মোদিকে মমতার চিঠি
ফারাক্কা-তিস্তা নিয়ে কোনো চুক্তি নয়

- প্রকাশের সময় : ০৪:০০:০০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ জুন ২০২৪
- / ১৮৪ বার পঠিত
ফারাক্কা এবং তিস্তা নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে কোনো চুক্তি না করতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ মোদীকে চিঠি লিখেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে লেখা চিঠিতে বলেন, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অংশগ্রহণ ছাড়া তিস্তা এবং ফারাক্কার জলবণ্টন নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে কোনও রকম চুক্তিতে আমার তীব্র আপত্তি রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের মানুষের স্বার্থ নিয়ে কোনও আপস করব না। কলকাতার দৈনিক আনন্দবাজার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চিঠির বিষয়বস্তু প্রকাশ করেছে।
চিঠিতে প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, গঙ্গা এবং তিস্তার জলবণ্টন নিয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী সঙ্গে হয়ত আপনার কিছু আলোচনা হয়েছে। কিন্তু রাজ্য সরকারের কোনও মতামত না নিয়ে এমন একতরফা আলোচনা কাঙ্ক্ষিত বা গ্রহণযোগ্য নয়। বাংলাদেশের সরকার এবং জনগণের সঙ্গে যে তিনি সুসম্পর্ক রাখতে চান, সেই বার্তা দিয়ে মমতা জানিয়েছেন, ছিটমহল বিনিময়, রেল ও বাস যোগাযোগের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিবিড় হয়েছে।
কিন্তু জল অত্যন্ত মূল্যবান। প্রাণ ধারণের রসদ নিয়ে কোনও সমঝোতা করতে আমরা প্রস্তুত নই। পশ্চিমবঙ্গবাসীর কাছে জলবণ্টনের বিষয়টি অত্যন্ত স্পর্শকাতর।
আনন্দবাজারের খবরে বলা হয়, সোমবার বিকেলে নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে জলবণ্টন নিয়ে নয়াদিল্লি-ঢাকা দ্বিপাক্ষিক উদ্যোগ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন মমতা। সেই সঙ্গে তাঁর অভিযোগ, চীনকে দিয়ে ড্যাম (জলাধার) বানিয়েছে বাংলাদেশ।
শনিবার নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বৈঠকে ‘ফরাক্কা-গঙ্গা জলবণ্টন চুক্তি’ নবায়নের জন্য ‘যৌথ কারিগরি কমিটি’ গঠনের সিদ্ধান্ত হয়। রোববারই তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে সরকারের ওই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করা হয়।
মোদীকে পাঠানো চিঠিতে মমতা লিখেছেন, পশ্চিমবঙ্গের জনজীবনে গঙ্গার জলের গুরুত্বের পাশাপাশি ফরাক্কা থেকে পাওয়া জল কলকাতা বন্দরের নাব্যতা বজায় রাখার ক্ষেত্রেও বড় ভরসা।
ফরাক্কা ফিডার ক্যানালের মাধ্যমে অন্তত ৪০ হাজার কিউসেক জল পেলে কলকাতা বন্দরের নাব্যতা বজায় রাখা সম্ভব। তা না হলে গঙ্গায় পলি পড়ে কলকাতা বন্দর জাহাজ চলাচলের উপযোগী নাব্যতা হারাতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রীকে পাঠানো চিঠিতে তিস্তার জলবণ্টন প্রসঙ্গেরও উল্লেখ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। লিখেছেন, সিকিমে জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের কারণে তিস্তার গুরুতর স্বাস্থ্যহানি হয়েছে। পরিবেশের উপর ক্ষতিকর প্রভাব পড়েছে। দেখে আশ্চর্য হচ্ছি, তিস্তার ভারতীয় অংশের স্বাস্থ্য ফেরাতে জলশক্তি মন্ত্রকের কোনও উদ্যোগই নেই!। সিকিমে জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের কারণে তিস্তায় জলপ্রবাহ কমেছে এবং তাতে উত্তরবঙ্গের কৃষকেরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বলেও অভিযোগ করেন মমতা। সূত্র: মানবজমিন।