নিউইয়র্ক ০৮:২৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০৮ জানুয়ারী ২০২৫, ২৫ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

জাতিসংঘ কি হারাচ্ছে তার বৈশ্বিক মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা?

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৫:৫২:২৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ জানুয়ারী ২০২৫
  • / ২৭ বার পঠিত

জাতিসংঘ দীর্ঘদিন ধরে বৈশ্বিক শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রতীক হিসেবে পরিচিত হলেও, বর্তমানে সংস্থাটি তার কার্যকারিতার প্রশ্নে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, কাঠামোগত ভারসাম্যহীনতা, নেতৃত্বের সীমাবদ্ধতা এবং শক্তিশালী দেশগুলোর স্বার্থ জাতিসংঘকে অকার্যকর করে তুলেছে। ফলে, এই শূন্যতা পূরণে বিভিন্ন দেশ নিজেরাই মধ্যস্থতার দায়িত্ব নিচ্ছে। বর্তমান সময়ে সংঘাত সমাধানে জাতিসংঘের ভূমিকা কমে আসছে। বিশেষ করে ইসরায়েলি বাহিনী ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় গণহত্যা এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের মতো ইস্যুতে জাতিসংঘের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ। এসব পরিস্থিতিতে তুরস্ক,সউদী আরব, চীন এবং কাতারের মতো দেশগুলো মধ্যস্থতা করে জাতিসংঘের অনুপস্থিতি পূরণ করছে। এই পরিবর্তন ঘটছে মূলত জাতিসংঘের কাঠামোগত সমস্যাগুলো এবং এর নেতাদের সীমাবদ্ধতার কারণে।

জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের গঠন নিয়ে সমালোচনা দীর্ঘদিনের। বোস্টন ইউনিভার্সিটির আইন বিভাগের অধ্যাপক সুসান আকরাম বলেছেন, “জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচটি স্থায়ী সদস্য রাষ্ট্র – যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীন, ফ্রান্স এবং যুক্তরাজ্য – তাদের ভেটো ক্ষমতা ব্যবহার করে বৈশ্বিক শান্তির বিষয়গুলো নিয়ন্ত্রণ করছে। এতে অন্যান্য রাষ্ট্রের ভূমিকা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।” তুরস্ক সম্প্রতি সোমালিয়া এবং ইথিওপিয়ার মধ্যকার সংঘাতে মধ্যস্থতা করেছে এবং ২০২৪ সালের আগস্টে একটি বড় বন্দী বিনিময়ের আয়োজন করেছে।সউদী আরব সুদানের গৃহযুদ্ধে শান্তি আনতে ভূমিকা রেখেছে, আর চীন ২০২৩ সালে সউদী আরব এবং ইরানের মধ্যে আলোচনার আয়োজন করে।

জাতিসংঘের বর্তমান মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের নেতৃত্ব নিয়েও সমালোচনা রয়েছে। অনেকেই বলছেন, তিনি সংঘাত সমাধানে আঞ্চলিক সংস্থাগুলোর উপর নির্ভর করতে বেশি পছন্দ করেন। রিচার্ড গোয়ান, আন্তর্জাতিক সংকট গ্রুপের প্রতিনিধি, বলেন, “গুতেরেস জাতিসংঘের সীমাবদ্ধতা মেনে নিয়ে আঞ্চলিক সংস্থাগুলোকে দায়িত্ব দিতে পছন্দ করেন। তবে অনেক কূটনীতিক মনে করেন, তিনি আরও ঝুঁকি নিতে পারতেন।”

জাতিসংঘের কাঠামোগত সমস্যা এবং নেতৃত্বের সীমাবদ্ধতা এই সংস্থার কার্যকারিতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। এতে বিভিন্ন দেশ নিজেদের প্রভাব ব্যবহার করে মধ্যস্থতা করছে। জাতিসংঘের পুনর্গঠনের মাধ্যমে তার ভূমিকা পুনরুদ্ধার করা এখন সময়ের দাবি। এটি না হলে, ভবিষ্যতে শান্তি প্রতিষ্ঠার বৈশ্বিক দায়িত্ব আরও বিভক্ত হতে পারে। তথ্যসূত্র : আনাদোলু এজেন্সি

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

জাতিসংঘ কি হারাচ্ছে তার বৈশ্বিক মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা?

প্রকাশের সময় : ০৫:৫২:২৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ জানুয়ারী ২০২৫

জাতিসংঘ দীর্ঘদিন ধরে বৈশ্বিক শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রতীক হিসেবে পরিচিত হলেও, বর্তমানে সংস্থাটি তার কার্যকারিতার প্রশ্নে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, কাঠামোগত ভারসাম্যহীনতা, নেতৃত্বের সীমাবদ্ধতা এবং শক্তিশালী দেশগুলোর স্বার্থ জাতিসংঘকে অকার্যকর করে তুলেছে। ফলে, এই শূন্যতা পূরণে বিভিন্ন দেশ নিজেরাই মধ্যস্থতার দায়িত্ব নিচ্ছে। বর্তমান সময়ে সংঘাত সমাধানে জাতিসংঘের ভূমিকা কমে আসছে। বিশেষ করে ইসরায়েলি বাহিনী ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় গণহত্যা এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের মতো ইস্যুতে জাতিসংঘের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ। এসব পরিস্থিতিতে তুরস্ক,সউদী আরব, চীন এবং কাতারের মতো দেশগুলো মধ্যস্থতা করে জাতিসংঘের অনুপস্থিতি পূরণ করছে। এই পরিবর্তন ঘটছে মূলত জাতিসংঘের কাঠামোগত সমস্যাগুলো এবং এর নেতাদের সীমাবদ্ধতার কারণে।

জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের গঠন নিয়ে সমালোচনা দীর্ঘদিনের। বোস্টন ইউনিভার্সিটির আইন বিভাগের অধ্যাপক সুসান আকরাম বলেছেন, “জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচটি স্থায়ী সদস্য রাষ্ট্র – যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীন, ফ্রান্স এবং যুক্তরাজ্য – তাদের ভেটো ক্ষমতা ব্যবহার করে বৈশ্বিক শান্তির বিষয়গুলো নিয়ন্ত্রণ করছে। এতে অন্যান্য রাষ্ট্রের ভূমিকা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।” তুরস্ক সম্প্রতি সোমালিয়া এবং ইথিওপিয়ার মধ্যকার সংঘাতে মধ্যস্থতা করেছে এবং ২০২৪ সালের আগস্টে একটি বড় বন্দী বিনিময়ের আয়োজন করেছে।সউদী আরব সুদানের গৃহযুদ্ধে শান্তি আনতে ভূমিকা রেখেছে, আর চীন ২০২৩ সালে সউদী আরব এবং ইরানের মধ্যে আলোচনার আয়োজন করে।

জাতিসংঘের বর্তমান মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের নেতৃত্ব নিয়েও সমালোচনা রয়েছে। অনেকেই বলছেন, তিনি সংঘাত সমাধানে আঞ্চলিক সংস্থাগুলোর উপর নির্ভর করতে বেশি পছন্দ করেন। রিচার্ড গোয়ান, আন্তর্জাতিক সংকট গ্রুপের প্রতিনিধি, বলেন, “গুতেরেস জাতিসংঘের সীমাবদ্ধতা মেনে নিয়ে আঞ্চলিক সংস্থাগুলোকে দায়িত্ব দিতে পছন্দ করেন। তবে অনেক কূটনীতিক মনে করেন, তিনি আরও ঝুঁকি নিতে পারতেন।”

জাতিসংঘের কাঠামোগত সমস্যা এবং নেতৃত্বের সীমাবদ্ধতা এই সংস্থার কার্যকারিতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। এতে বিভিন্ন দেশ নিজেদের প্রভাব ব্যবহার করে মধ্যস্থতা করছে। জাতিসংঘের পুনর্গঠনের মাধ্যমে তার ভূমিকা পুনরুদ্ধার করা এখন সময়ের দাবি। এটি না হলে, ভবিষ্যতে শান্তি প্রতিষ্ঠার বৈশ্বিক দায়িত্ব আরও বিভক্ত হতে পারে। তথ্যসূত্র : আনাদোলু এজেন্সি