নিউইয়র্ক ০১:৩২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে ইউরোপ: পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০২:০৯:৫৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৩০ মার্চ ২০২৪
  • / ৫০ বার পঠিত

ইউরোপ রাশিয়ার সঙ্গে একটি যুদ্ধ শুরু হওয়ার ঠিক আগের সময়টায় আছে এবং এই সময়টা শুরু হয়েছে আরও দুই বছর আগে। এমন সতর্কবার্তা উচ্চারণ করেছেন রাশিয়ার নিকট প্রতিবেশী দেশ পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী দোনাল্দ তুস্ক। তিনি বলেছেন, ইউরোপের সম্মিলিত স্বার্থের কারণেই রাশিয়ার কাছে ইউক্রেনকে হারতে দেওয়া যাবে না।

জার্মান সংবাদমাধ্যম ডি ভেল্টকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে পোলিশ প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘ইউরোপ একটি যুদ্ধ-পূর্ব অবস্থায় আছে এবং এটি অতীতের কোনো বিষয় নয়। এটিই এখন বাস্তব এবং দুই বছর আগেই এটি শুরু হয়ে গেছে।’

দোনাল্দ তুস্কের এই মন্তব্য এমন এক সময়ে এল, যার মাত্র কয়েক দিন আগেই রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, ন্যাটোর দেশগুলোকে আক্রমণের কোনো ইচ্ছা রাশিয়ার নেই। তবে ইউক্রেনের কোথাও যদি এফ-১৬ যুদ্ধবিমান ওড়ে, সেটি রাশিয়ার জন্য বৈধ লক্ষ্যবস্তু হিসেবে বিবেচিত হবে।

এই অবস্থায় ইউক্রেনকে আরও বেশি সামরিক সহায়তা দেওয়ার আবেদন জানিয়ে পোলিশ প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘আগামী দুই বছরের যুদ্ধই সবকিছু নির্ধারণ করে দেবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সবচেয়ে বেশি সংকটসময় সময়ে বাস করছি।’

রাশিয়ার দিবালোকেই সবার চোখের সামনে কিয়েভে হাইপারসোনিক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে আক্রমণ করেছে উল্লেখ করে দোনাল্দ তুস্ক বলেন, ‘ইউরোপের নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে ভাবতে হবে।’ এ সময় তিনি আরও বলেন, রাশিয়ার তরফ থেকে মস্কোর ক্রোকাস হলে সন্ত্রাসী হামলায় ইউক্রেনকে দায়ী করার অর্থ হলো—রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউক্রেনের বেসামরিক কাঠামোতে হামলার বৈধতা খোঁজার চেষ্টা করছেন।

চলতি বছরের নভেম্বরে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে কে জয়ী হতে পারেন, তার ওপর অনেকটাই নির্ভর করবে দেশটির সঙ্গে ন্যাটোর সম্পর্ক কেমন হবে। সে বিষয়ে তুস্ক বলেন, ন্যাটোর সমান্তরালে কোনো অবকাঠামো দরকার নেই ইউরোপের। তবে ইউরোপ সামরিকভাবে আরও বেশি আত্মনির্ভরশীল হলে যুক্তরাষ্ট্র আরও বেশি আকর্ষণীয় সহযোগী হয়ে উঠবে।

উল্লেখ্য, পোল্যান্ড বর্তমানে দেশটির মোট জিডিপির ৪ শতাংশ ব্যয় করে সামরিক খাতে। তবে ইউরোপের অন্যান্য দেশগুলো এখনো ২ শতাংশের কাছেই পৌঁছাতে পারেনি। ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোর জন্য সামরিক বাজেট ২ শতাংশ করার একটি বাধ্যবাধকতা আছে।

ইউরোপীয় কাউন্সিলের সাবেক এই প্রেসিডেন্ট ইউরোপকে সময়ের আগেই যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। এ সময় তিনি উল্লেখ করেন, স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ ইউরোপীয় দেশগুলোর নেতাদের যত্রতত্র ‘যুদ্ধ’ শব্দটি ব্যবহার বন্ধ করার বিষয়ে আহ্বান জানিয়েছেন। কারণ, জনগণকে ভয় দেখানো ঠিক হবে না।

এ বিষয়ে রাশিয়াকে ইঙ্গিত করে তুস্ক বলেন, তিনি ইউরোপের যে অংশে থাকেন, সেখানে যুদ্ধ আর কোনো বিমূর্ত ধারণা নয় বরং সেখানে যেকোনো ঘটনা ঘটা খুব করে সম্ভব। তিনি আরও বলেন, ‘আমি জানি এটা শুনতে খুবই ভয়াবহ, বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের কাছে, কিন্তু আমাদের মানসিকভাবে নতুন যুগের আগমনে অভ্যস্ত হতে হবে। একটি যুদ্ধ-পূর্ব যুগ।’

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে ইউরোপ: পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশের সময় : ০২:০৯:৫৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৩০ মার্চ ২০২৪

ইউরোপ রাশিয়ার সঙ্গে একটি যুদ্ধ শুরু হওয়ার ঠিক আগের সময়টায় আছে এবং এই সময়টা শুরু হয়েছে আরও দুই বছর আগে। এমন সতর্কবার্তা উচ্চারণ করেছেন রাশিয়ার নিকট প্রতিবেশী দেশ পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী দোনাল্দ তুস্ক। তিনি বলেছেন, ইউরোপের সম্মিলিত স্বার্থের কারণেই রাশিয়ার কাছে ইউক্রেনকে হারতে দেওয়া যাবে না।

জার্মান সংবাদমাধ্যম ডি ভেল্টকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে পোলিশ প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘ইউরোপ একটি যুদ্ধ-পূর্ব অবস্থায় আছে এবং এটি অতীতের কোনো বিষয় নয়। এটিই এখন বাস্তব এবং দুই বছর আগেই এটি শুরু হয়ে গেছে।’

দোনাল্দ তুস্কের এই মন্তব্য এমন এক সময়ে এল, যার মাত্র কয়েক দিন আগেই রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, ন্যাটোর দেশগুলোকে আক্রমণের কোনো ইচ্ছা রাশিয়ার নেই। তবে ইউক্রেনের কোথাও যদি এফ-১৬ যুদ্ধবিমান ওড়ে, সেটি রাশিয়ার জন্য বৈধ লক্ষ্যবস্তু হিসেবে বিবেচিত হবে।

এই অবস্থায় ইউক্রেনকে আরও বেশি সামরিক সহায়তা দেওয়ার আবেদন জানিয়ে পোলিশ প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘আগামী দুই বছরের যুদ্ধই সবকিছু নির্ধারণ করে দেবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সবচেয়ে বেশি সংকটসময় সময়ে বাস করছি।’

রাশিয়ার দিবালোকেই সবার চোখের সামনে কিয়েভে হাইপারসোনিক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে আক্রমণ করেছে উল্লেখ করে দোনাল্দ তুস্ক বলেন, ‘ইউরোপের নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে ভাবতে হবে।’ এ সময় তিনি আরও বলেন, রাশিয়ার তরফ থেকে মস্কোর ক্রোকাস হলে সন্ত্রাসী হামলায় ইউক্রেনকে দায়ী করার অর্থ হলো—রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউক্রেনের বেসামরিক কাঠামোতে হামলার বৈধতা খোঁজার চেষ্টা করছেন।

চলতি বছরের নভেম্বরে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে কে জয়ী হতে পারেন, তার ওপর অনেকটাই নির্ভর করবে দেশটির সঙ্গে ন্যাটোর সম্পর্ক কেমন হবে। সে বিষয়ে তুস্ক বলেন, ন্যাটোর সমান্তরালে কোনো অবকাঠামো দরকার নেই ইউরোপের। তবে ইউরোপ সামরিকভাবে আরও বেশি আত্মনির্ভরশীল হলে যুক্তরাষ্ট্র আরও বেশি আকর্ষণীয় সহযোগী হয়ে উঠবে।

উল্লেখ্য, পোল্যান্ড বর্তমানে দেশটির মোট জিডিপির ৪ শতাংশ ব্যয় করে সামরিক খাতে। তবে ইউরোপের অন্যান্য দেশগুলো এখনো ২ শতাংশের কাছেই পৌঁছাতে পারেনি। ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোর জন্য সামরিক বাজেট ২ শতাংশ করার একটি বাধ্যবাধকতা আছে।

ইউরোপীয় কাউন্সিলের সাবেক এই প্রেসিডেন্ট ইউরোপকে সময়ের আগেই যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। এ সময় তিনি উল্লেখ করেন, স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ ইউরোপীয় দেশগুলোর নেতাদের যত্রতত্র ‘যুদ্ধ’ শব্দটি ব্যবহার বন্ধ করার বিষয়ে আহ্বান জানিয়েছেন। কারণ, জনগণকে ভয় দেখানো ঠিক হবে না।

এ বিষয়ে রাশিয়াকে ইঙ্গিত করে তুস্ক বলেন, তিনি ইউরোপের যে অংশে থাকেন, সেখানে যুদ্ধ আর কোনো বিমূর্ত ধারণা নয় বরং সেখানে যেকোনো ঘটনা ঘটা খুব করে সম্ভব। তিনি আরও বলেন, ‘আমি জানি এটা শুনতে খুবই ভয়াবহ, বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের কাছে, কিন্তু আমাদের মানসিকভাবে নতুন যুগের আগমনে অভ্যস্ত হতে হবে। একটি যুদ্ধ-পূর্ব যুগ।’