নিউইয়র্ক ০১:৪৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

তুরস্কের স্থানীয় সরকার নির্বাচনে এরদোগানের প্রার্থীদের পরাজয়

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৬:১২:০২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১ এপ্রিল ২০২৪
  • / ৫০ বার পঠিত

ঐতিহাসিক বিজয়ের ফলে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়্যিপ এরদোগানকে হতবাক করে দিয়েছে বিরোধী দল। ইস্তাম্বুল ও আঙ্কারার মতো বড় শহরে তারা বিজয় পেয়েছে। এই বিজয়কে দেখা হচ্ছে এরদোগানের বিরুদ্ধে একটি গণভোট হিসেবে। নির্বাচনে পরাজয় মেনে নিয়েছেন তিনি। মাত্র কয়েকদিন আগে তিনি তৃতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব হাতে নিয়েছেন। এর মধ্যেই ওই দুটি বৃহৎ শহর তার হাতছাড়া হয়ে গেল। একে এরদোগানের জন্য সবচেয়ে বড় এক আঘাত হিসেবে দেখা হচ্ছে। তিনি বেড়ে উঠেছেন এবং মেয়র হয়েছেন ইস্তাম্বুলে। সেখানে প্রচারণায় নেতৃত্ব দিয়েছেন। কিন্তু তার সামনে কঠিন চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন সম্মিলিত বিরোধী দলের নেতা একরেম ইমামোগলু।

তিনি ধর্মনিপেক্ষ সিএইচপির হয়ে ২০১৯ সালে প্রথম এই শহরে এরদোগানের প্রার্থীকে পরাজিত করে মেয়র নির্বাচিত হন। রোববার অনুষ্ঠিত নির্বাচনে তিনি সেই জয়ের ধারা ধরে রেখেছেন। রোববার দিবাগত রাতভর পুরো ইস্তাম্বুল, আঙ্কারা তার সমর্থকে ছিল পূর্ণ। তারা নেচে গেয়ে, আতশবাজি পুড়িয়ে, পতাকা দুলিয়ে, উল্লাস করে পুরো রাত কাটিয়েছেন। কত মানুষ এতে শরীক হয়েছিলেন, তার সংখ্য অগণন। একরেম ইমামোগলু ও তার দলের প্রার্থীরাই যে শুধু এই নির্বাচনে জয়ী হয়ে এরদোগানের সামনে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন, বিষয়টি একেবারেই তেমন নয়। তার চেয়ে এরদোগানের সামনে আরও বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠলেন একরেম ইমামোগলু। ২০২৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তিনি হতে পারেন এরদোগানের শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী। তার প্রতি তরুণ প্রজন্ম যে সমর্থন দেখিয়েছে তা অব্যাহত থাকলে এরদোগানের কপালে চিন্তার ভাজ পড়া স্বাভাবিক।

যদিও এরদোগান তুরস্কের মেগাসিটি ইস্তাম্বুলে নতুন যুগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তবু এখানে শতকরা ৫০ ভাগের বেশি ভোট পেয়েছেন ইস্তাম্বুলের ক্ষমতাসীন মেয়র ইমামোগলু। তিনি এরদোগানের দল একে পার্টির প্রার্থীর চেয়ে শতকরা ১১ পয়েন্টে এগিয়ে ছিলেন। এরদোগান ক্ষমতায় এসেছেন ২১ বছর আগে। তারপর এটাই প্রথমবার তার দল সারাদেশে ব্যালটে পরাজিত হলো। ওদিকে রাজধানী আঙ্কারায় বিরোধী দলের মেয়র মানসুর ইয়াভাস তার প্রতিদ্বন্দ্বির চেয়ে শতকরা ৬০ ভাগ ভোট বেশি পেয়ে এগিয়ে ছিলেন। ফলে অর্ধেকের কম ভোট গণনা হওয়ার সময়েই তারা বিজয় ঘোষণা করে। সঙ্গে সঙ্গে সব মূল সড়কে নেমে পড়েন তার সমর্থকরা। তারা পতাকা দুলিয়ে, গাড়ির হর্ন বাড়িয়ে উল্লাস করতে থাকেন। এক কথায় রোববার দিবাগত রাত জেগেছিল এসব শহর। উল্লেখ্য, তুরস্কের ইজমির, বুরসা, আদানা, অবকাশযাপন কেন্দ্র আন্তালিয়াসহ বড় বড় শহরেও জয়ের পথে ছিল সিএইচপি।

এমন অবস্থায় ৭০ বছর বয়সী এরদোগান পরাজয় স্বীকার করেছেন। বলেছেন, যেমনটা তিনি আশা করেছিলেন ফল তেমন হয়নি। আঙ্কারায় সমর্থকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, এটাই আমাদের শেষ নয়। এটা আমাদের টার্নিং পয়েন্ট। আরও বলেছেন, সব সময়ই জনগণের ইচ্ছাকে সম্মান করেছেন। এবারও তাদের রায়ের প্রতি সম্মান দেখাবেন।

নির্বাচনী প্রচারণাকালে এরদোগান বলেছেন, এটাই তার শেষ। কারণ, ২০২৮ সালে তার প্রেসিডেন্সিয়াল মেয়াদ শেখ হবে। পক্ষান্তরে সিএইচপি পার্টির চেয়ারম্যান ওজগুর ওজেল তার সফলতায় উদ্বেলিত। তিনি ঐতিহাসিক ভোটে তাদেরকে বিজয়ী করার জন্য ভোটারদের প্রশংসা করেন। বলেন, তারা (ভোটার) আমাদের দেশে নতুন এক রাজনৈতিক পরিবেশের দরজা উন্মুক্ত করে দিতে চায়।

ইস্তাম্বুলে জনতার ঢল নামে সারাচ্যানে টাউন হলের বাইরে। এটি ইস্তাম্বুলের সবচেয়ে পুরনো এলাকা। সেখানে তারা তুরস্কের পতাকা দোলান। তুরস্কের প্রতিষ্ঠাতা কামাল আতাতুর্কের ছবির পাশে তারা একরেম ইমামোগলুর ছবিসমৃদ্ধ ব্যানার প্রদর্শন করেন। ইমামোগলু বলেছেন, আমরা বলতে চাই, আমাদের নাগরিকরা আমাদের ওপর আস্থা ও বিশ্বাস রেখে পুরস্কৃত করেছেন।

উল্লেখ্য, ২০২৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ইমামোগলু এবং মানসুর ইয়াভাসকে বড় মাপের প্রার্থী হিসেবে দেখা হচ্ছে। ইমামোগলুর সমর্থকরা ড্রামের তালে তালে নেচে গাইতে থাকেন- ‘এভরিথিং উইল বি ফাইন’। ৫ বছর আগে এরদোগানের দলের কাছ থেকে ইস্তাম্বুলে মেয়র হিসেবে জয় পাওয়ার পর এই স্লোগান দিয়েছিলেন ইমামোগলু। বলেছিলেন- ‘ফুল স্পিড অ্যাহেড’। সূত্র : মানবজমিন

হককথা/নাছরিন

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

তুরস্কের স্থানীয় সরকার নির্বাচনে এরদোগানের প্রার্থীদের পরাজয়

প্রকাশের সময় : ০৬:১২:০২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১ এপ্রিল ২০২৪

ঐতিহাসিক বিজয়ের ফলে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়্যিপ এরদোগানকে হতবাক করে দিয়েছে বিরোধী দল। ইস্তাম্বুল ও আঙ্কারার মতো বড় শহরে তারা বিজয় পেয়েছে। এই বিজয়কে দেখা হচ্ছে এরদোগানের বিরুদ্ধে একটি গণভোট হিসেবে। নির্বাচনে পরাজয় মেনে নিয়েছেন তিনি। মাত্র কয়েকদিন আগে তিনি তৃতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব হাতে নিয়েছেন। এর মধ্যেই ওই দুটি বৃহৎ শহর তার হাতছাড়া হয়ে গেল। একে এরদোগানের জন্য সবচেয়ে বড় এক আঘাত হিসেবে দেখা হচ্ছে। তিনি বেড়ে উঠেছেন এবং মেয়র হয়েছেন ইস্তাম্বুলে। সেখানে প্রচারণায় নেতৃত্ব দিয়েছেন। কিন্তু তার সামনে কঠিন চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন সম্মিলিত বিরোধী দলের নেতা একরেম ইমামোগলু।

তিনি ধর্মনিপেক্ষ সিএইচপির হয়ে ২০১৯ সালে প্রথম এই শহরে এরদোগানের প্রার্থীকে পরাজিত করে মেয়র নির্বাচিত হন। রোববার অনুষ্ঠিত নির্বাচনে তিনি সেই জয়ের ধারা ধরে রেখেছেন। রোববার দিবাগত রাতভর পুরো ইস্তাম্বুল, আঙ্কারা তার সমর্থকে ছিল পূর্ণ। তারা নেচে গেয়ে, আতশবাজি পুড়িয়ে, পতাকা দুলিয়ে, উল্লাস করে পুরো রাত কাটিয়েছেন। কত মানুষ এতে শরীক হয়েছিলেন, তার সংখ্য অগণন। একরেম ইমামোগলু ও তার দলের প্রার্থীরাই যে শুধু এই নির্বাচনে জয়ী হয়ে এরদোগানের সামনে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন, বিষয়টি একেবারেই তেমন নয়। তার চেয়ে এরদোগানের সামনে আরও বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠলেন একরেম ইমামোগলু। ২০২৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তিনি হতে পারেন এরদোগানের শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী। তার প্রতি তরুণ প্রজন্ম যে সমর্থন দেখিয়েছে তা অব্যাহত থাকলে এরদোগানের কপালে চিন্তার ভাজ পড়া স্বাভাবিক।

যদিও এরদোগান তুরস্কের মেগাসিটি ইস্তাম্বুলে নতুন যুগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তবু এখানে শতকরা ৫০ ভাগের বেশি ভোট পেয়েছেন ইস্তাম্বুলের ক্ষমতাসীন মেয়র ইমামোগলু। তিনি এরদোগানের দল একে পার্টির প্রার্থীর চেয়ে শতকরা ১১ পয়েন্টে এগিয়ে ছিলেন। এরদোগান ক্ষমতায় এসেছেন ২১ বছর আগে। তারপর এটাই প্রথমবার তার দল সারাদেশে ব্যালটে পরাজিত হলো। ওদিকে রাজধানী আঙ্কারায় বিরোধী দলের মেয়র মানসুর ইয়াভাস তার প্রতিদ্বন্দ্বির চেয়ে শতকরা ৬০ ভাগ ভোট বেশি পেয়ে এগিয়ে ছিলেন। ফলে অর্ধেকের কম ভোট গণনা হওয়ার সময়েই তারা বিজয় ঘোষণা করে। সঙ্গে সঙ্গে সব মূল সড়কে নেমে পড়েন তার সমর্থকরা। তারা পতাকা দুলিয়ে, গাড়ির হর্ন বাড়িয়ে উল্লাস করতে থাকেন। এক কথায় রোববার দিবাগত রাত জেগেছিল এসব শহর। উল্লেখ্য, তুরস্কের ইজমির, বুরসা, আদানা, অবকাশযাপন কেন্দ্র আন্তালিয়াসহ বড় বড় শহরেও জয়ের পথে ছিল সিএইচপি।

এমন অবস্থায় ৭০ বছর বয়সী এরদোগান পরাজয় স্বীকার করেছেন। বলেছেন, যেমনটা তিনি আশা করেছিলেন ফল তেমন হয়নি। আঙ্কারায় সমর্থকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, এটাই আমাদের শেষ নয়। এটা আমাদের টার্নিং পয়েন্ট। আরও বলেছেন, সব সময়ই জনগণের ইচ্ছাকে সম্মান করেছেন। এবারও তাদের রায়ের প্রতি সম্মান দেখাবেন।

নির্বাচনী প্রচারণাকালে এরদোগান বলেছেন, এটাই তার শেষ। কারণ, ২০২৮ সালে তার প্রেসিডেন্সিয়াল মেয়াদ শেখ হবে। পক্ষান্তরে সিএইচপি পার্টির চেয়ারম্যান ওজগুর ওজেল তার সফলতায় উদ্বেলিত। তিনি ঐতিহাসিক ভোটে তাদেরকে বিজয়ী করার জন্য ভোটারদের প্রশংসা করেন। বলেন, তারা (ভোটার) আমাদের দেশে নতুন এক রাজনৈতিক পরিবেশের দরজা উন্মুক্ত করে দিতে চায়।

ইস্তাম্বুলে জনতার ঢল নামে সারাচ্যানে টাউন হলের বাইরে। এটি ইস্তাম্বুলের সবচেয়ে পুরনো এলাকা। সেখানে তারা তুরস্কের পতাকা দোলান। তুরস্কের প্রতিষ্ঠাতা কামাল আতাতুর্কের ছবির পাশে তারা একরেম ইমামোগলুর ছবিসমৃদ্ধ ব্যানার প্রদর্শন করেন। ইমামোগলু বলেছেন, আমরা বলতে চাই, আমাদের নাগরিকরা আমাদের ওপর আস্থা ও বিশ্বাস রেখে পুরস্কৃত করেছেন।

উল্লেখ্য, ২০২৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ইমামোগলু এবং মানসুর ইয়াভাসকে বড় মাপের প্রার্থী হিসেবে দেখা হচ্ছে। ইমামোগলুর সমর্থকরা ড্রামের তালে তালে নেচে গাইতে থাকেন- ‘এভরিথিং উইল বি ফাইন’। ৫ বছর আগে এরদোগানের দলের কাছ থেকে ইস্তাম্বুলে মেয়র হিসেবে জয় পাওয়ার পর এই স্লোগান দিয়েছিলেন ইমামোগলু। বলেছিলেন- ‘ফুল স্পিড অ্যাহেড’। সূত্র : মানবজমিন

হককথা/নাছরিন