৩৬ ঘণ্টার মধ্যে পাকিস্তানে ভারতের আক্রমণ?

- প্রকাশের সময় : ০১:১৫:০২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ মে ২০২৫
- / ২৭ বার পঠিত
ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ‘সামরিক পদক্ষেপ’ নিতে পারে— এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেছে ইসলামাবাদ। মঙ্গলবার গভীর রাতে এক ব্রিফিংয়ে পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার বলেন, “বিশ্বস্ত ‘গোয়েন্দা তথ্য’ অনুযায়ী আগামী ২৪ থেকে ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে ভারত অভিযান চালাতে পারে।”
এই অভিযোগ এসেছে কাশ্মীরের পেহেলগামে প্রাণঘাতী হামলার পর, যে ঘটনায় অন্তত ২৬ জন নিহত হয়েছেন। ভারত ওই হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করলেও, এখন পর্যন্ত কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করেনি।
ভারত দাবি করছে, হামলায় জড়িতদের মধ্যে দুজন পাকিস্তানি এবং একজন ভারতীয়, যাদের প্রত্যেকের মাথার দাম ২০ লাখ রুপি করে ঘোষণা করা হয়েছে। আতাউল্লাহ তারার বলেন, “ভারত মিথ্যা অজুহাত বানিয়ে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আক্রমণের প্রস্তুতি নিচ্ছে— এমন বিশ্বাসযোগ্য তথ্য আমাদের হাতে এসেছে।” তিনি অভিযোগ করেন, “ভারত নিজেই বিচারক, জুরি এবং শাস্তিদাতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে যে দায়িত্বহীন আচরণ করছে, তা শুধু এই অঞ্চলের জন্য নয়, গোটা বিশ্বের জন্যই হুমকি।”
পাকিস্তানের অবস্থান : পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী বলেন, “ইসলামাবাদ একটি স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ আন্তর্জাতিক তদন্ত কমিশনের মাধ্যমে পেহেলগামের হামলার উৎস জানার পক্ষে। ”“সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে পাকিস্তান সব সময়ই দৃঢ় অবস্থানে থেকেছে,” বলেন তিনি।
তবে ভারতের প্রতিক্রিয়াকে তিনি ‘উস্কানিমূলক ও সংঘর্ষমূলক’ বলে আখ্যায়িত করেন। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “ভারত যদি দুঃসাহস দেখায়, তাহলে পাকিস্তান শক্তভাবে জবাব দেবে।”
ভারতীয় সেনাবাহিনীকে ‘পূর্ণ স্বাধীনতা’ মোদির : ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মঙ্গলবার নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে সেনাবাহিনীকে ‘সম্পূর্ণ অপারেশনাল স্বাধীনতা’ দেওয়ার কথা জানান। ভারতীয় এক সরকারি সূত্র জানায়, “হামলার সময়, পদ্ধতি ও লক্ষ্য ঠিক করার বিষয়টি এখন সেনাবাহিনীর ওপর ন্যস্ত।”
মঙ্গলবার নিয়ন্ত্রণ রেখায় উভয় পক্ষের মধ্যে গুলিবিনিময়ের খবর এসেছে। পাকিস্তান বলেছে, তারা একটি ভারতীয় ড্রোন ভূপাতিত করেছে, যা আকাশসীমা লঙ্ঘন করেছিল। ভারত বলছে, পাকিস্তান রাতের আঁধারে বিনা উসকানিতে গুলি চালিয়েছে, যার ‘পরিমিত’ জবাব দেওয়া হয়েছে।
জাতিসংঘের ভূমিকা : উত্তেজনার মধ্যেই জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ এবং ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি দুই পক্ষকে সংযম দেখাতে এবং উত্তেজনা নিরসনে সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছেন। শেহবাজ বলেন, “ভারতের অভিযোগ ভিত্তিহীন। পেহেলগামের ঘটনার সঙ্গে পাকিস্তানের কোনও সম্পর্ক নেই।” তিনি কাশ্মীরিদের স্বাধীনতার দাবিকে সন্ত্রাসবাদ আখ্যা দেওয়ার ভারতীয় কৌশল এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনেরও প্রতিবাদ জানান।
এছাড়া তিনি বলেন, “ভারতের হাতে সিন্ধু অববাহিকার পানি অস্ত্র হয়ে উঠেছে— যা ২৪ কোটিরও বেশি মানুষের জন্য হুমকি।” ইরান ও সৌদি আরবও এই পরিস্থিতিতে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছে। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সংক্ষেপে মন্তব্য করেছেন, “এই ব্যাপারটা কোনও না কোনওভাবে ঠিক হয়ে যাবে।”