নিউইয়র্ক ১০:২৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

বিশ্বের প্রথম হেডফোন তৈরি হয়েছিল রান্নাঘরে!

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ১১:৪৮:১৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ মার্চ ২০২৪
  • / ৯২ বার পঠিত

যারা গান শুনতে পছন্দ করেন তারদের সঙ্গে সারাক্ষণ ইয়ারফোন থাকে। বর্তমানে ওয়্যারলেস ইয়ারফোন। বিভিন্ন নামিদামি সংস্থার ইয়ারফোন কেনেন হাজার হাজার টাকা দিয়ে। অনেকে ইয়ারফোনকে আধুনিক প্রযুক্তি ভাবলেও এটি আসলে শত বছর আগে থেকেই ব্যবহার হয়ে আসছে।

ভাবতে অবাক লাগলেও সত্যি, ১২৫ বছর আগে আমেরিকা ইউরোপে তৈরি হয়েছিল এই ধরনের কানে শোনার যন্ত্র। তবে শতাব্দী প্রাচীন যন্ত্রগুলো দেখলে টেথিস্কোপের সঙ্গে সামান্য মিল পেতে পারেন। যদিও পুরোপুরি তেমন ছিল না ১৮৯০ সালে তৈরি প্রথম যুগের হেডফোনগুলো।

সেসময় ইউরোপ জুড়ে অপেরার ব্যাপক জনপ্রিয়তা। এর মাঝেই আবিষ্কার করা হয় ইলেক্ট্রোফোন। সংস্থার নামও ছিল ইলেক্ট্রোফোন প্রাইভেট লিমিটেড। অপেরা ও থিয়েটারগুলোতে সেই সময় লাইভ পারফরম্যান্স শোনার জন্য রোজই অসংখ্য বিনোদনপিপাসু মানুষ ভিড় করতেন।

থিয়েটারের নায়ক নায়িকাদের আওয়াজ একেবারে দর্শকদের কানের গোড়ায় পৌঁছে দিতে তৈরি হয় ইলেক্ট্রোফোন। এই বিশেষ যন্ত্রের দুরকম দিক ছিল। একটি দিক রিসিভারের মতো মঞ্চ থেকে অভিনেতাদের আওয়াজ তুলে আনত। অন্যদিকে ছিল বেশ কয়েকটি শোনার যন্ত্র। একটি লম্বা লোহার রড সেখান থেকে বেরিয়ে এসেছে একটি লোহার রিং। ঘুরে পৌঁছে গিয়েছে কান পর্যন্ত। রডটি হাতে ধরে বসে থাকাই নিয়ম। কানে পৌঁছে যাবে অভিনেতাদের কন্ঠস্বর।

এভাবে ইলেক্ট্রোফোন ইউরোপের বাজারে বেশ কিছু দিন চলেছিল। এরপর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের দামামা বেজে ওঠে। এই সময়ই হেডফোনের চেহারায় বদল আনেন ন্যাথানিয়েল ব্যাল্ডউইন। তার আগে টেলিফোনের রিসিভারকে ছোট্ট আকরে তৈরি করেছিলেন আর্নেস্ট মার্কিডিয়ার। সেটি ছিল ওয়ারলেস অর্থাৎ বেতার। এরপর ন্যাথানিয়েল তৈরি করলেন আধুনিক হেডফোন।

সেই সময় সাধারণ মানুষের থেকে হেডফোনের চল ছিল সেনাবাহিনীর কাজে। আর তাদেরই একটি চিঠি দিয়ে অনুরোধ করেন তার তৈরি নতুন হেডফোন পরখ করে দেখতে। প্রথমে অতটা গুরুত্ব দেয়নি যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী। পরে দেখা গেল, এ জিনিস যুগান্তকারী আবিষ্কার। সঙ্গে সঙ্গে অর্ডার দেওয়া হয় বেশ কয়েকটি। কিন্তু সেই সময় রান্নাঘরে হেডফোন তৈরি করতেন ন্যাথানিয়েল। তাই একবারে দশটার বেশি বানানো সম্ভব হত না। অর্থাৎ কোনো ল্যাব বা কারখানা ছিল না। রান্নাঘরে বসেই কাজটি করতেন কারিগর।

এ কারণেই ব্যবসাটা হাতছাড়া হয় তার। নৌবাহিনী তাকে এর স্বত্বের আবেদন করতে পরামর্শ দিয়েছিল। কিন্তু তার বিশ্বাস ছিল, এটা তেমন কোনো বড় আবিষ্কার নয়! তবে পরবর্তিতে হেডফোন সাধারণ মানুষের কাছেও জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। তবে তা অনেক পরের গল্প।

আধুনিক হেডফোনের জনক বলা যায় সনি ওয়াকম্যানকে। এই সংস্থাটিই প্রথম ১৯৭৯ সালে আধুনিক হেডফোন বাজারে এনেছিল। যা প্রায় সঙ্গে সঙ্গে পপ সংস্কৃতির আইকনে পরিণত হয়েছিল। প্রথম সাশ্রয়ী, পোর্টেবল মিউজিক প্লেয়ার হিসেবে ওয়াকম্যান তরুণ সমাজে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়।

এরপর অনেক সংস্থা হেডফোন এনেছে বাজারে। যা ধীরে ধীরে জনপ্রিয়তা পেয়েছে সব বয়সীদের কাছে। বর্তমানে হেডফোনের সবচেয়ে আধুনিক সংস্করণ ইয়ারবাড বা ওয়্যারলেস হেডফোন। যেখানে তারের ঝামেলা নেই। এক চার্জে দিনের পর দিন ব্যবহার করা যায়। যেখানে খুশি পকেটে নিয়ে যাওয়া যায়। সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

বিশ্বের প্রথম হেডফোন তৈরি হয়েছিল রান্নাঘরে!

প্রকাশের সময় : ১১:৪৮:১৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ মার্চ ২০২৪

যারা গান শুনতে পছন্দ করেন তারদের সঙ্গে সারাক্ষণ ইয়ারফোন থাকে। বর্তমানে ওয়্যারলেস ইয়ারফোন। বিভিন্ন নামিদামি সংস্থার ইয়ারফোন কেনেন হাজার হাজার টাকা দিয়ে। অনেকে ইয়ারফোনকে আধুনিক প্রযুক্তি ভাবলেও এটি আসলে শত বছর আগে থেকেই ব্যবহার হয়ে আসছে।

ভাবতে অবাক লাগলেও সত্যি, ১২৫ বছর আগে আমেরিকা ইউরোপে তৈরি হয়েছিল এই ধরনের কানে শোনার যন্ত্র। তবে শতাব্দী প্রাচীন যন্ত্রগুলো দেখলে টেথিস্কোপের সঙ্গে সামান্য মিল পেতে পারেন। যদিও পুরোপুরি তেমন ছিল না ১৮৯০ সালে তৈরি প্রথম যুগের হেডফোনগুলো।

সেসময় ইউরোপ জুড়ে অপেরার ব্যাপক জনপ্রিয়তা। এর মাঝেই আবিষ্কার করা হয় ইলেক্ট্রোফোন। সংস্থার নামও ছিল ইলেক্ট্রোফোন প্রাইভেট লিমিটেড। অপেরা ও থিয়েটারগুলোতে সেই সময় লাইভ পারফরম্যান্স শোনার জন্য রোজই অসংখ্য বিনোদনপিপাসু মানুষ ভিড় করতেন।

থিয়েটারের নায়ক নায়িকাদের আওয়াজ একেবারে দর্শকদের কানের গোড়ায় পৌঁছে দিতে তৈরি হয় ইলেক্ট্রোফোন। এই বিশেষ যন্ত্রের দুরকম দিক ছিল। একটি দিক রিসিভারের মতো মঞ্চ থেকে অভিনেতাদের আওয়াজ তুলে আনত। অন্যদিকে ছিল বেশ কয়েকটি শোনার যন্ত্র। একটি লম্বা লোহার রড সেখান থেকে বেরিয়ে এসেছে একটি লোহার রিং। ঘুরে পৌঁছে গিয়েছে কান পর্যন্ত। রডটি হাতে ধরে বসে থাকাই নিয়ম। কানে পৌঁছে যাবে অভিনেতাদের কন্ঠস্বর।

এভাবে ইলেক্ট্রোফোন ইউরোপের বাজারে বেশ কিছু দিন চলেছিল। এরপর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের দামামা বেজে ওঠে। এই সময়ই হেডফোনের চেহারায় বদল আনেন ন্যাথানিয়েল ব্যাল্ডউইন। তার আগে টেলিফোনের রিসিভারকে ছোট্ট আকরে তৈরি করেছিলেন আর্নেস্ট মার্কিডিয়ার। সেটি ছিল ওয়ারলেস অর্থাৎ বেতার। এরপর ন্যাথানিয়েল তৈরি করলেন আধুনিক হেডফোন।

সেই সময় সাধারণ মানুষের থেকে হেডফোনের চল ছিল সেনাবাহিনীর কাজে। আর তাদেরই একটি চিঠি দিয়ে অনুরোধ করেন তার তৈরি নতুন হেডফোন পরখ করে দেখতে। প্রথমে অতটা গুরুত্ব দেয়নি যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী। পরে দেখা গেল, এ জিনিস যুগান্তকারী আবিষ্কার। সঙ্গে সঙ্গে অর্ডার দেওয়া হয় বেশ কয়েকটি। কিন্তু সেই সময় রান্নাঘরে হেডফোন তৈরি করতেন ন্যাথানিয়েল। তাই একবারে দশটার বেশি বানানো সম্ভব হত না। অর্থাৎ কোনো ল্যাব বা কারখানা ছিল না। রান্নাঘরে বসেই কাজটি করতেন কারিগর।

এ কারণেই ব্যবসাটা হাতছাড়া হয় তার। নৌবাহিনী তাকে এর স্বত্বের আবেদন করতে পরামর্শ দিয়েছিল। কিন্তু তার বিশ্বাস ছিল, এটা তেমন কোনো বড় আবিষ্কার নয়! তবে পরবর্তিতে হেডফোন সাধারণ মানুষের কাছেও জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। তবে তা অনেক পরের গল্প।

আধুনিক হেডফোনের জনক বলা যায় সনি ওয়াকম্যানকে। এই সংস্থাটিই প্রথম ১৯৭৯ সালে আধুনিক হেডফোন বাজারে এনেছিল। যা প্রায় সঙ্গে সঙ্গে পপ সংস্কৃতির আইকনে পরিণত হয়েছিল। প্রথম সাশ্রয়ী, পোর্টেবল মিউজিক প্লেয়ার হিসেবে ওয়াকম্যান তরুণ সমাজে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়।

এরপর অনেক সংস্থা হেডফোন এনেছে বাজারে। যা ধীরে ধীরে জনপ্রিয়তা পেয়েছে সব বয়সীদের কাছে। বর্তমানে হেডফোনের সবচেয়ে আধুনিক সংস্করণ ইয়ারবাড বা ওয়্যারলেস হেডফোন। যেখানে তারের ঝামেলা নেই। এক চার্জে দিনের পর দিন ব্যবহার করা যায়। যেখানে খুশি পকেটে নিয়ে যাওয়া যায়। সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া