নিউইয়র্ক ০৮:০৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৩ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

দরকারে আঙুল কেটে ফেলবেন মিয়ানমারের নাগরিকরা

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ১১:৫০:২১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
  • / ৬৯ বার পঠিত

মিয়ানমারের জান্তা সরকারের বিতর্কিত এক ফরমানে এখন উত্তপ্ত হয়ে আছে দেশটির নাগরিকরা। বিশেষ করে রাগে-ক্ষোভে ফুঁসছে। সেনা সঙ্কটে পড়ে জান্তা সম্প্রতি নতুন এক আদেশে জানিয়েছে, দেশের তরুণ সমাজকে বাধ্যতামূলকভাবে সামিরক বাহিনীর প্রশিক্ষণ নিতে হবে। সেই সঙ্গে অবসরে যাওয়া সেনা সদস্যদেরও আবার ব্যারাকে ফিরিয়ে আনার ঘোষণা দিয়েছে। সেনাবাহিনীতে জনবলের শূন্যতা পূরণে নতুন করে সেনা ভর্তির এই উদ্যোগ নিয়েছে মিয়ানমার জান্তা। বছরে ৬০ হাজার তরুণ-তরুণীকে সেনাবাহিনীতে ভর্তির উদ্যোগে ফুঁসে উঠেছে দেশটির জনগণ।

বিদ্রোহীদের আক্রমণের মুখে একের পর এক প্রদেশ হারিয়ে এখন দিশেহারা মিয়ানমার সেনারা। প্রতিদিনই যুদ্ধে সেনা হারাতে হচ্ছে, সেই সঙ্গে অর্থনৈতিক সঙ্কটও মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। সংঘাতে প্রতিনিয়ত হতাহত হচ্ছে সরকারি সেনারা, অনেকে বিদ্রোহীদের কাছে আত্মসমর্পণ করছে, বা পালিয়ে যাচ্ছে প্রতিবেশী দেশে। যেই জান্তা একটি সময় নিজেদেরকে বিশ্বের অন্যতম সেরা সুপ্রশিক্ষিত ও পেশাদার বাহিনী বলে নিজেদের দাবি করতো, এখন তাদেরই ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি। বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে একটি যুদ্ধ জিততে না পারায় উল্টো নাগরিকদের উপর খড়্‌গহস্ত হয়েছে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর প্রধান।

তাই সেনাভর্তির সাম্প্রতিক প্রক্রিয়াটি তাদের জন্য লজ্জাজনক পরিস্থিতি তৈরি করেছে। সেই সঙ্গে আইনের নিন্দা জানিয়ে, সামাজিক মাধ্যমে জান্তাকে নতুনভাবে প্রতিরোধের ডাক দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি প্রক্রিয়া বন্ধে অভিনব সব উপায়ের পথে হাঁটতে চলেছে দেশটির নাগরিকরা। সাম্প্রতিক এক জরিপে দেখা গেছে, সেনা নিয়োগে জান্তা সিদ্ধান্তে মিয়ানমারের বেশিরভাগ নাগরিক উচ্চ স্বরেই না বলেছেন, দেখিয়েছেন নেতিবাচক মনোভাব। উল্টো বলছেন, সেনা ভর্তি এড়াতে হয় তারা দেশ ছেড়ে পালাবেন, নাহলে বিদ্রোহীদের সাথে যোগ দেবেন। তবু জান্তার দলে যোগ দেবেন না।

তবে জান্তাকে দেশটির নাগরিকরা কতোটা ঘৃণা করে, তার মনোভাব পাওয়া গেছে দেশটির তরুণ সমাজের কাছে থেকে। তারা বলছেন, ভর্তি এড়াতে নিজেদের জখম করতেও তারা প্রস্তুত। দরকারে দু্ই একটা আঙুল কেটে ফেলবেন তারা। আর তরুণীরা জানিয়েছেন, তারা দ্রুত বিয়ে করার কথাও ভাবছেন। বৌদ্ধ সন্ন্যাসী হলেও সেনাভর্তি থেকে ছাড় দেয়া হয়। তাই পুরুষদের অনেকে সেকথাই ভাবছেন। নাহলে ভর্তি এড়াতে পদস্থ সেনা কর্মকর্তাদের ঘুষ দেয়ার মতন বিকল্পের কথাও ভাবছেন তারা। কেউ বা পাচারকারীদের সহায়তায় দেশ ছাড়তে চাইছে, কেউ কেউ নিজেকে পঙ্গু করা, বা সন্ন্যাস গ্রহণের কথা ভাবছে।

অনেকে এমনও বলছেন, গণতন্ত্রকামী বিদ্রোহী দলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার চেয়ে আত্মহত্যা করাও ভালো। যদি তাদেরকে বাধ্য করা হয়, তাহলে সেপথেই হাঁচার কথা জানিয়েছেন অনেকে। তাদের সোজা কথা, নিজ দেশে অন্য ভাই-বোন, বাবা-মা ও আত্মীয়-স্বজন দূরের কথা, কারো বিরুদ্ধেই অস্ত্র ধরতে নারাজ তারা। সম্প্রতি দেশটির সেনা সরকার জানিয়েছে, বাধ্যতামূলক সেনাদলে নিয়োগ আইন দ্রুতই কার্যকর করা হচ্ছে। এর আওতায়, তরুণদের অন্তত দুই বছর সশস্ত্র বাহিনীর চাকরি করতে হবে। সংকটকালীন জাতীয় জরুরি অবস্থা বিবেচনায়, যা পাঁচ বছর পর্যন্ত বাড়তে পারে। এতে কী রক্ষা হবে, জান্তা সরকারের ভরাডুবি? সূত্র : একাত্তর টিভি।

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

দরকারে আঙুল কেটে ফেলবেন মিয়ানমারের নাগরিকরা

প্রকাশের সময় : ১১:৫০:২১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

মিয়ানমারের জান্তা সরকারের বিতর্কিত এক ফরমানে এখন উত্তপ্ত হয়ে আছে দেশটির নাগরিকরা। বিশেষ করে রাগে-ক্ষোভে ফুঁসছে। সেনা সঙ্কটে পড়ে জান্তা সম্প্রতি নতুন এক আদেশে জানিয়েছে, দেশের তরুণ সমাজকে বাধ্যতামূলকভাবে সামিরক বাহিনীর প্রশিক্ষণ নিতে হবে। সেই সঙ্গে অবসরে যাওয়া সেনা সদস্যদেরও আবার ব্যারাকে ফিরিয়ে আনার ঘোষণা দিয়েছে। সেনাবাহিনীতে জনবলের শূন্যতা পূরণে নতুন করে সেনা ভর্তির এই উদ্যোগ নিয়েছে মিয়ানমার জান্তা। বছরে ৬০ হাজার তরুণ-তরুণীকে সেনাবাহিনীতে ভর্তির উদ্যোগে ফুঁসে উঠেছে দেশটির জনগণ।

বিদ্রোহীদের আক্রমণের মুখে একের পর এক প্রদেশ হারিয়ে এখন দিশেহারা মিয়ানমার সেনারা। প্রতিদিনই যুদ্ধে সেনা হারাতে হচ্ছে, সেই সঙ্গে অর্থনৈতিক সঙ্কটও মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। সংঘাতে প্রতিনিয়ত হতাহত হচ্ছে সরকারি সেনারা, অনেকে বিদ্রোহীদের কাছে আত্মসমর্পণ করছে, বা পালিয়ে যাচ্ছে প্রতিবেশী দেশে। যেই জান্তা একটি সময় নিজেদেরকে বিশ্বের অন্যতম সেরা সুপ্রশিক্ষিত ও পেশাদার বাহিনী বলে নিজেদের দাবি করতো, এখন তাদেরই ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি। বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে একটি যুদ্ধ জিততে না পারায় উল্টো নাগরিকদের উপর খড়্‌গহস্ত হয়েছে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর প্রধান।

তাই সেনাভর্তির সাম্প্রতিক প্রক্রিয়াটি তাদের জন্য লজ্জাজনক পরিস্থিতি তৈরি করেছে। সেই সঙ্গে আইনের নিন্দা জানিয়ে, সামাজিক মাধ্যমে জান্তাকে নতুনভাবে প্রতিরোধের ডাক দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি প্রক্রিয়া বন্ধে অভিনব সব উপায়ের পথে হাঁটতে চলেছে দেশটির নাগরিকরা। সাম্প্রতিক এক জরিপে দেখা গেছে, সেনা নিয়োগে জান্তা সিদ্ধান্তে মিয়ানমারের বেশিরভাগ নাগরিক উচ্চ স্বরেই না বলেছেন, দেখিয়েছেন নেতিবাচক মনোভাব। উল্টো বলছেন, সেনা ভর্তি এড়াতে হয় তারা দেশ ছেড়ে পালাবেন, নাহলে বিদ্রোহীদের সাথে যোগ দেবেন। তবু জান্তার দলে যোগ দেবেন না।

তবে জান্তাকে দেশটির নাগরিকরা কতোটা ঘৃণা করে, তার মনোভাব পাওয়া গেছে দেশটির তরুণ সমাজের কাছে থেকে। তারা বলছেন, ভর্তি এড়াতে নিজেদের জখম করতেও তারা প্রস্তুত। দরকারে দু্ই একটা আঙুল কেটে ফেলবেন তারা। আর তরুণীরা জানিয়েছেন, তারা দ্রুত বিয়ে করার কথাও ভাবছেন। বৌদ্ধ সন্ন্যাসী হলেও সেনাভর্তি থেকে ছাড় দেয়া হয়। তাই পুরুষদের অনেকে সেকথাই ভাবছেন। নাহলে ভর্তি এড়াতে পদস্থ সেনা কর্মকর্তাদের ঘুষ দেয়ার মতন বিকল্পের কথাও ভাবছেন তারা। কেউ বা পাচারকারীদের সহায়তায় দেশ ছাড়তে চাইছে, কেউ কেউ নিজেকে পঙ্গু করা, বা সন্ন্যাস গ্রহণের কথা ভাবছে।

অনেকে এমনও বলছেন, গণতন্ত্রকামী বিদ্রোহী দলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার চেয়ে আত্মহত্যা করাও ভালো। যদি তাদেরকে বাধ্য করা হয়, তাহলে সেপথেই হাঁচার কথা জানিয়েছেন অনেকে। তাদের সোজা কথা, নিজ দেশে অন্য ভাই-বোন, বাবা-মা ও আত্মীয়-স্বজন দূরের কথা, কারো বিরুদ্ধেই অস্ত্র ধরতে নারাজ তারা। সম্প্রতি দেশটির সেনা সরকার জানিয়েছে, বাধ্যতামূলক সেনাদলে নিয়োগ আইন দ্রুতই কার্যকর করা হচ্ছে। এর আওতায়, তরুণদের অন্তত দুই বছর সশস্ত্র বাহিনীর চাকরি করতে হবে। সংকটকালীন জাতীয় জরুরি অবস্থা বিবেচনায়, যা পাঁচ বছর পর্যন্ত বাড়তে পারে। এতে কী রক্ষা হবে, জান্তা সরকারের ভরাডুবি? সূত্র : একাত্তর টিভি।