অপুষ্টিতে ভুগছে গাজার অধিকাংশ শিশু: ইউনিসেফ
- প্রকাশের সময় : ১২:০১:৪৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৭ মার্চ ২০২৪
- / ৩৭ বার পঠিত
দখলদার ইসরাইলের বর্বর আক্রমণের ফলে দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে গাজাবাসী। গাজা ভূখণ্ডে পাঁচ মাসের বেশি সময় ধরে চলা ইসরাইলি হামলায় ১৩ হাজারেরও বেশি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। ইউনিসেফ বলছে, গাজায় অধিকাংশ শিশু মারাত্মক অপুষ্টিতে ভুগছে। ক্ষুধার্ত শিশুতে হাসপাতালগুলো ভরে গেছে। গাজার ছয় বছর বয়সী শিশু ফাদি আল জান্ত। চরম অপুষ্টির শিকার হয়ে সে গাজার কামাল আদওয়ান হাসপাতালে। চামড়ার নিচ থেকে তার বুকের পাঁজর বেরিয়ে এসেছে, কোটরে ঢুকে গেছে চোখ। চরম অপুষ্টির শিকার ফাদি হারিয়েছে নিজের পায়ে চলার শক্তি। যুদ্ধের আগের ছবিগুলোতে তাকে হাস্যোজ্জ্বল, স্বাস্থ্যকর চেহারার শিশু হিসেবেই দেখা যায়।
তার মা শিমা আল-জান্তের বলেন, ফাদি বর্তমানে সিস্টিক ফাইব্রোসিসে ভুগছে। যুদ্ধের আগে তাকে যেসব ওষুধ খাওয়ানো হতো তার কিছুই এখন পাওয়া যায় না। আর তার কপালে জুটছে না পুষ্টিকর খাবার। যুদ্ধের আগে ফাদি অন্য শিশুদের মতো স্বাভাবিক জীবন যাপন করতো। কারণ তখন তার জন্য প্রয়োজনীয় দুধ ও ওষুধের সরবরাহ ছিলো। ফাদির মতো এমন আরও ২৭ শিশুর চিকিৎসা চলছিলো গাজার কমল আদওয়ান হাসপাতালে। কিন্তু গত কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই তাদের সবাই অপুষ্টি ও পানিশূন্যতায় মারা গেছে বলে জানায় স্বাস্থ্য বিভাগ।
হাসপাতালে কর্মরত এক নার্স বলেন, পরিস্থিতি দিনকে দিন আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে। এখানকার শিশুরা তীব্র অপুষ্টিতে ভুগছে। এরইমধ্যে হাসপাতালে অপুষ্টির শিকার হয়ে পাঁচ থেকে ১০ জন শিশুর মৃত্যু হয়েছে। দীর্ঘ পাঁচ মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধে সবচেয়ে বেশি হতাহত হয়েছে গাজার নারী ও শিশুরা।
আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো বলছে বলছে, গাজার উত্তরাঞ্চলে মে মাসের মধ্যে তিন লাখ মানুষ চরম দুর্ভিক্ষের পড়তে পারে। এর আগে দুর্ভিক্ষের এ পরিস্থিতির জন্য ইসরাইলকে দায়ী করেছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) পররাষ্ট্রনীতির প্রধান জোসেপ বোরেল।
দুর্ভিক্ষকে যুদ্ধের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহারের অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, গাজায় আমরা আর দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে নেই। আমরা এখন দুর্ভিক্ষের মধ্যে রয়েছি যা হাজার হাজার মানুষকে প্রভাবিত করছে। গেলো বছরের অক্টোবর মাসের ৭ তারিখের পর গাজায় বিমান হামলা ও স্থল হামলা শুরু করে ইসরাইল। এ আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত ৩২ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। আহত লাখ ছাড়িয়েছে।
গাজায় চলমান এই গণহত্যায় ইসরাইলকে সরাসরি সহযোগিতা করতে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানির মতো পশ্চিমা দেশগুলো। অন্যদিকে বাংলাদেশ, চীন, রাশিয়া, ইরানের মতো দেশগুলো এ গণহত্যার প্রতিবাদ জানিয়ে আসছে। সূত্র : একাত্তর টিভি।