নিউইয়র্ক ০৯:২০ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৩ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

আভদিভকায় দুর্বল রুশ হামলা, মেরিঙ্কা দখলে ব্যর্থ মস্কো

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৩:৩৯:০২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২৩
  • / ১৯ বার পঠিত

রাশিয়ার হামলায় ধ্বংসস্তুপে পরিণত হওয়া মেরিঙ্কার ড্রোন ভিউ। ছবি: রয়টার্স

 আন্তর্জাতিক ডেস্ক : পূর্ব ইউক্রেনের বিধ্বস্ত শহর আভদিভকাতে শনিবার (২ ডিসেম্বর) হামলার গতি কমিয়েছে রুশ সামরিক বাহিনী। অঞ্চলটির একটি অনানুষ্ঠানিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রুশ সেনারা দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় বিধ্বস্ত শহর মেরিঙ্কা দখলে নিতে ব্যর্থ হয়েছে। এক প্রতিবেদনে এই খবর জানিয়েছে ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

টানা ২০ মাসেরও বেশি সময় ধরে চলমান ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের শুরুতে কিয়েভের দিকে অগ্রসর হওয়ার চেষ্টা করে রাশিয়া। সেটি দখলে ব্যর্থ হওয়ার পর থেকে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের দিকে মনোনিবেশ করেছে দেশটি। এরপর চলতি বছরের অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে আভদিভকা শহর দখলের জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে। এরপর একমাস বিরতি শেষে নভেম্বরে আভদিভকায় আবারও হামলা শুরু করে তারা। তাদের লক্ষ্য আভদিভকা এবং এর বিশাল কয়লা শোধনাগার দখলে নেওয়া।

শুক্রবার এক প্রতিবেদনে রাশিয়া দাবি করে, মস্কোর সেনারা দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় মেরিঙ্কার ৪০ কিলোমিটার (২৫ মাইল) এলাকা নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। শহরটিতে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে তুমুল লড়াই চলছিল।তবে শনিবার ইউক্রেনের একটি অনানুষ্ঠানিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শহরটি কয়েকটি জেলা এখনও ইউক্রেনীয় বাহিনীর দখলে রয়েছে।

জাতীয় টেলিভিশনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র ওলেক্সান্ডার শুপুন বলেছেন, ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির ফলে গত ২৪ ঘণ্টায় আভদিভকায় রাশিয়ার হামলার দুর্বল হয়ে অর্ধেক হয়ে গেছে।

শুপুন বলেছিলেন, ‘কয়লা শোধনাগারটি ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনী নিয়ন্ত্রণ করে। শত্রু বাহিনী এর ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করছে। তবে এতে শুধু তাদের পদাতিক বাহিনী এবং সরঞ্জামের ক্ষতিই হচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘শিল্প অঞ্চল’ নামে পরিচিত শহরের কেন্দ্রের বাইরে একটি সংলগ্ন এলাকায় যুদ্ধ তখনও তীব্র ছিল। জনপ্রিয় যুদ্ধবিষয়ক রুশ ব্লগ রাইবার বলেছে, ওই অঞ্চলটি রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে।

উভয় পক্ষের দাবির সত্যতা যাচাই করতে পারেনি রয়টার্স।

শহরের সামরিক প্রশাসনের প্রধান ভিটালি বারাবাশ চ্যানেল টুয়েন্টি ফোর টেলিভিশনকে জানিয়েছেন, আভদিভকার দশা ‘মেরিঙ্কার মতো হতে শুরু করেছে, যেটি এখন রূপ নিয়েছে বিলুপ্ত বসতিতে। এর ভিত্তি ভেঙে ফেলা হয়েছে।’

মেরিঙ্কা নিয়ে ইউক্রেনের সরকারি কোনও প্রতিবেদন ছিল না। তবে সামরিক বিশ্লেষক ওলেহ ঝদানভ বলেছেন, রাশিয়ার সেনারা এটি দখলে নিয়েছে এমন দাবি সত্য নয়। একটি অনলাইন উপস্থাপনায় ঝদানভ বলেছেন, ‘সেখানে রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর অগ্রগতি থাকার কথা আমরা স্বীকার করছি,’ তবে শহরটির দক্ষিণ-পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিম অংশ এখনও ইউক্রেনীয় বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

একটি ব্যক্তিগত ইউক্রেনীয় যুদ্ধবিষয়ক ব্লগ ডিপস্টেট। ইউক্রেনীয় সেনাদের উদ্ধৃতি দিয়ে সেটি বলছে, যে শহরটিতে একসময় ১০ হাজার মানুষের বসতি ছিল সেটির ওপর রুশ বাহিনীর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ ছিল এমন যে কোনও ধারণাই সত্য নয়।এদিকে, রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় মেরিঙ্কার কোনও উল্লেখ করেনি।

রাশিয়ার সামরিক ব্লগার রাইবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শহরটিতে রাশিয়ার পতাকার সম্বলিত ছবি শেয়ার করে লিখেছেন, ‘তবুও, বেশ কয়েকটি ভবন এখনও ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।’

ইউক্রেনের আরেক মুখপাত্র ভলোদিমির ফিটিও জাতীয় টেলিভিশনকে বলেছেন, বাখমুতের আশপাশের এলাকায় ২১টি রুশ হামলা প্রতিহত করেছে কিয়েভ বাহিনী। কয়েক মাস যুদ্ধের ফলে বিধ্বস্ত হয়ে পড়া শহরটি গত মে মাসে দখলে নেয় রাশিয়া। তবে তখন থেকেই কাছাকাছি গ্রামগুলোর নিয়ন্ত্রণ ফিরিয়ে নিতে শুরু করে ইউক্রেনীয় সেনারা ।

জুন মাসে শুরু করা পাল্টা আক্রমণে পূর্ব ও দক্ষিণে রাশিয়ার দখলে নেওয়া গ্রামগুলো পুনরুদ্ধার করার দিকে মনোনিবেশ করেছে ইউক্রেনীয় বাহিনী। তবে যে অগ্রগতি কিয়েভ চেয়েছিল তার চেয়ে তা ধীর বলে অকপটে স্বীকার করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।

হককথা/নাছরিন

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

আভদিভকায় দুর্বল রুশ হামলা, মেরিঙ্কা দখলে ব্যর্থ মস্কো

প্রকাশের সময় : ০৩:৩৯:০২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২৩

 আন্তর্জাতিক ডেস্ক : পূর্ব ইউক্রেনের বিধ্বস্ত শহর আভদিভকাতে শনিবার (২ ডিসেম্বর) হামলার গতি কমিয়েছে রুশ সামরিক বাহিনী। অঞ্চলটির একটি অনানুষ্ঠানিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রুশ সেনারা দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় বিধ্বস্ত শহর মেরিঙ্কা দখলে নিতে ব্যর্থ হয়েছে। এক প্রতিবেদনে এই খবর জানিয়েছে ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

টানা ২০ মাসেরও বেশি সময় ধরে চলমান ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের শুরুতে কিয়েভের দিকে অগ্রসর হওয়ার চেষ্টা করে রাশিয়া। সেটি দখলে ব্যর্থ হওয়ার পর থেকে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের দিকে মনোনিবেশ করেছে দেশটি। এরপর চলতি বছরের অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে আভদিভকা শহর দখলের জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে। এরপর একমাস বিরতি শেষে নভেম্বরে আভদিভকায় আবারও হামলা শুরু করে তারা। তাদের লক্ষ্য আভদিভকা এবং এর বিশাল কয়লা শোধনাগার দখলে নেওয়া।

শুক্রবার এক প্রতিবেদনে রাশিয়া দাবি করে, মস্কোর সেনারা দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় মেরিঙ্কার ৪০ কিলোমিটার (২৫ মাইল) এলাকা নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। শহরটিতে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে তুমুল লড়াই চলছিল।তবে শনিবার ইউক্রেনের একটি অনানুষ্ঠানিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শহরটি কয়েকটি জেলা এখনও ইউক্রেনীয় বাহিনীর দখলে রয়েছে।

জাতীয় টেলিভিশনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র ওলেক্সান্ডার শুপুন বলেছেন, ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির ফলে গত ২৪ ঘণ্টায় আভদিভকায় রাশিয়ার হামলার দুর্বল হয়ে অর্ধেক হয়ে গেছে।

শুপুন বলেছিলেন, ‘কয়লা শোধনাগারটি ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনী নিয়ন্ত্রণ করে। শত্রু বাহিনী এর ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করছে। তবে এতে শুধু তাদের পদাতিক বাহিনী এবং সরঞ্জামের ক্ষতিই হচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘শিল্প অঞ্চল’ নামে পরিচিত শহরের কেন্দ্রের বাইরে একটি সংলগ্ন এলাকায় যুদ্ধ তখনও তীব্র ছিল। জনপ্রিয় যুদ্ধবিষয়ক রুশ ব্লগ রাইবার বলেছে, ওই অঞ্চলটি রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে।

উভয় পক্ষের দাবির সত্যতা যাচাই করতে পারেনি রয়টার্স।

শহরের সামরিক প্রশাসনের প্রধান ভিটালি বারাবাশ চ্যানেল টুয়েন্টি ফোর টেলিভিশনকে জানিয়েছেন, আভদিভকার দশা ‘মেরিঙ্কার মতো হতে শুরু করেছে, যেটি এখন রূপ নিয়েছে বিলুপ্ত বসতিতে। এর ভিত্তি ভেঙে ফেলা হয়েছে।’

মেরিঙ্কা নিয়ে ইউক্রেনের সরকারি কোনও প্রতিবেদন ছিল না। তবে সামরিক বিশ্লেষক ওলেহ ঝদানভ বলেছেন, রাশিয়ার সেনারা এটি দখলে নিয়েছে এমন দাবি সত্য নয়। একটি অনলাইন উপস্থাপনায় ঝদানভ বলেছেন, ‘সেখানে রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর অগ্রগতি থাকার কথা আমরা স্বীকার করছি,’ তবে শহরটির দক্ষিণ-পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিম অংশ এখনও ইউক্রেনীয় বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

একটি ব্যক্তিগত ইউক্রেনীয় যুদ্ধবিষয়ক ব্লগ ডিপস্টেট। ইউক্রেনীয় সেনাদের উদ্ধৃতি দিয়ে সেটি বলছে, যে শহরটিতে একসময় ১০ হাজার মানুষের বসতি ছিল সেটির ওপর রুশ বাহিনীর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ ছিল এমন যে কোনও ধারণাই সত্য নয়।এদিকে, রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় মেরিঙ্কার কোনও উল্লেখ করেনি।

রাশিয়ার সামরিক ব্লগার রাইবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শহরটিতে রাশিয়ার পতাকার সম্বলিত ছবি শেয়ার করে লিখেছেন, ‘তবুও, বেশ কয়েকটি ভবন এখনও ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।’

ইউক্রেনের আরেক মুখপাত্র ভলোদিমির ফিটিও জাতীয় টেলিভিশনকে বলেছেন, বাখমুতের আশপাশের এলাকায় ২১টি রুশ হামলা প্রতিহত করেছে কিয়েভ বাহিনী। কয়েক মাস যুদ্ধের ফলে বিধ্বস্ত হয়ে পড়া শহরটি গত মে মাসে দখলে নেয় রাশিয়া। তবে তখন থেকেই কাছাকাছি গ্রামগুলোর নিয়ন্ত্রণ ফিরিয়ে নিতে শুরু করে ইউক্রেনীয় সেনারা ।

জুন মাসে শুরু করা পাল্টা আক্রমণে পূর্ব ও দক্ষিণে রাশিয়ার দখলে নেওয়া গ্রামগুলো পুনরুদ্ধার করার দিকে মনোনিবেশ করেছে ইউক্রেনীয় বাহিনী। তবে যে অগ্রগতি কিয়েভ চেয়েছিল তার চেয়ে তা ধীর বলে অকপটে স্বীকার করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।

হককথা/নাছরিন