এক স্লিপ
- প্রকাশের সময় : ১০:২৪:৫৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩ জুন ২০১৫
- / ৯২৪ বার পঠিত
নিউইয়র্ক: আবারো প্রিয়-শ্রদ্ধেয় হাবিব ভাইর কথা। সাপ্তাহিক বাংলা পত্রিকা’র বার্তা সম্পাদক হাবিবুর রহমান। একজন সংবাদকর্মী হিসেবে আমার কাছে ‘বার্তা সম্পাদক’ পত্রিকার প্রাণ। সেই হিসেবে হাবিব ভাই বন্ধুসুলভ অগ্রজ। এই প্রবাসেই ঊভয়ের পরিচয়-সম্পর্ক প্রায় এক যুগের। ফলে পেশাগত ছাড়াও ব্যক্তিগত সুখ-দু:খের সাথী আমরা উভয়েই। হঠাৎ ফেসবুকে চোখ পড়তেই হাবিব ভাইর একটি স্ট্যাটাস দেখে আটকে গেলাম। অল্প কথায় কি চমৎকার লেখা। কত গুরু-গম্ভীর আর স্পর্শকাতর বিষয় সেই লিখায়। যা আমাকে, আপনাকে একটু হলেও ভাবাবে, নিয়ে যাবে অন্য জগতে।
‘ইতিহাস ফিরে আসে বার বার …’ শিরোনামে হাবিব ভাই তার স্ট্যাটাসে লিখেছেন: ‘আমি যখন ইন্টারমিডিয়েটে পড়ি তখন ফাইনাল পরীক্ষার আগের কয়েকমাস সময়ের জন্য একটা চাকুরি নেই। চিনি ও খাদ্য শিল্প সংস্থায় জুনিয়র ক্লার্ক। প্রথম মাসের বেতনের টাকাটা বাবার হাতে তুলে দিতে গেলে তিনি তা হাতে নিয়ে ঝর ঝর করে কেঁদে ফেলেন। পরে তা আমাকে ফিরিয়ে দিয়ে মাথায় হাত দিয়ে আশীর্বাদ জানান তিনি।
প্রবাসের কর্মজীবনে প্রতিদিন গভীর রাতে বাসায় ফিরি। আমার ‘নেচার অব জব’টাই এমন। সাংবাদিকতায় কোন বাধা ধরা সময় নেই তাই। কালও এর ব্যতিক্রম হয়নি। গিয়ে দেখি আমার একমাত্র কন্যা ঘুম ঘুম চোখে অপেক্ষমান। আমাকে দেখে সে তার রুম থেকে একটা খাম নিয়ে এসে আমার হাতে দিয়ে বল্লো- এটা তোমার জন্য আমার গিফট।
খুলে দেখি একটা চেক ৫ হাজার ডলারের। সম্প্রতি সে সেন্ট জর্জেস সোসাইটির একটা স্কলারশিপ পেয়েছে- এটা তাই। চেকটা হাতে নিয়ে আমি ফিরে গেলাম সূদুর অতীতে। যে দিন আমি আমার বাবার হাতে আমার প্রথম রোজগারের টাকাটা তুলে দিয়েছিলাম। আর আজ আমার মেয়ে তার স্কলারশীপের অর্থের পুরোটাই আমার হাতে তুলে দিলো।
এতদিন পর আমি যেন ‘আমার বাবা’ হয়ে গেলাম। তার মতই আমার চোখ বেয়ে নেমে আসছিলো জলের ধারা। এ জল আনন্দের, এ জল ভালোবাসার। এক অজানা প্রাপ্তির। চেকটা আমি আমার বাবার মতই তার হাতে তুলে দিলাম। বল্লাম চেকটা তুমি নাও, আমি তোমার ভালোবাসাটুকু নিলাম।
একজন মুসলমান হিসাবে আমি পূর্বজন্মে বিশ্বাস করিনা। যদি করতাম তাহলে বলতাম আমার ‘আত্মজা’ আমার পূর্বজন্মেরই কোন সুকর্মের ফসল।’ বাহ! সত্যিই চমৎকার। ১৭ মে’২০১৫।