যে দুই নারীর ‘কারিশমায়’ পাল্টে গেল পাকিস্তানের নির্বাচনের হিসাব
- প্রকাশের সময় : ০৩:২২:১৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
- / ১০৪ বার পঠিত
পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খান জেলেবন্দি। জাতীয় নির্বাচনে তিনিসহ তার পরিবারের সদস্যদের অংশগ্রহণে নিষেধাজ্ঞা ছিল। দলীয় প্রতীক পাননি স্বতন্ত্র পরিচয়ে লড়া প্রার্থীরা। এর পরও দেশটির সদ্য অনুষ্ঠিত নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি আসনে বিজয়ী হয়েছেন পিটিআইসমর্থিত প্রার্থীরা।
বৃহস্পতিবার ২৬৬ আসনের (একটি ফল ঘোষণা স্থগিত ও একটিতে ভোট হয়নি) জাতীয় পরিষদ নির্বাচনে পিটিআইসমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জিতেছেন ৯৩ আসনে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা নওয়াজের দল মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) পেয়েছে ৭৫ আসন। ৫৪ আসন নিয়ে তৃতীয় স্থানে আছে বিলাওয়াল ভুট্টোর দল পিপলস পার্টি (পিপিপি)। বাকি আসনগুলো পেয়েছে ছোট দলগুলো।
পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যমগুলো জানাচ্ছে, চূড়ান্ত প্রতিকূলতার নির্বাচনে ইমরান খানসমর্থিত প্রার্থীদের এমন অভাবনীয় সাফল্যের পেছনে আছেন দুই নারী। তাদের মধ্যে একজন ইমরান খানের বোন আলিমা খান। অন্যজন ইমরান খানের স্ত্রী বুশরা বিবির বড় বোন মারিয়াম রিয়াজ ওয়াত্তু।
নির্বাচনের আগে পিটিআইকর্মী ও সমর্থকদের কাছে আলোচিত ব্যক্তিত্ব হয়ে ওঠেন আলিমা। বিশেষ করে ইমরান খান কারাগারে যাওয়ার পর দলের রাজনৈতিক কার্যক্রমের অন্যতম মুখপাত্র হয়ে উঠেন তিনি। এ সময় নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করেন, তাদের উৎসাহ দেন। পাশাপাশি কঠোর ভাষায় পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বক্তব্য রেখেছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায়ও সক্রিয় ছিলেন তিনি।
ইমরান খানের পদচ্যুতির পর থেকেই আলিমা তার সমর্থনে রাজপথে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। মে মাসে পাকিস্তানজুড়ে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভের অন্যতম আয়োজক তিনি। ওই বিক্ষোভ সংঘর্ষে রূপ নিয়েছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে বেশ কয়েকটি মামলায় তাকে আসামিও করা হয়েছে। অক্টোবরে আদালতে এক মামলার হাজিরা দেওয়ার পর আলিমা বলেন, পরিস্থিতি যত প্রতিকূলই হোক, ভাইয়ের পাশে থাকবেন তিনি।
এভাবে পাকিস্তানের রাজনীতিতে আলিমার নাম উঠে এসেছে বারবার। আগে তার পরিচিতি ছিল নারী উদ্যোক্তা হিসেবে। লাহোরভিত্তিক টেক্সটাইল বায়িং হাউস ডটকম সোর্সিং প্রাইভেট লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা তিনি। তার ব্যবসার পরিধি লাহোর থেকে করাচি হয়ে নিউইয়র্ক পর্যন্ত বিস্তৃত।
তবে আলিমার মতো আলোচনায় না এলেও পিটিআইসমর্থিত প্রার্থীদের এবারের সফলতার পেছনে ভূমিকা রেখেছেন বুশরা বিবির বোন মারিয়াম রিয়াজ ওয়াত্তুরও। বিশেষ করে বুশরা বিবি ও ইমরান খানের বিয়ে নিয়ে আদালতের রায় এবং পরবর্তী বিতর্কের সময়ে তাদের পক্ষে জোরালো ক্যাম্পেইন চালিয়েছেন তিনি। তার এ ক্যাম্পেইন সাধারণ জনগণের মধ্যে দম্পতির প্রতি সহানুভূতি তৈরিতে ভূমিকা রেখেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
লন্ডন বিজনেস স্কুলের সাবেক শিক্ষার্থী মারিয়াম। পেশায় ডাটা সায়েন্টিস্ট হলেও অতীতে ওআইসি, বিশ্বব্যাংক, ইউএনডিপি ও ইউনেস্কোর বিভিন্ন প্রকল্পে সংযুক্ত ছিলেন। ইমরান খান প্রধানমন্ত্রী হওয়ার অনেক আগে থেকেই পিটিআইয়ের সক্রিয় কর্মী ছিলেন মারিয়াম। বোন বুশরা বিবির সঙ্গে ইমরান খানকে তিনিই প্রথম পরিচয় করিয়ে দেন। সূত্র : যুগান্তর।