অভিনন্দন জানিয়ে ‘গুরুতর ভুল’ করেছে যুক্তরাষ্ট্র : চীন
- প্রকাশের সময় : ০৮:৩৬:০৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৪
- / ৭৫ বার পঠিত
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : তাইওয়ানের ক্ষমতাসীন দল ডেমোক্রেটিক প্রগ্রেসিভ পার্টির (ডিপিপি) নেতা লাই চিং-তেকে নতুন নেতা হিসেবে বেছে নিলেন ভোটাররা। নবনির্বাচিত লাই বলেছেন, তিনি চীনের কাছ থেকে তাইওয়ানকে সুরক্ষিত রাখতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। সেই সঙ্গে লাই এ-ও বলেছেন, তিনি চীনের সঙ্গে সংঘাতের স্থলে সংলাপের পথ ব্যবহার করবেন।
ফলাফলের পর তাইওয়ানের নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম লাই চিং-তেকে অভিনন্দন বার্তা পাঠিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন, এতে ক্ষুব্ধ হয়েছে চীন।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার মাত্র কয়েক ঘণ্টা পরে সেখানে একটি রাজনৈতিক প্রতিনিধিদলকে পাঠায় যুক্তরাষ্ট্র।
শনিবারের (১৩ জানুয়ারি) নির্বাচনের ফলাফলের পর যুক্তরাষ্ট্রকে ‘গুরুতর ভুল সংকেত’ পাঠানোর অভিযোগ করেছে চীন। দেশটি আরো বলেছে, ওয়াশিংটন প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তারা তাইওয়ানের সঙ্গে শুধু অনানুষ্ঠানিক সম্পর্ক বজায় রাখবে। কিন্তু বেইজিং এই বার্তাটিকে তাইওয়ানের সঙ্গে শুধুমাত্র অনানুষ্ঠানিক সম্পর্ক বজায় রাখার ওয়াশিংটনের প্রতিশ্রুতির লঙ্ঘন বলে অভিহিত করেছে।
এক বিবৃতিতে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ‘তাইওয়ানে নির্বাচিত ব্যক্তিকে অভিনন্দন জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্র তার প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেছে। তারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তাইওয়ানের সঙ্গে শুধু সাংস্কৃতিক এবং বাণিজ্যিক সম্পর্ক বজায় রাখবে, কোনো আনুষ্ঠানিক সম্পর্কে জড়াবে না।’ বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ‘এ ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের সম্পর্কের ক্ষেত্রে প্রথম চূড়ান্ত সীমারেখা বা রেড লাইন হলো তাইওয়ান।’ এ কারণে চীন আনুষ্ঠানিকভাবে কূটনৈতিক অভিযোগে জানিয়েছে, তাইওয়ানের সঙ্গে যেকোনো আনুষ্ঠানিকতাকে চীন কঠোরভাবে বিরোধিতা করে।
একই সঙ্গে তাইওয়ানের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে যেকোনো প্রেক্ষিতে হস্তক্ষেপকেও বিরোধিতা হিসেবে দেখে।
চীন তাইওয়ানকে নিজেদের ভূখণ্ড হিসেবে দেখে। তারা বলেছে, যেকোনো সরকার যদি এ দাবির বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ করে তাহলে কঠোর জবাব দেবে বেইজিং। নির্বাচনের পর সারা বিশ্ব থেকে বিভিন্ন দেশ তাইওয়ানের নতুন নেতাকে অভিনন্দন জানিয়ে বার্তা পাঠিয়েছে। এদের মধ্যে অ্যান্টনি ব্লিংকেন তাইপে এবং ওয়াশিংটনের মধ্যে অংশীদারত্বের ওপর জোর দিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, এই সম্পর্ক হবে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের ওপর ভিত্তি করে। এক বিবৃতিতে ব্লিংকেন বলেন, ‘আমরা আমাদের ভাগ করা স্বার্থ ও মূল্যবোধকে এগিয়ে নিতে লাই এবং তাইওয়ানের সকল দলের নেতাদের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত।’ ব্লিংকেন আরো জোর দিয়ে বলেছেন, ‘ যুক্তরাষ্ট্র তাইওয়ানের অন্যতম বৃহত্তম মিত্র। শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
শীর্ষ যুক্তরাষ্ট্রের এই কূটনীতিক বলেন, ‘এ ধরনের সহযোগিতার মাধ্যমে আমাদের দীর্ঘস্থায়ী অনানুষ্ঠানিক সম্পর্ককে আরো এগিয়ে নেওয়া উচিত এবং যুক্তরাষ্ট্রের এক চীন নীতির অধীনে হওয়া উচিত।’ এই নীতির অধীনে যুক্তরাষ্ট্র তাইওয়ানের পরিবর্তে চীনের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক সম্পর্ককে স্বীকৃতি দেয়। যাকে চীন একটি বিচ্ছিন্ন প্রদেশ হিসেবে দেখে এবং আশা করে তাইওয়ান একদিন মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে এক হবে।
অ্যান্টনি ব্লিংকেনের এ মন্তব্যে বেইজিং থেকে কঠোর সমালোচনা করা হয়েছে। তাইওয়ানের কোনো প্রার্থী বা কোনো রাজনৈতিক দলকে সমর্থন দিয়ে কোনো বিবৃতিকে চীন ভালো চোখে দেখে না। কারণ তাইওয়ানের রাজনৈতিক দলগুলোর বেশির ভাগই তাইওয়ানকে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে দেখতে চায়। তাইওয়ানের নতুন প্রেসিডেন্টকে স্বাগত জানিয়েছে ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানিসহ আরো অনেক পশ্চিমা দেশ। সূত্র : বিবিসি
হককথা/নাছরিন