নিউইয়র্ক ০৭:২১ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৩ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

কারাগারে বসেই নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পরিকল্পনা ইমরান খানের

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৮:০১:৪০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
  • / ৩৭ বার পঠিত

ছবি সংগৃহীত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : দুই বছরেরও কম সময়ে প্রধানমন্ত্রী থেকে কারাগারে। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ভাগ্যটা এভাবেই বদলে গেছে। তার দলও নাটকীয়ভাবে তাদের রাজনৈতিক জৌলুস হারিয়েছে। তবে ইমরান খানের দল তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) বলছে যে, তাদের দলের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান ইমরান খান বিভিন্ন মামলায় কারাগারে থাকলেও তারা সাধারণ নির্বাচনে জিততে পারবে।

কঠিন এই পরিস্থিতিতেও পিটিআই তাদের বিশ্বাস থেকে বিচ্যুত হয়নি। দলটির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, ইমরান খানের বিরুদ্ধে সব মামলা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। ইচ্ছাকৃতভাবেই তাকে একাধিক মামলায় কারাগারে পাঠানো হয়েছে এবং নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে বাধা দেওয়া হয়েছে বলে দলটির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়।

কর্তৃপক্ষের দমনের প্রভাব কাটিয়ে উঠতে পিটিআই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সাহায্যে পাল্টা জবাব দেওয়ার চেষ্টা করছে। তাদের মধ্যে নতুন প্রার্থীরা এসেছেন যাদের মধ্যে অনেকে একেবারেই নতুন। পাঞ্জাব প্রদেশের শিয়ালকোট শহরের রাস্তায় রেহেনা দার নির্বাচনী প্রচারণায় নামলে তার পেছনে মানুষের ভিড় জমে যায়। শহরটির অলিগলিতে এমনকি প্রতিটি কোনায় তার ছবিযুক্ত পোস্টারে ছেয়ে থাকতে দেখা গেছে।

তার সামনে ড্রাম বাজিয়ে পথ তৈরি করে দেওয়া হচ্ছে আর ওপর থেকে তার দিকে অবিরত গোলাপের পাপড়ি ফেলা হচ্ছে। ৭০ বছর বয়সী রেহানা দারের অপ্রত্যাশিতভাবে একজন রাজনীতিবিদ হয়ে ওঠা বেশ অবাক করা হলেও বিষয়টি এক সেকেন্ডের জন্যও তার চেহারায় ফুটে ওঠেনি।

যে ভয়ে অনেক সহকর্মী প্রার্থী গা ঢাকা দিতে বাধ্য হয়েছেন অনেকে রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন, রেহেনা দারের মধ্যে তার ছিটেফোঁটাও পাওয়া যায়নি। ভাবতেই ভালো লাগছে যে আমার শহর শিয়ালকোটের গর্বিত ছেলে-মেয়ে, ভাই ও মায়েরা আমার পাশে দাঁড়িয়েছেন- তিনি প্রচণ্ড আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে জোর গলায় কথাগুলো বলছিলেন। তার এমন আত্মবিশ্বাস দেখে মনে হয়েছে তিনি বছরের পর বছর ধরে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিয়েছেন।

পিটিআই-এর নতুন মুখ রেহেনা দার বলেন, আমি ইমরান খানের সঙ্গে আছি এবং ইমরান খানের সঙ্গেই থাকব। যদি আমাকে জনসমক্ষে একা ছেড়ে দেওয়া হয়, তবুও আমি ইমরান খানের পতাকা নিয়ে রাস্তায় নামব। চারপাশের এক ঝলকেই বলা যায় যে তার বলা কথাগুলো সত্য। তিনি চারপাশে জড়ো হওয়া জনতার ভিড়ের মধ্যে ইমরান খানের একটি ছবি উঁচু করে তুলে ধরেছেন।

তার মাথার ওপরে উড়ছে পিটিআই-এর পতাকা, যদিও এখনও তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে পিটিআইয়ের প্রার্থী নন।নির্বাচন কমিশন পিটিআই-এর ক্রিকেট ব্যাট প্রতীক তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর তিনি অন্যান্য প্রার্থীর মতো মূলত একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়েছেন।

এটি আদতে বেশ ছোট সিদ্ধান্ত বলে মনে হতে পারে, কিন্তু যে দেশে নিরক্ষরতার হার ৫৮ শতাংশ, যেসব প্রার্থীদের ব্যালট পেপারে নিজেদের স্বীকৃত প্রতীক আছে তাদের জন্য বিষয়টি বেশ জটিল। এখন প্রতিটি প্রার্থীর নিজস্ব বিকল্প প্রতীক রয়েছে।

অন্যান্য প্রার্থীরা কেতলি থেকে বাদ্যযন্ত্র পর্যন্ত বিভিন্ন আইটেম প্রতীক হিসেবে বরাদ্দ পেয়েছেন। এটি হচ্ছে অগণিত বাধাগুলোর মধ্যে একটি যা পিটিআই আগামী ৮ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়ার সময় তাদের সামনে এসেছে।

কিন্তু দলটি তাদের লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে, যেমন- রেহেনা দারের মতো প্রার্থীরা রাস্তায় নেমেছেন। প্রযুক্তির মাধ্যমেও তাদের এই লড়াই চলছে যা একজন নেতাকে জেলের কয়েদখানা থেকে সমাবেশের সামনে নিয়ে গেছে। এই বিষয়গুলো এটাই প্রমাণ করে যে তারা এই লড়াইয়ে সবকিছু করতে ইচ্ছুক।

গত নির্বাচনের সময় রেহেনা দারের ছেলে উসমান শিয়ালকোটের মধ্য দিয়ে দলকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। তিনি পিটিআই-এর একজন নেতা ছিলেন এবং প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের অধীনে যুব বিষয়ক বিশেষ উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

কিন্তু অক্টোবরের শুরুতে, তিন সপ্তাহ ধরে নিখোঁজ থাকার পর তিনি টেলিভিশনে উপস্থিত হয়ে বলেন যে, ইমরান খান গত ৯ মে’র দাঙ্গার মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন। এরপর দেশব্যাপী বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। যার মধ্যে কিছু বিক্ষোভ বেশ সহিংস হয়েছিল। গত বছর ইমরান খানকে গ্রেফতার করার পর এমন সহিংস পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল।

লাহোরের এক শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তার বাসভবনসহ সামরিক ভবনে হামলার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে খানের শত শত সমর্থককে গ্রেফতার করা হয়। ইমরান খানকে মুক্তি দেওয়া হলেও তার দলের ওপর দমন পীড়ন অব্যাহত ছিল।

বিক্ষোভের পরবর্তী কয়েক সপ্তাহ এবং কয়েক মাসে পিটিআই এর বেশ কয়েকজন রাজনীতিক দল থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দেন আবার অনেকে রাজনীতি থেকেই সম্পূর্ণভাবে সরে দাঁড়ান। তাদের মধ্যে দলেন অনেক সিনিয়র নেতারা ছিলেন। কর্তৃপক্ষ যুক্তি দিয়েছে যে, তাদের পদত্যাগের ঘটনা এটাই ইঙ্গিত করে যে, খানের পুরোনো সমর্থকরা এমন সহিংসতার দায় নেওয়া দলের সঙ্ড়ে যুক্ত হতে চায় না।

পিটিআই বলছে, তারা স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেনি বরং তাদের পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়েছে। তবে সত্য যাই হোক না কেন রেহেনা দার কোনটা নিয়েই খুশি ছিলেন না। তিনি বলেন, যখন উসমান দার বিবৃতি দিয়েছিলেন, আমি তাতে রাজি হইনি। আমি তাকে বলেছিলাম যে, এর চেয়ে আমার ছেলে মারা গেলে ভালো হতো। তুমি মিথ্যা বিবৃতি দিয়েছ।

রেহেনা দার যেভাবে প্রকাশ্যে প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছেন তা পিটিআই-এর সব প্রার্থীর পক্ষে সম্ভব নয়। কয়েকজন প্রার্থী কারাগারে থাকার পরও প্রচারণা চালিয়ে গেছেন। যারা কোনো অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হননি তারা কারাগারের ভেতর থেকে নির্বাচনে দাঁড়াতে পারবে।

এছাড়া অনেকেই পুলিশকে এড়িয়ে লুকিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন। আতিফ খান পাকিস্তানের উত্তরে খাইবার পাখতুনখোয়ার প্রাদেশিক মন্ত্রী ছিলেন। এখন নির্বাচনী প্রচারণার অংশ হিসাবে তিনি ভিডিও সম্প্রচারের মাধ্যমে তিন মিটার পর্দায় সবার সামনে হাজির হন।

তার দল এই ভিডিও স্ক্রিন সারা শহর ঘুরিয়ে, শহরের চত্বরে এনে প্রদর্শন করে। সেখানে জড়ো হওয়া পিটিআই সমর্থকদের উদ্দেশ্যে এই ভিডিও সম্প্রচার করা হয়। তিনি বলেন, ভোটারদের কাছে তার বার্তা পৌঁছে দেওয়ার এটাই একমাত্র উপায়। কারণ তিনি মে মাস থেকে আত্মগোপনে রয়েছেন।

কর্তৃপক্ষ বলছে, তিনি একজন ওয়ান্টেড ব্যক্তি অর্থাৎ তাকে ধরিয়ে দেওয়ার আবেদন জানানো হয়েছে। আতিফ খান বিশ্বাস করেন যে তিনি সুষ্ঠু বিচার পাবেন না। তিনি বলেন, এটি সম্পূর্ণ ভিন্ন অভিজ্ঞতা, ভিড়ের মধ্যে নয়, মঞ্চে নয়, মানুষের মধ্যে নয, কিন্তু তবুও আমরা দল পরিচালনার চেষ্টা করছি।

তিনি বলেন, পিটিআই-এর সবচেয়ে বড় সমর্থন হল তরুণ ভোটাররা। তারা ডিজিটাল মিডিয়া, মোবাইল ফোন ব্যবহার করছে, তাই আমরা ভেবেছিলাম এর মাধ্যমে তাদের সঙ্গে আরও বেশি জড়িত হওয়া উচিত। এটাই একমাত্র কাজ, আমরা ডিজিটাল মিডিয়ার মাধ্যমে প্রচারণা চালাতে পারি।

এবারের নির্বাচনে পিটিআই-এর প্রচারণার জন্য প্রযুক্তি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পিটিআই-এর এক্স অ্যাকাউন্ট, ইনস্টাগ্রাম এবং টিকটক পেইজগুলোর প্রতিটিতে কয়েক লাখ ফলোয়ার রয়েছে। যা কিনা অন্য দুটি প্রধান দল পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) এবং পাকিস্তান মুসলিম লীগ নওয়াজের (পিএমএল’এন) চেয়েও বেশি।

এই তিনটি দলের মধ্যে ইমরান খান একমাত্র নেতা যার সামাজিক মাধ্যমের ওই তিনটি প্ল্যাটফর্মে একটি করে ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট রয়েছে, যার অর্থ তার বার্তা সরাসরি মানুষের কাছে যাচ্ছে। কোনো প্রার্থী পিটিআই-সমর্থিত প্রার্থী কিনা তা জানতে ভোটারদের সাহায্য করার জন্য প্রযুক্তি ব্যবহারের চেষ্টা করা হয়েছে।

ক্রিকেট ব্যাটের প্রতীক ছাড়াই, পিটিআই একটি ওয়েবসাইট তৈরি করেছে যেখানে ভোটাররা তাদের নির্বাচনী এলাকায় গেলে সংশ্লিষ্ট আসনের পিটিআই-সমর্থিত প্রার্থীর প্রতীক খুঁজে পাবে।

ইমরান খান দেশটির প্রিয় ক্রিকেটার, রাজনীতিবিদ এবং এমন একজন নেতা যার উপস্থিতি হাজার হাজার মানুষকে সমাবেশে আকর্ষণ করতে সক্ষম। কিন্তু গত আগস্ট থেকে তিনি কারাগারে আছেন এবং চলতি সপ্তাহে বেশ কয়েকটি মামলায় দোষী সাব্যস্ত ও সাজা পাওয়ার কারণে প্রায় ১৪ বছর তাকে কারাগারে থাকতে হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

পিটিআই অভিযোগ করেছে যে, তাদের নির্বাচনী প্রচারণায় বাধা দিতে তাদের বিরুদ্ধে হয়রানি, অপহরণ, কারাগারে পাঠানো এবং সহিংসতা চালানো হচ্ছে। তবে এসব অভিযোগকে ভিত্তিহীন ও অযৌক্তিক বলে মনে করেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের তথ্যমন্ত্রী মুর্তজা সোলাঙ্গি।

তিনি বলেন, হ্যাঁ লোকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে ৯ মের ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কারণে এবং আরও কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে অন্যান্য ফৌজদারি মামলার সঙ্গে জড়িত থাকার দায়ে।

পিটিআই-এর অভিযোগ ভিত্তিহীন হলেও তারা তাদের ভিন্নমত এবং অভিযোগ প্রকাশ করতে স্বাধীন। গণমাধ্যম সেগুলো প্রচার করে। একই সঙ্গে তাদের কাছে দেশের সর্বোচ্চ আদালতসহ অন্যান্য আইনি বিকল্প রয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

এসব সমস্যার সমাধান ভার্চুয়াল সমাবেশ? পিটিআই-এর সোশ্যাল মিডিয়া বিভাগের প্রধান জিবরান ইলিয়াস শিকাগোতে তার দফতর থেকে বলেন, এটা সস্তা, নিরাপদ এবং দ্রুত কাজ করে। এর প্রভাব জনসমাবেশ থেকে কিছুটা কম হতে পারে, তবে আমরা আমাদের বার্তা পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করছি।

ইলিয়াস বলেন, ইমরানকে ছাড়া আমরা এর আগে কখনো কোনো রাজনৈতিক সমাবেশ করিনি। তাকে ছাড়া কি কোন কিছু কাজ করবে? তারা এ নিয়ে এতটা নিশ্চিত ছিল না। কিন্তু মানুষ ইমরান খানের বার্তার জন্য অপেক্ষা করতো।

তখন সবাই ভাবছিলেন কিভাবে মানুষের কাছে ইমরান খানের বার্তা পৌঁছে দেওয়া যায়? ডিসেম্বরে তারা একটি অনলাইন সমাবেশের জন্য একটি বক্তৃতা তৈরি করতে এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করেন। কিন্তু এর কিছু সীমাবদ্ধতা আছে। পুরো পাকিস্তানজুড়ে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্ল্যাটফর্ম জুড়ে বিপর্যয় দেখা দেয়।

মূলত পিটিআইয়ের সমাবেশের সময়েই এ ধরণের বিঘ্ন ঘটতে দেখা গেছে। ওয়াশিংটনের উইলসন সেন্টার থিংক ট্যাঙ্কের দক্ষিণ এশিয়া ইন্সটিটিউটের পরিচালক ড.মাইকেল কুগেলম্যান বলেন, পাকিস্তানের জনসংখ্যার মাত্র ৩০ শতাংশ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের সক্রিয় ব্যবহারকারী। সুতরাং এতে এটাই স্পষ্ট হয় যে, পিটিআই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যতো অনলাইন প্রচারণা চালাক না কেন এর সীমাবদ্ধ আছে।

ইমরান খানের ওপর দিয়ে যতো ঘাত প্রতিঘাত গেছে তার প্রতিটা পিটিআই তাদের নির্বাচনী প্রচারণার জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করার চেষ্টা করেছে, কিন্তু তা কি কার্যকর হবে? পাকিস্তানের টিভি চ্যানেলগুলো পিএমএল-এন-এর পক্ষে ইমরান খানের প্রতিদ্বন্দ্বী নওয়াজ শরিফ বা পিপিপি-র পক্ষে বিলাওয়াল ভুট্টোর নির্বাচনী সমাবেশের খবরাখবরে ভরপুর।

নির্বাচনের আগের সপ্তাহে পিটিআই যে কভারেজ পেয়েছে তা তাদের প্রতিষ্ঠাতার কারাদণ্ডের বিষয়ে। অনেক ভোটার মনে করতে পারে যে ভোট দেওয়ার কোনো অর্থ নেই। তারা মনে করে পিটিআই এর জয়ের কোনো উপায় নেই। পিটিআই-এ এমন কিছু লোক আছেন যারা মনে করেন তারা যদি নির্বাচন পর্যন্ত যেতে পারেন এবং ভোটারদের উপস্থিতি যদি বেশি হয় তবে তারা দলের পক্ষে ভোট টেনে অলৌকিক বিজয় অর্জন করতে পারবেন। সূত্র : বিবিসি বাংলা

হককথা/নাছরিন

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

কারাগারে বসেই নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পরিকল্পনা ইমরান খানের

প্রকাশের সময় : ০৮:০১:৪০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : দুই বছরেরও কম সময়ে প্রধানমন্ত্রী থেকে কারাগারে। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ভাগ্যটা এভাবেই বদলে গেছে। তার দলও নাটকীয়ভাবে তাদের রাজনৈতিক জৌলুস হারিয়েছে। তবে ইমরান খানের দল তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) বলছে যে, তাদের দলের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান ইমরান খান বিভিন্ন মামলায় কারাগারে থাকলেও তারা সাধারণ নির্বাচনে জিততে পারবে।

কঠিন এই পরিস্থিতিতেও পিটিআই তাদের বিশ্বাস থেকে বিচ্যুত হয়নি। দলটির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, ইমরান খানের বিরুদ্ধে সব মামলা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। ইচ্ছাকৃতভাবেই তাকে একাধিক মামলায় কারাগারে পাঠানো হয়েছে এবং নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে বাধা দেওয়া হয়েছে বলে দলটির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়।

কর্তৃপক্ষের দমনের প্রভাব কাটিয়ে উঠতে পিটিআই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সাহায্যে পাল্টা জবাব দেওয়ার চেষ্টা করছে। তাদের মধ্যে নতুন প্রার্থীরা এসেছেন যাদের মধ্যে অনেকে একেবারেই নতুন। পাঞ্জাব প্রদেশের শিয়ালকোট শহরের রাস্তায় রেহেনা দার নির্বাচনী প্রচারণায় নামলে তার পেছনে মানুষের ভিড় জমে যায়। শহরটির অলিগলিতে এমনকি প্রতিটি কোনায় তার ছবিযুক্ত পোস্টারে ছেয়ে থাকতে দেখা গেছে।

তার সামনে ড্রাম বাজিয়ে পথ তৈরি করে দেওয়া হচ্ছে আর ওপর থেকে তার দিকে অবিরত গোলাপের পাপড়ি ফেলা হচ্ছে। ৭০ বছর বয়সী রেহানা দারের অপ্রত্যাশিতভাবে একজন রাজনীতিবিদ হয়ে ওঠা বেশ অবাক করা হলেও বিষয়টি এক সেকেন্ডের জন্যও তার চেহারায় ফুটে ওঠেনি।

যে ভয়ে অনেক সহকর্মী প্রার্থী গা ঢাকা দিতে বাধ্য হয়েছেন অনেকে রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন, রেহেনা দারের মধ্যে তার ছিটেফোঁটাও পাওয়া যায়নি। ভাবতেই ভালো লাগছে যে আমার শহর শিয়ালকোটের গর্বিত ছেলে-মেয়ে, ভাই ও মায়েরা আমার পাশে দাঁড়িয়েছেন- তিনি প্রচণ্ড আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে জোর গলায় কথাগুলো বলছিলেন। তার এমন আত্মবিশ্বাস দেখে মনে হয়েছে তিনি বছরের পর বছর ধরে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিয়েছেন।

পিটিআই-এর নতুন মুখ রেহেনা দার বলেন, আমি ইমরান খানের সঙ্গে আছি এবং ইমরান খানের সঙ্গেই থাকব। যদি আমাকে জনসমক্ষে একা ছেড়ে দেওয়া হয়, তবুও আমি ইমরান খানের পতাকা নিয়ে রাস্তায় নামব। চারপাশের এক ঝলকেই বলা যায় যে তার বলা কথাগুলো সত্য। তিনি চারপাশে জড়ো হওয়া জনতার ভিড়ের মধ্যে ইমরান খানের একটি ছবি উঁচু করে তুলে ধরেছেন।

তার মাথার ওপরে উড়ছে পিটিআই-এর পতাকা, যদিও এখনও তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে পিটিআইয়ের প্রার্থী নন।নির্বাচন কমিশন পিটিআই-এর ক্রিকেট ব্যাট প্রতীক তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর তিনি অন্যান্য প্রার্থীর মতো মূলত একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়েছেন।

এটি আদতে বেশ ছোট সিদ্ধান্ত বলে মনে হতে পারে, কিন্তু যে দেশে নিরক্ষরতার হার ৫৮ শতাংশ, যেসব প্রার্থীদের ব্যালট পেপারে নিজেদের স্বীকৃত প্রতীক আছে তাদের জন্য বিষয়টি বেশ জটিল। এখন প্রতিটি প্রার্থীর নিজস্ব বিকল্প প্রতীক রয়েছে।

অন্যান্য প্রার্থীরা কেতলি থেকে বাদ্যযন্ত্র পর্যন্ত বিভিন্ন আইটেম প্রতীক হিসেবে বরাদ্দ পেয়েছেন। এটি হচ্ছে অগণিত বাধাগুলোর মধ্যে একটি যা পিটিআই আগামী ৮ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়ার সময় তাদের সামনে এসেছে।

কিন্তু দলটি তাদের লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে, যেমন- রেহেনা দারের মতো প্রার্থীরা রাস্তায় নেমেছেন। প্রযুক্তির মাধ্যমেও তাদের এই লড়াই চলছে যা একজন নেতাকে জেলের কয়েদখানা থেকে সমাবেশের সামনে নিয়ে গেছে। এই বিষয়গুলো এটাই প্রমাণ করে যে তারা এই লড়াইয়ে সবকিছু করতে ইচ্ছুক।

গত নির্বাচনের সময় রেহেনা দারের ছেলে উসমান শিয়ালকোটের মধ্য দিয়ে দলকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। তিনি পিটিআই-এর একজন নেতা ছিলেন এবং প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের অধীনে যুব বিষয়ক বিশেষ উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

কিন্তু অক্টোবরের শুরুতে, তিন সপ্তাহ ধরে নিখোঁজ থাকার পর তিনি টেলিভিশনে উপস্থিত হয়ে বলেন যে, ইমরান খান গত ৯ মে’র দাঙ্গার মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন। এরপর দেশব্যাপী বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। যার মধ্যে কিছু বিক্ষোভ বেশ সহিংস হয়েছিল। গত বছর ইমরান খানকে গ্রেফতার করার পর এমন সহিংস পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল।

লাহোরের এক শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তার বাসভবনসহ সামরিক ভবনে হামলার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে খানের শত শত সমর্থককে গ্রেফতার করা হয়। ইমরান খানকে মুক্তি দেওয়া হলেও তার দলের ওপর দমন পীড়ন অব্যাহত ছিল।

বিক্ষোভের পরবর্তী কয়েক সপ্তাহ এবং কয়েক মাসে পিটিআই এর বেশ কয়েকজন রাজনীতিক দল থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দেন আবার অনেকে রাজনীতি থেকেই সম্পূর্ণভাবে সরে দাঁড়ান। তাদের মধ্যে দলেন অনেক সিনিয়র নেতারা ছিলেন। কর্তৃপক্ষ যুক্তি দিয়েছে যে, তাদের পদত্যাগের ঘটনা এটাই ইঙ্গিত করে যে, খানের পুরোনো সমর্থকরা এমন সহিংসতার দায় নেওয়া দলের সঙ্ড়ে যুক্ত হতে চায় না।

পিটিআই বলছে, তারা স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেনি বরং তাদের পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়েছে। তবে সত্য যাই হোক না কেন রেহেনা দার কোনটা নিয়েই খুশি ছিলেন না। তিনি বলেন, যখন উসমান দার বিবৃতি দিয়েছিলেন, আমি তাতে রাজি হইনি। আমি তাকে বলেছিলাম যে, এর চেয়ে আমার ছেলে মারা গেলে ভালো হতো। তুমি মিথ্যা বিবৃতি দিয়েছ।

রেহেনা দার যেভাবে প্রকাশ্যে প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছেন তা পিটিআই-এর সব প্রার্থীর পক্ষে সম্ভব নয়। কয়েকজন প্রার্থী কারাগারে থাকার পরও প্রচারণা চালিয়ে গেছেন। যারা কোনো অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হননি তারা কারাগারের ভেতর থেকে নির্বাচনে দাঁড়াতে পারবে।

এছাড়া অনেকেই পুলিশকে এড়িয়ে লুকিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন। আতিফ খান পাকিস্তানের উত্তরে খাইবার পাখতুনখোয়ার প্রাদেশিক মন্ত্রী ছিলেন। এখন নির্বাচনী প্রচারণার অংশ হিসাবে তিনি ভিডিও সম্প্রচারের মাধ্যমে তিন মিটার পর্দায় সবার সামনে হাজির হন।

তার দল এই ভিডিও স্ক্রিন সারা শহর ঘুরিয়ে, শহরের চত্বরে এনে প্রদর্শন করে। সেখানে জড়ো হওয়া পিটিআই সমর্থকদের উদ্দেশ্যে এই ভিডিও সম্প্রচার করা হয়। তিনি বলেন, ভোটারদের কাছে তার বার্তা পৌঁছে দেওয়ার এটাই একমাত্র উপায়। কারণ তিনি মে মাস থেকে আত্মগোপনে রয়েছেন।

কর্তৃপক্ষ বলছে, তিনি একজন ওয়ান্টেড ব্যক্তি অর্থাৎ তাকে ধরিয়ে দেওয়ার আবেদন জানানো হয়েছে। আতিফ খান বিশ্বাস করেন যে তিনি সুষ্ঠু বিচার পাবেন না। তিনি বলেন, এটি সম্পূর্ণ ভিন্ন অভিজ্ঞতা, ভিড়ের মধ্যে নয়, মঞ্চে নয়, মানুষের মধ্যে নয, কিন্তু তবুও আমরা দল পরিচালনার চেষ্টা করছি।

তিনি বলেন, পিটিআই-এর সবচেয়ে বড় সমর্থন হল তরুণ ভোটাররা। তারা ডিজিটাল মিডিয়া, মোবাইল ফোন ব্যবহার করছে, তাই আমরা ভেবেছিলাম এর মাধ্যমে তাদের সঙ্গে আরও বেশি জড়িত হওয়া উচিত। এটাই একমাত্র কাজ, আমরা ডিজিটাল মিডিয়ার মাধ্যমে প্রচারণা চালাতে পারি।

এবারের নির্বাচনে পিটিআই-এর প্রচারণার জন্য প্রযুক্তি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পিটিআই-এর এক্স অ্যাকাউন্ট, ইনস্টাগ্রাম এবং টিকটক পেইজগুলোর প্রতিটিতে কয়েক লাখ ফলোয়ার রয়েছে। যা কিনা অন্য দুটি প্রধান দল পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) এবং পাকিস্তান মুসলিম লীগ নওয়াজের (পিএমএল’এন) চেয়েও বেশি।

এই তিনটি দলের মধ্যে ইমরান খান একমাত্র নেতা যার সামাজিক মাধ্যমের ওই তিনটি প্ল্যাটফর্মে একটি করে ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট রয়েছে, যার অর্থ তার বার্তা সরাসরি মানুষের কাছে যাচ্ছে। কোনো প্রার্থী পিটিআই-সমর্থিত প্রার্থী কিনা তা জানতে ভোটারদের সাহায্য করার জন্য প্রযুক্তি ব্যবহারের চেষ্টা করা হয়েছে।

ক্রিকেট ব্যাটের প্রতীক ছাড়াই, পিটিআই একটি ওয়েবসাইট তৈরি করেছে যেখানে ভোটাররা তাদের নির্বাচনী এলাকায় গেলে সংশ্লিষ্ট আসনের পিটিআই-সমর্থিত প্রার্থীর প্রতীক খুঁজে পাবে।

ইমরান খান দেশটির প্রিয় ক্রিকেটার, রাজনীতিবিদ এবং এমন একজন নেতা যার উপস্থিতি হাজার হাজার মানুষকে সমাবেশে আকর্ষণ করতে সক্ষম। কিন্তু গত আগস্ট থেকে তিনি কারাগারে আছেন এবং চলতি সপ্তাহে বেশ কয়েকটি মামলায় দোষী সাব্যস্ত ও সাজা পাওয়ার কারণে প্রায় ১৪ বছর তাকে কারাগারে থাকতে হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

পিটিআই অভিযোগ করেছে যে, তাদের নির্বাচনী প্রচারণায় বাধা দিতে তাদের বিরুদ্ধে হয়রানি, অপহরণ, কারাগারে পাঠানো এবং সহিংসতা চালানো হচ্ছে। তবে এসব অভিযোগকে ভিত্তিহীন ও অযৌক্তিক বলে মনে করেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের তথ্যমন্ত্রী মুর্তজা সোলাঙ্গি।

তিনি বলেন, হ্যাঁ লোকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে ৯ মের ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কারণে এবং আরও কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে অন্যান্য ফৌজদারি মামলার সঙ্গে জড়িত থাকার দায়ে।

পিটিআই-এর অভিযোগ ভিত্তিহীন হলেও তারা তাদের ভিন্নমত এবং অভিযোগ প্রকাশ করতে স্বাধীন। গণমাধ্যম সেগুলো প্রচার করে। একই সঙ্গে তাদের কাছে দেশের সর্বোচ্চ আদালতসহ অন্যান্য আইনি বিকল্প রয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

এসব সমস্যার সমাধান ভার্চুয়াল সমাবেশ? পিটিআই-এর সোশ্যাল মিডিয়া বিভাগের প্রধান জিবরান ইলিয়াস শিকাগোতে তার দফতর থেকে বলেন, এটা সস্তা, নিরাপদ এবং দ্রুত কাজ করে। এর প্রভাব জনসমাবেশ থেকে কিছুটা কম হতে পারে, তবে আমরা আমাদের বার্তা পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করছি।

ইলিয়াস বলেন, ইমরানকে ছাড়া আমরা এর আগে কখনো কোনো রাজনৈতিক সমাবেশ করিনি। তাকে ছাড়া কি কোন কিছু কাজ করবে? তারা এ নিয়ে এতটা নিশ্চিত ছিল না। কিন্তু মানুষ ইমরান খানের বার্তার জন্য অপেক্ষা করতো।

তখন সবাই ভাবছিলেন কিভাবে মানুষের কাছে ইমরান খানের বার্তা পৌঁছে দেওয়া যায়? ডিসেম্বরে তারা একটি অনলাইন সমাবেশের জন্য একটি বক্তৃতা তৈরি করতে এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করেন। কিন্তু এর কিছু সীমাবদ্ধতা আছে। পুরো পাকিস্তানজুড়ে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্ল্যাটফর্ম জুড়ে বিপর্যয় দেখা দেয়।

মূলত পিটিআইয়ের সমাবেশের সময়েই এ ধরণের বিঘ্ন ঘটতে দেখা গেছে। ওয়াশিংটনের উইলসন সেন্টার থিংক ট্যাঙ্কের দক্ষিণ এশিয়া ইন্সটিটিউটের পরিচালক ড.মাইকেল কুগেলম্যান বলেন, পাকিস্তানের জনসংখ্যার মাত্র ৩০ শতাংশ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের সক্রিয় ব্যবহারকারী। সুতরাং এতে এটাই স্পষ্ট হয় যে, পিটিআই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যতো অনলাইন প্রচারণা চালাক না কেন এর সীমাবদ্ধ আছে।

ইমরান খানের ওপর দিয়ে যতো ঘাত প্রতিঘাত গেছে তার প্রতিটা পিটিআই তাদের নির্বাচনী প্রচারণার জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করার চেষ্টা করেছে, কিন্তু তা কি কার্যকর হবে? পাকিস্তানের টিভি চ্যানেলগুলো পিএমএল-এন-এর পক্ষে ইমরান খানের প্রতিদ্বন্দ্বী নওয়াজ শরিফ বা পিপিপি-র পক্ষে বিলাওয়াল ভুট্টোর নির্বাচনী সমাবেশের খবরাখবরে ভরপুর।

নির্বাচনের আগের সপ্তাহে পিটিআই যে কভারেজ পেয়েছে তা তাদের প্রতিষ্ঠাতার কারাদণ্ডের বিষয়ে। অনেক ভোটার মনে করতে পারে যে ভোট দেওয়ার কোনো অর্থ নেই। তারা মনে করে পিটিআই এর জয়ের কোনো উপায় নেই। পিটিআই-এ এমন কিছু লোক আছেন যারা মনে করেন তারা যদি নির্বাচন পর্যন্ত যেতে পারেন এবং ভোটারদের উপস্থিতি যদি বেশি হয় তবে তারা দলের পক্ষে ভোট টেনে অলৌকিক বিজয় অর্জন করতে পারবেন। সূত্র : বিবিসি বাংলা

হককথা/নাছরিন