জার্মানির ভোট: সাধারণ মানুষের প্রশ্নের জবাব দিলেন নেতারা

- প্রকাশের সময় : ০৫:৪০:০৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
- / ৪১ বার পঠিত
জার্মানির নির্বাচনে চারজন চ্যান্সেলর পদপ্রার্থী টিভি-র লাইভ অনুষ্ঠানে সাধারণ মানুষের প্রশ্নের মুখোমুখি হলেন। দুই ঘণ্টার অনুষ্ঠানে প্রথম এলেন সিডিইউ নেতা ফ্রিডরিশ ম্যার্ৎস। তাকে প্রশ্ন করা হলো, জার্মানদের কতটা আর্থিক বোঝা বহন করতে হবে?
সিডিইউ নেতার জবাব, ”সিডিইউ এজেন্ডা ২০৩০ নিয়ে চলছে। সেখানে বলা হয়েছে, যারা কাজ করতে চাইবেন না, তাদের জনগণের অর্থ থেকে চলা জনকল্যাণকর প্রকল্পের সুবিধা পাওয়ার ক্ষেত্রে কড়া মনোভাব দেখানো হবে। আর যারা কঠোর পরিশ্রম করেন, যাদের উপর করের বোঝা বেশি, তাদের সুবিধা দেয়া হবে।” কৃষি নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ”জার্মানি যদি সিও২ নিঃসরণ কমাতে চায়, তাহলে আর নিয়মকানুনের দরকার নেই, সমাধানের পথ দেখানো দরকার।” অভিবাসন ও অপরাধ সংক্রান্ত একটি প্রশ্নের জবাবে ম্যার্ৎস বলেন, ”অবৈধ অভিবাসীদের তাদের দেশে ফেরত পাঠানো হবে। তারা যে অপরাধের সঙ্গেও যুক্ত তা অস্বীকার করা যায় না।”
শলৎস যা বললেন :
এরপর আসেন এসপিডি নেতা এবং বর্তমান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস। ম্যার্ৎসের সঙ্গে হাত মেলানোর পর তিনি এই বিষয়ে একমত হন যে, ২৩ ফেব্রুয়ারির পর যে সরকার গঠিত হবে, তাতে তারা দুইজনে একসঙ্গে থাকবেন না। বিশেষজ্ঞদের মতে, ভোটের পর সিডিইউ এবং এসপিডি-র জোট সরকার গঠনের সম্ভাবনা খুবই প্রবল।
শলৎসকে প্রশ্ন করা হয়, কী করে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখবে জার্মানি? শলৎস বলেছেন, নিরাপত্তা ও অর্থনীতির নিরিখে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখাটা খুবই জরুরি। একইসঙ্গে তিনি অভিযোগ করেন, যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভান্স জার্মানির নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা করছেন। শলৎসকে প্রশ্ন করা হয়, জার্মানিতে তরুণ কর্মী কমছে, বয়স্কদের সংখ্যা বাড়ছে। এই সংকট কী করে সমাধান করবেন? শলৎস বলেছেন, ”কর্মীদের নিজেদের পছন্দমতো চাকরির ক্ষেত্র বাছাইয়ের স্বাধীনতা দেয়া হবে, কর্মসংস্থান আরো বাড়ানো হবে, বিদেশি দক্ষ শ্রমিকদের সুযোগ দেয়া হবে।” বাড়ি ভাড়া বেড়ে যাওয়া ও প্রবীণদের আর্থিক অসুবিধায় পড়া নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ”বাড়ি ভাড়ায় লাগাম পরাতে আইন করতে হবে। সকলের জন্য আবাসনের সুবিধা আরো বাড়ানো দরকার।” তিনি দাবি করেছেন, হাজার হাজার নতুন অ্যাপার্টমেন্ট তৈরির জন্য জমি তার প্রশাসন তৈরি করে রেখেছে।
এএফডি নেত্রী অ্যালিস ভাইডেলের প্রশ্নোত্তর :
এএফডি নেত্রীকে প্রথমেই এক ক্যাথলিক যাজক প্রশ্ন করেন, নার্সিংয়ের জন্য বিদেশিরা জার্মানিতে কাজের জন্য এলে তারা কি জার্মানিতে থাকতে পারবে? ভাইডেল বলেন, এএফডি অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে। তারা এটা মানেন, জার্মানির বৈধ অভিবাসীদের দরকার আছে। বাইডেলের দাবি, আফগান, সিরীয়, ইরাকিদের মতো বিদেশিদের জন্য জার্মানিতে অপরাধের সংখ্যা বাড়ছে। একজন সমকামী ভাইডেলকে প্রশ্ন করেন, তিনি নিজে সমলিঙ্গের মধ্যে সম্পর্কে বিশ্বাস করেন, অথচ তার দল এটাকে মানে না, তাহলে তার বিশ্বাসযোগ্যতা কোথায় থাকলো? ভাইডেল এই প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে গিয়ে বলেন, তার দল সব তরুণ নাগরিকের সমান আর্থিক সুয়োগ চায়।
তাকে প্রশ্ন করা হয়, বাচ্চাদের সেল ফোন ব্যবহার করার জন্য একটা বয়স কি বেঁধে দেয়া উচিত? এএফডি নেত্রী বলেন, এক্ষেত্রে বাবা-মা-কে রোল মডেল হতে হবে। তবে স্কুলে সেলফোনের ব্যবহার নিষিদ্ধ করাটা ভালো আইডিয়া বলে তিনি মনে করেন। ভাইডেল জানিয়েছেন, বিদ্যুত ব্যবহারের খরচ, কর ও আমলাতন্ত্রের আকার কমানো উচিত।
গ্রিন পার্টির নেতা রবার্ট হাবেকের বক্তব্য :
গ্রিন পার্টির নেতা রবার্ট হাকেককে বিদ্যুতের বিল, বাড়ি বাড়া, দিনযাপনের খরচ বেড়ে যাওয়া নিয়ে প্রস্নের মুখে পড়তে হয়। তিনি বলেন, ইউক্রেন য়ুদ্ধের ফলে তা বেড়েছে। তার দাবি, আমলাতন্ত্রর প্রভাব কমাতে হবে এবং তিনি সেই কাজ শুরু করেছেন। হাবেক বলেছেন, এসপিডি, গ্রিন ও এফজিপি জোটের আমলে সবচেয়ে বড় ভুল হলো, তারা দীর্ঘমেয়াদী কাঠামোগত প্রকল্পে অর্থবরাদ্দ করেনি। নির্বাচনী প্রচারে কোন বিষয় সবচেয়ে কম গুরুত্ব পাচ্ছে? হাবেক বলেন, পরিবেশই সবচেয়ে কম গুরুত্ব পাচ্ছে। সূত্র : এএফপি