নিজের গায়ে আগুন দেওয়া যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবাহিনীর সেই সদস্য মারা গেছেন
- প্রকাশের সময় : ১১:২৫:৪৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
- / ১৪০ বার পঠিত
গাজায় চলমান যুদ্ধের প্রতিবাদে সপ্তাহান্তে ওয়াশিংটনে অবস্থিত ইসরায়েলি দূতাবাসের বাইরে নিজের গায়ে আগুন দেওয়া যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবাহিনীর সেই সদস্য মারা গেছেন। এএফপি সোমবার বিমানবাহিনীর বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। এ ছাড়া পুলিশ তাঁকে টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের সান আন্তোনিও শহরের বাসিন্দা অ্যারন বুশনেল (২৫) বলে শনাক্ত করেছে উল্লেখ করে বিবিসি ্জানিয়েছে, স্থানীয় সময় রবিবার দুপুর ১টায় আগুন দেওয়ার ঘটনাটি ঘটে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শহরের ফায়ার ডিপার্টমেন্ট ইসরায়েলি দূতাবাসের বাইরে আগুন লাগার খবর পেয়ে স্থানীয় সময় রবিবার জরুরি কর্মীরা ঘটনাস্থলে ছুটে যান। ওই ব্যক্তিকে সঙ্কটাপন্ন অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু পরে বিমানবাহিনীর একজন মুখপাত্র স্থানীয় সময় সোমবার সকালে জানান, রবিবার রাতেই ওই ব্যক্তি মারা গেছেন।
অন্যদিকে ইসরায়েলি দূতাবাসের একজন মুখপাত্র বলেছেন, এ ঘটনায় তাদের কোনো কর্মী আহত হয়নি।
এএফপি বলেছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করা ফুটেজ অনুসারে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই ব্যক্তি ‘ফ্রি প্যালেস্টাইন‘’ বলে চিৎকার করে নিজের গায়ে আগুনে দিয়েছিলেন। ভিডিওতে লোকটিকে যুদ্ধের পোশাক পরে গায়ে তরল ঢালতে ঢালতে ঘোষণা করতে দেখা যায়, তিনি ‘গণহত্যায় জড়িত হবেন না’। এরপর তিনি নিজের গায়ে আগুনে জ্বালিয়ে ‘ফ্রি প্যালেস্টাইন’ বলে চিৎকার করেন, যতক্ষণ পর্যন্ত না তিনি ভেঙে পড়েন। ভিডিওটি প্রথমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইচে একটি লাইভস্ট্রিমে শেয়ার করা হয়েছিল বলে জানা গেছে।
হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, গাজায় ফিলিস্তিনি মৃতের সংখ্যা ইতিমধ্যে ৩০ হাজারের কাছাকাছি পৌঁছেছে।
এতে মিত্র ইসরায়েলের লাগাম টেনে ধরতে এবং যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানাতে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ছে। ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা চালালে এ যুদ্ধ শুরু হয়। সরকারি পরিসংখ্যানের ওপর ভিত্তি করে এএফপির হিসাব অনুযায়ী, সেই হামলায় ইসরায়েলে এক হাজার ১৬০ জন নিহত হয়, যাদের অধিকাংশই বেসামরিক ছিল। পাশাপাশি যোদ্ধারা প্রায় ২৫০ জনকে জিম্মি করে নিয়ে যায়, যাদের মধ্যে ১৩০ জন এখণো গাজায় রয়ে গেছে এবং ৩১ জনকে মৃত বলে ধারণা করা হয়েছে। ওয়াশিংটন গত সপ্তাহে গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের একটি প্রস্তাব অবরুদ্ধ করেছে।
এটি এই বিষয়ে তার ভেটোর তৃতীয় ব্যবহার। জো বাইডেনের ডেমোক্রেটিক পার্টির কিছু ভোটার এই বিষয়ে তাঁকে চাপ দেওয়ার চেষ্টা করছেন। মিশিগানের আরব আমেরিকান ভোটারদের দল রাজ্যের প্রাথমিক নির্বাচনের দিন তাঁদের ব্যালটে ‘অনিচ্ছু’ ভোট দেওয়ার বা ‘ফ্রি প্যালেস্টাইন’ লেখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টকে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সরকারের প্রতি হতাশ হিসেবে চিত্রিত করে হোয়াইট হাউস আরব ও মুসলিম ভোটারদের উদ্বেগ কিছুটা কমানোর চেষ্টা করেছে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলে গেছে এবং যুদ্ধে দ্বিতীয় বিরতির জন্য ওয়াশিংটনের প্রচেষ্টা এখনো পর্যন্ত ব্যর্থ হয়েছে। রবিবার চলমান বহুজাতিক আলোচনার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, হামাসের পক্ষে জিম্মিদের মুক্তি এবং গাজা যুদ্ধে একটি নতুন যুদ্ধবিরতির সম্ভাব্য চুক্তির বিষয়ে একটি ‘বোঝাবুঝি‘’ হয়েছে।
এএফপির তথ্য অনুসারে, যুক্তরাষ্ট্রে হওয়া বিক্ষোভগুলো সাধারণত রাস্তায় শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে, যদিও ডিসেম্বরে আটলান্টায় অবস্থিত ইসরায়েলি কনস্যুলেটের বাইরে একজন ব্যক্তি গায়ে আগুন দিয়েছিলেন। সূত্র :কালের কণ্ঠ।