নিউইয়র্ক ০১:১২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

জার্মানিতে কর্মিসংকট, তবু সপ্তাহে চার দিনের অফিস চালু

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৮:৫৩:০৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
  • / ৮৫ বার পঠিত

১ ফেব্রুয়ারি থেকে জার্মানির ৪৫টি প্রতিষ্ঠান চার দিনের অফিস সময় চালু করেছেফাইল ছবি : রয়টার্স

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : জার্মানিতে অফিসের কাজ সপ্তাহে চার দিন ও তিন দিন সাপ্তাহিক ছুটি পরীক্ষামূলকভাবে চালু হয়েছে। ১ ফেব্রুয়ারি থেকে দেশটির ৪৫টি প্রতিষ্ঠান চার দিনের অফিস সময় চালু করেছে। এ প্রকল্পের মূল কথা হলো—কম কাজ, একই বেতন এবং আরও বেশি উৎপাদন ও আনন্দ।

অনেক দেশের মতো জার্মানিতে পর্যাপ্ত দক্ষ কর্মীর সংকট রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ইউরোপের বৃহত্তম অর্থনীতির এই দেশের ৪৫টি প্রতিষ্ঠান পরীক্ষামূলকভাবে এ প্রকল্প শুরু করেছে। এতে কর্মীদের অফিসে আরও এক দিন কম কাজ করতে হবে। এই প্রকল্প চলবে আগামী ছয় মাস। অফিসে কম দিন কাজ করলেও কর্মীরা তাঁদের পুরো বেতন পাবেন। অলাভজনক সংস্থা ফোর ডে উইক গ্লোবালের (ফোরডিডব্লিউজি) সহযোগিতায় পরামর্শক সংস্থা ইন্ট্রাপ্রেনিউর এ প্রকল্পের নেতৃত্ব দিচ্ছে।

আইনজীবীদের যুক্তি, চার দিনের কর্মসপ্তাহ চালু হওয়ায় কর্মীদের উৎপাদনশীলতা বাড়বে। এতে দেশের দক্ষ শ্রমিকের ঘাটতি দূর করতে সহায়তা করবে। পরিশ্রম ও দক্ষতার জন্য দীর্ঘকাল ধরে জার্মানির খ্যাতি আছে। এরপরও সাম্প্রতিক বছরগুলোয় দেশটির উৎপাদনশীলতা হ্রাস পেয়েছে।

উৎপাদনশীলতার পরিমাপ করা হয় অর্থনৈতিক আউটপুটকে কাজের ঘণ্টা দিয়ে ভাগ করে। কয়েক বছর ধরে অত্যধিক জ্বালানি ব্যয় কোম্পানিগুলোর আউটপুটকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। এতে দেশের উৎপাদনশীলতার স্কোর কমে গেছে। যদি কোম্পানিগুলো বর্তমান আউটপুট ধরে রেখে কর্মীদের কম ঘণ্টা কাজ করায়, তাহলে স্বাভাবিকভাবেই উৎপাদনশীলতার হার বেড়ে যাবে।

আইনজীবীদের যুক্তি, যে কর্মী পাঁচ দিনের পরিবর্তে চার দিন কাজ করেন, তাঁরা আরও অনুপ্রাণিত হবেন। এতে উৎপাদনশীলতা বাড়বে। এই প্রকল্প শ্রমের অভাব দূর করতে সাহায্য করবে। যাঁরা সপ্তাহে পাঁচ দিন কাজ করতে ইচ্ছুক নন, তাঁদের এ প্রকল্পে সম্পৃক্ত করে আরও বেশি কর্মীকে কর্মশক্তিতে এতে আকৃষ্ট করা যেতে পারে।

কম ঘণ্টা কাজে চাপ কম থাকে
এ তত্ত্ব ইতিমধ্যে জার্মানির বাইরেও পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হয়েছে। ২০১৯ সাল থেকে ফোরডিডব্লিউজি বিশ্বে এই পাইলট প্রোগ্রাম চালাচ্ছে। যুক্তরাজ্য ও দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে অস্ট্রেলিয়া, আয়ারল্যান্ড ও যুক্তরাষ্ট্রেও এ প্রকল্প চালানো হয়েছে। পাঁচ শতাধিক প্রতিষ্ঠান এ প্রকল্পে অংশ নিয়েছে। এর প্রাথমিক ফলাফল চার দিনের কর্মসপ্তাহের পক্ষে বলে মনে হচ্ছে।

যুক্তরাজ্যে প্রায় তিন হাজার কর্মীর অংশ নেওয়া পাইলট প্রকল্পে কেমব্রিজ ও বোস্টনের গবেষকেরা দেখেছেন, প্রায় ৪০ শতাংশ অংশগ্রহণকারী এতে কম চাপ অনুভব করেছেন। এ ছাড়া কর্মীর পদত্যাগের হারও ৫৭ শতাংশ কমে গেছে।

অসুস্থতাজনিত ছুটির ক্ষতি ২৮ বিলিয়ন ডলার
বিশ্বে এ প্রকল্প চালুর কারণে অসুস্থতাজনিত ছুটি নেওয়ার হারও দুই-তৃতীয়াংশ কমেছে। জার্মান স্বাস্থ্যবিমা কোম্পানি ডিএকের সাম্প্রতিক তথ্যে দেখা গেছ, জার্মানিতে কর্মীরা গত বছর গড়ে ২০ দিন অসুস্থতাজনিত ছুটি নিয়েছিলেন। জার্মান অ্যাসোসিয়েশন অব রিসার্চ-বেজড ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি (ভিএফএ) বলছে, এর অর্থ হলো, অসুস্থতাজনিত অনুপস্থিতির কারণে ২০২৩ সালে জার্মানিতে সামগ্রিকভাবে প্রকৃত আয়ের ২৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ক্ষতি হয়েছে, যা অর্থনৈতিক আউটপুটের ০ দশমিক ৮ শতাংশ পয়েন্ট নিচে নামিয়ে দিয়েছে।

যুক্তরাজ্যের পরীক্ষায় গবেষকেরা ৬১টি অংশগ্রহণকারী কোম্পানির মধ্যে ৫৬টিতে প্রায় ১ দশমিক ৪ শতাংশ গড় আয় বৃদ্ধি লক্ষ করেছেন। সংখ্যাগরিষ্ঠ কোম্পানি ট্রায়াল শেষে চার দিনের কর্মসপ্তাহ বহাল রাখার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে।

সৃজনশীল কাজ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে
প্রকল্পটি ইতিবাচকভাবে জার্মানিতেও কাজ করবে কি না—এ বিষয়ে শ্রমবাজার–বিশেষজ্ঞ এনজো ওয়েবার খুব একটা নিশ্চিত নন। ইউনিভার্সিটি অব রেজেনসবার্গ অ্যান্ড দ্য ইনস্টিটিউট ফর এমপ্লয়মেন্ট রিসার্চের এই গবেষক বলেন, আগের পাইলট প্রকল্পগুলোর ফলাফল নিয়ে কিছু সমস্যা আছে।

এনজো ওয়েবার ডয়চে ভেলেকে বলেন, যেসব কোম্পানির কাজ চার দিনের কর্মসপ্তাহের জন্য উপযুক্ত কেবল তারাই এই প্রকল্পে হয়তো অংশ নেবে। এর ফল তাই সামগ্রিক অর্থনীতির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হিসেবে নেওয়া যায় না।

ওয়েবার ইতিবাচক ফলাফল নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে বলেন, কাজের সময় কমিয়ে দিলে আরও বেশি মনোযোগী কাজ হতে পারে। কম ঘণ্টা মানে কাজের সামাজিক এবং সৃজনশীল উপাদানগুলোয় আঘাত করা।

সব ক্ষেত্রে প্রকল্পটি কাজ করবে না
তবে অন্য সংশয়বাদীরা উৎপাদনশীলতা পরিমাপের চ্যালেঞ্জের দিকে নির্দেশ করেছেন। তাঁরা বলছেন, কর্মঘণ্টা হ্রাস করা কাঠামোগত পরিবর্তনের দিকে নিয়ে যেতে পারে; যা কর্মীদের ব্যস্ততার চেয়ে উৎপাদনশীলতার ওপর বেশি প্রভাব ফেলে। কোলনের জার্মান ইকোনমিক ইনস্টিটিউটের (আইডব্লিউ) গবেষক হোলগার শেফার বলেছেন, কর্মঘণ্টা ২০ শতাংশ হ্রাসের বিনিময়ে উৎপাদনশীলতা ২৫ শতাংশ বৃদ্ধির আশা করা কল্পনাপ্রসূত।

জার্মানির ইনস্টিটিউট ফর এমপ্লয়মেন্ট রিসার্চের (আইএবি) অর্থনীতিবিদ বার্ন্ড ফিটজেনবার্গ বলেন, চার দিনের কর্মসপ্তাহে কোম্পানিগুলোর ব্যয় বাড়তে পারে। তিনি বলেন, ‘এখন যেখানে সব সময় পরিষেবা দেওয়া হয়, সেখানে নির্দিষ্ট সময়ে, গ্রাহকদের সেবা দেওয়া চ্যালেঞ্জিং হয়ে ওঠে। ৪ দিনের সপ্তাহ তাই নার্সিং, নিরাপত্তা পরিষেবা বা পরিবহনসেবার মতো ক্ষেত্রে বাস্তবায়ন করা আরও কঠিন। যদি আমরা একইভাবে সব ক্ষেত্রে এই ধরনের একটি বিধানকে কঠোরভাবে প্রয়োগ করি, তবে তা প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রকে আঘাত করতে পারে।’

তবে পাল্টা যুক্তি থাকা সত্ত্বেও চার দিনের কর্মসপ্তাহ এখন একটি আকর্ষণীয় প্রকল্প। জার্মান ট্রেড ইউনিয়ন আইজি মেটাল সম্প্রতি কাজের সময় কম করার পক্ষে কথা বলে আসছে। আর ইস্পাত শিল্পে বর্তমানে কর্মীদের প্রতি সপ্তাহে মাত্র ৩৫ ঘণ্টা কাজ করানো হয়। সূত্র : প্রথম আলো

হককথা/নাছরিন

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

জার্মানিতে কর্মিসংকট, তবু সপ্তাহে চার দিনের অফিস চালু

প্রকাশের সময় : ০৮:৫৩:০৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : জার্মানিতে অফিসের কাজ সপ্তাহে চার দিন ও তিন দিন সাপ্তাহিক ছুটি পরীক্ষামূলকভাবে চালু হয়েছে। ১ ফেব্রুয়ারি থেকে দেশটির ৪৫টি প্রতিষ্ঠান চার দিনের অফিস সময় চালু করেছে। এ প্রকল্পের মূল কথা হলো—কম কাজ, একই বেতন এবং আরও বেশি উৎপাদন ও আনন্দ।

অনেক দেশের মতো জার্মানিতে পর্যাপ্ত দক্ষ কর্মীর সংকট রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ইউরোপের বৃহত্তম অর্থনীতির এই দেশের ৪৫টি প্রতিষ্ঠান পরীক্ষামূলকভাবে এ প্রকল্প শুরু করেছে। এতে কর্মীদের অফিসে আরও এক দিন কম কাজ করতে হবে। এই প্রকল্প চলবে আগামী ছয় মাস। অফিসে কম দিন কাজ করলেও কর্মীরা তাঁদের পুরো বেতন পাবেন। অলাভজনক সংস্থা ফোর ডে উইক গ্লোবালের (ফোরডিডব্লিউজি) সহযোগিতায় পরামর্শক সংস্থা ইন্ট্রাপ্রেনিউর এ প্রকল্পের নেতৃত্ব দিচ্ছে।

আইনজীবীদের যুক্তি, চার দিনের কর্মসপ্তাহ চালু হওয়ায় কর্মীদের উৎপাদনশীলতা বাড়বে। এতে দেশের দক্ষ শ্রমিকের ঘাটতি দূর করতে সহায়তা করবে। পরিশ্রম ও দক্ষতার জন্য দীর্ঘকাল ধরে জার্মানির খ্যাতি আছে। এরপরও সাম্প্রতিক বছরগুলোয় দেশটির উৎপাদনশীলতা হ্রাস পেয়েছে।

উৎপাদনশীলতার পরিমাপ করা হয় অর্থনৈতিক আউটপুটকে কাজের ঘণ্টা দিয়ে ভাগ করে। কয়েক বছর ধরে অত্যধিক জ্বালানি ব্যয় কোম্পানিগুলোর আউটপুটকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। এতে দেশের উৎপাদনশীলতার স্কোর কমে গেছে। যদি কোম্পানিগুলো বর্তমান আউটপুট ধরে রেখে কর্মীদের কম ঘণ্টা কাজ করায়, তাহলে স্বাভাবিকভাবেই উৎপাদনশীলতার হার বেড়ে যাবে।

আইনজীবীদের যুক্তি, যে কর্মী পাঁচ দিনের পরিবর্তে চার দিন কাজ করেন, তাঁরা আরও অনুপ্রাণিত হবেন। এতে উৎপাদনশীলতা বাড়বে। এই প্রকল্প শ্রমের অভাব দূর করতে সাহায্য করবে। যাঁরা সপ্তাহে পাঁচ দিন কাজ করতে ইচ্ছুক নন, তাঁদের এ প্রকল্পে সম্পৃক্ত করে আরও বেশি কর্মীকে কর্মশক্তিতে এতে আকৃষ্ট করা যেতে পারে।

কম ঘণ্টা কাজে চাপ কম থাকে
এ তত্ত্ব ইতিমধ্যে জার্মানির বাইরেও পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হয়েছে। ২০১৯ সাল থেকে ফোরডিডব্লিউজি বিশ্বে এই পাইলট প্রোগ্রাম চালাচ্ছে। যুক্তরাজ্য ও দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে অস্ট্রেলিয়া, আয়ারল্যান্ড ও যুক্তরাষ্ট্রেও এ প্রকল্প চালানো হয়েছে। পাঁচ শতাধিক প্রতিষ্ঠান এ প্রকল্পে অংশ নিয়েছে। এর প্রাথমিক ফলাফল চার দিনের কর্মসপ্তাহের পক্ষে বলে মনে হচ্ছে।

যুক্তরাজ্যে প্রায় তিন হাজার কর্মীর অংশ নেওয়া পাইলট প্রকল্পে কেমব্রিজ ও বোস্টনের গবেষকেরা দেখেছেন, প্রায় ৪০ শতাংশ অংশগ্রহণকারী এতে কম চাপ অনুভব করেছেন। এ ছাড়া কর্মীর পদত্যাগের হারও ৫৭ শতাংশ কমে গেছে।

অসুস্থতাজনিত ছুটির ক্ষতি ২৮ বিলিয়ন ডলার
বিশ্বে এ প্রকল্প চালুর কারণে অসুস্থতাজনিত ছুটি নেওয়ার হারও দুই-তৃতীয়াংশ কমেছে। জার্মান স্বাস্থ্যবিমা কোম্পানি ডিএকের সাম্প্রতিক তথ্যে দেখা গেছ, জার্মানিতে কর্মীরা গত বছর গড়ে ২০ দিন অসুস্থতাজনিত ছুটি নিয়েছিলেন। জার্মান অ্যাসোসিয়েশন অব রিসার্চ-বেজড ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি (ভিএফএ) বলছে, এর অর্থ হলো, অসুস্থতাজনিত অনুপস্থিতির কারণে ২০২৩ সালে জার্মানিতে সামগ্রিকভাবে প্রকৃত আয়ের ২৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ক্ষতি হয়েছে, যা অর্থনৈতিক আউটপুটের ০ দশমিক ৮ শতাংশ পয়েন্ট নিচে নামিয়ে দিয়েছে।

যুক্তরাজ্যের পরীক্ষায় গবেষকেরা ৬১টি অংশগ্রহণকারী কোম্পানির মধ্যে ৫৬টিতে প্রায় ১ দশমিক ৪ শতাংশ গড় আয় বৃদ্ধি লক্ষ করেছেন। সংখ্যাগরিষ্ঠ কোম্পানি ট্রায়াল শেষে চার দিনের কর্মসপ্তাহ বহাল রাখার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে।

সৃজনশীল কাজ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে
প্রকল্পটি ইতিবাচকভাবে জার্মানিতেও কাজ করবে কি না—এ বিষয়ে শ্রমবাজার–বিশেষজ্ঞ এনজো ওয়েবার খুব একটা নিশ্চিত নন। ইউনিভার্সিটি অব রেজেনসবার্গ অ্যান্ড দ্য ইনস্টিটিউট ফর এমপ্লয়মেন্ট রিসার্চের এই গবেষক বলেন, আগের পাইলট প্রকল্পগুলোর ফলাফল নিয়ে কিছু সমস্যা আছে।

এনজো ওয়েবার ডয়চে ভেলেকে বলেন, যেসব কোম্পানির কাজ চার দিনের কর্মসপ্তাহের জন্য উপযুক্ত কেবল তারাই এই প্রকল্পে হয়তো অংশ নেবে। এর ফল তাই সামগ্রিক অর্থনীতির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হিসেবে নেওয়া যায় না।

ওয়েবার ইতিবাচক ফলাফল নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে বলেন, কাজের সময় কমিয়ে দিলে আরও বেশি মনোযোগী কাজ হতে পারে। কম ঘণ্টা মানে কাজের সামাজিক এবং সৃজনশীল উপাদানগুলোয় আঘাত করা।

সব ক্ষেত্রে প্রকল্পটি কাজ করবে না
তবে অন্য সংশয়বাদীরা উৎপাদনশীলতা পরিমাপের চ্যালেঞ্জের দিকে নির্দেশ করেছেন। তাঁরা বলছেন, কর্মঘণ্টা হ্রাস করা কাঠামোগত পরিবর্তনের দিকে নিয়ে যেতে পারে; যা কর্মীদের ব্যস্ততার চেয়ে উৎপাদনশীলতার ওপর বেশি প্রভাব ফেলে। কোলনের জার্মান ইকোনমিক ইনস্টিটিউটের (আইডব্লিউ) গবেষক হোলগার শেফার বলেছেন, কর্মঘণ্টা ২০ শতাংশ হ্রাসের বিনিময়ে উৎপাদনশীলতা ২৫ শতাংশ বৃদ্ধির আশা করা কল্পনাপ্রসূত।

জার্মানির ইনস্টিটিউট ফর এমপ্লয়মেন্ট রিসার্চের (আইএবি) অর্থনীতিবিদ বার্ন্ড ফিটজেনবার্গ বলেন, চার দিনের কর্মসপ্তাহে কোম্পানিগুলোর ব্যয় বাড়তে পারে। তিনি বলেন, ‘এখন যেখানে সব সময় পরিষেবা দেওয়া হয়, সেখানে নির্দিষ্ট সময়ে, গ্রাহকদের সেবা দেওয়া চ্যালেঞ্জিং হয়ে ওঠে। ৪ দিনের সপ্তাহ তাই নার্সিং, নিরাপত্তা পরিষেবা বা পরিবহনসেবার মতো ক্ষেত্রে বাস্তবায়ন করা আরও কঠিন। যদি আমরা একইভাবে সব ক্ষেত্রে এই ধরনের একটি বিধানকে কঠোরভাবে প্রয়োগ করি, তবে তা প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রকে আঘাত করতে পারে।’

তবে পাল্টা যুক্তি থাকা সত্ত্বেও চার দিনের কর্মসপ্তাহ এখন একটি আকর্ষণীয় প্রকল্প। জার্মান ট্রেড ইউনিয়ন আইজি মেটাল সম্প্রতি কাজের সময় কম করার পক্ষে কথা বলে আসছে। আর ইস্পাত শিল্পে বর্তমানে কর্মীদের প্রতি সপ্তাহে মাত্র ৩৫ ঘণ্টা কাজ করানো হয়। সূত্র : প্রথম আলো

হককথা/নাছরিন