নিউইয়র্ক ০৫:৪৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

মণিপুরে নতুন করে সংঘর্ষ শুরু, একজন নিহত

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৭:৪৯:২২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৩
  • / ৪৩ বার পঠিত

মণিপুরে নতুন করে জাতিগত সংঘাত শুরু। ছবি : সংগৃহীত

 আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মণিপুরের বিবদমান দুই গোষ্ঠী কুকি ও মেইতেইদের মধ্যে আবারও সংঘাত ছড়িয়ে পড়েছে। এসময় সংঘর্ষে মেইতি উপজাতির একজন নিহত হন। গত চলতি বছরের মে মাসে এই দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষে বহু প্রানহানির ঘটনা ঘটে। এর আগে ৪ ডিসেম্বর তেংনোপাল জেলায় ছড়িয়ে যাওয়া সংঘাতের ২৬ দিন পর আবারও সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়লো রাজ্যটিতে। সেসময় ১৩ জন নিহতের ঘটনা ঘটে।

মণিপুরে রাজ্যের কাংপোকপি জেলার কংচুপ থানার অন্তর্গত নাখুজং ও সিংদা কুকি গ্রামে এই ঘটনা ঘটেছে। এছাড়াও সীমান্তবর্তী মোরেহ শহরে সংঘর্ষ দমনে পুলিশ কমান্ডো ও জঙ্গিদের মধ্যে বন্দুকযুদ্ধে একজন কমান্ডো গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন।

এর আগে ৩ মে’র পরের দিনগুলোতে বেশিরভাগ সহিংসতা সংঘটিত হয়েছিল রাজ্যে। আর তখন থেকে সম্প্রদায়ের মধ্যে আক্রমণের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রয়েছে। সরকারী এক প্রতিবেদনে দেখা যায়, এ পর্যন্ত সহিংসতায় ১৯৭ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এছাড়াও উভয় সম্প্রদায়ের ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষ তাদের বাড়িঘর থেকে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। সংঘর্ষে কুকি অধ্যুষিত পাহাড়ের মেইতিরা তাদের জীবন বাঁচাতে ঘর-বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যান। অন্যদিকে মেইতি অধ্যুষিত ইম্ফল উপত্যকার কুকিরা তাদেরকে বাড়িঘর থেকে তাড়া করেছে।

শনিবার হিন্দুস্তান টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানান, শনিবার ভোর সাড়ে ৩টার দিকে কুকি ও মেইতেই সম্প্রদায়ের গ্রাম প্রতিরক্ষা স্বেচ্ছাসেবকদের মধ্যে কংচুপ থানার অন্তর্গত নাখুজং এবং সিংদা কুকি গ্রামের পাহাড়ি শ্রেণিগুলোর মধ্যে গুলি বিনিময়ের ঘটনা ঘটে। গুলি বিনিময় চলে ভোর ৪টা ২০ মিনিট পর্যন্ত।

এদিকে গুলিবর্ষণে ইম্ফল পশ্চিমের বাসিন্দা নিংমবাম জেমস (৩২) নামে একজন মেইতি ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন। পরে তাকে ইম্ফলের জওহরলাল নেহরু ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সে (জেএনআইএমএস) নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নিংমবাম মারা যান।

দ্যা কমিটি অন ট্রাইবাল ইউনিটি (সিওটিইউ)’র কাংকোপকি জেলার কুকির সক্রিয় এক সমর্থক জানান, কুকিদের গ্রামে মেইতিদের কিছু লোক জ্বালানি কাঠ সংগ্রহ করতে গেলে এ নিয়ে বিরোধ শুরু হয়। পরেই গুলি বিনিময়ের শব্দ শোনা যায়। এ প্রসঙ্গে লেইমাখং এরিয়া প্রোটেকশন কমিটির চেয়ারম্যান কে লৌভাম (নাখুজং এর নিকটবর্তী এলাকার বাসিন্দা) বলেন, নাখুজং গ্রামে প্রায় ৩০টি বাড়ি ছিল। ২ জুন মেইতিদের আক্রমণে কুকির বাসিন্দারা অন্য গ্রামে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়।

এর আগে গত ৩ মে থেকেই মণিপুর জাতিগত সহিংসতার কবলে পড়েছে। কারণ রাজ্যটির সবচেয়ে জনবহুল সম্প্রদায় মেইতি ও কুকি উপজাতিদের মধ্যে সংঘর্ষ দীর্ঘ দিনের। মে মাসের পরের দিনগুলোতে বেশিরভাগ সহিংসতা সংঘটিত হয়েছিল। এরপর গত ৪ ডিসেম্বর টেংনোপাল জেলার সহিংসতায় ১৩ জন নিহত হন। এরপর থেকে উভয় সম্প্রদায়ে বিরতিহীনভাবে সংঘর্ষ চলছে। সরকারী হিসাব মতে, এ পর্যন্ত সহিংসতায় রাজ্যটিতে ১৯৭ জন মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। এছাড়াও উভয় সম্প্রদায়ের ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়।

এদিকে ক্রমাগত এমন সহিংসতার ফলে মণিপুরে সম্প্রদায়ভিত্তিক ‘গ্রাম প্রতিরক্ষা স্বেচ্ছাসেবক’ নামে একটি সশস্ত্র গ্রুপ সৃষ্টির পর থেকে অঞ্চলটির পরিবেশ প্রায়ই অস্থিতিশীল হয়ে থাকছে। সূত্র : দ্যা হিন্দুস্তান টাইমস

হককথা/নাছরিন

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

মণিপুরে নতুন করে সংঘর্ষ শুরু, একজন নিহত

প্রকাশের সময় : ০৭:৪৯:২২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৩

 আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মণিপুরের বিবদমান দুই গোষ্ঠী কুকি ও মেইতেইদের মধ্যে আবারও সংঘাত ছড়িয়ে পড়েছে। এসময় সংঘর্ষে মেইতি উপজাতির একজন নিহত হন। গত চলতি বছরের মে মাসে এই দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষে বহু প্রানহানির ঘটনা ঘটে। এর আগে ৪ ডিসেম্বর তেংনোপাল জেলায় ছড়িয়ে যাওয়া সংঘাতের ২৬ দিন পর আবারও সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়লো রাজ্যটিতে। সেসময় ১৩ জন নিহতের ঘটনা ঘটে।

মণিপুরে রাজ্যের কাংপোকপি জেলার কংচুপ থানার অন্তর্গত নাখুজং ও সিংদা কুকি গ্রামে এই ঘটনা ঘটেছে। এছাড়াও সীমান্তবর্তী মোরেহ শহরে সংঘর্ষ দমনে পুলিশ কমান্ডো ও জঙ্গিদের মধ্যে বন্দুকযুদ্ধে একজন কমান্ডো গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন।

এর আগে ৩ মে’র পরের দিনগুলোতে বেশিরভাগ সহিংসতা সংঘটিত হয়েছিল রাজ্যে। আর তখন থেকে সম্প্রদায়ের মধ্যে আক্রমণের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রয়েছে। সরকারী এক প্রতিবেদনে দেখা যায়, এ পর্যন্ত সহিংসতায় ১৯৭ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এছাড়াও উভয় সম্প্রদায়ের ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষ তাদের বাড়িঘর থেকে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। সংঘর্ষে কুকি অধ্যুষিত পাহাড়ের মেইতিরা তাদের জীবন বাঁচাতে ঘর-বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যান। অন্যদিকে মেইতি অধ্যুষিত ইম্ফল উপত্যকার কুকিরা তাদেরকে বাড়িঘর থেকে তাড়া করেছে।

শনিবার হিন্দুস্তান টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানান, শনিবার ভোর সাড়ে ৩টার দিকে কুকি ও মেইতেই সম্প্রদায়ের গ্রাম প্রতিরক্ষা স্বেচ্ছাসেবকদের মধ্যে কংচুপ থানার অন্তর্গত নাখুজং এবং সিংদা কুকি গ্রামের পাহাড়ি শ্রেণিগুলোর মধ্যে গুলি বিনিময়ের ঘটনা ঘটে। গুলি বিনিময় চলে ভোর ৪টা ২০ মিনিট পর্যন্ত।

এদিকে গুলিবর্ষণে ইম্ফল পশ্চিমের বাসিন্দা নিংমবাম জেমস (৩২) নামে একজন মেইতি ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন। পরে তাকে ইম্ফলের জওহরলাল নেহরু ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সে (জেএনআইএমএস) নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নিংমবাম মারা যান।

দ্যা কমিটি অন ট্রাইবাল ইউনিটি (সিওটিইউ)’র কাংকোপকি জেলার কুকির সক্রিয় এক সমর্থক জানান, কুকিদের গ্রামে মেইতিদের কিছু লোক জ্বালানি কাঠ সংগ্রহ করতে গেলে এ নিয়ে বিরোধ শুরু হয়। পরেই গুলি বিনিময়ের শব্দ শোনা যায়। এ প্রসঙ্গে লেইমাখং এরিয়া প্রোটেকশন কমিটির চেয়ারম্যান কে লৌভাম (নাখুজং এর নিকটবর্তী এলাকার বাসিন্দা) বলেন, নাখুজং গ্রামে প্রায় ৩০টি বাড়ি ছিল। ২ জুন মেইতিদের আক্রমণে কুকির বাসিন্দারা অন্য গ্রামে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়।

এর আগে গত ৩ মে থেকেই মণিপুর জাতিগত সহিংসতার কবলে পড়েছে। কারণ রাজ্যটির সবচেয়ে জনবহুল সম্প্রদায় মেইতি ও কুকি উপজাতিদের মধ্যে সংঘর্ষ দীর্ঘ দিনের। মে মাসের পরের দিনগুলোতে বেশিরভাগ সহিংসতা সংঘটিত হয়েছিল। এরপর গত ৪ ডিসেম্বর টেংনোপাল জেলার সহিংসতায় ১৩ জন নিহত হন। এরপর থেকে উভয় সম্প্রদায়ে বিরতিহীনভাবে সংঘর্ষ চলছে। সরকারী হিসাব মতে, এ পর্যন্ত সহিংসতায় রাজ্যটিতে ১৯৭ জন মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। এছাড়াও উভয় সম্প্রদায়ের ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়।

এদিকে ক্রমাগত এমন সহিংসতার ফলে মণিপুরে সম্প্রদায়ভিত্তিক ‘গ্রাম প্রতিরক্ষা স্বেচ্ছাসেবক’ নামে একটি সশস্ত্র গ্রুপ সৃষ্টির পর থেকে অঞ্চলটির পরিবেশ প্রায়ই অস্থিতিশীল হয়ে থাকছে। সূত্র : দ্যা হিন্দুস্তান টাইমস

হককথা/নাছরিন