ইরানের রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কারের পর তেহরান থেকে কূটনীতিক সরালো পাকিস্তান
- প্রকাশের সময় : ০৩:৫৫:২৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২৪
- / ৭১ বার পঠিত
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : নিজেদের ভূখণ্ডে বিমান হামলার জেরে ইরানের সঙ্গে কূটনীতিক দ্বন্দ্বে জড়িয়েছে পাকিস্তান। প্রথমে ইরানের রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কার ও পরে তেহরান থেকে নিজেদের রাষ্ট্রদূতকে সরিয়ে নিয়েছে ইসলামাবাদ। এর ফলে দুই দেশের মধ্যে কূটনীতিক দ্বন্দ্ব বিপজ্জনক মোড় নিয়েছে। খবর ডন ও জিও নিউজের।
বুধবার পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দপ্তর বলেছে, পাকিস্তান ইরান থেকে তার রাষ্ট্রদূতকে প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পাশাপাশি তেহরান ‘আকাশসীমা লঙ্ঘন’ করায় দুই দেশের মধ্যে চলমান বা পরিকল্পিত উচ্চ-পর্যায়ের সমস্ত সফর স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসলামাবাদ।
ইসলামাবাদে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র মুমতাজ জাহরা বালোচ বলেছেন, ‘পাকিস্তান ইরান থেকে তার রাষ্ট্রদূতকে প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ও পাকিস্তানে ইরানের রাষ্ট্রদূত যিনি বর্তমানে ইরান সফর করছেন তিনি আপাতত ফিরে আসবেন না।’
বুধবারের প্রেস ব্রিফিংয়ে বালোচ বলেছেন, গত রাতে ইরানের মাধ্যমে পাকিস্তানের সার্বভৌমত্বের অবাঞ্ছিত ও স্পষ্ট লঙ্ঘন, আন্তর্জাতিক আইন, জাতিসংঘের সনদের উদ্দেশ্য ও নীতির লঙ্ঘন ঘটেছে। এই বেআইনি কাজটি সম্পূর্ণরূপে অগ্রহণযোগ্য এবং এর কোন যৌক্তিকতা নেই।
তিনি আরও বলেন, পাকিস্তান এই অবৈধ কাজের প্রতিক্রিয়া জানানোর অধিকার রাখে এবং এর পরিণতির দায়ভার ইরানের ওপরই বর্তাবে। ইসলামাবাদ ইরান সরকারকে এই বার্তা পৌঁছে দিয়েছে। আমরা তাদের জানিয়েছি, পাকিস্তান ইরান থেকে তার রাষ্ট্রদূতকে প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ও পাকিস্তানে ইরানের রাষ্ট্রদূত, যিনি বর্তমানে ইরান সফর করছেন তিনি ফিরে নাও আসতে পারেন।
মঙ্গলবার গভীর রাতে প্রকাশিত একটি বিবৃতিতে পাকিস্তানের ভূখণ্ডে হামলার নিন্দা জানানোর পরে এই পদক্ষেপ নিয়েছে পাকিস্তান। হামলায় দুই শিশু নিহত ও তিন মেয়ে আহত হয়েছিলেন বলে জানিয়েছিল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এটি এই ঘটনাকে পাকিস্তানের সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন বলে অভিহিত করা হয়েছে।
ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, মঙ্গলবার রাতের হামলাটি বেলুচিস্তানের সীমান্ত শহর পাঞ্জগুরে করা হয়েছে। মূলত ২০১২ সালে প্রতিষ্ঠীত জঙ্গিগোষ্ঠী জইশ আল-আদলের আস্তানা লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়।
ইরানের আধা-সরকারি বার্তা সংস্থা তাসনিম বলেছে, ‘এই অভিযানের কেন্দ্রবিন্দু ছিল বেলুচিস্তানের কোহ-সাবজ (সবুজ পর্বত)’ নামে পরিচিত অঞ্চল। পাকিস্তানে জইশ আল-ধুলম (জৈশ আল-আদল) সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর দুটি প্রধান ঘাঁটি বিশেষভাবে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে এবং ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোনের সংমিশ্রণে সফলভাবে ধ্বংস করা হয়েছে।’
স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বলেছে, তারাও এই ধরনের হামলার তথ্য পেয়েছে, তবে বিস্তারিত তথ্য নেই। এলাকা থেকে পাওয়া প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ক্ষেপণাস্ত্র একটি মসজিদে আঘাত হানে। মসজিদটি আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং কিছু লোক আহত হয়েছে।
এএফপি জানায়, হামলার কয়েক ঘণ্টা আগে তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী আনোয়ারুল হক কাকার সুইজারল্যান্ডের দাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের ফাঁকে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আব্দুল্লাহিয়ানের সঙ্গে দেখা করেছিলেন।
ইরান তাৎক্ষণিকভাবে কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য না করলেও তার রাষ্ট্রীয় নুর নিউজ এজেন্সি বলেছে, হামলায় জইশ আল-আদলের পাকিস্তান সদর দপ্তর ধ্বংস হয়ে গেছে।
হককথা/নাছরিন