নিউইয়র্ক ১২:৫৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলা অবধারিত ছিল : সাবেক ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৪:১২:৫৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
  • / ১১২ বার পঠিত

যুক্তরাষ্ট্রে সাবেক ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত লর্ড কিম ড্যারোচ। ছবি : সংগৃহীত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইরাকে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ঘাঁটিতে ড্রোন হামলায় তিন সেনা নিহত হওয়ার জবাবে যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়া ও ইরাকে হামলা চালিয়েছে। ইরাক ও সিরিয়ায় ইরানের বিপ্লবী গার্ড সমর্থিত ৮৫টির বেশি লক্ষ্যবস্তুতে এই বিমান হামলা শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী। ড্রোন হামলার প্রতিশোধ নিতে শুক্রবার (২ ফেব্রুয়ারি) অভিযান শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

বিবিসির সঙ্গে আলাপকালে যুক্তরাষ্ট্রে সাবেক ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত লর্ড কিম ড্যারোচ বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের হামলা চালানোর বিষয়টি অবধারিত ছিল, বিশেষ করে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের বছর বলে।

’ ড্যারোচ আরো বলেন, ‘প্রশাসন এসব বিষয় হালকাভাবে নিতে প্রস্তুত নয়।’ তিনি বলেন, ‘ডাউনিং স্ট্রিট এ ধরনের হামলা সম্পর্কে আগেই সতর্কতা পেয়েছিল, কিন্তু কত সময় ধরে এই হামলা চলবে তা নিয়ে কিছুটা উদ্বেগ রয়েছে।’ লন্ডনের ওয়েস্টমিনস্টারের একটি রাস্তার নাম ‘ডাউনিং স্ট্রিট’, যেখানে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী এবং চ্যান্সেলর অব দ্য এক্সচেকারের সরকারি বাসভবন ও অফিস রয়েছে। ড্যারোচ বলেন, ‘উল্লেখযোগ্য হামলাটি যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে অনিবার্য ছিল।

’ যদিও ইরান ইরাকে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ঘাঁটিতে ড্রোন হামলার সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করেছে। কিন্তু ড্যারোচ বলেছেন, ‘যেখানে তারা (ইরান) মিলিশিয়াগোষ্ঠীকে অর্থায়ন করছে, সেখানে আপনি বলতে পারবেন না যে তারা হামলার আদেশ দেয়নি। এর পরিণতি তাদের (ইরান) বহন করতে হবে।

শুক্রবারের (২ ফেব্রুয়ারি) হামলায় যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী বি-১ বোমারু বিমান নামে পরিচিত দূরপাল্লার সামরিক বিমান ব্যবহার করেছে।

বিমানটি সরাসরি যুক্তরাষ্ট্র থেকে উড়েছিল বলে জানা গেছে। ইরাক ও সিরিয়ায় হামলায় ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোনও ব্যবহার করা হয়েছে। মোট সাতটি স্থানে আঘাত হেনেছে যুক্তরাষ্ট্র। চারটি সিরিয়ায় এবং তিনটি ইরাকে। চারটি স্থানে মোট ৮৫টিরও বেশি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানা হয়।

কর্মকর্তাদের মতে, কমান্ড ও কন্ট্রোল অপারেশন সেন্টার, গোয়েন্দা কেন্দ্র, রকেট, ক্ষেপণাস্ত্র এবং অস্ত্র সরবরাহের স্থান অন্তর্ভুক্ত ছিল।

রবিবার (২৮ জানুয়ারি) সিরিয়া-জর্দান সীমান্তের কাছে একটি যুক্তরাষ্ট্রের ঘাঁটিতে ড্রোন হামলায় তিন যুক্তরাষ্ট্রের সেনা নিহত এবং প্রায় ৪০ জন আহত হয়। টাওয়ার ২২ নামক যুক্তরাষ্ট্রের ঘাঁটিতে এই ড্রোন হামলা হয়েছে। খুব কমই পরিচিত এই ঘাঁটিতে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী ও বিমানবাহিনীর ৩৫০ জন সেনা রয়েছে। ঘাঁটিটি নিয়মিতভাবে সামরিক রসদের জোগান দেয় তাই এটি গুরুত্বপূর্ণ। টাওয়ার ২২ সিরিয়া সীমান্তের ওপারে ‘আল তানফ’ গ্যারিসনের কাছে অবস্থিত। এখানে অল্প কিছু যুক্তরাষ্ট্রের সেনাও রয়েছে।

তানফ ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে যুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে এবং পূর্বসিরিয়ায় ইরানের সামরিক গঠনকে নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলের অংশ হিসেবে ভূমিকা রাখছে। যেকোনো প্রয়োজনে ‘টাওয়ার ২২’ থেকে সাহায্য দেওয়া যায় তানফে থাকা যুক্তরাষ্ট্রের সেনাদের। এ ছাড়া এলাকায় ইরান সমর্থিত মিলিশিয়া বাহিনীগুলোর প্রতিরোধ এবং আইএসের ওপরও নজর রাখছে তনফ। তবে ‘টাওয়ার ২২’ কী কারণে হামলার শিকার হলো বা কী ধরনের অস্ত্র বা প্রতিরক্ষাব্যবস্থা সেখানে আছে তা স্পষ্ট নয়।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, ‘কট্টর ইরান-সমর্থিত জঙ্গিগোষ্ঠী’ এই হামলা চালিয়েছে। তিনি আরো বলেছিলেন, ‘আমরা এর জবাব দেব।’ ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার পর এই প্রথম কোনো হামলায় ওই অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা নিহত হয়েছে। এর আগে বাইডেন এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘জিল এবং আমি নিহতদের পরিবার, বন্ধু এবং দেশজুড়ে আমেরিকানদের সঙ্গে আছি। এই ঘৃণ্য এবং অন্যায় হামলায় যোদ্ধাদের হারানোয় আমরা শোকহত।’ দক্ষিণ ক্যারোলাইনা সফরকালে বাইডেন বলেছিলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যে আমাদের একটি কঠিন দিন ছিল। আমরা তিনজন সাহসী যোদ্ধাকে হারিয়েছি।’ ১৭ অক্টোবর থেকে ইরাক এবং সিরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের ঘাঁটিতে কমপক্ষে ৯৭ বার হামলা হয়েছে। সূত্র : বিবিসি

হককথা/নাছরিন

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলা অবধারিত ছিল : সাবেক ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত

প্রকাশের সময় : ০৪:১২:৫৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইরাকে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ঘাঁটিতে ড্রোন হামলায় তিন সেনা নিহত হওয়ার জবাবে যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়া ও ইরাকে হামলা চালিয়েছে। ইরাক ও সিরিয়ায় ইরানের বিপ্লবী গার্ড সমর্থিত ৮৫টির বেশি লক্ষ্যবস্তুতে এই বিমান হামলা শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী। ড্রোন হামলার প্রতিশোধ নিতে শুক্রবার (২ ফেব্রুয়ারি) অভিযান শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

বিবিসির সঙ্গে আলাপকালে যুক্তরাষ্ট্রে সাবেক ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত লর্ড কিম ড্যারোচ বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের হামলা চালানোর বিষয়টি অবধারিত ছিল, বিশেষ করে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের বছর বলে।

’ ড্যারোচ আরো বলেন, ‘প্রশাসন এসব বিষয় হালকাভাবে নিতে প্রস্তুত নয়।’ তিনি বলেন, ‘ডাউনিং স্ট্রিট এ ধরনের হামলা সম্পর্কে আগেই সতর্কতা পেয়েছিল, কিন্তু কত সময় ধরে এই হামলা চলবে তা নিয়ে কিছুটা উদ্বেগ রয়েছে।’ লন্ডনের ওয়েস্টমিনস্টারের একটি রাস্তার নাম ‘ডাউনিং স্ট্রিট’, যেখানে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী এবং চ্যান্সেলর অব দ্য এক্সচেকারের সরকারি বাসভবন ও অফিস রয়েছে। ড্যারোচ বলেন, ‘উল্লেখযোগ্য হামলাটি যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে অনিবার্য ছিল।

’ যদিও ইরান ইরাকে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ঘাঁটিতে ড্রোন হামলার সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করেছে। কিন্তু ড্যারোচ বলেছেন, ‘যেখানে তারা (ইরান) মিলিশিয়াগোষ্ঠীকে অর্থায়ন করছে, সেখানে আপনি বলতে পারবেন না যে তারা হামলার আদেশ দেয়নি। এর পরিণতি তাদের (ইরান) বহন করতে হবে।

শুক্রবারের (২ ফেব্রুয়ারি) হামলায় যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী বি-১ বোমারু বিমান নামে পরিচিত দূরপাল্লার সামরিক বিমান ব্যবহার করেছে।

বিমানটি সরাসরি যুক্তরাষ্ট্র থেকে উড়েছিল বলে জানা গেছে। ইরাক ও সিরিয়ায় হামলায় ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোনও ব্যবহার করা হয়েছে। মোট সাতটি স্থানে আঘাত হেনেছে যুক্তরাষ্ট্র। চারটি সিরিয়ায় এবং তিনটি ইরাকে। চারটি স্থানে মোট ৮৫টিরও বেশি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানা হয়।

কর্মকর্তাদের মতে, কমান্ড ও কন্ট্রোল অপারেশন সেন্টার, গোয়েন্দা কেন্দ্র, রকেট, ক্ষেপণাস্ত্র এবং অস্ত্র সরবরাহের স্থান অন্তর্ভুক্ত ছিল।

রবিবার (২৮ জানুয়ারি) সিরিয়া-জর্দান সীমান্তের কাছে একটি যুক্তরাষ্ট্রের ঘাঁটিতে ড্রোন হামলায় তিন যুক্তরাষ্ট্রের সেনা নিহত এবং প্রায় ৪০ জন আহত হয়। টাওয়ার ২২ নামক যুক্তরাষ্ট্রের ঘাঁটিতে এই ড্রোন হামলা হয়েছে। খুব কমই পরিচিত এই ঘাঁটিতে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী ও বিমানবাহিনীর ৩৫০ জন সেনা রয়েছে। ঘাঁটিটি নিয়মিতভাবে সামরিক রসদের জোগান দেয় তাই এটি গুরুত্বপূর্ণ। টাওয়ার ২২ সিরিয়া সীমান্তের ওপারে ‘আল তানফ’ গ্যারিসনের কাছে অবস্থিত। এখানে অল্প কিছু যুক্তরাষ্ট্রের সেনাও রয়েছে।

তানফ ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে যুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে এবং পূর্বসিরিয়ায় ইরানের সামরিক গঠনকে নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলের অংশ হিসেবে ভূমিকা রাখছে। যেকোনো প্রয়োজনে ‘টাওয়ার ২২’ থেকে সাহায্য দেওয়া যায় তানফে থাকা যুক্তরাষ্ট্রের সেনাদের। এ ছাড়া এলাকায় ইরান সমর্থিত মিলিশিয়া বাহিনীগুলোর প্রতিরোধ এবং আইএসের ওপরও নজর রাখছে তনফ। তবে ‘টাওয়ার ২২’ কী কারণে হামলার শিকার হলো বা কী ধরনের অস্ত্র বা প্রতিরক্ষাব্যবস্থা সেখানে আছে তা স্পষ্ট নয়।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, ‘কট্টর ইরান-সমর্থিত জঙ্গিগোষ্ঠী’ এই হামলা চালিয়েছে। তিনি আরো বলেছিলেন, ‘আমরা এর জবাব দেব।’ ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার পর এই প্রথম কোনো হামলায় ওই অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা নিহত হয়েছে। এর আগে বাইডেন এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘জিল এবং আমি নিহতদের পরিবার, বন্ধু এবং দেশজুড়ে আমেরিকানদের সঙ্গে আছি। এই ঘৃণ্য এবং অন্যায় হামলায় যোদ্ধাদের হারানোয় আমরা শোকহত।’ দক্ষিণ ক্যারোলাইনা সফরকালে বাইডেন বলেছিলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যে আমাদের একটি কঠিন দিন ছিল। আমরা তিনজন সাহসী যোদ্ধাকে হারিয়েছি।’ ১৭ অক্টোবর থেকে ইরাক এবং সিরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের ঘাঁটিতে কমপক্ষে ৯৭ বার হামলা হয়েছে। সূত্র : বিবিসি

হককথা/নাছরিন