বিদেশে থাকা শিক্ষক গবেষকদের ফেরাতে চায় সরকার
- প্রকাশের সময় : ১২:৩৭:৩২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪
- / ২১ বার পঠিত
উচ্চ শিক্ষিতদের মধ্যে বেকারত্ব দূরীকরণে নানা উদ্যোগ নিচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। আওয়ামী লীগ শাসনামলে দলীয়করণের কারণে অনেক মেধাবী শিক্ষক-গবেষকরা দেশে কাজ করার পর্যাপ্ত সুযোগ পাননি। আওয়ামীপন্থি হওয়াটাই ছিল নিয়োগের প্রধান যোগ্যতা। সুযোগ ও সম্মানের অভাবে দেশের বাইরে চলে যাওয়া মেধাবী শিক্ষক-গবেষকদের ফেরানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। দেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর থেকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যোগ্যতাসম্পন্ন ভাইস চ্যান্সেলর নিয়োগে গুরুত্ব দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এরপর শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রেও একটি ফ্রেমওয়ার্ক প্রস্তুতের পরিকল্পনা রয়েছে। সেই সঙ্গে শিক্ষার মান উন্নয়নের পাশাপাশি ‘রিভার্স ব্রেইন ড্রেইন’ বা দেশের বাইরে থাকা শিক্ষক-গবেষকদের ফিরিয়ে আনতে চায় সরকার। যারা ফিরতে চান না তাদের পার্টটাইম হিসেবে কাজ করারও প্রস্তাব দেয়া হবে। শিক্ষকতার পাশাপাশি মানসম্মত গবেষণা বৃদ্ধির পরিকল্পনা হাতে নেয়া হচ্ছে। যার পরিধি ছড়িয়ে দেয়া হবে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়েও।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, শিক্ষায় গুণগত মান বৃদ্ধির লক্ষ্যে নানা পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে। এরমধ্যে ‘রিভার্স ব্রেইন ড্রেইন’ বা বিদেশে থাকা শিক্ষক-গবেষকদের ফেরানোর পরিকল্পনাও রয়েছে। শিগগিরই নতুন শিক্ষা কমিশন গঠন করা হবে। তারা এসব বিষয় নিয়ে কাজ করবেন। সব থেকে বেশি গুরুত্ব কর্মমুখী শিক্ষায় দেয়া হবে। যার কারণে কর্মমুখী বিষয়ের শিক্ষক ও দেশের পরিবর্তনে কাজে আসবে এমন গবেষকদের প্রাধান্য দেয়া হবে। শিক্ষা সংস্কারের জন্য দায়িত্বশীলরা বিষয়গুলোর সম্ভাব্যতা খতিয়ে দেখবেন। ইতিমধ্যে শিক্ষা উপদেষ্টাও একাধিকবার বিষয়টি উত্থাপন করেছেন। সমপ্রতি প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম শিক্ষায় নানা পরিবর্তনের কথা বলেন। তিনি বলেছেন, বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে শিক্ষার্থীদের গড়ে তুলতে শিক্ষাব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানো হবে। স্কুল-কলেজ পর্যায়ে আইসিটি বিষয়টি তেমন যুগোপযোগী হয়নি। বিশ্বব্যাপী আইসিটি যে পর্যায়ে চলে গেছে, তা আপডেট হয়নি। দেশে এটি আপডেট করা না গেলে টেকনিক্যাল বিষয়ে দক্ষতাসম্পন্ন ছেলেমেয়ে পাবো না। এ কারণে তথ্যপ্রযুক্তি, ভোকেশনাল ও কারিগরি শিক্ষা যুগোপযোগী করার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী প্রফেসর এম আমিনুল ইসলাম বলেন, শিক্ষাঙ্গনের মেধাবী ও দক্ষতাসম্পন্ন লোকদের নিয়ে শিক্ষা কমিশন গঠন করা হবে। তারাই সংস্কারের নানা বিষয় নিয়ে সম্ভাব্যতা যাচাই করবেন।
শিক্ষা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, সরকারি এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা এবং গবেষণা বাড়ানো দরকার। আগে দেশের শিক্ষাঙ্গনে নানা সংকট সৃষ্টি হয়েছে। রীতিমতো দুর্বৃত্তায়ন করা হয়েছে। সেগুলো বন্ধ করতে কাজ করা হচ্ছে। ভাইস চ্যান্সেলরদের অন্যান্য নিয়োগের ক্ষেত্রে যোগ্য ব্যক্তিদের নিয়ে আসা হচ্ছে। দেশের বাইরে থাকা ভালো শিক্ষক এবং গবেষকদের ফিরিয়ে আনতে কাজ করছে সরকার।
তিনি বলেন, নতুন করে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য বড় সুযোগ রয়েছে। রিভার্স ব্রেইন ড্রেইন হতে পারে। সেজন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কর্তা ব্যক্তিদের শিক্ষা ও গবেষণায় ভালো কাজ করতে হবে। রাজনৈতিক বিবেচনায় জেলায় জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় করা হয়েছে। এসব জায়গায় শিক্ষক নেই, শিক্ষার মান নেই। পড়াশোনার পর এসব শিক্ষার্থীদের কী হবে, তা চিন্তা করতে হবে। উচ্চশিক্ষার মান বৈশ্বিক প্রেক্ষিতে উন্নত করার সহজ উপায় নেই। সেজন্য বড় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে কাজ করা যেতে পারে। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকা বাংলাদেশিদের নিয়ে শিক্ষার মান বাড়াতে কাজ করা যেতে পারে। চীন এটি করছে। আমাদের দেশে এমন পরিবেশ এখনো হয়নি। সেজন্য ভিজিটিং শিক্ষক হিসেবেও তাদের রাখা যেতে পারে। সূত্র : মানবজমিন।