া সুপার টুয়েলভে খেলা পাঁচটি ম্যাচের মধ্যে চারটিতে জিতেছে। অপরদিকে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সেমিফাইনালের আগে নিউজিল্যান্ডও চারটিতে জয় পেয়েছে।
দুবাইয়ে আজকের ফাইনালে টস বড় ভূমিকা রাখতে পারে। টুর্নামেন্টে অস্ট্রেলিয়ার পাঁচটি জয়ই এসেছে পরে ব্যাট করে। চলতি বিশ্বকাপে দুবাইয়ে মোট ১২টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং এর মধ্যে ১১টি ম্যাচ জিতেছে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করা দল।
বিশ্বকাপের বেশিরভাগ ম্যাচের মতো ফাইনালেও স্পিনাররা বড় ভূমিকা রাখতে পারে। টুর্নামেন্টের অন্যতম সেরা বোলার অ্যাডাম জাম্পা। ফাইনালে মুগ্ধ করার সব ক্ষমতাই আছে তার। যদিও অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক ফিঞ্চ বিশ্বাস করেন যে দায়িত্ব কারও একার ওপর বর্তায় না।
ফিঞ্চ বলেন, ‘আমি মনে করি আগে যেমনটি বলেছি, পুরো টুর্নামেন্টে কোনো না কোনো সময়ে আমাদের একাদশের প্রত্যেকেরই ম্যাচ জেতানো অবদান ছিল, যা সত্যিই দলের জন্য ভালো। আমি মনে করি না এটি একজন ব্যক্তির ওপর নির্ভর করে।’
ফিঞ্চের মতে, বিশ্বকাপ ফাইনালের মতো খেলায় সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে এবং তাদের দায়িত্ব পালন করতে হবে।
নিউজিল্যান্ডের অধিনায়ক কেন উইলাইমসনও তার দেশের হয়ে বিশ্বকাপ জয়ের জন্য মুখিয়ে আছেন। ফাইনালের আগে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘এই বিশ্বকাপ জেতা আমাদের অনেক অর্জন হবে। কিন্তু আপনি জানেন, এই মুহূর্তে আমাদের আরেকটি ম্যাচ বাকি রয়েছে এবং আমরা সেই দিকেই মনোনিবেশ করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘ওয়ানডে বিশ্বকাপে শেষ দুই আসরের ফাইনাল খেলার অভিজ্ঞতা আমাদের আছে। কিন্তু টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এই প্রথম ফাইনাল খেলছি আমরা। শিরোপা জিতে এই প্রথমকে স্মরণীয় করতে চাই। অস্ট্রেলিয়ার মতো দলের বিপক্ষে জিততে হলে, তিন বিভাগেই তাদের চেয়ে ভালো খেলতে হবে। ম্যাচের শুরু থেকেই অসিদের উপর চাপ সৃষ্টি করতে হবে।’
পুরো আসরেই এ পর্যন্ত নিউজিল্যান্ডের ব্যাটার ও বোলাররা ভাল পারফরমেন্স করেছে। দলের সেরা ব্যাটাররা রানের মধ্যেই আছেন। আসরে মিচেল ১৯৭, গাপটিল ১৮০, উইলিয়ামসন ১৩১ ও কনওয়ে ১২৯ রান করেছেন। তবে ফাইনালের মঞ্চে কনওয়ের সার্ভিস পাবে না নিউজিল্যান্ড। নিজের ভুলে হাত ভেঙে ফাইনাল থেকে ছিটকে পড়েন কনওয়ে।
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে এগিয়ে অস্ট্রেলিয়াই। ১৪ ম্যাাচে মুখোমুখি হয়ে ৯ বার জিতেছে অজিরা। পাঁচ জয় অজিদের।
আর বিশ্বকাপের মঞ্চে একবার দেখা হয় অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের। সেটিতে জয় পেয়েছিলো কিউইরা। ২০১৬ সালে সুপার টেনে গ্রুপ-২এর ম্যাচে ৮ রানে জিতেছিলো নিউজিল্যান্ড।
এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে সর্বশেষ দেখা হয়েছিলো নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার। নিউজিল্যান্ড সফরে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ ৩-২ ব্যবধানে জিতে অজিরা।
নিউজিল্যান্ড দল : কেন উইলিয়ামসন (অধিনায়ক), টড অ্যাস্টল, ট্রেন্ট বোল্ট, মার্ক চ্যাপম্যান, এডাম মিলনে, মার্টিন গাপটিল, কাইল জেমিসন, ড্যারিল মিচেল, জেমস নিশাম, গ্লেন ফিলিপস, মিচেল স্যান্টনার, টিম সেইফার্ট, ইশ সোধি ও টিম সাউদি।
অস্ট্রেলিয়া দল : অ্যারন ফিঞ্চ (অধিনায়ক), অ্যাস্টন অ্যাগার, প্যাট কামিন্স, জস হ্যাজেলউড, জস ইংলিস, মিচেল মার্শ, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, কেন রিচার্ডসন, স্টিভেন স্মিথ, মিচেল স্টার্ক, মার্কুস স্টয়নিস, মিচেল সুয়েপসন, ম্যাথু ওয়েড, ডেভিড ওয়ার্নার ও অ্যাডাম জাম্পা।