নিউইয়র্ক ০৮:৪৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৩ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

ইউক্রেনে হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার রাশিয়ার

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৪:৪৮:৪০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
  • / ১৪ বার পঠিত

এই ক্ষেপণাস্ত্র এতটাই শক্তিশালী যে তা ভূপাতিত করা প্রায় অসম্ভব। ছবি- সংগৃহীত

হককথা ডেস্ক : ইউক্রেনে প্রায় দুই বছর ধরে হামলা চালাচ্ছে রাশিয়া। কিন্তু সম্প্রতি প্রথম বারের মতো অত্যাধুনিক হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে রাশিয়া। ইউক্রেনের পক্ষ থেকে এই দাবি করা হয়েছে।

গত সপ্তাহে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে শব্দের চেয়ে দ্রুতগতির ক্ষেপণাস্ত্র জিরকন ছুড়ে রুশ বাহিনী। গত দুই বছরের যুদ্ধে ইউক্রেনে এই প্রথম বারের মতো এ ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করল রুশ কমান্ড। বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন, এই ক্ষেপণাস্ত্র এতটাই শক্তিশালী যে তা ভূপাতিত করা প্রায় অসম্ভব। খবর সিএনএন, রয়টার্সের।

সরকারচালিত কিয়েভ সায়েন্টিফিক রিসার্চ ইনস্টিটিউট অব ফরেনসিক এক্সপার্টাইজ একটি টেলিগ্রাম পোস্টে জানিয়েছে, ইউক্রেনের রাজধানীতে ৭ ফেব্রুয়ারি হামলার পরে উদ্ধারকৃত ধ্বংসাবশেষ থেকে বোঝা যাচ্ছে রাশিয়ান সামরিক বাহিনীর অত্যাধুনিক একটি জিরকন হাইপারসনিক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে।

ইউক্রেনের বিচার মন্ত্রণালয়ের অধীন প্রতিষ্ঠানটি জানায়, উদ্ধার করা বস্তুর বিভিন্ন অংশ ও উপাদান পর্যালোচনা করে দেখা যায়, প্রথম বারের মতো এ ধরনের অস্ত্র ব্যবহার করেছে মস্কো। প্রমাণ হিসেবে এ সম্পর্কিত একটি ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছে। কিয়েভের বিজ্ঞান বিষয়ক গবেষণা কেন্দ্র কিয়েভ সাইন্টিফিক রিসার্চ ইনস্টিটিউটের ফরেনসিক এক্সামিনেশন বিভাগের পরিচালক ওলেক্সান্দর রুভিন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টেলিগ্রামে এক পোস্টে বলেন, গত ৭ ফেব্রুয়ারি কিয়েভে একটি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে রুশ বাহিনী। ঐ হামলায় অন্তত চার জন নিহত ও আহত হন ৩৮ জন। এছাড়া বেশ কয়েকটি বাসভবন ও একটি বিদ্যুেকন্দ্রও ক্ষতিগ্রস্ত হয় সেই হামলায়।

রুভিন বলেন, যে এলাকায় সেটি ছোড়া হয়েছিল, সেখান থেকে নমুনা সংগ্রহ করে আমরা পরীক্ষা করেছি। সেই পরীক্ষার ফলাফল বলছে, ক্ষেপণাস্ত্রটি ছিল ৩এম২২ জিরকন ক্ষেপণাস্ত্র। এ প্রসঙ্গে বিস্তারিত জানতে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল রয়টার্স, কিন্তু মন্ত্রণালয়ের কোনো কর্মকর্তা মন্তব্য করতে রাজি হননি।

বিশ্বের অত্যাধুনিক বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর মধ্যে ৩এম২২ জিরকন অন্যতম। শব্দের চেয়ে ৯ গুণ গতিসম্পন্ন এই ক্ষেপণাস্ত্রটি সর্বোচ্চ ১ হাজার কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম। ২০২২ সালে প্রথম বার ক্ষেপণাস্ত্রটির পরীক্ষামূলক উেক্ষপণ করেছিল মস্কো। সে সময় রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ৩এম২২ জিরকনকে ‘নতুন প্রজন্মের সমরাস্ত্র’ বলে উল্লেখ করেন।

প্রসঙ্গত, বাতাসে শব্দের গতিবেগ প্রতি সেকেন্ডে ৩৪৩ কিলোমিটার আর ৩এম২২জিরকন শব্দের চেয়ে ৯ গুণ গতিসম্পন্ন। অর্থাত্ প্রতি সেকেন্ডে এই ক্ষেপণাস্ত্রটি ৩ হাজার ৮৭ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে সক্ষম। টেলিগ্রাম পোস্টে ওলেক্সান্দর রুভিন বলেন, ‘এই ক্ষেপণাস্ত্রের সবচেয়ে বিধ্বংসী দিকটি হলো এটির গতিবেগ। যে গতিতে জিরকন ৩এম২২ আঘাত হানে, বর্তমান সময়ের আধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র সুরক্ষা ব্যবস্থার পক্ষেও এটিকে শনাক্ত করে ধ্বংস করা প্রায় অসম্ভব।

এদিকে ন্যাটো শরিকদের নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাম্প্রতিক মন্তব্য দুশ্চিন্তায় ফেলেছে ইউরোপকে। ইইউর পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ক প্রধান জোসেপ বোরেল বলেছেন, ন্যাটো কখনোই এমন কোনো সামরিক জোট নয়, যা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের রসিকতার ওপর নির্ভর করে। বিতর্কের শুরু গত শনিবার। সেদিন সাউথ ক্যারোলিনায় এক প্রচার সমাবেশে ট্রাম্প বলেন, ন্যাটোর শরিক দেশগুলো যদি তাদের ভাগের অর্থ না দেয়, তাহলে তিনি যা খুশি করার জন্য রাশিয়াকে উত্সাহিত করবেন।

হককথা/নাছরিন

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

ইউক্রেনে হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার রাশিয়ার

প্রকাশের সময় : ০৪:৪৮:৪০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

হককথা ডেস্ক : ইউক্রেনে প্রায় দুই বছর ধরে হামলা চালাচ্ছে রাশিয়া। কিন্তু সম্প্রতি প্রথম বারের মতো অত্যাধুনিক হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে রাশিয়া। ইউক্রেনের পক্ষ থেকে এই দাবি করা হয়েছে।

গত সপ্তাহে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে শব্দের চেয়ে দ্রুতগতির ক্ষেপণাস্ত্র জিরকন ছুড়ে রুশ বাহিনী। গত দুই বছরের যুদ্ধে ইউক্রেনে এই প্রথম বারের মতো এ ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করল রুশ কমান্ড। বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন, এই ক্ষেপণাস্ত্র এতটাই শক্তিশালী যে তা ভূপাতিত করা প্রায় অসম্ভব। খবর সিএনএন, রয়টার্সের।

সরকারচালিত কিয়েভ সায়েন্টিফিক রিসার্চ ইনস্টিটিউট অব ফরেনসিক এক্সপার্টাইজ একটি টেলিগ্রাম পোস্টে জানিয়েছে, ইউক্রেনের রাজধানীতে ৭ ফেব্রুয়ারি হামলার পরে উদ্ধারকৃত ধ্বংসাবশেষ থেকে বোঝা যাচ্ছে রাশিয়ান সামরিক বাহিনীর অত্যাধুনিক একটি জিরকন হাইপারসনিক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে।

ইউক্রেনের বিচার মন্ত্রণালয়ের অধীন প্রতিষ্ঠানটি জানায়, উদ্ধার করা বস্তুর বিভিন্ন অংশ ও উপাদান পর্যালোচনা করে দেখা যায়, প্রথম বারের মতো এ ধরনের অস্ত্র ব্যবহার করেছে মস্কো। প্রমাণ হিসেবে এ সম্পর্কিত একটি ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছে। কিয়েভের বিজ্ঞান বিষয়ক গবেষণা কেন্দ্র কিয়েভ সাইন্টিফিক রিসার্চ ইনস্টিটিউটের ফরেনসিক এক্সামিনেশন বিভাগের পরিচালক ওলেক্সান্দর রুভিন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টেলিগ্রামে এক পোস্টে বলেন, গত ৭ ফেব্রুয়ারি কিয়েভে একটি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে রুশ বাহিনী। ঐ হামলায় অন্তত চার জন নিহত ও আহত হন ৩৮ জন। এছাড়া বেশ কয়েকটি বাসভবন ও একটি বিদ্যুেকন্দ্রও ক্ষতিগ্রস্ত হয় সেই হামলায়।

রুভিন বলেন, যে এলাকায় সেটি ছোড়া হয়েছিল, সেখান থেকে নমুনা সংগ্রহ করে আমরা পরীক্ষা করেছি। সেই পরীক্ষার ফলাফল বলছে, ক্ষেপণাস্ত্রটি ছিল ৩এম২২ জিরকন ক্ষেপণাস্ত্র। এ প্রসঙ্গে বিস্তারিত জানতে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল রয়টার্স, কিন্তু মন্ত্রণালয়ের কোনো কর্মকর্তা মন্তব্য করতে রাজি হননি।

বিশ্বের অত্যাধুনিক বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর মধ্যে ৩এম২২ জিরকন অন্যতম। শব্দের চেয়ে ৯ গুণ গতিসম্পন্ন এই ক্ষেপণাস্ত্রটি সর্বোচ্চ ১ হাজার কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম। ২০২২ সালে প্রথম বার ক্ষেপণাস্ত্রটির পরীক্ষামূলক উেক্ষপণ করেছিল মস্কো। সে সময় রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ৩এম২২ জিরকনকে ‘নতুন প্রজন্মের সমরাস্ত্র’ বলে উল্লেখ করেন।

প্রসঙ্গত, বাতাসে শব্দের গতিবেগ প্রতি সেকেন্ডে ৩৪৩ কিলোমিটার আর ৩এম২২জিরকন শব্দের চেয়ে ৯ গুণ গতিসম্পন্ন। অর্থাত্ প্রতি সেকেন্ডে এই ক্ষেপণাস্ত্রটি ৩ হাজার ৮৭ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে সক্ষম। টেলিগ্রাম পোস্টে ওলেক্সান্দর রুভিন বলেন, ‘এই ক্ষেপণাস্ত্রের সবচেয়ে বিধ্বংসী দিকটি হলো এটির গতিবেগ। যে গতিতে জিরকন ৩এম২২ আঘাত হানে, বর্তমান সময়ের আধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র সুরক্ষা ব্যবস্থার পক্ষেও এটিকে শনাক্ত করে ধ্বংস করা প্রায় অসম্ভব।

এদিকে ন্যাটো শরিকদের নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাম্প্রতিক মন্তব্য দুশ্চিন্তায় ফেলেছে ইউরোপকে। ইইউর পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ক প্রধান জোসেপ বোরেল বলেছেন, ন্যাটো কখনোই এমন কোনো সামরিক জোট নয়, যা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের রসিকতার ওপর নির্ভর করে। বিতর্কের শুরু গত শনিবার। সেদিন সাউথ ক্যারোলিনায় এক প্রচার সমাবেশে ট্রাম্প বলেন, ন্যাটোর শরিক দেশগুলো যদি তাদের ভাগের অর্থ না দেয়, তাহলে তিনি যা খুশি করার জন্য রাশিয়াকে উত্সাহিত করবেন।

হককথা/নাছরিন