নিউইয়র্ক ০২:০১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

শ্রীলঙ্কায় ‘শুধু শ্বেতাঙ্গদের জন্য পার্টি’ আয়োজন করে তোপের মুখে রুশরা

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ১১:৩৩:৪১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
  • / ৪৩ বার পঠিত

শ্রীলঙ্কায় একটি ক্লাবে শুধু শ্বেতাঙ্গদের জন্য আয়োজিত ‘হোয়াইট পার্টি’ অনলাইনে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ায় ক্ষমা চেয়েছেন এর আয়োজকেরা। অনুষ্ঠানটির বিজ্ঞাপনে নির্দিষ্ট করে সাদা পোশাক পরে আসতে বলা হয়। তবে বিজ্ঞাপনের যে লাইনটি সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করে তা হলো, ‘চেহারা: শ্বেতাঙ্গ’। এ থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীরা ধরে নেন, অনুষ্ঠানে শুধু শ্বেতাঙ্গ মানুষই যোগ দিতে পারবেন। পরে আয়োজকেরা ক্ষমা চেয়ে বলেন, এ আয়োজনটি তাঁদের ভুল ছিল এবং বিদেশি নাগরিকদের সমবেত করার উদ্দেশ্যেই মূলত এ আয়োজনটি করা হয়েছিল।

বিবিসির প্রতিবেদন অনুসারে, গত শনিবার অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল পার্টিটি। তবে পরে বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। শিগগিরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ আয়োজনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। অনেক ব্যবহারকারী এমন শর্তকে জঘন্য এবং বর্ণবাদী বলে উল্লেখ করে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

স্থানীয় এক রেস্তোরাঁ মালিক বলেন, ‘আমি জানি সব প্রবাসীই এমন নয়…তবে শিগগিরই এসব বন্ধ করা উচিত এবং শক্তভাবেই বন্ধ করা উচিত।’ ফেসবুকে আরেক ব্যবহারকারী বলেন, ‘কোন সাহসে তারা বাদামি দেশে এসে সেই দেশের মানুষকে নিষিদ্ধ করে!’ পার্টির আয়োজনের সঙ্গে জড়িত থাকা এক ব্যক্তি ইনস্টাগ্রামে পোস্ট দিয়ে বলেন, পার্টির পরিকল্পনায় কোনো বিদ্বেষ বা বর্ণবাদ ছিল না।

তিনি বলেন, ‘আমরা শ্রীলঙ্কায় দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছেন এবং দেশটিকে ভালোবাসেন এমন প্রবাসীদের সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলাম। দ্রুতই সবার সহযোগিতায় একটি পার্টি আয়োজনের যৌথ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।’ তবে এমন আয়োজনের জন্য ব্যাপক হুমকি পাওয়ার পর তিনি এখন দেশ ছেড়ে যেতে বাধ্য হচ্ছেন।

ওই আয়োজক পোস্টে আরও বলেন, ‘আমি বুঝতে পারিনি যে এটি বিপুলসংখ্যক মানুষের জন্য এত সংবেদনশীল বিষয় হবে। আমি স্বীকার করছি, এটা ভালো বুদ্ধি ছিল না। আমি বুঝতে পারছি যে, আমরা এমন আয়োজন করে বোকামি করেছি। যাদের অনুভূতিতে আঘাত লেগেছে তাঁদের সবার কাছে আমি আন্তরিকভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করছি।’

দক্ষিণাঞ্চলীয় উপকূলীয় শহর উনাওয়াতুনার সারায়কা লাউঞ্জে এই অনুষ্ঠান হওয়ার কথা ছিল। ভেন্যুটির কর্তৃপক্ষ পরে এক বিবৃতিতে বলে, পার্টিটি বাতিল করা হয়েছে। যথেষ্ট যাচাই–বাছাই না করে তাঁরা এ অনুষ্ঠানের চুক্তি করেছিলেন এবং তাঁরা আয়োজকদের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন। তারা বিবৃতিতে বলে, বিভিন্ন বর্ণবাদী বক্তব্য বা সংগঠনকে আমরা কখনোই সমর্থন করিনি এবং করবও না। আয়োজক ও সারায়কা লাউঞ্জের মালিক রাশিয়ার নাগরিক বলে ধারণা করা হচ্ছে।

উনাওয়াতুনা উদ্যোক্তা সমিতির সভাপতি রূপাসেনা কোসওয়াত্তা বিবিসি সিংহলিকে বলেন, দুই বছরে অনেক রুশ নাগরিক গল থেকে মাত্র ৫ কিলোমিটার দূরে উপকূলীয় শহর উনাওয়াতুনায় চলে গেছেন। সেখানকার অনেক পর্যটন ব্যবসা এখন রুশদের মালিকানাধীন এবং এটি অনেকের কাছে এখন ‘লিটল মস্কো’ নামে পরিচিত।

কলম্বোর রুশ দূতাবাস এক বিবৃতিতে বলেছে, তাঁরা ‘সব ধরনের বর্ণবাদী বৈষম্য ও জাতীয়তাবাদের তীব্র নিন্দা’ জানান এবং দ্বীপটিতে বসবাসরত নাগরিকদের আইন মেনে চলা এবং স্থানীয় রীতিনীতিকে সম্মান করার আহ্বান জানান।

এর আগে রোববার রাশিয়া ও ইউক্রেনের নাগরিকদের জন্য দীর্ঘমেয়াদি পর্যটন ভিসা বাতিল করেছে শ্রীলঙ্কা। শ্রীলঙ্কার সরকারি হিসাব অনুযায়ী, গত দুই বছরে দেশটিতে ২ লাখ ৮৮ হাজারেরও বেশি রুশ এবং প্রায় ২০ হাজার ইউক্রেনীয় পর্যটক ভিসায় এসেছেন। ৩০ দিনের পর্যটন ভিসা নিয়ে এসে ঠিক কত জন তাঁদের ভিসার মেয়াদ বাড়িয়েছেন তার এখনো স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়নি। সূত্র : আজকের পত্রিকা।

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

শ্রীলঙ্কায় ‘শুধু শ্বেতাঙ্গদের জন্য পার্টি’ আয়োজন করে তোপের মুখে রুশরা

প্রকাশের সময় : ১১:৩৩:৪১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

শ্রীলঙ্কায় একটি ক্লাবে শুধু শ্বেতাঙ্গদের জন্য আয়োজিত ‘হোয়াইট পার্টি’ অনলাইনে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ায় ক্ষমা চেয়েছেন এর আয়োজকেরা। অনুষ্ঠানটির বিজ্ঞাপনে নির্দিষ্ট করে সাদা পোশাক পরে আসতে বলা হয়। তবে বিজ্ঞাপনের যে লাইনটি সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করে তা হলো, ‘চেহারা: শ্বেতাঙ্গ’। এ থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীরা ধরে নেন, অনুষ্ঠানে শুধু শ্বেতাঙ্গ মানুষই যোগ দিতে পারবেন। পরে আয়োজকেরা ক্ষমা চেয়ে বলেন, এ আয়োজনটি তাঁদের ভুল ছিল এবং বিদেশি নাগরিকদের সমবেত করার উদ্দেশ্যেই মূলত এ আয়োজনটি করা হয়েছিল।

বিবিসির প্রতিবেদন অনুসারে, গত শনিবার অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল পার্টিটি। তবে পরে বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। শিগগিরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ আয়োজনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। অনেক ব্যবহারকারী এমন শর্তকে জঘন্য এবং বর্ণবাদী বলে উল্লেখ করে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

স্থানীয় এক রেস্তোরাঁ মালিক বলেন, ‘আমি জানি সব প্রবাসীই এমন নয়…তবে শিগগিরই এসব বন্ধ করা উচিত এবং শক্তভাবেই বন্ধ করা উচিত।’ ফেসবুকে আরেক ব্যবহারকারী বলেন, ‘কোন সাহসে তারা বাদামি দেশে এসে সেই দেশের মানুষকে নিষিদ্ধ করে!’ পার্টির আয়োজনের সঙ্গে জড়িত থাকা এক ব্যক্তি ইনস্টাগ্রামে পোস্ট দিয়ে বলেন, পার্টির পরিকল্পনায় কোনো বিদ্বেষ বা বর্ণবাদ ছিল না।

তিনি বলেন, ‘আমরা শ্রীলঙ্কায় দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছেন এবং দেশটিকে ভালোবাসেন এমন প্রবাসীদের সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলাম। দ্রুতই সবার সহযোগিতায় একটি পার্টি আয়োজনের যৌথ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।’ তবে এমন আয়োজনের জন্য ব্যাপক হুমকি পাওয়ার পর তিনি এখন দেশ ছেড়ে যেতে বাধ্য হচ্ছেন।

ওই আয়োজক পোস্টে আরও বলেন, ‘আমি বুঝতে পারিনি যে এটি বিপুলসংখ্যক মানুষের জন্য এত সংবেদনশীল বিষয় হবে। আমি স্বীকার করছি, এটা ভালো বুদ্ধি ছিল না। আমি বুঝতে পারছি যে, আমরা এমন আয়োজন করে বোকামি করেছি। যাদের অনুভূতিতে আঘাত লেগেছে তাঁদের সবার কাছে আমি আন্তরিকভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করছি।’

দক্ষিণাঞ্চলীয় উপকূলীয় শহর উনাওয়াতুনার সারায়কা লাউঞ্জে এই অনুষ্ঠান হওয়ার কথা ছিল। ভেন্যুটির কর্তৃপক্ষ পরে এক বিবৃতিতে বলে, পার্টিটি বাতিল করা হয়েছে। যথেষ্ট যাচাই–বাছাই না করে তাঁরা এ অনুষ্ঠানের চুক্তি করেছিলেন এবং তাঁরা আয়োজকদের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন। তারা বিবৃতিতে বলে, বিভিন্ন বর্ণবাদী বক্তব্য বা সংগঠনকে আমরা কখনোই সমর্থন করিনি এবং করবও না। আয়োজক ও সারায়কা লাউঞ্জের মালিক রাশিয়ার নাগরিক বলে ধারণা করা হচ্ছে।

উনাওয়াতুনা উদ্যোক্তা সমিতির সভাপতি রূপাসেনা কোসওয়াত্তা বিবিসি সিংহলিকে বলেন, দুই বছরে অনেক রুশ নাগরিক গল থেকে মাত্র ৫ কিলোমিটার দূরে উপকূলীয় শহর উনাওয়াতুনায় চলে গেছেন। সেখানকার অনেক পর্যটন ব্যবসা এখন রুশদের মালিকানাধীন এবং এটি অনেকের কাছে এখন ‘লিটল মস্কো’ নামে পরিচিত।

কলম্বোর রুশ দূতাবাস এক বিবৃতিতে বলেছে, তাঁরা ‘সব ধরনের বর্ণবাদী বৈষম্য ও জাতীয়তাবাদের তীব্র নিন্দা’ জানান এবং দ্বীপটিতে বসবাসরত নাগরিকদের আইন মেনে চলা এবং স্থানীয় রীতিনীতিকে সম্মান করার আহ্বান জানান।

এর আগে রোববার রাশিয়া ও ইউক্রেনের নাগরিকদের জন্য দীর্ঘমেয়াদি পর্যটন ভিসা বাতিল করেছে শ্রীলঙ্কা। শ্রীলঙ্কার সরকারি হিসাব অনুযায়ী, গত দুই বছরে দেশটিতে ২ লাখ ৮৮ হাজারেরও বেশি রুশ এবং প্রায় ২০ হাজার ইউক্রেনীয় পর্যটক ভিসায় এসেছেন। ৩০ দিনের পর্যটন ভিসা নিয়ে এসে ঠিক কত জন তাঁদের ভিসার মেয়াদ বাড়িয়েছেন তার এখনো স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়নি। সূত্র : আজকের পত্রিকা।